নিউজ ডেস্ক:
সভ্যতার আদিকাল থেকে ভূতের অস্তিত্ব নিয়ে মানুষ মাথা ঘামিয়েছে। মৃত্যুর পরে আত্মার অস্তিত্ব বিদ্যমান থাকে কি থাকে না, তা নিয়ে দর্শনশাস্ত্র যতটা না ভেবেছে, তার চেয়ে অনেক বেশি ভেবেছেন ভৌতিক গল্পের রচয়িতারা। আর এই সব কাহিনির শ্রোতা-পাঠকও তাদের অবিশ্বাসকে মুলতুবি রেখে শুনে অথবা পড়ে গিয়েছে ভূতের গল্প যুগের পরে যুগ ধরে।
এই কাজেই এগিয়ে এসেছিলেন বিশ্বখ্যাত পদার্থবিদ ব্রায়ান কক্স। এই ইংরেজ পরমাণু বিজ্ঞানী টেলিভিশনে বিজ্ঞান-সংক্রান্ত অনুষ্ঠানের সূত্রে আবার তুমুল জনপ্রিয়। সম্প্রতি কক্স জানিয়েছেন, ভূতের অস্তিত্ব নেই। যদি তা থাকত, তা হলে বিশ্বের সবথেকে বড় বৈজ্ঞানিক পরীক্ষায় তা ধরা পড়তই। কী এই ‘সব থেকে বড় পরীক্ষা’? কক্স জানিয়েছেন, মানুষের মৃত্যুর পরে তার আত্মা কোথায় যায়, তা নিয়ে সভ্যতার উন্মেষের কাল থেকেই মানুষ সন্ধান চালিয়েছে। যদি তেমন কোন ‘যাওয়ার জায়গা’ থাকত, তা হলে তা নিশ্চিতভাবেই বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র সার্ন-এর লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার-এ ধরা পড়ত।
যদিও নির্যস যুক্তিবাদী বিজ্ঞানমনস্করা সর্বদাই সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ভূতের অস্তিত্বে। তাঁরা বার বার বলেছেন, ভূত যে রয়েছে, তার প্রমাণ কোথায়? এর উত্তরে ভূতবাদীরা পাল্টা প্রশ্ন করেছেন— সে যে নেই, তার প্রমাণটাই বা কই? এহেন চাপান উতোরে কেটে গিয়েছে অনন্ত সময়। কিন্তু পরীক্ষাগারে বিস্তর সময় খরচা করে ভূতের অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ব প্রমাণের গুরুদায়িত্বটি পালনে আগ্রহ দেখাননি তেমন কেউ।
লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার আসলে বিশ্বের বৃহত্তম আণবিক বিশ্লেষক। চৌম্বক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই যন্ত্র মাহাজগতের মৌলিক বস্তুসমূহকে বুঝতে যায়। এই বিশ্লেষণ থেকে আমাদের চারপাশে দৃশ্যমান জগতের প্রতিটি এলিমেন্টকেই জানা বা বোঝা যায়। লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার যে কোনও এনার্জিকেও বিশ্লেষণ করতে সমর্থ। কক্সের মতে, ভূত যদি থাকত, তবে তারা এনার্জি দিয়েই গঠিত হত। কারণ, আত্মা যে কোনও পদার্থ দিয়ে গঠিত নয়, তা প্রমাণের অপেক্ষা রাখে না। অথচ থার্মোডাইনামিকস-এর দ্বিতীয় সূত্র অনুযায়ী এনার্জি উত্তাপে লোপ পায়। একমাত্র যদি ভূতেরা এই সূত্রকে এড়িয়ে যাওয়ার কৌশল জেনে তাকে, তা হলে কিছু বলার নেই। কিন্তু তা যদি না হয়ে থাকে, তা হলে লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার তাদের খোঁজ পেতই। সূত্র: এবেলা।