সোমবার | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ | শীতকাল
শিরোনাম :
Logo যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার ওপর আরও চাপ প্রয়োগের আহ্বান জেলেনস্কির Logo নির্বাচনে আস্থার পরিবেশ তৈরিতে অপারেশন শুরু করবে যৌথবাহিনী: ইসি সানাউল্লাহ Logo রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে Logo কুমিল্লায় আইদি পরিবহন প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা, চাঁদপুরে মানববন্ধন Logo মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন চাঁদপুর-৩ আসনে ইসলামী ফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী সাংবাদিক আহসান উল্লাহ Logo আগামী ২৭ ডিসেম্বর শনিবার চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির শীতকালীন গিটারসন্ধ্যা Logo তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরায় স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রস্তুতি সভা ও শুভেচ্ছা মিছিল Logo সুদানের আবেই শান্তিরক্ষা মিশনের ড্রোন হামলায় শহীদ সেনা সদস্যের রাষ্টীয় মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন পলাশবাড়ীতে Logo ৪৭৫ কোটি টাকা ‘জলে’: খনন শেষ হতেই ভরাট সাতক্ষীরার নদী-খাল ​জলাবদ্ধতা কাটেনি, উল্টো সেচ সংকটে কৃষক ও ঘেরমালিকরা ​ Logo খুবিতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য মাস্টার্স ও পিএইচডি ভর্তি শুরু

রিজার্ভ চুরি : সম্পৃক্ততার অভিযোগে ১৭ কর্মকর্তার বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৫:২৫:৪৩ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৮৬৬ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশে ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১৭ কর্মকর্তার বিদেশ ভ্রমণের ওপর অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সরকারের এক গোয়েন্দা সংস্থা এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে জানা গেছে।
একই সাথে এসব কর্মকর্তার ওপর নজরদারির মাত্রা আরো বাড়ানো হয়েছে। এরই মধ্যে এসব কর্মকর্তাকে পৃথকভাবে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়, গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে দেখা গেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই ১৭ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালনে অবহেলা বা সম্পৃক্ততার কারণে বিদেশী হ্যাকাররা ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি করতে সক্ষম হয়। এদের অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা হচ্ছে না। এসব কর্মকর্তাকে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ দিলে তারা অনেকে দেশে ফিরে আসবেন না বলে শঙ্কা রয়েছে। তাই তাদের ওপর বিদেশ ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলা হয়েছে। তা ছাড়া তদন্তের প্রয়োজনে সন্দেহভাজন এসব কর্মকর্তাকে যেকোনো সময় আরো জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রাখা বাংলাদেশের ১০০ কোটি ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়।
এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে আট কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকে। আর আরেক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার। শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশির ভাগই স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে। তার কিছু অংশ উদ্ধারের পর সম্প্রতি বাংলাদেশ ফেরত পেয়েছে।
বিশ্বজুড়ে আলোচিত এ ঘটনায় সমালোচনার মুখে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন আতিউর রহমান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে আনা হয় বড় ধরনের রদবদল। দু’জন ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেম ও নাজনিন সুলতানাও পদত্যাগে বাধ্য হন।
মার্চে সরকারের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি, যার প্রধান করা হয় সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনকে। তিনি গত ৩০ মে ওই প্রতিবেদন দেয়ার পর অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, রিপোর্টে যা আছে, তা অবশথ্যই প্রকাশ করা হবে।
এরপর কয়েক দফা সময় দিয়েও কথা রাখেননি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বরে প্রতিবেদন প্রকাশ করার দিন ঠিক করে দিলেও তিনি পরে তার অবস্থান থেকে সরে যান।
এ দিকে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদে জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মিলেছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে উদ্ধৃত করেই তথ্যটি দেয় বার্তা সংস্থাটি। সেবার আনিসুল হক বলেছিলেন, এটি সহযোগিতার অংশ। তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে আমরা তাদের তথথ্য দেবো।
যদিও এর আগে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন কোনো তথ্য দেয়া হবে না। পরে অবশ্য তিনি নিজেও ওই অবস্থান থেকে সরে আসেন।
কেন্দ্রীয় বথ্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থের বেশির ভাগটা ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশের যে প্রতিনিধিদল সম্প্রতি ফিলিপিন্স সফর করে, তার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
ওই সফর শেষে দেশে ফিরে তিনি বলেছিলেন, চুরি যাওয়া রিজার্ভের বাকি সাড়ে ছয় কোটি ডলার উদ্ধারে ফিলিপিন্স সরকারের মাধথ্যমে রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনকে (আরসিবিসি) ‘বাধথ্য করা যাবে’।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার ওপর আরও চাপ প্রয়োগের আহ্বান জেলেনস্কির

রিজার্ভ চুরি : সম্পৃক্ততার অভিযোগে ১৭ কর্মকর্তার বিদেশ সফরে নিষেধাজ্ঞা

আপডেট সময় : ০৫:২৫:৪৩ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬

নিউজ ডেস্ক:

বাংলাদেশে ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১৭ কর্মকর্তার বিদেশ ভ্রমণের ওপর অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সরকারের এক গোয়েন্দা সংস্থা এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বলে জানা গেছে।
একই সাথে এসব কর্মকর্তার ওপর নজরদারির মাত্রা আরো বাড়ানো হয়েছে। এরই মধ্যে এসব কর্মকর্তাকে পৃথকভাবে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়, গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে দেখা গেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই ১৭ কর্মকর্তা দায়িত্ব পালনে অবহেলা বা সম্পৃক্ততার কারণে বিদেশী হ্যাকাররা ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি করতে সক্ষম হয়। এদের অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করা হচ্ছে না। এসব কর্মকর্তাকে বিদেশ যাওয়ার সুযোগ দিলে তারা অনেকে দেশে ফিরে আসবেন না বলে শঙ্কা রয়েছে। তাই তাদের ওপর বিদেশ ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলা হয়েছে। তা ছাড়া তদন্তের প্রয়োজনে সন্দেহভাজন এসব কর্মকর্তাকে যেকোনো সময় আরো জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে সুইফট মেসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে রাখা বাংলাদেশের ১০০ কোটি ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়।
এর মধ্যে পাঁচটি মেসেজে আট কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপিন্সের একটি ব্যাংকে। আর আরেক আদেশে শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার। শ্রীলঙ্কায় পাঠানো অর্থ আটকানো গেলেও ফিলিপিন্সের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশির ভাগই স্থানীয় মুদ্রায় বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে। তার কিছু অংশ উদ্ধারের পর সম্প্রতি বাংলাদেশ ফেরত পেয়েছে।
বিশ্বজুড়ে আলোচিত এ ঘটনায় সমালোচনার মুখে গভর্নরের পদ ছাড়তে বাধ্য হন আতিউর রহমান। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শীর্ষ পর্যায়ে আনা হয় বড় ধরনের রদবদল। দু’জন ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেম ও নাজনিন সুলতানাও পদত্যাগে বাধ্য হন।
মার্চে সরকারের পক্ষ থেকে গঠন করা হয় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি, যার প্রধান করা হয় সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনকে। তিনি গত ৩০ মে ওই প্রতিবেদন দেয়ার পর অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, রিপোর্টে যা আছে, তা অবশথ্যই প্রকাশ করা হবে।
এরপর কয়েক দফা সময় দিয়েও কথা রাখেননি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বরে প্রতিবেদন প্রকাশ করার দিন ঠিক করে দিলেও তিনি পরে তার অবস্থান থেকে সরে যান।
এ দিকে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদে জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ব্যাংকের পাঁচ কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ মিলেছে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে উদ্ধৃত করেই তথ্যটি দেয় বার্তা সংস্থাটি। সেবার আনিসুল হক বলেছিলেন, এটি সহযোগিতার অংশ। তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে আমরা তাদের তথথ্য দেবো।
যদিও এর আগে অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন কোনো তথ্য দেয়া হবে না। পরে অবশ্য তিনি নিজেও ওই অবস্থান থেকে সরে আসেন।
কেন্দ্রীয় বথ্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি যাওয়া অর্থের বেশির ভাগটা ফিরিয়ে আনতে বাংলাদেশের যে প্রতিনিধিদল সম্প্রতি ফিলিপিন্স সফর করে, তার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
ওই সফর শেষে দেশে ফিরে তিনি বলেছিলেন, চুরি যাওয়া রিজার্ভের বাকি সাড়ে ছয় কোটি ডলার উদ্ধারে ফিলিপিন্স সরকারের মাধথ্যমে রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনকে (আরসিবিসি) ‘বাধথ্য করা যাবে’।