শিরোনাম :
Logo সাতক্ষীরায় ডিবি পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযান: ভারতীয় মদসহ একজন গ্রেফতার Logo বাংলাদেশে পরিচ্ছন্ন ও সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ প্রধান উপদেষ্টার Logo সাতক্ষীরায় বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ফ্রি চিকিৎসা সেবা ক্যাম্প Logo রাবিতে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ Logo বই মাসের শ্রেষ্ঠ সারথি পুরস্কার পাচ্ছেন জয়ন্তী ভৌমিক Logo সহপাঠীদের সাথে পুকুরে সাঁতার শিখতে গিয়ে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু Logo রাশিয়ায় ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প Logo সাইবার স্পেসে জুয়ার শাস্তি ২ বছরের কারাদণ্ড Logo ইউপিইউ কাউন্সিলে বাংলাদেশ পুনর্নির্বাচিত হওয়ায় প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন Logo ইবিতে যোগ হচ্ছে ইলেকট্রিক কার সেবা

কেন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় ভারতের চেয়ে দ্বিগুণ?

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০১:৪৪:৫৬ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪
  • ৭৪৩ বার পড়া হয়েছে

এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করছে বাংলাদেশ। এমনকি, প্রতিবেশি ভারতের মতো একই প্রযুক্তি ব্যবহার করেও, প্রতি ইউনিটে খরচ পড়ছে ৭৫ শতাংশ বেশি। এই ব্যয় পর্যালোচনার তাগিদ দিয়ে; তা সংশোধনের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

২০১৬ সালে পাবনার রূপপুরে এক হাজার বাষট্টি একর জমির ওপর প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা রোসাটমের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিলো। ঠিক পরের বছর, ২০১৭-তে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পূর্ণ উৎপাদনে এলে এখান থেকে মিলবে ২ হাজার ৪শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র। এই প্রকল্পের খরচ এক লাখ পঞ্চান্ন হাজার কোটি টাকার-ও বেশি। তার মানে, প্রতি ইউনিটে কেন্দ্র নির্মাণ ব্যয় দাড়াচ্ছে ৬ লাখ ৮৯ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। মূল প্রকল্পের বাইরে, অবকাঠামো তৈরিতে খরচ আরো সাড়ে ২৪ হাজার কোটি টাকা। এসব ব্যয় ভারতে নির্মিত একই প্রযুক্তির পারমা্ণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, এখন-তো সবকিছুর একটা আদর্শ অনুশীলন রয়েছে। স্ট্যান্ডার্ডের থেকে বেশি দিলে, কেউ খেয়ে হজম করতে পারবে না। শুধু, রাষ্ট্র সেটিকে চিহ্নিত করে ঘোষণা দিতে হবে। আর সেই ডিক্লারেশন যদি থাকে, তাহলে আদালত থেকে সেটি আদায় করে নেয়া সম্ভব। ভোক্তার স্বার্থ খর্ব করছে, এমন কোন শক্তি এখন এই যুগে নেই।

প্রতি ইউনিটে নির্মাণ ব্যয়ের হিসাব করলে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি খরচ হয় কেবল মাত্র যুক্তরাজ্যে। এশিয়ার সব দেশ তো বটে-ই; এমনকি ফ্রান্স ও রাশিয়ার চেয়ে বাংলাদেশের নির্মাণ ব্যয় অনেক বেশি। এসব ব্যয় তাই খতিয়ে দেখার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।

বেসরকারি সংস্থা সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, ভারতের যেসব পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উদাহরণ দেয়া হয়, সেগুলোর থেকে অনেক বেশি ব্যয়বহুলভাবে বাংলাদেশে তৈরি করা হচ্ছে। যেটা কোন বিচারেই তুলনীয় নয়। কী কারণে আসলে এমন চুক্তিটি হয়েছে কিংবা আমাদের কী পরিমাণ অপচয় হচ্ছে, সেটা হয়তো খতিয়ে দেখা যেতে পারে।

বুয়েটের প্রো উপাচার্য অধ্যাপক হাসিব চৌধুরী জানান, বিভিন্ন দেশের যে পরিমাণ ব্যয় হয়েছে, সেগুলোর দিকে তাকালে, আমাদের দেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যয় অস্বাভাবিক রকমের বেশি। বিদ্যুৎ খাতের যে কমিশনটি এগুলো তদন্ত করবে, সেই কমিশনটিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রোজেক্টটি-ও দেখতে হবে। সেই সঙ্গে তদন্ত করতে হবে, কেন এতো ব্যয়বহুল এই কেন্দ্র।

উল্লেখ্য, বিশাল এই প্রকল্পের ৯০ শতাংশই রাশিয়ার দেওয়া ঋণ। সেই ঋণ সুদসহ পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সাতক্ষীরায় ডিবি পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযান: ভারতীয় মদসহ একজন গ্রেফতার

কেন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ব্যয় ভারতের চেয়ে দ্বিগুণ?

আপডেট সময় : ০১:৪৪:৫৬ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৬ অক্টোবর ২০২৪

এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি খরচে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করছে বাংলাদেশ। এমনকি, প্রতিবেশি ভারতের মতো একই প্রযুক্তি ব্যবহার করেও, প্রতি ইউনিটে খরচ পড়ছে ৭৫ শতাংশ বেশি। এই ব্যয় পর্যালোচনার তাগিদ দিয়ে; তা সংশোধনের পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

২০১৬ সালে পাবনার রূপপুরে এক হাজার বাষট্টি একর জমির ওপর প্রকল্পটি বাস্তবায়নে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা রোসাটমের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিলো। ঠিক পরের বছর, ২০১৭-তে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পূর্ণ উৎপাদনে এলে এখান থেকে মিলবে ২ হাজার ৪শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ।

দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র। এই প্রকল্পের খরচ এক লাখ পঞ্চান্ন হাজার কোটি টাকার-ও বেশি। তার মানে, প্রতি ইউনিটে কেন্দ্র নির্মাণ ব্যয় দাড়াচ্ছে ৬ লাখ ৮৯ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। মূল প্রকল্পের বাইরে, অবকাঠামো তৈরিতে খরচ আরো সাড়ে ২৪ হাজার কোটি টাকা। এসব ব্যয় ভারতে নির্মিত একই প্রযুক্তির পারমা্ণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশনের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, এখন-তো সবকিছুর একটা আদর্শ অনুশীলন রয়েছে। স্ট্যান্ডার্ডের থেকে বেশি দিলে, কেউ খেয়ে হজম করতে পারবে না। শুধু, রাষ্ট্র সেটিকে চিহ্নিত করে ঘোষণা দিতে হবে। আর সেই ডিক্লারেশন যদি থাকে, তাহলে আদালত থেকে সেটি আদায় করে নেয়া সম্ভব। ভোক্তার স্বার্থ খর্ব করছে, এমন কোন শক্তি এখন এই যুগে নেই।

প্রতি ইউনিটে নির্মাণ ব্যয়ের হিসাব করলে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি খরচ হয় কেবল মাত্র যুক্তরাজ্যে। এশিয়ার সব দেশ তো বটে-ই; এমনকি ফ্রান্স ও রাশিয়ার চেয়ে বাংলাদেশের নির্মাণ ব্যয় অনেক বেশি। এসব ব্যয় তাই খতিয়ে দেখার পরামর্শ বিশ্লেষকদের।

বেসরকারি সংস্থা সিপিডি’র গবেষণা পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেম বলেছেন, ভারতের যেসব পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উদাহরণ দেয়া হয়, সেগুলোর থেকে অনেক বেশি ব্যয়বহুলভাবে বাংলাদেশে তৈরি করা হচ্ছে। যেটা কোন বিচারেই তুলনীয় নয়। কী কারণে আসলে এমন চুক্তিটি হয়েছে কিংবা আমাদের কী পরিমাণ অপচয় হচ্ছে, সেটা হয়তো খতিয়ে দেখা যেতে পারে।

বুয়েটের প্রো উপাচার্য অধ্যাপক হাসিব চৌধুরী জানান, বিভিন্ন দেশের যে পরিমাণ ব্যয় হয়েছে, সেগুলোর দিকে তাকালে, আমাদের দেশের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যয় অস্বাভাবিক রকমের বেশি। বিদ্যুৎ খাতের যে কমিশনটি এগুলো তদন্ত করবে, সেই কমিশনটিকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রোজেক্টটি-ও দেখতে হবে। সেই সঙ্গে তদন্ত করতে হবে, কেন এতো ব্যয়বহুল এই কেন্দ্র।

উল্লেখ্য, বিশাল এই প্রকল্পের ৯০ শতাংশই রাশিয়ার দেওয়া ঋণ। সেই ঋণ সুদসহ পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে।