শিরোনাম :
Logo নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান Logo ইবি অভয়ারণ্যের শরৎ সম্ভাষণ: “গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছোঁয়া ও বায়োস্কোপের রঙিন আবেশ” Logo চাঁদপুর সদরের ১৪ ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি ও ভোগান্তি কমেছে Logo চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বদলী জনিত বিদায় সংবর্ধনা Logo চাঁদপুরে কবরস্থ করতে দেওয়া শিশু মৃত নয়, জীবিত! Logo “শিক্ষা ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তনে চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা” – ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান Logo সিরাজগঞ্জে বসতবাড়ির জমি দখলের হুমকির অভিযোগে জিডি Logo  ইবির পাঁচ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার Logo ইবিতে দুর্গাপূজা উপলক্ষে পরীক্ষা স্থগিতের নোটিশ Logo সুন্দরবনে বন বিভাগের পৃথক অভিযানে ৫ জেলে আটক  ৩টা নৌকা, জাল, বিষের বোতল সহ মাছ জব্দ 

ডায়াবেটিস ও গর্ভধারণ !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৬:৫৭ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১০ জুলাই ২০১৭
  • ৭৬৭ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

সন্তান গর্ভধারণ যেকোনো মহিলার জন্য অনেক বড় একটি স্ট্রেস। এ সময় মায়ের স্বাভাবিক দৈহিক মিথক্রিয়া, হরমোনের পরিমাণ ও এর সাপেক্ষে জৈবিক উদ্দীপনার মাত্রা এবং এর গভীরতার তারতম্য হয়। গর্ভস্থ শিশুটি নিজেই একটি অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির মতো আচরণ করে। প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল থেকে নিঃসৃত হয় হরমোন-এইচসিজি, এইচপিএল, ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন ও মায়ের দেহ হতে নিঃসৃত স্টেরয়েড এবং প্রোটিন হরমোন ইত্যাদি মিলে মায়ের ওপর ডায়াবেটিস হওয়ার অনুকূলে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় অংশে শর্করা বিপাকের ওপর। এ সময় অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণের হার কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কিন্তু অনেকেরই ইনসুলিনের কার্যকারিতা বহিরিস্থ কোষগুলোতে বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে কাক্সিক্ষত পর্যায়ে ফলাফল পাওয়া যায় না। অতএব, সন্তান গর্ভধারণ ইনসুলিনের মজুদের ওপর এক প্রকার চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দেয়। ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত হওয়ার ফলে শিশুর বৃদ্ধিতে সহায়তা হয় এবং শিশুর জন্য গ্লুকোজের সরবরাহও বাড়ে। গর্ভাবস্থার শেষ দিকে এটি দূরীভূত হয়ে যায়। কারো কারো শুধু গর্ভধারণকালেই রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি থাকে। এর আগে সে হয়তো স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে আগে থেকেই টাইপ১ বা টাইপ২ ডায়াবেটিসে ভোগার ইতিহাস থাকতে পারে।

গর্ভধারণকারীর রক্তে গ্লুকোজ পরিমাপের জন্য যে বিশেষ ধরনের পরীক্ষা করা হয় তার নাম জিটিটি (গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট)। এতে প্রথমে খালি পেটে গর্ভধারণকারীর রক্ত ও মূত্র নিয়ে গ্লুকোজের পরিমাণ দেখা হয়। এরপর ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ ২০০ মিলিলিটার পানি মিশিয়ে পান করার (৫ মিনিট ধরে) ২ ঘণ্টা পর। আবার রক্ত ও মূত্র নিয়ে তাতে গ্লুকোজের পরিমাণ দেখা হয়। খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক পরিমাণ ৩.৫ থেকে ৫.৫ মিলিমোল বা লিটার; ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ ২০০ মিলিলিটার পানিতে মিশিয়ে পাঁচ মিনিট ধরে খাবার দুই ঘণ্টা পর রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক পরিমাণ হবে ৭.৮ মিলিমোল বা লিটারের কম। গর্ভধারণকারীর রক্তে কোনো একটি ক্ষেত্রে যদি গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি থাকে তাহলে তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হবে। গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে গ্লুকোজ অসহিষ্ণুতা বলে কিছু নেই।
গর্ভধারণের চিন্তা-ভাবনা শুরু করার প্রথম থেকে নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করা উচিত। আর গর্ভধারণের পর অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে। গর্ভাবস্থার ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহ সময়ের মধ্যে বিশেষভাবে ডায়াবেটিসের পরীক্ষা করাতে হয়। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে মা ও শিশু উভয়ের জন্যই অনেক ক্ষতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।

মায়ের ঝুঁকি : ১. মাতৃ মৃত্যুর হার বেড়ে যায়।
২. হার্ট ফেইলুর ও আরো অনেক হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
গর্ভস্থ শিশুর ঝুঁকি: ১. উন্নত বিশ্বে এটি কমিয়ে আনা সম্ভব হলেও আমাদের দেশে এখনো ডায়াবেটিস রোগীর শিশুদের মৃত্যুর হার অনেক বেশি।
২. মরা শিশু প্রসব ও অস্বাভাবিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গসহ শিশু জন্মানোর হার বেশি; কোনো কোনো শিশুর হৃৎপিণ্ড ঠিকমতো গঠিত হয় না, কারো কারো মাথা ছোট হয়, মেরুদণ্ড নিচের দিকে জোড়া লাগানো থাকে না, ঠোঁট কাটা, পরের তালু কাটা, মলদ্বার তৈরি না হওয়াসহ বিবিধ সমস্যা দেখা যায় এসব শিশুর।
৩. যেকোনো সময় সন্তান প্রসব হয়ে যেতে পারে।
৪. সহসা মায়ের পেটে সন্তানের মৃত্যু ঘটতে পারে।
৫. শিশুর ওজন অস্বাভাবিক রকম বেশি হয়।
৬. এসব শিশু পরবর্তী সময়ে দৈহিক স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও বিভিন্ন রকম স্নায়ুরোগে ভোগে।

চিকিৎসা : প্রথমেই গর্ভবতী মায়ের খাদ্যগ্রহণ সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন মায়েদের জন্য বিশেষ ধরনের ব্যবস্থাপত্র দিতে হবে। যার মধ্যে তার গর্ভধারণকালের মধ্যে মোট ১০ কেজি ওজন বৃদ্ধি অনুমোদন করা যাবে অর্থাৎ প্রতি মাসে ০.৪৫ কেজি ওজন বৃদ্ধি। তার জন্য প্রত্যহ তাকে মোট খাদ্যের ৪০-৪৫% শর্করা (১৫০-২০০ গ্রাম), ১৮-২০% আমিষ (৭৪ গ্রাম) এবং চর্বিজাতীয় খাদ্য ৩০%-এর কম খেতে হবে। আদর্শ খাদ্যগ্রহণ যতটা সম্ভব বাড়িয়ে দিতে হবে আর সব খাবারকে ছয় ভাগ করে প্রতিদিন খেতে হবে। আর প্রচুর ফল খেতে হবে। গর্ভধারণকারী মহিলার ডায়াবেটিস চিকিৎসা করতে গিয়ে কখনো তাকে মুখে খাবার ওষুধ দেয়া যাবে না। তার জন্য একটাই ওষুধ ইনসুলিন। যাদের গর্ভধারণের আগে থেকেই ডায়াবেটিস ছিল এবং তারা মুখে খাবার ওষুধ খেয়ে ভালো ছিলেন তাদেরও ইনসুলিন শুরু করতে হবে গর্ভধারণ করার পর থেকেই। সম্ভব হলে সন্তান পেটে আসার আগে থেকেই তা করতে হবে। ইনসুলিন নিলে কারো কারো হাইপোগ্লাইসিমিয়া হতে পারে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আর এদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এবং সন্তান প্রসব ও প্রসব-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে বিশদ সতর্ক ও দক্ষতাপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাটা জরুরি। গর্ভকালীন যাদের প্রথম ডায়াবেটিস ধরা পড়ল, তাদের ৫০ শতাংশের বেশি পরবর্তী এক বছরের মধ্যে ডায়াবেটিস রোগীতে পরিণত হবেন। ৫০%-৬০% ক্ষেত্রে যদি রক্ত পরীক্ষা না করা হয় তবে হয়তো কোনোভাবেই সন্দেহ করার মতো কোনো লক্ষণাদি দেখা যাবে না। কিন্তু রক্ত পরীক্ষা করলেই তাদের ডায়াবেটিস আছে বলে প্রতীয়মান হবে।

গর্ভবতীর ডায়াবেটিস শিশুর জন্য একটি বিরাট গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ও জনস্বাস্থ্যের জন্য এটি একটি বিশাল হুমকি। তাই এটি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য মা-বাবাসহ সকলকে জানানো জরুরি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান

ডায়াবেটিস ও গর্ভধারণ !

আপডেট সময় : ০৬:৪৬:৫৭ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১০ জুলাই ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

সন্তান গর্ভধারণ যেকোনো মহিলার জন্য অনেক বড় একটি স্ট্রেস। এ সময় মায়ের স্বাভাবিক দৈহিক মিথক্রিয়া, হরমোনের পরিমাণ ও এর সাপেক্ষে জৈবিক উদ্দীপনার মাত্রা এবং এর গভীরতার তারতম্য হয়। গর্ভস্থ শিশুটি নিজেই একটি অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির মতো আচরণ করে। প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল থেকে নিঃসৃত হয় হরমোন-এইচসিজি, এইচপিএল, ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন ও মায়ের দেহ হতে নিঃসৃত স্টেরয়েড এবং প্রোটিন হরমোন ইত্যাদি মিলে মায়ের ওপর ডায়াবেটিস হওয়ার অনুকূলে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় অংশে শর্করা বিপাকের ওপর। এ সময় অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণের হার কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কিন্তু অনেকেরই ইনসুলিনের কার্যকারিতা বহিরিস্থ কোষগুলোতে বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে কাক্সিক্ষত পর্যায়ে ফলাফল পাওয়া যায় না। অতএব, সন্তান গর্ভধারণ ইনসুলিনের মজুদের ওপর এক প্রকার চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দেয়। ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত হওয়ার ফলে শিশুর বৃদ্ধিতে সহায়তা হয় এবং শিশুর জন্য গ্লুকোজের সরবরাহও বাড়ে। গর্ভাবস্থার শেষ দিকে এটি দূরীভূত হয়ে যায়। কারো কারো শুধু গর্ভধারণকালেই রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি থাকে। এর আগে সে হয়তো স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে আগে থেকেই টাইপ১ বা টাইপ২ ডায়াবেটিসে ভোগার ইতিহাস থাকতে পারে।

গর্ভধারণকারীর রক্তে গ্লুকোজ পরিমাপের জন্য যে বিশেষ ধরনের পরীক্ষা করা হয় তার নাম জিটিটি (গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট)। এতে প্রথমে খালি পেটে গর্ভধারণকারীর রক্ত ও মূত্র নিয়ে গ্লুকোজের পরিমাণ দেখা হয়। এরপর ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ ২০০ মিলিলিটার পানি মিশিয়ে পান করার (৫ মিনিট ধরে) ২ ঘণ্টা পর। আবার রক্ত ও মূত্র নিয়ে তাতে গ্লুকোজের পরিমাণ দেখা হয়। খালি পেটে রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক পরিমাণ ৩.৫ থেকে ৫.৫ মিলিমোল বা লিটার; ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ ২০০ মিলিলিটার পানিতে মিশিয়ে পাঁচ মিনিট ধরে খাবার দুই ঘণ্টা পর রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক পরিমাণ হবে ৭.৮ মিলিমোল বা লিটারের কম। গর্ভধারণকারীর রক্তে কোনো একটি ক্ষেত্রে যদি গ্লুকোজের পরিমাণ বেশি থাকে তাহলে তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলা হবে। গর্ভবতীদের ক্ষেত্রে গ্লুকোজ অসহিষ্ণুতা বলে কিছু নেই।
গর্ভধারণের চিন্তা-ভাবনা শুরু করার প্রথম থেকে নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করা উচিত। আর গর্ভধারণের পর অবশ্যই ডাক্তার দেখাতে হবে। গর্ভাবস্থার ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহ সময়ের মধ্যে বিশেষভাবে ডায়াবেটিসের পরীক্ষা করাতে হয়। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে মা ও শিশু উভয়ের জন্যই অনেক ক্ষতিকর ঘটনা ঘটতে পারে।

মায়ের ঝুঁকি : ১. মাতৃ মৃত্যুর হার বেড়ে যায়।
২. হার্ট ফেইলুর ও আরো অনেক হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
গর্ভস্থ শিশুর ঝুঁকি: ১. উন্নত বিশ্বে এটি কমিয়ে আনা সম্ভব হলেও আমাদের দেশে এখনো ডায়াবেটিস রোগীর শিশুদের মৃত্যুর হার অনেক বেশি।
২. মরা শিশু প্রসব ও অস্বাভাবিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গসহ শিশু জন্মানোর হার বেশি; কোনো কোনো শিশুর হৃৎপিণ্ড ঠিকমতো গঠিত হয় না, কারো কারো মাথা ছোট হয়, মেরুদণ্ড নিচের দিকে জোড়া লাগানো থাকে না, ঠোঁট কাটা, পরের তালু কাটা, মলদ্বার তৈরি না হওয়াসহ বিবিধ সমস্যা দেখা যায় এসব শিশুর।
৩. যেকোনো সময় সন্তান প্রসব হয়ে যেতে পারে।
৪. সহসা মায়ের পেটে সন্তানের মৃত্যু ঘটতে পারে।
৫. শিশুর ওজন অস্বাভাবিক রকম বেশি হয়।
৬. এসব শিশু পরবর্তী সময়ে দৈহিক স্থূলতা, ডায়াবেটিস ও বিভিন্ন রকম স্নায়ুরোগে ভোগে।

চিকিৎসা : প্রথমেই গর্ভবতী মায়ের খাদ্যগ্রহণ সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে। ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন মায়েদের জন্য বিশেষ ধরনের ব্যবস্থাপত্র দিতে হবে। যার মধ্যে তার গর্ভধারণকালের মধ্যে মোট ১০ কেজি ওজন বৃদ্ধি অনুমোদন করা যাবে অর্থাৎ প্রতি মাসে ০.৪৫ কেজি ওজন বৃদ্ধি। তার জন্য প্রত্যহ তাকে মোট খাদ্যের ৪০-৪৫% শর্করা (১৫০-২০০ গ্রাম), ১৮-২০% আমিষ (৭৪ গ্রাম) এবং চর্বিজাতীয় খাদ্য ৩০%-এর কম খেতে হবে। আদর্শ খাদ্যগ্রহণ যতটা সম্ভব বাড়িয়ে দিতে হবে আর সব খাবারকে ছয় ভাগ করে প্রতিদিন খেতে হবে। আর প্রচুর ফল খেতে হবে। গর্ভধারণকারী মহিলার ডায়াবেটিস চিকিৎসা করতে গিয়ে কখনো তাকে মুখে খাবার ওষুধ দেয়া যাবে না। তার জন্য একটাই ওষুধ ইনসুলিন। যাদের গর্ভধারণের আগে থেকেই ডায়াবেটিস ছিল এবং তারা মুখে খাবার ওষুধ খেয়ে ভালো ছিলেন তাদেরও ইনসুলিন শুরু করতে হবে গর্ভধারণ করার পর থেকেই। সম্ভব হলে সন্তান পেটে আসার আগে থেকেই তা করতে হবে। ইনসুলিন নিলে কারো কারো হাইপোগ্লাইসিমিয়া হতে পারে। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। আর এদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এবং সন্তান প্রসব ও প্রসব-পরবর্তী ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে বিশদ সতর্ক ও দক্ষতাপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাটা জরুরি। গর্ভকালীন যাদের প্রথম ডায়াবেটিস ধরা পড়ল, তাদের ৫০ শতাংশের বেশি পরবর্তী এক বছরের মধ্যে ডায়াবেটিস রোগীতে পরিণত হবেন। ৫০%-৬০% ক্ষেত্রে যদি রক্ত পরীক্ষা না করা হয় তবে হয়তো কোনোভাবেই সন্দেহ করার মতো কোনো লক্ষণাদি দেখা যাবে না। কিন্তু রক্ত পরীক্ষা করলেই তাদের ডায়াবেটিস আছে বলে প্রতীয়মান হবে।

গর্ভবতীর ডায়াবেটিস শিশুর জন্য একটি বিরাট গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ও জনস্বাস্থ্যের জন্য এটি একটি বিশাল হুমকি। তাই এটি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য মা-বাবাসহ সকলকে জানানো জরুরি।