শিরোনাম :
Logo জাবি ছাত্রদলের বর্ধিত কমিটি নিয়ে নানা সমালোচনা Logo দৈনিক কালের কন্ঠের সম্পাদকের সাথে ঝিকুট ফাউন্ডেশনের সৌজন্য সাক্ষাৎ Logo সাংবাদিককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদে ইবিতে বিক্ষোভ! Logo গল্লামারী মৎস্য খামার হস্তান্তরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে খুবি শিক্ষার্থীদের খোলা চিঠি Logo ইবিতে হিন্দু ধর্ম অবমাননার অভিযোগে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি Logo খুবির আবাসন সংকট ও ক্যাম্পাস সম্প্রসারণ নিরসনে বাধা গল্লামারী মৎস্য খামার Logo রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কালচারাল সোসাইটির সভাপতি নিতু, সাধারণ সম্পাদক রিদয় Logo ডাঃ আব্দুল হাই ফাউন্ডেশনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ: ৯৩ কৃতি শিক্ষার্থীর মাঝে বৃত্তি সনদ ও নগদ সহায়তা প্রদান Logo সিরাজগঞ্জে রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার আগেই ফাটল! প্রশাসনের তদন্তে অনিয়মের প্রমাণ Logo আব্দুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত: জবির ফিন্যান্স ১৭তম ব্যাচের সহপাঠীদের বিবৃতি

ঝিনাইদহে লোককবি পাগলাকানাইয়ের ১২৮তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৭:০১:১০ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১২ জুলাই ২০১৭
  • ৭৪৫ বার পড়া হয়েছে

জাহিদুর রহমান তারিক,প্রতিনিধি ঝিনাইদহঃ  ‘মরণের আগে মরো, সমনকে শান্ত করো, যদি তাই করতে পারো, ভরপারে যাবিরে মন রসনা, অথবা জিন্দা দেহে মুরদার বসন, থাকতে কেন পর না / মন তুমি মরার ভাব জানো না’- এমনই হাজারো আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ব বাউল গানের রচয়িতা মরমি কবি পাগলা কানাইয়ের ১২৮তম মৃত্যু বার্ষিকী বুধবার পালিত হয়। দিবসটি পালন উপলক্ষে বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেড়বাড়ি গ্রামে কবির মাজার জিয়ারত, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ ও কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতি স্তম্ভে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়। সন্ধায় আলোাচনা সভা এবং পাগলা কানাই রচিত সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেরবাড়ি গ্রামে ‘পাগলা কানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদ’ দিনব্যাপী এসব কর্মসূচি আয়োজন করে। পাগলা কানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ জানান, বিকেলের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন।

এছাড়া ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আসাদুজ্জামান, জেলা পরিষদের সচিব রেজাই রাফিন সরকার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। সকাল থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কবির হাজারো ভক্ত অনুরাগীরা কবির মাজার প্রাঙ্গনে সমাবেশ হতে থাকে। জানা গেছে, পাগলা কানাই ছিলেন লালন পরবর্তী বাংলার অন্যতম মরমী সাধক ও লোককবি। তিনি ১৮০৯ সালের মার্চ মাস মোতাবেক ১২১৬ সালের ২৫ ফাল্গুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লেবুতলা মাধবপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তার বাবার নাম ছিল মেছের আলী ও মা মোমেনা খাতুন। কৈশোরে বাবার মৃত্যুর পর কানাই মামাবাড়ি বেড়বাড়ি গ্রামে চলে আসেন। সেখানে তিনি গবাদি পশু রাখতেন। এ সময় তিনি আধ্যাত্মিক সাধক ও একাধিক বাউল শিল্পীর সংস্পর্শে আসেন। এরপর তিনি নিজেই রচনা করতে থাকেন একের পর এক আত্যাধিক ও দেহতত্ব গান। প্রথমা বস্থায় তার গানের শ্রোতা ছিলেন রাখালরা।

কানাইয়ের গানে মুগ্ধ রাখালেরা তাকে ‘পাগলা কানাই’ বলে ডাকতেন। অল্পদিনেই রাখালদের ছাড়িয়ে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে দূর-দূরান্তে। আধ্যাত্মিক গান রচনা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিবেশনের মাধ্যমে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন পাগলা কানাই। প্রায় ৮০ বছরের জীবদ্দশায় কানাই প্রায় তিন হাজার আধ্যত্মিক ও ভক্তিমুলক সঙ্গীত এবং কবিতা রচনা করে গেছেন। তার রচিত গানের মধ্যে রয়েছে পালাগান, জারিগান, ধুয়াগান, কবিগান, মুর্শিদি, মারফতি গান। ১৮৮৯ সালের ১২ জুলাই মোতাবেক ১২৯৬ সালের ২৮ আষাঢ় এই মরমী সাধক ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পর পাগলা কানাইকে মামাবাড়ি বেড়বাড়ি গ্রামে দাফন করেন। সেখানেই সরকারিভাবে তৈরি করা হয়েছে ‘পাগলা কানাই স্মৃতি অডিটরিয়াম’। বিপুল জনপ্রিয়তা এবং বাংলা গানে অসাধারণ অবদান রাখা সত্ত্বেও পাগলা কানাই রাষ্ট্রীয়ভাবে অবহেলিতই থেকে গেছেন বলে তার ভক্তদের অভিযোগ।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জাবি ছাত্রদলের বর্ধিত কমিটি নিয়ে নানা সমালোচনা

ঝিনাইদহে লোককবি পাগলাকানাইয়ের ১২৮তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত

আপডেট সময় : ০৭:০১:১০ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১২ জুলাই ২০১৭

জাহিদুর রহমান তারিক,প্রতিনিধি ঝিনাইদহঃ  ‘মরণের আগে মরো, সমনকে শান্ত করো, যদি তাই করতে পারো, ভরপারে যাবিরে মন রসনা, অথবা জিন্দা দেহে মুরদার বসন, থাকতে কেন পর না / মন তুমি মরার ভাব জানো না’- এমনই হাজারো আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ব বাউল গানের রচয়িতা মরমি কবি পাগলা কানাইয়ের ১২৮তম মৃত্যু বার্ষিকী বুধবার পালিত হয়। দিবসটি পালন উপলক্ষে বুধবার দুপুরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেড়বাড়ি গ্রামে কবির মাজার জিয়ারত, দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ ও কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতি স্তম্ভে পুস্পমাল্য অর্পণ করা হয়। সন্ধায় আলোাচনা সভা এবং পাগলা কানাই রচিত সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেরবাড়ি গ্রামে ‘পাগলা কানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদ’ দিনব্যাপী এসব কর্মসূচি আয়োজন করে। পাগলা কানাই স্মৃতি সংরক্ষণ সংসদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদ জানান, বিকেলের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক জাকির হোসেন।

এছাড়া ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আসাদুজ্জামান, জেলা পরিষদের সচিব রেজাই রাফিন সরকার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। সকাল থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কবির হাজারো ভক্ত অনুরাগীরা কবির মাজার প্রাঙ্গনে সমাবেশ হতে থাকে। জানা গেছে, পাগলা কানাই ছিলেন লালন পরবর্তী বাংলার অন্যতম মরমী সাধক ও লোককবি। তিনি ১৮০৯ সালের মার্চ মাস মোতাবেক ১২১৬ সালের ২৫ ফাল্গুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লেবুতলা মাধবপুর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তার বাবার নাম ছিল মেছের আলী ও মা মোমেনা খাতুন। কৈশোরে বাবার মৃত্যুর পর কানাই মামাবাড়ি বেড়বাড়ি গ্রামে চলে আসেন। সেখানে তিনি গবাদি পশু রাখতেন। এ সময় তিনি আধ্যাত্মিক সাধক ও একাধিক বাউল শিল্পীর সংস্পর্শে আসেন। এরপর তিনি নিজেই রচনা করতে থাকেন একের পর এক আত্যাধিক ও দেহতত্ব গান। প্রথমা বস্থায় তার গানের শ্রোতা ছিলেন রাখালরা।

কানাইয়ের গানে মুগ্ধ রাখালেরা তাকে ‘পাগলা কানাই’ বলে ডাকতেন। অল্পদিনেই রাখালদের ছাড়িয়ে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে দূর-দূরান্তে। আধ্যাত্মিক গান রচনা ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পরিবেশনের মাধ্যমে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন পাগলা কানাই। প্রায় ৮০ বছরের জীবদ্দশায় কানাই প্রায় তিন হাজার আধ্যত্মিক ও ভক্তিমুলক সঙ্গীত এবং কবিতা রচনা করে গেছেন। তার রচিত গানের মধ্যে রয়েছে পালাগান, জারিগান, ধুয়াগান, কবিগান, মুর্শিদি, মারফতি গান। ১৮৮৯ সালের ১২ জুলাই মোতাবেক ১২৯৬ সালের ২৮ আষাঢ় এই মরমী সাধক ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুর পর পাগলা কানাইকে মামাবাড়ি বেড়বাড়ি গ্রামে দাফন করেন। সেখানেই সরকারিভাবে তৈরি করা হয়েছে ‘পাগলা কানাই স্মৃতি অডিটরিয়াম’। বিপুল জনপ্রিয়তা এবং বাংলা গানে অসাধারণ অবদান রাখা সত্ত্বেও পাগলা কানাই রাষ্ট্রীয়ভাবে অবহেলিতই থেকে গেছেন বলে তার ভক্তদের অভিযোগ।