শুক্রবার | ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo চাঁদপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের পিতার মৃত্যুতে দোয়া Logo জাতীয় ছাত্রশক্তি জাবি শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা Logo জাবিতে ইলিয়াস ও পিনাকীর কুশপুত্তলিকা দাহন Logo পদত্যাগ করলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ Logo সাতক্ষীরা-কলারোয়া সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযানে ভারতীয় মদ ও ঔষধসহ আড়াই লক্ষাধিক টাকার চোরাচালানী মালামাল জব্দ Logo কয়রায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালন উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা Logo চাঁদপুর ভূঁইয়ার ঘাট ডিঙ্গি মাঝি সমবায় সমিতির ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন Logo টেকনাফে বিজিবির অভিযানে সাগর পথে মানব পাচারকালে দুই দালালসহ ৭ জন ভিকটিম উদ্ধার Logo দেশকে এগিয়ে নেয়ার ‘ডিটেইল প্ল্যানিং’ শুধু বিএনপির আছে: তারেক রহমান Logo রাশিয়াকে ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার কোনো অধিকার নেই কিয়েভের : জেলেনস্কি

কামারখন্দের কেঁচো সার কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে চাহিদা বাড়ছে জেলা ব্যাপী

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৩:২১:০৯ অপরাহ্ণ, শনিবার, ৬ মে ২০১৭
  • ৭৮৪ বার পড়া হয়েছে

রাকিবুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ  সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের  কেঁচো সার কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠার পাশাপাশি এর চাহিদা বেড়ে চলেছে জেলা ব্যাপী । এর উৎপাদন ও ব্যবহারে সফলতার মুখ দেখছেন কৃষক। এলাকার বিভিন্ন গো খামার থেকে গোবর ক্রয় করে কেঁচো কম্পোস্ট তৈরী করা হয়। এতে করে একদিকে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে না অপরদিকে জৈব সার উৎপাদন হচ্ছে। জেলার কামারখন্দ উপজেলার স্থানীয় কৃষি বিভাগ ও এনডিপি নামক একটি বেসরকারি সংস্থা কেঁচো সার উৎপাদন ও ব্যবহারের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করে আসছে। উপজেলার শতাধিক কেঁচো সার উৎপাদনকারী রয়েছেন তারা প্রায় ১হাজার ৮শ’ টি রিং স্থাপন করে গোবরের মাধ্যমে সার উৎপাদন করে আসছেন। প্রতি ২৮দিনে উল্লেখিত রিং থেকে প্রায় ৭৫ টন কেঁচো সার উৎপাদন করা সম্ভব। ফসলের যে সমস্ত রোগবালাই হয় তার ৮০ ভাগ ছত্রাকজনিত। মাটিবাহিত যে সমস্ত ছত্রাক রাসায়নিক ছত্রাক দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না কেঁচো সারের মধ্যে থাকা ট্রাইকোডার্মা নামক অনুজীব সেগুলোকে ধ্বংস করে। মাটিবাহিত ছত্রাকের অবস্থান গাছের শিকরে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয় গাছের পাতায় যে কারণে মাটিবাহিত ছত্রাক ধ্বংস হয় না। ট্রাইকোডার্মা অনুজীব গাছের শিকরে অবস্থান করে যার ফলে অপকারী ছত্রাকগুলোর সেলওয়াল ভেঙ্গে দেয় এবং নেমাটোড ধ্বংস করে। উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের কেঁচো সার উৎপাদনকারী কৃষিবিদ মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, বিশ্বে ১৮শ’ ৬০ প্রজাতির কেঁচো রয়েছে। আমরা ইসিনিয়া ফেটিডা ও ইসিনিয়া এন্ড্রিয়া প্রজাতির কেঁচো দ্বারা সার তৈরী থাকি। কারন এই দু’প্রজাতির কেঁচো খাদ্য গ্রহন বেশি করায় মল ত্যাগ বেশি করে ফলে সার উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। আমি কেঁচো সার উৎপাদন করে লাভবান হয়েছি। রসুলপুর গ্রামের কৃষক রইচ উদ্দিন জানান, আমি আগে ইউরিয়া সহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার ব্যবহার করেছি । কিন্তু কেঁচো সার আসার পর থেকে কেঁচো সার ব্যবহার করি। আগের তুলনায় এখন আমার খরচ কম হয় এবং ফসলের ফলন বেশি হয়।  সোনালী বাংলা ফার্টিলাজারের কেঁচো সার উৎপাদনকারী আ. রহমান জানান, আমি দীর্ঘদিন বিদেশ ছিলাম। দেশে আসার পর কোন কাজকর্ম না পেয়ে গোবর দিয়ে কেঁচো সার উৎপাদনে নেমে পরি। এখন আমার প্রচুর টাকা হয়েছে।
ভায়ারচর গ্রামের কেঁচো সার ব্যবহারকারী কৃষক আ. কাদের জানান, কেঁচো সার উৎপাদন করা সহজ। এ সার জমিতে প্রয়োগ করলে মাটির উর্বরতা ও পানি ধারণ ক্ষমতা এবং গাছের আয়ুকালও বৃদ্ধি পায়। তাই অন্যন্য সার ব্যবহার না করে কেঁচো সার ব্যবহার করি।
কামারখন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিরুল ইসলাম সরকার জানান, কেঁচো সারে প্রচুর প্ররিমাণে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম সালফার ও কপার বেশি পরিমাণে থাকে এবং গ্রহনযোগ্য আকারে থাকে যার ফলে গাছ অতি সহজেই গ্রহন করে। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সকল কৃষককে কেঁচো সার ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কেঁচো সার প্রথমত কানাডায় উৎপত্তি হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের ৩২টি দেশে কেঁচো কম্পোস্ট উৎপাদন ও বাজারজাত করা হয়।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চাঁদপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের পিতার মৃত্যুতে দোয়া

কামারখন্দের কেঁচো সার কৃষকের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে চাহিদা বাড়ছে জেলা ব্যাপী

আপডেট সময় : ০৩:২১:০৯ অপরাহ্ণ, শনিবার, ৬ মে ২০১৭

রাকিবুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ  সিরাজগঞ্জের কামারখন্দের  কেঁচো সার কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠার পাশাপাশি এর চাহিদা বেড়ে চলেছে জেলা ব্যাপী । এর উৎপাদন ও ব্যবহারে সফলতার মুখ দেখছেন কৃষক। এলাকার বিভিন্ন গো খামার থেকে গোবর ক্রয় করে কেঁচো কম্পোস্ট তৈরী করা হয়। এতে করে একদিকে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে না অপরদিকে জৈব সার উৎপাদন হচ্ছে। জেলার কামারখন্দ উপজেলার স্থানীয় কৃষি বিভাগ ও এনডিপি নামক একটি বেসরকারি সংস্থা কেঁচো সার উৎপাদন ও ব্যবহারের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদান করে আসছে। উপজেলার শতাধিক কেঁচো সার উৎপাদনকারী রয়েছেন তারা প্রায় ১হাজার ৮শ’ টি রিং স্থাপন করে গোবরের মাধ্যমে সার উৎপাদন করে আসছেন। প্রতি ২৮দিনে উল্লেখিত রিং থেকে প্রায় ৭৫ টন কেঁচো সার উৎপাদন করা সম্ভব। ফসলের যে সমস্ত রোগবালাই হয় তার ৮০ ভাগ ছত্রাকজনিত। মাটিবাহিত যে সমস্ত ছত্রাক রাসায়নিক ছত্রাক দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না কেঁচো সারের মধ্যে থাকা ট্রাইকোডার্মা নামক অনুজীব সেগুলোকে ধ্বংস করে। মাটিবাহিত ছত্রাকের অবস্থান গাছের শিকরে রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয় গাছের পাতায় যে কারণে মাটিবাহিত ছত্রাক ধ্বংস হয় না। ট্রাইকোডার্মা অনুজীব গাছের শিকরে অবস্থান করে যার ফলে অপকারী ছত্রাকগুলোর সেলওয়াল ভেঙ্গে দেয় এবং নেমাটোড ধ্বংস করে। উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামের কেঁচো সার উৎপাদনকারী কৃষিবিদ মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, বিশ্বে ১৮শ’ ৬০ প্রজাতির কেঁচো রয়েছে। আমরা ইসিনিয়া ফেটিডা ও ইসিনিয়া এন্ড্রিয়া প্রজাতির কেঁচো দ্বারা সার তৈরী থাকি। কারন এই দু’প্রজাতির কেঁচো খাদ্য গ্রহন বেশি করায় মল ত্যাগ বেশি করে ফলে সার উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। আমি কেঁচো সার উৎপাদন করে লাভবান হয়েছি। রসুলপুর গ্রামের কৃষক রইচ উদ্দিন জানান, আমি আগে ইউরিয়া সহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার ব্যবহার করেছি । কিন্তু কেঁচো সার আসার পর থেকে কেঁচো সার ব্যবহার করি। আগের তুলনায় এখন আমার খরচ কম হয় এবং ফসলের ফলন বেশি হয়।  সোনালী বাংলা ফার্টিলাজারের কেঁচো সার উৎপাদনকারী আ. রহমান জানান, আমি দীর্ঘদিন বিদেশ ছিলাম। দেশে আসার পর কোন কাজকর্ম না পেয়ে গোবর দিয়ে কেঁচো সার উৎপাদনে নেমে পরি। এখন আমার প্রচুর টাকা হয়েছে।
ভায়ারচর গ্রামের কেঁচো সার ব্যবহারকারী কৃষক আ. কাদের জানান, কেঁচো সার উৎপাদন করা সহজ। এ সার জমিতে প্রয়োগ করলে মাটির উর্বরতা ও পানি ধারণ ক্ষমতা এবং গাছের আয়ুকালও বৃদ্ধি পায়। তাই অন্যন্য সার ব্যবহার না করে কেঁচো সার ব্যবহার করি।
কামারখন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিরুল ইসলাম সরকার জানান, কেঁচো সারে প্রচুর প্ররিমাণে নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম সালফার ও কপার বেশি পরিমাণে থাকে এবং গ্রহনযোগ্য আকারে থাকে যার ফলে গাছ অতি সহজেই গ্রহন করে। উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সকল কৃষককে কেঁচো সার ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কেঁচো সার প্রথমত কানাডায় উৎপত্তি হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের ৩২টি দেশে কেঁচো কম্পোস্ট উৎপাদন ও বাজারজাত করা হয়।