চুয়াডাঙ্গা দৌলতদিয়াড় বিএডিসিতে আরিফ ও ডাবলু গ্রুপের অস্ত্রের মহড়া : অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন
নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গায় বাংলাদেশ এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের (বিএডিসি) শ্রমিকদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের আটজন আহত হয়েছেন। আহত অবস্থায় তাঁদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে আহত দুইজনের অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। গতকাল শনিবার সকালে শহরের দৌলতদিয়াড় এলাকায় বিএডিসির প্রধান ফটকের সামনে এ সংঘষের্র ঘটনা ঘটে।
শ্রমিকরা জানান, বিএডিসিতে শ্রমিকদের কাজ করা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল লেবার (শ্রমিক) সর্দার আরিফ ও ডাবলুর মধ্যে। এ বিরোধের জের ধরে শনিবার সকালে বিএডিসির প্রধান ফটকের সামনে ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এত ধারালো অস্ত্রের আঘাতে উভয় পক্ষের আটজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে স্থানীয় লোকজন আহত অবস্থায় শ্রমিক সর্দার আরিফ, আনারুল, তারিক, ফারুক, ডাবলু, রাকিব, কাদের ও ইয়াসিনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ চিকিৎসারত অবস্থায় আনারুল ও ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আওলিয়ার রহমান জানান, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আটজনের শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর জখমের চিহ্ন রয়েছে। তাঁদের মধ্যে আরিফ ও ডাবলুর মাথা-ঘাড়সহ শরীরের বিভিন্ন স্থান গুরুত্বর জখম হওয়াই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির শ্রমিক সর্দার আহত আরিফ বলেন, ‘কাজে ফাঁকি দেওয়ার কারণে কয়েক দিন আগে ডাবলুকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এ কারণে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। এ ছাড়া কাজ না করে সাধারণ শ্রমিকদের কাছ থেকে জোরপূর্বক টাকা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এসব কারণে ডাবলুর বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে সে বহিরাগতদের নিয়ে আমার ওপর হামলা চালায়।’
তবে ডাবলু এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ শ্রমিকদের জিম্মি করে রেখেছিল শ্রমিক নামধারী আরিফ। এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে আমাকে চাকরি থেকে বিতাড়িত করা হয়।’ হামলার বিষয়ে আরিফ ও তাঁর পক্ষের লোকজনকে দায়ী করেন ডাবলু।
চুয়াডাঙ্গা বিএডিসির উপপরিচালক শামিমুর রহমান জানান, কাজে ফাঁকি দেওয়াকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের মধ্যে এর আগেও কথা-কাটাকাটি হয়েছিল। এ বিষয়ে তাঁদের সতর্কও করা হয়েছিল। তবে ঘটনাটি আজ সংঘর্ষে রূপ নেয়। সংঘর্ষের ঘটনার পর নিরাপত্তা চেয়ে বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হয়েছে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, সংঘর্ষের পর বিএডিসিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষ থেকেই চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় পাল্লাপাল্টি মামলা করা হয়েছে।