শিরোনাম :
Logo পলাশবাড়ীতে ভূয়া সমিতির নামে পৌনে এক কোটির টাকার গাছ বিক্রি করে অর্থ লুটপাট Logo কুবিতে এক সাংবাদিক সংগঠনের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে মধ্যরাতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo পঞ্চগড়ে ভিডাব্লিউবি কার্ড বিতরণ নিয়ে লিখিত অভিযোগ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন Logo সিরাজগঞ্জে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এক পথচারী নিহত, চারজন আহত Logo ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন কচুয়ায় ফসলি জমি নষ্ট করে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন, বাধা দিলে প্রাণনাশের হুমকি  Logo চাঁদপুরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের বিশাল সমাবেশ Logo ইবিতে “ক্যারিয়ার গাইডলাইন ফর ফ্রেশার্স ২০২৫” অনুষ্ঠিত  Logo বেলকুচি আনন্দমেলায় টিকিট বাণিজ্য সময় বাড়ানোর আবেদন Logo বিনামূল্যে বাইসাইকেল পেয়ে উচ্ছ্বসিত চাঁদপুর সদরের ৫২ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা  Logo বীরগঞ্জে ৪টি ইউনিয়ন বাল্যবিবাহ ও ১টি ইউনিয়ন শিশু শ্রম মুক্ত ঘোষণা

শিশুর পরিচর্যা: কোনটা ভুল, কোনটা ঠিক !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৪:৪৮:৪৪ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭
  • ৭৮৫ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

সব মা-বাবাই চান শিশুর সঠিক যত্ন। কিন্তু আমরা অনেকেই সচেতনতার অভাবে কমবেশি ভুল করি।

জন্মের পরপর শিশুর মুখে মধু দিলে মুখ মিষ্টি হয়?

কথাটা কেবল ভুলই নয়, বিপজ্জনকও। জন্মের পর পর শিশুকে মায়ের প্রথম শালদুধ দিতে হবে। হলুদ তরল বলে অনেকে এটা ফেলে দিতে বলেন। কিন্তু এই শালদুধেই আছে শিশুর প্রথম প্রয়োজনীয় পুষ্টি। তাই নবজাতককে মধু, চিনির পানি, মিছরির পানি বা কৌটার দুধ কিছুই দেওয়া যাবে না।

ঘুমের মধ্যে বোতলে করে দুধ খাওয়ালে শিশু পর্যাপ্ত খেতে পারে?

জন্মের প্রথম ছয় মাস শিশুকে শুধু মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। সম্পূর্ণ বা আংশিকও টিনের দুধ দেওয়া যাবে না। মা বাইরে গেলে বুকের দুধ তুলে রেখে যাবেন। সেটা বোতলে নয়, বাটি-চামচ দিয়ে খাওয়াতে হবে। তাই ঘুমের মধ্যে বা জাগরণে—কখনোই বোতলের দুধ শিশুকে দেবেন না। ছোট শিশুদের কান্না থামানোর জন্য চুষনিতে অভ্যাস করানোও ঠিক নয়।

শিশুর খাবার ব্লেন্ডারে মিহি করে দেওয়া উচিত?

শিশুর বয়স ছয় মাস পেরোলে তাকে বাড়িতে তৈরি খাবার দিন, দোকান থেকে কেনা সিরিয়াল নয়। অতিরিক্ত চালের গুঁড়া, সুজি, বার্লি ইত্যাদি খাওয়াবেন না। সব ধরনের খাবারই দেবেন, কিন্তু ব্লেন্ডারে মিহি করার প্রয়োজন নেই। ভাত বা খিচুড়ি, সবজি, মাছ, ডাল, তেল মিশিয়ে নরম করে রান্না করতে হবে। ব্লেন্ডারে তৈরি খাবার খেলে শিশুর স্বাদগ্রন্থির বিকাশ বাধা পায়। তাকে জোর করে খাওয়ানো ঠিক নয়। খাবার নিয়ে শিশুর পেছনে দৌড়ানো এবং টিভি দেখিয়ে, গেম খেলতে বসিয়ে মনোযোগ সরিয়ে খাওয়ানো ঠিক নয়। খিদে পেলে সে এমনিতেই খাবে। একসঙ্গে অনেক পদের খাবার পরিবেশন করলে শিশু দ্বিধায় পড়ে যায়। আবার সব সময় শুধু তার পছন্দের খাবার দিতে হবে, তা-ও ঠিক নয়। এতে অন্য খাবারের প্রতি আগ্রহ জন্মাবে না।

ছোটবেলা থেকেই সবকিছু চাই?

শিশুদের একেবারে ছোট থেকে সব বিষয়ে (যেমন বইপড়া, নাচ-গান, ছবি আঁকা ইত্যাদি) পারদর্শী করে তুলতে অনেকে অস্থির হয়ে পড়েন। মুঠোফোনে গেমস, আইপ্যাড চালাতে দেখে বিস্মিত ও খুশি হন। এর কোনোটাই ভালো লক্ষণ নয়। অনেক বাবা-মা আবার আদবকায়দা ইত্যাদি নিয়ে অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়ে পড়েন। কোনো কিছু নিয়েই বাড়াবাড়ি ঠিক নয়। অনেকে সন্তানকে এত ভালোবাসেন ও প্রশ্রয় দেন যে তাকে সব কাজ থেকেই বিরত রাখেন। জামাকাপড় পরানো বা স্কুলব্যাগ বহন করার জন্যও লোক রাখেন। দৈনন্দিন কাজকর্ম, যেমন খাওয়াদাওয়া, জুতা ও পোশাক পরা, ব্যাগ গোছানো ও বহন করা এসবে শিশুকে সাহায্য করতে পারেন, কিন্তু পুরোটাই করে দেবেন না। তাকে স্বাবলম্বী হতে শেখান।

শিশুকে সময় দিন

সন্তানকে আরামে রাখার জন্য হয়তো দিনমান খাটাখাটনি করছেন। কিন্তু শিশুরা আসলে এই রেডিমেড আরাম বা সুখ নয়, চায় আপনার মূল্যবান সময়। ওর সঙ্গে ভাবের আদানপ্রদান, গল্পগুজব, খেলাধুলা তার বিকাশে সাহায্য করবে। কাজে ব্যস্ত থাকলেও তাকে সঙ্গী করে নিন। যেমন মা ঘরের কাজে শিশুকে সঙ্গে নিতে পারেন, টুকটাক এটা-ওটা এগিয়ে দিতে দিতে অনেক সময় কাটানো হবে। শিশুকে টিভির সামনে বসিয়ে বা মুঠোফোনে গেমস ধরিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকবেন না।

শিশুর সামনে সংযত আচরণ করুন

শিশুরা কোনো প্রশ্ন করলে তার উত্তর না দিয়ে বরং ধমক দিয়ে তাকে থামিয়ে দেন অনেকে। অতিথির সামনে কথা বললে বিরক্ত হন। এটা ঠিক নয়। সব অবস্থাতেই তাদের কথা গুরুত্বের সঙ্গে শুনবেন। শিশুর সামনে নিজেরা কথা কাটাকাটি, চিৎকার, ঝগড়া করা বা কাউকে মারধর বা গালাগাল করা একেবারেই উচিত নয়। ধূমপান বর্জন করুন। শিশুর সামনে মিথ্যা বলবেন না কখনো। কোনো কিছুতে দক্ষতা কম বলে তাকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করে বকাবকি করবেন না। শিশুর সাফল্যে প্রশংসা করুন এবং উৎসাহ দিন। ভুল বা অন্যায় করলে বুঝিয়ে বলুন, শাস্তি দেবেন না।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পলাশবাড়ীতে ভূয়া সমিতির নামে পৌনে এক কোটির টাকার গাছ বিক্রি করে অর্থ লুটপাট

শিশুর পরিচর্যা: কোনটা ভুল, কোনটা ঠিক !

আপডেট সময় : ০৪:৪৮:৪৪ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৯ জানুয়ারি ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

সব মা-বাবাই চান শিশুর সঠিক যত্ন। কিন্তু আমরা অনেকেই সচেতনতার অভাবে কমবেশি ভুল করি।

জন্মের পরপর শিশুর মুখে মধু দিলে মুখ মিষ্টি হয়?

কথাটা কেবল ভুলই নয়, বিপজ্জনকও। জন্মের পর পর শিশুকে মায়ের প্রথম শালদুধ দিতে হবে। হলুদ তরল বলে অনেকে এটা ফেলে দিতে বলেন। কিন্তু এই শালদুধেই আছে শিশুর প্রথম প্রয়োজনীয় পুষ্টি। তাই নবজাতককে মধু, চিনির পানি, মিছরির পানি বা কৌটার দুধ কিছুই দেওয়া যাবে না।

ঘুমের মধ্যে বোতলে করে দুধ খাওয়ালে শিশু পর্যাপ্ত খেতে পারে?

জন্মের প্রথম ছয় মাস শিশুকে শুধু মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। সম্পূর্ণ বা আংশিকও টিনের দুধ দেওয়া যাবে না। মা বাইরে গেলে বুকের দুধ তুলে রেখে যাবেন। সেটা বোতলে নয়, বাটি-চামচ দিয়ে খাওয়াতে হবে। তাই ঘুমের মধ্যে বা জাগরণে—কখনোই বোতলের দুধ শিশুকে দেবেন না। ছোট শিশুদের কান্না থামানোর জন্য চুষনিতে অভ্যাস করানোও ঠিক নয়।

শিশুর খাবার ব্লেন্ডারে মিহি করে দেওয়া উচিত?

শিশুর বয়স ছয় মাস পেরোলে তাকে বাড়িতে তৈরি খাবার দিন, দোকান থেকে কেনা সিরিয়াল নয়। অতিরিক্ত চালের গুঁড়া, সুজি, বার্লি ইত্যাদি খাওয়াবেন না। সব ধরনের খাবারই দেবেন, কিন্তু ব্লেন্ডারে মিহি করার প্রয়োজন নেই। ভাত বা খিচুড়ি, সবজি, মাছ, ডাল, তেল মিশিয়ে নরম করে রান্না করতে হবে। ব্লেন্ডারে তৈরি খাবার খেলে শিশুর স্বাদগ্রন্থির বিকাশ বাধা পায়। তাকে জোর করে খাওয়ানো ঠিক নয়। খাবার নিয়ে শিশুর পেছনে দৌড়ানো এবং টিভি দেখিয়ে, গেম খেলতে বসিয়ে মনোযোগ সরিয়ে খাওয়ানো ঠিক নয়। খিদে পেলে সে এমনিতেই খাবে। একসঙ্গে অনেক পদের খাবার পরিবেশন করলে শিশু দ্বিধায় পড়ে যায়। আবার সব সময় শুধু তার পছন্দের খাবার দিতে হবে, তা-ও ঠিক নয়। এতে অন্য খাবারের প্রতি আগ্রহ জন্মাবে না।

ছোটবেলা থেকেই সবকিছু চাই?

শিশুদের একেবারে ছোট থেকে সব বিষয়ে (যেমন বইপড়া, নাচ-গান, ছবি আঁকা ইত্যাদি) পারদর্শী করে তুলতে অনেকে অস্থির হয়ে পড়েন। মুঠোফোনে গেমস, আইপ্যাড চালাতে দেখে বিস্মিত ও খুশি হন। এর কোনোটাই ভালো লক্ষণ নয়। অনেক বাবা-মা আবার আদবকায়দা ইত্যাদি নিয়ে অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়ে পড়েন। কোনো কিছু নিয়েই বাড়াবাড়ি ঠিক নয়। অনেকে সন্তানকে এত ভালোবাসেন ও প্রশ্রয় দেন যে তাকে সব কাজ থেকেই বিরত রাখেন। জামাকাপড় পরানো বা স্কুলব্যাগ বহন করার জন্যও লোক রাখেন। দৈনন্দিন কাজকর্ম, যেমন খাওয়াদাওয়া, জুতা ও পোশাক পরা, ব্যাগ গোছানো ও বহন করা এসবে শিশুকে সাহায্য করতে পারেন, কিন্তু পুরোটাই করে দেবেন না। তাকে স্বাবলম্বী হতে শেখান।

শিশুকে সময় দিন

সন্তানকে আরামে রাখার জন্য হয়তো দিনমান খাটাখাটনি করছেন। কিন্তু শিশুরা আসলে এই রেডিমেড আরাম বা সুখ নয়, চায় আপনার মূল্যবান সময়। ওর সঙ্গে ভাবের আদানপ্রদান, গল্পগুজব, খেলাধুলা তার বিকাশে সাহায্য করবে। কাজে ব্যস্ত থাকলেও তাকে সঙ্গী করে নিন। যেমন মা ঘরের কাজে শিশুকে সঙ্গে নিতে পারেন, টুকটাক এটা-ওটা এগিয়ে দিতে দিতে অনেক সময় কাটানো হবে। শিশুকে টিভির সামনে বসিয়ে বা মুঠোফোনে গেমস ধরিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত থাকবেন না।

শিশুর সামনে সংযত আচরণ করুন

শিশুরা কোনো প্রশ্ন করলে তার উত্তর না দিয়ে বরং ধমক দিয়ে তাকে থামিয়ে দেন অনেকে। অতিথির সামনে কথা বললে বিরক্ত হন। এটা ঠিক নয়। সব অবস্থাতেই তাদের কথা গুরুত্বের সঙ্গে শুনবেন। শিশুর সামনে নিজেরা কথা কাটাকাটি, চিৎকার, ঝগড়া করা বা কাউকে মারধর বা গালাগাল করা একেবারেই উচিত নয়। ধূমপান বর্জন করুন। শিশুর সামনে মিথ্যা বলবেন না কখনো। কোনো কিছুতে দক্ষতা কম বলে তাকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করে বকাবকি করবেন না। শিশুর সাফল্যে প্রশংসা করুন এবং উৎসাহ দিন। ভুল বা অন্যায় করলে বুঝিয়ে বলুন, শাস্তি দেবেন না।