বুধবার | ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo খুবিতে রফিক আজম ট্রাভেল স্কলারশিপ চালুর লক্ষ্যে এমওইউ স্বাক্ষর Logo খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়ীজ এসোসিয়েশন সিবি’এর দোয়া মাহফিল Logo জলবায়ু সহিষ্ণু ফসল উৎপাদনে বাংলাদেশের কৃষকদের সক্ষম করে তুলতে হবে— আন্তর্জাতিক সেমিনারে নোবিপ্রবি উপাচার্য Logo পুলিশের অভিযানে পলাশবাড়ীতে চোরাই মাল উদ্ধার : দুই ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী আটক Logo পলাশবাড়ীতে জুলাই যোদ্ধার বাবার প্রভাব খাটিয়ে জমি দখলের অভিযোগ Logo পর্যটক সেন্টমার্টিন পৌঁছলে ফুল দিয়ে পর্যটকদের বরণ Logo বিএনপি চেয়ারপার্সনের রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় জীবননগরে ছাত্রদল ও শ্রমিকদের দোয়া Logo জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদারে ব্যাপক প্রস্তুতি সরকারের Logo কারুবাক পাণ্ডুলিপি পুরস্কার পেলেন এইচএম জাকির Logo চাঁদপুরে নতুন খাবারের আকর্ষণ ‘কাচ্চি ডাইন’ গ্রাহকদের ভিড় বেড়েই চলছে

উপদেষ্টা হতে পারবেন না যারা

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০২:২৯:২৫ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
  • ৭৫২ বার পড়া হয়েছে

অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন উপদেষ্টা হিসেবে আরও ৩ জন শপথগ্রহণ করেছেন। রোববার (১০ নভেম্বর) বঙ্গভবনে শপথ নেন তিন উপদেষ্টা। এদিকে এই ঘটনার পর বৈষম্যবিরোধী সম্পাদক সারজিস আলম অভিযোগ করে বলেছেন, খুনি হাসিনার তেলবাজরাও উপদেষ্টা হচ্ছেন।

রোববার (১০ নভেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে দেওয়া স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ফ্যাসিবাদবিরোধী বিপ্লবী ছাত্র-জনতা বিতর্কিত ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অপসারণের দাবি তুলেছেন। সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক আওয়ামী সুবিধাভোগীদের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে সংগঠনটি।

অন্যদিকে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আইনি কাঠামোয় আনতে বা আইনি বৈধতা দিতে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ শিরোনামে অধ্যাদেশ জারি হতে যাচ্ছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে অধ্যাদেশ অনুসারে উপদেষ্টা হতে গেলে কেমন যোগ্যতা থাকা দরকার এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাদের কর্মকাণ্ড কী ধরনের উচিত তা উঠে এসেছে।

গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণ করে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পরামর্শে রাষ্ট্রপতি ওই সরকার গঠনের আদেশ দেন। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়টি নিয়ে কোনো উল্লেখ নেই।

এর আগে একসময় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কথা বলা ছিল। কিন্তু বিগত আওয়ামী শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত করা হয়। বর্তমানে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা এবং প্রধান উপদেষ্টা বা উপদেষ্টার পদ বলে কিছু আসলে নেই।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আইনি কাঠামোয় আনতে বা আইনি বৈধতা দিতেই ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ শিরোনামে অধ্যাদেশ জারি হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন আইনজীবীরা। ‘বাংলাদেশে এখন একটি বিশেষ সরকার কাজ করছে, যেটি গঠিত হয়েছে একটি বিশেষ অবস্থায়,’ গণমাধ্যমকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এমনটিই জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর এবং উপদেষ্টারা মন্ত্রীর পদমর্যাদা, পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন বলে প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি। এরপর প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শ অনুযায়ী অন্য উপদেষ্টারা নিযুক্ত হবেন।

শপথ গ্রহণের পর সরকারি কর্মচারীদের সহায়তায় উপদেষ্টা পরিষদ রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে এতদিন ২১ জন উপদেষ্টা দায়িত্ব পালন করলেও ধীরে ধীরে সেটির আকার বাড়ছে। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিক না হলে এবং বয়স ২৫ বছর পূর্ণ না হলে তিনি উপদেষ্টা হতে পারবেন না।

এছাড়াও কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন কিংবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করলেও তিনি শপথ নিতে পারবেন না। ঠিক একইভাবে, ব্যক্তি যদি কোনো আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষিত হন বা দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায় থেকে অব্যাহতি না পেয়ে থাকেন, তাহলেও তিনি উপদেষ্টার পদে বসতে পারবেন না।

এছাড়া নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্তত দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং মুক্তি পাওয়ার পর পাঁচ বছর পার না হলে উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার পদে যেতে পারবেন না।

এছাড়াও আরও উল্লেখ আছে, বাংলাদেশ কোলাবোরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল) অর্ডার, ১৯৭২ এর অধীন কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হলেও তিনি উপদেষ্টা হতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে রাজাকার বা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত কেউ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকতে পারবেন না।

এর পাশাপাশি উপদেষ্টার পদে অধিষ্ঠিত হতে হলে কোনো ব্যক্তিকে ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না’- মর্মেও সম্মতি জানাতে হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

খুবিতে রফিক আজম ট্রাভেল স্কলারশিপ চালুর লক্ষ্যে এমওইউ স্বাক্ষর

উপদেষ্টা হতে পারবেন না যারা

আপডেট সময় : ০২:২৯:২৫ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন উপদেষ্টা হিসেবে আরও ৩ জন শপথগ্রহণ করেছেন। রোববার (১০ নভেম্বর) বঙ্গভবনে শপথ নেন তিন উপদেষ্টা। এদিকে এই ঘটনার পর বৈষম্যবিরোধী সম্পাদক সারজিস আলম অভিযোগ করে বলেছেন, খুনি হাসিনার তেলবাজরাও উপদেষ্টা হচ্ছেন।

রোববার (১০ নভেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে দেওয়া স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ফ্যাসিবাদবিরোধী বিপ্লবী ছাত্র-জনতা বিতর্কিত ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে অপসারণের দাবি তুলেছেন। সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক আওয়ামী সুবিধাভোগীদের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসনের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করে সংগঠনটি।

অন্যদিকে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আইনি কাঠামোয় আনতে বা আইনি বৈধতা দিতে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ শিরোনামে অধ্যাদেশ জারি হতে যাচ্ছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে অধ্যাদেশ অনুসারে উপদেষ্টা হতে গেলে কেমন যোগ্যতা থাকা দরকার এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাদের কর্মকাণ্ড কী ধরনের উচিত তা উঠে এসেছে।

গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর ৮ আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণ করে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পরামর্শে রাষ্ট্রপতি ওই সরকার গঠনের আদেশ দেন। কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধানে অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়টি নিয়ে কোনো উল্লেখ নেই।

এর আগে একসময় নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার কথা বলা ছিল। কিন্তু বিগত আওয়ামী শাসনামলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর ফলে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিলুপ্ত করা হয়। বর্তমানে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা এবং প্রধান উপদেষ্টা বা উপদেষ্টার পদ বলে কিছু আসলে নেই।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আইনি কাঠামোয় আনতে বা আইনি বৈধতা দিতেই ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার অধ্যাদেশ, ২০২৪’ শিরোনামে অধ্যাদেশ জারি হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন আইনজীবীরা। ‘বাংলাদেশে এখন একটি বিশেষ সরকার কাজ করছে, যেটি গঠিত হয়েছে একটি বিশেষ অবস্থায়,’ গণমাধ্যমকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এমনটিই জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর এবং উপদেষ্টারা মন্ত্রীর পদমর্যাদা, পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন বলে প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করবেন রাষ্ট্রপতি। এরপর প্রধান উপদেষ্টার পরামর্শ অনুযায়ী অন্য উপদেষ্টারা নিযুক্ত হবেন।

শপথ গ্রহণের পর সরকারি কর্মচারীদের সহায়তায় উপদেষ্টা পরিষদ রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারে এতদিন ২১ জন উপদেষ্টা দায়িত্ব পালন করলেও ধীরে ধীরে সেটির আকার বাড়ছে। প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিক না হলে এবং বয়স ২৫ বছর পূর্ণ না হলে তিনি উপদেষ্টা হতে পারবেন না।

এছাড়াও কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন কিংবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করলেও তিনি শপথ নিতে পারবেন না। ঠিক একইভাবে, ব্যক্তি যদি কোনো আদালত কর্তৃক অপ্রকৃতিস্থ বলে ঘোষিত হন বা দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায় থেকে অব্যাহতি না পেয়ে থাকেন, তাহলেও তিনি উপদেষ্টার পদে বসতে পারবেন না।

এছাড়া নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্তত দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে এবং মুক্তি পাওয়ার পর পাঁচ বছর পার না হলে উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার পদে যেতে পারবেন না।

এছাড়াও আরও উল্লেখ আছে, বাংলাদেশ কোলাবোরেটরস (স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল) অর্ডার, ১৯৭২ এর অধীন কোনো অপরাধের জন্য দণ্ডিত হলেও তিনি উপদেষ্টা হতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে রাজাকার বা যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত কেউ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকতে পারবেন না।

এর পাশাপাশি উপদেষ্টার পদে অধিষ্ঠিত হতে হলে কোনো ব্যক্তিকে ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন না’- মর্মেও সম্মতি জানাতে হবে।