বুধবার | ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo খুবিতে রফিক আজম ট্রাভেল স্কলারশিপ চালুর লক্ষ্যে এমওইউ স্বাক্ষর Logo খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়ীজ এসোসিয়েশন সিবি’এর দোয়া মাহফিল Logo জলবায়ু সহিষ্ণু ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশের কৃষকদের সক্ষম করে তুলতে হবে— আন্তর্জাতিক সেমিনারে নোবিপ্রবি উপাচার্য Logo পুলিশের অভিযানে পলাশবাড়ীতে চোরাই মাল উদ্ধার : দুই ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী আটক Logo পলাশবাড়ীতে জুলাই যোদ্ধার বাবার প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের অভিযোগ Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ Logo বিএনপি চেয়ারপার্সনের রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় জীবননগরে ছাত্রদল ও শ্রমিকদের দোয়া Logo জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদারে ব্যাপক প্রস্তুতি সরকারের Logo কারুবাক পাণ্ডুলিপি পুরস্কার পেলেন এইচএম জাকির Logo চাঁদপুরে নতুন খাবারের আকর্ষণ ‘কাচ্চি ডাইন’ গ্রাহকদের ভিড় বেড়েই চলছে

প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলে কী ধরণের ঝুঁকিতে পড়বে সরকার

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৯:১০:৫৩ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
  • ৭৮৮ বার পড়া হয়েছে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ১০০ দিনের কার্যক্রম নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, আকাশচুম্বী জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ পুনরায় পুরোনো সংকটের দিকে ফিরে যেতে পারে, এমনকি সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের শঙ্কাও উত্থাপন করা হয়েছে।

আইসিজি’র প্রতিবেদন “আ নিউ এরা ইন বাংলাদেশ? দ্য ফার্স্ট হানড্রেড ডেজ অব রিফর্ম” গত ১৪ নভেম্বর প্রকাশিত হয়। এতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি জনগণের সমর্থন থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে তা অব্যাহত থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে।

গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার যদি দ্রুত এসব প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে জনগণের হতাশা, ক্ষোভ, এমনকি জনরোষে রূপ নিতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরীন বলেন, “জনগণের আশা ভঙ্গ হলে মব সন্ত্রাস ও অপরাধ বেড়ে যেতে পারে। এখনই বিভিন্ন অঞ্চলে ডাকাতি, নারী নিপীড়ন, এবং গণপিটুনির মতো ঘটনা ঘটছে, যা মানুষের নিরাপত্তাহীনতা বাড়াচ্ছে।”

প্রতিবেদন অনুসারে, সরকার এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হিমশিম খাচ্ছে। অর্থনীতির ধীর গতি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দ্রব্যের দাম কমতে সময় লাগবে। তবে এই মন্তব্য জনমনে আশার চেয়ে হতাশা তৈরি করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সম্প্রতি “চিকিৎসার দাবিতে” জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতরা ঢাকার সড়কে অবস্থান নেয়। এর পাশাপাশি বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ বাড়ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের সংস্কারমূলক কার্যক্রম যথাযথভাবে দৃশ্যমান না হলে, এই বিক্ষোভ আরও তীব্র হতে পারে।

আইসিজি’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা। সরকারের দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা জনগণের আস্থায় ফাটল ধরাতে পারে।

অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন বলেন, “জনগণ যে পরিবর্তন আশা করেছিল, তা এখনও দেখা যাচ্ছে না। সরকারের জন্য সবচেয়ে সম্মানজনক পথ হলো, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করা।”

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “অন্তর্বর্তী সরকার যত বেশি সময় ক্ষমতায় থাকবে, আগাম নির্বাচনের দাবি তত বেশি জোরালো হবে। এর ফলে সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে এবং দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ঝুঁকির মুখে পড়বে।”

প্রতিবেদন আরও বলে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা বজায় রাখতে হলে দ্রুত সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার ফলাফল দৃশ্যমান করা জরুরি।

আইসিজি’র বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থতা সরকারের জন্য অপ্রত্যাশিত সংকট তৈরি করতে পারে।

সূত্র: বিবিসি

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

খুবিতে রফিক আজম ট্রাভেল স্কলারশিপ চালুর লক্ষ্যে এমওইউ স্বাক্ষর

প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলে কী ধরণের ঝুঁকিতে পড়বে সরকার

আপডেট সময় : ০৯:১০:৫৩ পূর্বাহ্ণ, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ১০০ দিনের কার্যক্রম নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে, আকাশচুম্বী জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ পুনরায় পুরোনো সংকটের দিকে ফিরে যেতে পারে, এমনকি সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের শঙ্কাও উত্থাপন করা হয়েছে।

আইসিজি’র প্রতিবেদন “আ নিউ এরা ইন বাংলাদেশ? দ্য ফার্স্ট হানড্রেড ডেজ অব রিফর্ম” গত ১৪ নভেম্বর প্রকাশিত হয়। এতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি জনগণের সমর্থন থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে তা অব্যাহত থাকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে।

গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা অনেক বেশি। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার যদি দ্রুত এসব প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে জনগণের হতাশা, ক্ষোভ, এমনকি জনরোষে রূপ নিতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরীন বলেন, “জনগণের আশা ভঙ্গ হলে মব সন্ত্রাস ও অপরাধ বেড়ে যেতে পারে। এখনই বিভিন্ন অঞ্চলে ডাকাতি, নারী নিপীড়ন, এবং গণপিটুনির মতো ঘটনা ঘটছে, যা মানুষের নিরাপত্তাহীনতা বাড়াচ্ছে।”

প্রতিবেদন অনুসারে, সরকার এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হিমশিম খাচ্ছে। অর্থনীতির ধীর গতি এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দ্রব্যের দাম কমতে সময় লাগবে। তবে এই মন্তব্য জনমনে আশার চেয়ে হতাশা তৈরি করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

সম্প্রতি “চিকিৎসার দাবিতে” জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতরা ঢাকার সড়কে অবস্থান নেয়। এর পাশাপাশি বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ বাড়ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের সংস্কারমূলক কার্যক্রম যথাযথভাবে দৃশ্যমান না হলে, এই বিক্ষোভ আরও তীব্র হতে পারে।

আইসিজি’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা। সরকারের দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা জনগণের আস্থায় ফাটল ধরাতে পারে।

অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন বলেন, “জনগণ যে পরিবর্তন আশা করেছিল, তা এখনও দেখা যাচ্ছে না। সরকারের জন্য সবচেয়ে সম্মানজনক পথ হলো, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করা।”

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “অন্তর্বর্তী সরকার যত বেশি সময় ক্ষমতায় থাকবে, আগাম নির্বাচনের দাবি তত বেশি জোরালো হবে। এর ফলে সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে এবং দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ঝুঁকির মুখে পড়বে।”

প্রতিবেদন আরও বলে, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা বজায় রাখতে হলে দ্রুত সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার ফলাফল দৃশ্যমান করা জরুরি।

আইসিজি’র বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। না হলে জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থতা সরকারের জন্য অপ্রত্যাশিত সংকট তৈরি করতে পারে।

সূত্র: বিবিসি