গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ১৩ বছরের এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে অমানসিক ভাবে ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। এসময় দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, যা ক্যাম্পাসের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে সমবেত হয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ মধ্যে দিয়ে শেষ হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিচার দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং ঘটনাটির ন্যায়বিচার নিশ্চিতে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের আহ্বান জানান।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশরাফী, কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম আশরাফ উদ্দীন খান। এছাড়াও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ সমন্বয়ক তানভীর মন্ডল, গোলাম রব্বানী, ইয়াসুর কবির, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের শাখার সেক্রেটারী সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আলী, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত। এছাড়াও প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী এই মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম আশরাফ উদ্দীন খান বলেন, “গাজীপুরের এই ঘটনা প্রত্যেক মুসলমানের হৃদয়কে ব্যথিত করেছে। মুসলমানরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতো, তবে কোনো অপশক্তির পক্ষে মুসলিম নারীর গায়ে হাত তোলা সাহস পেতেন না ।”
তিনি আরো বলেন, “আজকে যেমন আমরা প্রতিবাদ মিছিলে এখানে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, তেমনি এটার যেন সুবিচার নিশ্চিত হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। কেননা আজকে এই সুবিচার নিশ্চিত না হওয়ায় কারণে এই ধরনের বৃদ্ধি পেয়েছে।”
অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান আশরাফী বলেন, “যে দেশে ৯১% শতাংশ মানুষ মুসলিম, সে দেশে এ ধরনের ধর্ষণের মতো ঘটনা কখনোই কাম্য নয়। সমাজে নৈতিক অবক্ষয়ের কারণে এসব অপরাধ ঘটছে। ইসলামী পর্দা ও শালীনতা রক্ষা করা প্রতিটি মুসলিম নারীর জন্য ফরজ ইবাদত।”
তিনি আরও বলেন, “ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তাওহীদি জনতা আজ যে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে, তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়া উচিত। এছাড়াও পরবর্ততে যেন এ ধরণের প্রতিবাদ মিছিলে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি সেজন্য তিনি সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।”
উল্লেখ্য, উল্লেখ্য, ধর্ষণের শিকার ওই মাদ্রাসাছাত্রীর কান্নাজড়িত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, কালিয়াকৈরের মৌচাক এলাকায় প্রতিবেশী সঞ্জিত বর্মণ ও লোকনাথ চন্দ্র দাসের সহযোগিতায় লোকনাথের ভাগিনা জয় কুমার দাস ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে তিন দিন আটকে রেখে ধর্ষণ করে।
এ ঘটনায় ইতোমধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে।