নিউজ ডেস্ক:
আধুনিক শহুরে নিষ্ক্রিয় জীবনযাপনপদ্ধতি আমাদের জন্য একটি নতুন স্বাস্থ্যবিষয়ক টার্ম উপহার দিয়েছে। আর সেটি হলো জীবনযাপনের ধরনসংশ্লিষ্ট রোগবালাই। তবে জীবনযাপনপদ্ধতিতে সামান্য একটু পরিবর্তনের মাধ্যমেই এই রোগবালাইগুলো মোকাবিলা করা সম্ভব।
জীবনযাপন পদ্ধতিসংশ্লিষ্ট সচরাচর একটি রোগ হলো উচ্চরক্তচাপ। খাদ্যতালিকায় কিছু খাবার যুক্ত করা এবং কিছু খাবার খাওয়া বাদ দেওয়ার মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আপনি হয়ত লবণ খাওয়া কমিয়ে দিয়ে বা প্রতিদিন দীর্ঘ সময় ধরে হাঁটাহাঁটি করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। কিন্তু এ ছাড়াও আপনার অজানা এবং কার্যকর কিছু পদ্ধতি আছে।
এখানে রইল এমন ১০টি খাদ্যের বিবরণ যেগুলো রক্তচাপ কমাতে সহায়ক:
১. আঙুর
পটাশিয়াম এবং ফসফরাসের বড় একটি উৎস আঙুর। উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আঙুর খুবই কার্যকর ওষুধ। পটাশিয়াম একটি প্রাকৃতিক মূত্রবর্ধক উপাদান। যা আপনার কিডনিকে বেশি বেশি সোডিয়াম ত্যাগে উৎসাহিত করবে। এবং রক্তের শিরা-উপশিরাগুলো শিথিলকরণেও ভূমিকা পালন করে এটি। আর দুটি উপাদানই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
২. কলা
পটাশিয়ামের আরেকটি বড় উৎস হলো কলা। এতে রয়েছে ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি এবং ম্যাগনেশিয়াম। সুতরাং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিনই কলা খান। জার্নাল অফ দ্য আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজিতে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিনি ১,৬০০ গ্রাম পটাশিয়াম গ্রহণ করেন তাদের স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি ২১% কমে আসে।
৩. কাঁচা পেয়াজ/পিয়াজের জুস
রসুনে আছে মাংসপেশি শিথিলকারী উপাদান অ্যাডেনোসিন যা উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। প্রতিদিন কাঁচা পেয়াজ খান। অথবা দিনে দুবার এক টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খান। এভাবে দুই সপ্তাহ খেলেই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
৪. রসুন
ধমনী এবং রক্তের শিরা-উপশিরায় জমে থাকা কোলেস্টেরল গলাতে কার্যকর রসুন। প্রতিদিন রসুনের দুটি কোয়া চূর্ণ করে বা চিবিয়ে খান। রক্তপ্রবাহ ঠিক রাখতে এবং রক্তচাপ কমাতে রসুন বেশ কার্যকর। আপনি যদি কাঁচা রসুন খেতে না পারেন তাহলে রস বের করে পানিতে মিশিয়ে পান করুন। প্রতিদিন দুবার রসুন খান।
৫. নারকেলের পানি
নারকেলের পানিতে আছে পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন সি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। যেগুলো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এতে থাকা পটাশিয়াম উচ্চরক্তচাপের চিকিৎসার সেরা প্রাকৃতিক ওষুধ।
৬. তরমুজ/তরমুজ বীজ
তরমুজের রসে আছে আরজিনিন নামের একটি অ্যামাইনো এসিড যা রক্তচাপ কমাতে বেশ সহায়ক। এটি রক্তের জমাটবদ্ধতা কমায় এবং স্ট্রোকসহ হৃদপিণ্ডের নানা রোগ প্রতিরোধ করে। তরমুজের বীজও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বেশ কার্যকর। ভারতীয় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, তরমুজের বীজে রয়েছে কিউকারবোট্রিন নামের একটি গ্লুকোসাইড যা রক্ত প্রসারণে সহায়ক এবং ফলত রক্তচাপ কমায়।
৭. ধনিয়া
ধনিয়া পাতাতে আছে জীবাণুনাশক এবং মানসিক অবসাদ, প্রদাহ ও উদ্বেগপ্রতিরোধী উপাদানসমুহ। ধনিয়া পাতা রক্তে সুগার ও কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং রক্তচাপ কমায় প্রাকৃতিকভাবেই। আর এতে আরো রয়েছে মূত্রবর্ধক উপাদান।
৮. পুদিনা পাতা
পুদিনা পাতাতে রয়েছে এমন উপাদান যা ধমনির প্লাক দূর করে। ধমনিতে জমা হওয়া প্লাক উচ্চরক্তচাপের একটি বড় কারণ। প্লাক দূর হলে রক্ত চলাচলের গতি বাড়ে। যার ফলে রক্তচাপও কমে আসে।
৯. লেবু
লেবু ভিটামিন সির বড় একটি উৎস। ভিটামিন সি কৈশিক নাড়ি শক্তিশালীকরণে সহায়ক। যার ফলে উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি কমে।
১০. সেলারি শাক
এতে রয়েছে এনবিপি নামের একটি নির্যাস। যা ধমনির দেয়ালগুলোকে শিথিল করে এবং রক্তপ্রবাহ বাড়ায়। ফলে রক্তচাপও কমে। এতে রয়েছে আঁশ, ম্যাগনেশিয়াম এবং পটাশিয়াম যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
সূত্র : টাইমস অফ ইন্ডিয়া