শিরোনাম :
Logo ঘোনা ইউনিয়ন ছাত্রদলের কর্মীসভা ও ৩১ দফা ভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠিত! Logo খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলাদেশ মার্কেটিং ডে’ উদযাপন! Logo চাঁদপুর- ২ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ড. তোফাজ্জল হোসেন মতলবকে জাপানের মতো করে সাজাতে চায় Logo কয়রায় যৌথবাহিনীর নিয়মিত চেকপোস্ট, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সচেষ্ট অভিযান Logo মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিবের সঙ্গে ঝিকুট ফাউন্ডেশনের সৌজন্য সাক্ষাৎ Logo এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৫৮.৮৩ Logo জীবননগরে আন্ত:জেলা চোর সিন্ডিকেটের প্রধান সাগর ২ সহযোগীসহ গ্রেফতার Logo পঁচিশ বাসে করে সাত ধাপে ক্যাম্পাসে আসছে শিক্ষার্থীরা Logo জুলাই আন্দোলনে নামাজ পড়তে বাধাদানে অভিযুক্ত বরখাস্ত শিক্ষককে ফেরাতে বিভাগের শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি Logo কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৫ শুরু

চাঁদপুর- ২ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ড. তোফাজ্জল হোসেন মতলবকে জাপানের মতো করে সাজাতে চায়

এমপি নির্বাচিত হলে চাঁদপুর- ২ আসন মতলব উত্তর ও  মতলব দক্ষিন দুই উপজেলাকে জাপানের মতো করে সাজাবে এমন মন্তব্যকরে  মতলব উত্তর উপজেলার এখলাছপুর ইউনিয়নের কৃতি সন্তান  বিএনপি‘র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বিএনপি‘র  চাঁদপুর- ২ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ড.মো: তোফাজ্জল হোসেন।

বুধবার ( ১৫ অক্টোবর ) রাতে তার নিজবাস ভবনে  সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বিএনপির রাজনীতি করার কারন উল্লেখকরে তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয়েছিল ছাত্রজীবনে, বিশেষ করে ১৯৮৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই আমি সক্রিয়ভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হই।
বিএনপির প্রতি আমার গভীর ভালোবাসা ও অটল বিশ্বাসের মূল উৎস শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
তার দেশপ্রেম, সততা, ন্যায়পরায়ণতা, সাহসিকতা ও যুগান্তকারী চিন্তাধারা আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক — যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে শুরু করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সার্ক গঠন, সরকারীভাবে বিদেশে কর্মী প্রেরণ, বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্পের সূচনা, খাল কাটা কর্মসূচি, জাতীয় প্রেসক্লাব ও শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠা এবং “নতুন কুঁড়ি” অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুদের বিকাশের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন।

আমি তখন ছোট ছিলাম, যখন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শহীদ হন। আমার পিতা মরহুম আব্দুল আজিজ মিয়া ছিলেন তৎকালীন মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানার টি. এ. ও.। তিনি তখন জানাজায় অংশ নিতে সাটুরিয়া থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। তাঁর চোখে শহীদ জিয়ার প্রতি যে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আমি দেখেছি, তা আমার হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলেছিল।

এরপরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন সংগ্রাম, অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর দৃঢ় অবস্থান আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করেছে। আমি তাঁর সরাসরি নির্দেশে কাজ করার দায়িত্ব পেয়েছিলাম — যা আমার জীবনের এক গর্বের অধ্যায়। আমি বিশ্বাস করি, তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক জীবন্ত কিংবদন্তি- যার জীবনে পরাজনের বিন্দু মাত্র লেশ নেই। যার নেতৃত্বে এই দেশ থেকে দুই স্বৈরাচারের পতন হয়েছে।

তিনি অন্যায়ের বীরুধে এক আপোষহীন ও অবিচল সংগ্রামের প্রতীক।
এছাড়াও, শত নির্যাতন ও নিপীড়নের পরেও সুদূর লন্ডন থেকে তারেক রহমানের অবিচল নেতৃত্ব, দেশের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এবং জনগণের প্রতি অঙ্গীকার আমাকে বিএনপির প্রতি এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। বিএনপি আমার কাছে কেবল একটি রাজনৈতিক দল-ই নয় — এটি আমার বিশ্বাস, এবং আমার আদর্শ।

রাজনৈতিক জিবনে সফলতা ও ব্যর্থতার কথা উল্লেখকরে  ড.মো: তোফাজ্জল হোসেন বলেন, রাজনীতি এমন একটি পেশা যেখানে সফলতা বা ব্যর্থতার হিসাব হয় না।

আগের প্রশ্নে যেমনটা উল্লেখ করেছি, ছাত্রদলের একজন সৈনিক হিসেবে আমি ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম, ছাত্রদলের রাজনীতি করেছি এবং ছাত্রদলের সেন্ট্রাল কমিটিতেও দায়িত্ব পালন করেছি। ছাত্রজীবন শেষ করে আমি বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছি এবং এখনও যুক্ত আছি। তবে কখনোই সফলতা বা ব্যর্থতার হিসাব করিনি।
আবার রাজনীতি করতে গিয়ে আমি আমার একাডেমিক ও পেশাগত জীবনকেও অবজ্ঞা  করিনি। বাংলাদেশে আমি অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছি এবং ২০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। এরপরে জাপান থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এ এম এস ডিগ্রী অর্জন করেছি।
এবং ১৮৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত জাপানের প্রসিদ্ধ ওয়াসেদা ইউইনিভার্সিটি থেকে  Artificial Intelligence (AI) এর উপর ডক্টরেট (Ph.D.) ডিগ্রী অর্জন করেছি। আমি জাপানের Hitachi Ltd. -এ টেকনিক্যাল ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছি এবং সর্বশেষ Microsoft Japan-এর Data & AI ডিভিশনের ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছি।
একই সময়ে, তারেক রহমানের নির্দেশে জাপানে থেকেও আমি বিএনপির পক্ষে—বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে—আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, যার বিস্তারিত বর্ণনা এই ক্ষুদ্র পরিসরে দেয়া সম্ভব নয়।
আমার এই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ জনাব তারেক রহমান আমাকে তার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টারদায়িত্ব দিয়েছেন। আমি এটিকে আমার একটি সফলতা এবং কাজের স্বীকৃতি হিসেবে দেখি, এবং এই স্বীকৃতিতে আমি গর্বিত।
পাশাপাশি, গত ২৪ বছর জাপানে থেকে আমি জাপানের মানুষের সততা, ন্যায়পরায়নতা, কাজের মান বা কোয়ালিটি ও কমিটমেন্ট দেখেছি এবং তা থেকে শিক্ষার চেষ্টা করেছি।
আমি মনে করি, রাজনীতিতে যদি কিছু দিতে চাই, দেশ ও দেশের জনগণকে যদি কিছু দিতে চাই, তবে সবার আগে নিজেকে দেয়ার মতো করে তৈরি করতে হবে। রাজনীতিতে হয়তো আমি বড় নেতা হতে পারিনি, তবে নিজেকে ডেভেলপ করার চেষ্টা করেছি।
আমি বিশ্বাস করি, সেই চেষ্টায় আমি অনেকটাই সার্থক হতে পেরেছি। আমার এই ডেভেলপমেন্ট ও অভিজ্ঞতা আমি দেশের জনগণের জন্য, বিশেষ করে মতলবের জনগণের জন্য প্রয়োগ করতে চাই। আমি মনে করি এটি হবে আমার জন্য এক বিরাট সফলতা।
আবার মনে করুন, আমি চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ) থেকে বিএনপির পক্ষে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। দল আমাকে মনোনয়ন দিতে পারে, আবার নাও দিতে পারে। আমি এটিকে কখনোই ব্যর্থতা বলে মনে করব না। মনোনয়ন না পেলেও বিএনপির প্রতি আমার ভালোবাসা একটুও কমবে না।
আমি বিএনপির রাজনীতি করি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং এই প্রজন্মের অহংকার জনাব তারেক রহমানের প্রতি ভালোবাসা ও তাদের কাজের প্রতি শ্রদ্ধার কারণে। এই ভালোবাসায় আমি সফলতা বা ব্যর্থতা খুঁজতে চাই না। যা পেয়েছি, সেটি যেমন আমার সফলতা; আর যা পাইনি বা পাবনা, সেটিও আমার সফলতার অংশ বলে মনে করি।
এই প্রসঙ্গে, আমার পি এইচ ডি-র এডভাইজার Dr. Kotaro Hirasawa-র একটি এডভাইজের কথা আমার মনে পরে যায়। আমার রিসার্স প্রগ্রেস নিয়ে উনি একবার আমাকে বলেছিলেন:
“Mr. Hossain, you got a result is not a research. Research is, why you got this result, why you didn’t get a different result”.
একইভাবে, আমি মনে করি, রাজনীতিও এক ধরনের রিসার্চের মতো—যেখানে কেবল ফলাফল পাওয়া বা সফলতাই মুখ্য হতে পারে না।

দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার কথা উল্লেখকরে  তিনি বলেন,আমি দলীয় মনোনয়ন চাইব, আমি ইতোমধ্যে এলাকায় প্রচারনা চালাচ্ছি। মনোনয়নের বিষয়ে আমি অত্যন্ত আশাবাদী। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দল নেবে, আর দল যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটিই আমার কাছে সর্বোচ্চ।

আমি বিএনপির রাজনীতি করি দল ও নেতৃত্বের প্রতি ভালোবাসা থেকে, ক্ষমতার জন্য নয়। তাই দল থেকে মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবো না।

মতলব কে নিয়ে তার পরিকল্পনার কথা উল্লেখকরে তিনি বলেন,আমি চাই আমার ২৪ বছরের জাপান জীবনের শিক্ষা, অভিজ্ঞতা এবং অর্জিত জ্ঞান দিয়ে মতলব উত্তর ও দক্ষিণকে জাপানের মতো করে সাজাতে—যার ভিত্তি হবে সততা, ন্যায্যতা, জবাবদিহিতা, মানসম্মত শিক্ষা, কর্মসংস্থান, উন্নয়নের নিশ্চয়তা এবং সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা।

আমি চাই মতলবকে এমনভাবে গড়ে তুলতে, যেখানে প্রতিটি নাগরিক নিজেকে নিরাপদ, সম্মানিত এবং গর্বিত বোধ করবে।
পাশাপাশি, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য থাকবে উন্নত জীবনের নিশ্চয়তা এবং তারা হবে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একটি উন্নত সমাজ কেবল অবকাঠামোর উন্নয়ন দিয়েই তৈরি হয় না। এর জন্য প্রয়োজন সততা, ন্যায্যতা, জবাবদিহিতা এবং জনগণের অংশগ্রহণের উপর দাঁড়ানো একটি শক্তিশালী ও সুশাসিত কাঠামো। মতলব উত্তর ও দক্ষিণকে ঠিক সেই কাঠামোর উপর দাঁড় করানোই আমার মূল লক্ষ্য। আমি চাই এখানে প্রতিটি মানুষ একটি সুন্দর সামাজিক পরিবেশে স্বচ্ছন্দে বসবাস করুক, শান্তিতে থাকুক এবং উন্নয়নের সুফল প্রত্যেকের কাছে সমানভাবে পৌঁছুক।

বিএনপি‘র দলীয় নেতা- কর্মিদের উদ্দ্যশ্যকরে তিনি বলেন,আপনারা অবশ্যই জানেন যে বিগত ১৭ বছরে বিএনপি-র নেতা-কর্মীরা যে ত্যাগ ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়।

স্বৈরাচারী সরকারের হাতে সবচেয়ে বেশি নিপীড়িত হয়েছে বিএনপি, এর অঙ্গসংগঠন, ও জিয়া পড়িবার। প্রায় ১,২০০ নেতা-কর্মী খুন ও গুমের শিকার হয়েছেন, এবং ডেইলি স্টার রিপোর্ট অনুযায়ী,  ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রায় ১,৪১,৬৩৬টি মামলায় ৪,৯২৬,৪৯৪ জন নেতা-কর্মী অভিযুক্ত হয়েছেন।
এই ভয়াবহ দমন-পীড়নের মধ্যেও তারা দল ত্যাগ করেননি, আপস করেননি, বরং বুকে অসীম সাহস নিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই চালিয়ে গেছেন। তাদের এই অবদান দল, জাতি ও ইতিহাস কখনো ভুলবে না।

এলাকাবাসীর সাথে ওয়াদা করে তিনি বলেন,মতলবই আমার স্বপ্ন, মতলবই আমার ভালোবাসা, তাই অবশ্যই আমার প্রিয় মতলবে বসবাসকারী সকলের কাছে অবশ্যই আমার  বলার কিছু আছে।

মতলবের প্রতিটি মানুষকে আমি বলতে চাই যে, আমি চাই মতলবকে একটি আধুনিক, ন্যায়ভিত্তিক, সুখী, সমৃদ্ধ এবং শান্তিময় অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে। আমি চাই মতলব হোক সততা, শান্তি এবং উন্নয়নের প্রতীক। এখানকার প্রতিটি কাজ, প্রতিটি উন্নয়ন, প্রতিটি সেবা হোক জাপানের মতো দক্ষতা, মান সম্পন্ন (Quality) এবং কমিটমেন্টের প্রতিফলন।
আমি মতলবের প্রতিটি মানুষকে এই বলে ওয়াদা করতে চাই যে—আমি নিজে কখনো অন্যায় করব না, এবং কাউকেও অন্যায় করার সুযোগ দেব না।
আমি আপনাদের কাছে এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, আমার কারণে মতলবের কোনো একজন মানুষও ন্যূনতম কষ্ট পেতে পারেন, এমন কোনো কাজ আমি করব না। কখনো কারো অধিকার হরণ করার চেষ্টা করব না, এবং কাউকেও তা করতেও দেব না। আপনাদের নুন্যতম ক্ষতি হয়, নুন্যতম কষ্ট হয়, এমন কোন কাজ আমি করবনা।

মতলবের প্রতিটি মানুষকে তার আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা এবং সকলের সুস্থ্যকামনা করে ড.মো: তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি ওয়াদা করছি, মতলব হবে সত্য ও ন্যায়ের প্রতীক। আমি চাই মতলবকে তথাকথিত রাজনীতির ঘূর্ণি থেকে বের করে এনে একটি সুস্থ, আধুনিক ও মানবিক সমাজে পরিনত করতে—ঠিক যেমনটি আমি জাপানে দেখেছি ও শিখেছি।

আমার এই স্বপ্ন ও ওয়াদা বাস্তবায়নের পবিত্র কাজে দল-মত নির্বিশেষে মতলবের প্রতিটি মানুষের দোয়া, ভালোবাসা ও অকৃত্রিম সমর্থনই আমার শক্তি হিসেবে কাজ করবে। আমি আপনাদের দোয়া, ভালবাসা ও সমর্থন চাই।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ঘোনা ইউনিয়ন ছাত্রদলের কর্মীসভা ও ৩১ দফা ভিত্তিক আলোচনা অনুষ্ঠিত!

চাঁদপুর- ২ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ড. তোফাজ্জল হোসেন মতলবকে জাপানের মতো করে সাজাতে চায়

আপডেট সময় : ০৯:১০:০০ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
এমপি নির্বাচিত হলে চাঁদপুর- ২ আসন মতলব উত্তর ও  মতলব দক্ষিন দুই উপজেলাকে জাপানের মতো করে সাজাবে এমন মন্তব্যকরে  মতলব উত্তর উপজেলার এখলাছপুর ইউনিয়নের কৃতি সন্তান  বিএনপি‘র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বিএনপি‘র  চাঁদপুর- ২ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ড.মো: তোফাজ্জল হোসেন।

বুধবার ( ১৫ অক্টোবর ) রাতে তার নিজবাস ভবনে  সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বিএনপির রাজনীতি করার কারন উল্লেখকরে তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয়েছিল ছাত্রজীবনে, বিশেষ করে ১৯৮৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই আমি সক্রিয়ভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হই।
বিএনপির প্রতি আমার গভীর ভালোবাসা ও অটল বিশ্বাসের মূল উৎস শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।
তার দেশপ্রেম, সততা, ন্যায়পরায়ণতা, সাহসিকতা ও যুগান্তকারী চিন্তাধারা আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী রাষ্ট্রনায়ক — যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা থেকে শুরু করে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, সার্ক গঠন, সরকারীভাবে বিদেশে কর্মী প্রেরণ, বাংলাদেশের গার্মেন্ট শিল্পের সূচনা, খাল কাটা কর্মসূচি, জাতীয় প্রেসক্লাব ও শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠা এবং “নতুন কুঁড়ি” অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুদের বিকাশের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিলেন।

আমি তখন ছোট ছিলাম, যখন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শহীদ হন। আমার পিতা মরহুম আব্দুল আজিজ মিয়া ছিলেন তৎকালীন মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানার টি. এ. ও.। তিনি তখন জানাজায় অংশ নিতে সাটুরিয়া থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। তাঁর চোখে শহীদ জিয়ার প্রতি যে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আমি দেখেছি, তা আমার হৃদয়ে গভীর ছাপ ফেলেছিল।

এরপরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আপসহীন সংগ্রাম, অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর দৃঢ় অবস্থান আমাকে আরও অনুপ্রাণিত করেছে। আমি তাঁর সরাসরি নির্দেশে কাজ করার দায়িত্ব পেয়েছিলাম — যা আমার জীবনের এক গর্বের অধ্যায়। আমি বিশ্বাস করি, তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক জীবন্ত কিংবদন্তি- যার জীবনে পরাজনের বিন্দু মাত্র লেশ নেই। যার নেতৃত্বে এই দেশ থেকে দুই স্বৈরাচারের পতন হয়েছে।

তিনি অন্যায়ের বীরুধে এক আপোষহীন ও অবিচল সংগ্রামের প্রতীক।
এছাড়াও, শত নির্যাতন ও নিপীড়নের পরেও সুদূর লন্ডন থেকে তারেক রহমানের অবিচল নেতৃত্ব, দেশের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এবং জনগণের প্রতি অঙ্গীকার আমাকে বিএনপির প্রতি এক অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। বিএনপি আমার কাছে কেবল একটি রাজনৈতিক দল-ই নয় — এটি আমার বিশ্বাস, এবং আমার আদর্শ।

রাজনৈতিক জিবনে সফলতা ও ব্যর্থতার কথা উল্লেখকরে  ড.মো: তোফাজ্জল হোসেন বলেন, রাজনীতি এমন একটি পেশা যেখানে সফলতা বা ব্যর্থতার হিসাব হয় না।

আগের প্রশ্নে যেমনটা উল্লেখ করেছি, ছাত্রদলের একজন সৈনিক হিসেবে আমি ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম, ছাত্রদলের রাজনীতি করেছি এবং ছাত্রদলের সেন্ট্রাল কমিটিতেও দায়িত্ব পালন করেছি। ছাত্রজীবন শেষ করে আমি বিএনপির রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছি এবং এখনও যুক্ত আছি। তবে কখনোই সফলতা বা ব্যর্থতার হিসাব করিনি।
আবার রাজনীতি করতে গিয়ে আমি আমার একাডেমিক ও পেশাগত জীবনকেও অবজ্ঞা  করিনি। বাংলাদেশে আমি অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেছি এবং ২০তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। এরপরে জাপান থেকে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এ এম এস ডিগ্রী অর্জন করেছি।
এবং ১৮৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত জাপানের প্রসিদ্ধ ওয়াসেদা ইউইনিভার্সিটি থেকে  Artificial Intelligence (AI) এর উপর ডক্টরেট (Ph.D.) ডিগ্রী অর্জন করেছি। আমি জাপানের Hitachi Ltd. -এ টেকনিক্যাল ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছি এবং সর্বশেষ Microsoft Japan-এর Data & AI ডিভিশনের ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছি।
একই সময়ে, তারেক রহমানের নির্দেশে জাপানে থেকেও আমি বিএনপির পক্ষে—বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে—আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, যার বিস্তারিত বর্ণনা এই ক্ষুদ্র পরিসরে দেয়া সম্ভব নয়।
আমার এই কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ জনাব তারেক রহমান আমাকে তার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টারদায়িত্ব দিয়েছেন। আমি এটিকে আমার একটি সফলতা এবং কাজের স্বীকৃতি হিসেবে দেখি, এবং এই স্বীকৃতিতে আমি গর্বিত।
পাশাপাশি, গত ২৪ বছর জাপানে থেকে আমি জাপানের মানুষের সততা, ন্যায়পরায়নতা, কাজের মান বা কোয়ালিটি ও কমিটমেন্ট দেখেছি এবং তা থেকে শিক্ষার চেষ্টা করেছি।
আমি মনে করি, রাজনীতিতে যদি কিছু দিতে চাই, দেশ ও দেশের জনগণকে যদি কিছু দিতে চাই, তবে সবার আগে নিজেকে দেয়ার মতো করে তৈরি করতে হবে। রাজনীতিতে হয়তো আমি বড় নেতা হতে পারিনি, তবে নিজেকে ডেভেলপ করার চেষ্টা করেছি।
আমি বিশ্বাস করি, সেই চেষ্টায় আমি অনেকটাই সার্থক হতে পেরেছি। আমার এই ডেভেলপমেন্ট ও অভিজ্ঞতা আমি দেশের জনগণের জন্য, বিশেষ করে মতলবের জনগণের জন্য প্রয়োগ করতে চাই। আমি মনে করি এটি হবে আমার জন্য এক বিরাট সফলতা।
আবার মনে করুন, আমি চাঁদপুর-২ (মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ) থেকে বিএনপির পক্ষে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। দল আমাকে মনোনয়ন দিতে পারে, আবার নাও দিতে পারে। আমি এটিকে কখনোই ব্যর্থতা বলে মনে করব না। মনোনয়ন না পেলেও বিএনপির প্রতি আমার ভালোবাসা একটুও কমবে না।
আমি বিএনপির রাজনীতি করি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং এই প্রজন্মের অহংকার জনাব তারেক রহমানের প্রতি ভালোবাসা ও তাদের কাজের প্রতি শ্রদ্ধার কারণে। এই ভালোবাসায় আমি সফলতা বা ব্যর্থতা খুঁজতে চাই না। যা পেয়েছি, সেটি যেমন আমার সফলতা; আর যা পাইনি বা পাবনা, সেটিও আমার সফলতার অংশ বলে মনে করি।
এই প্রসঙ্গে, আমার পি এইচ ডি-র এডভাইজার Dr. Kotaro Hirasawa-র একটি এডভাইজের কথা আমার মনে পরে যায়। আমার রিসার্স প্রগ্রেস নিয়ে উনি একবার আমাকে বলেছিলেন:
“Mr. Hossain, you got a result is not a research. Research is, why you got this result, why you didn’t get a different result”.
একইভাবে, আমি মনে করি, রাজনীতিও এক ধরনের রিসার্চের মতো—যেখানে কেবল ফলাফল পাওয়া বা সফলতাই মুখ্য হতে পারে না।

দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার কথা উল্লেখকরে  তিনি বলেন,আমি দলীয় মনোনয়ন চাইব, আমি ইতোমধ্যে এলাকায় প্রচারনা চালাচ্ছি। মনোনয়নের বিষয়ে আমি অত্যন্ত আশাবাদী। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দল নেবে, আর দল যে সিদ্ধান্ত নেবে সেটিই আমার কাছে সর্বোচ্চ।

আমি বিএনপির রাজনীতি করি দল ও নেতৃত্বের প্রতি ভালোবাসা থেকে, ক্ষমতার জন্য নয়। তাই দল থেকে মনোনয়ন না পেলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবো না।

মতলব কে নিয়ে তার পরিকল্পনার কথা উল্লেখকরে তিনি বলেন,আমি চাই আমার ২৪ বছরের জাপান জীবনের শিক্ষা, অভিজ্ঞতা এবং অর্জিত জ্ঞান দিয়ে মতলব উত্তর ও দক্ষিণকে জাপানের মতো করে সাজাতে—যার ভিত্তি হবে সততা, ন্যায্যতা, জবাবদিহিতা, মানসম্মত শিক্ষা, কর্মসংস্থান, উন্নয়নের নিশ্চয়তা এবং সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করা।

আমি চাই মতলবকে এমনভাবে গড়ে তুলতে, যেখানে প্রতিটি নাগরিক নিজেকে নিরাপদ, সম্মানিত এবং গর্বিত বোধ করবে।
পাশাপাশি, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য থাকবে উন্নত জীবনের নিশ্চয়তা এবং তারা হবে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একটি উন্নত সমাজ কেবল অবকাঠামোর উন্নয়ন দিয়েই তৈরি হয় না। এর জন্য প্রয়োজন সততা, ন্যায্যতা, জবাবদিহিতা এবং জনগণের অংশগ্রহণের উপর দাঁড়ানো একটি শক্তিশালী ও সুশাসিত কাঠামো। মতলব উত্তর ও দক্ষিণকে ঠিক সেই কাঠামোর উপর দাঁড় করানোই আমার মূল লক্ষ্য। আমি চাই এখানে প্রতিটি মানুষ একটি সুন্দর সামাজিক পরিবেশে স্বচ্ছন্দে বসবাস করুক, শান্তিতে থাকুক এবং উন্নয়নের সুফল প্রত্যেকের কাছে সমানভাবে পৌঁছুক।

বিএনপি‘র দলীয় নেতা- কর্মিদের উদ্দ্যশ্যকরে তিনি বলেন,আপনারা অবশ্যই জানেন যে বিগত ১৭ বছরে বিএনপি-র নেতা-কর্মীরা যে ত্যাগ ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন, তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়।

স্বৈরাচারী সরকারের হাতে সবচেয়ে বেশি নিপীড়িত হয়েছে বিএনপি, এর অঙ্গসংগঠন, ও জিয়া পড়িবার। প্রায় ১,২০০ নেতা-কর্মী খুন ও গুমের শিকার হয়েছেন, এবং ডেইলি স্টার রিপোর্ট অনুযায়ী,  ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত প্রায় ১,৪১,৬৩৬টি মামলায় ৪,৯২৬,৪৯৪ জন নেতা-কর্মী অভিযুক্ত হয়েছেন।
এই ভয়াবহ দমন-পীড়নের মধ্যেও তারা দল ত্যাগ করেননি, আপস করেননি, বরং বুকে অসীম সাহস নিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াই চালিয়ে গেছেন। তাদের এই অবদান দল, জাতি ও ইতিহাস কখনো ভুলবে না।

এলাকাবাসীর সাথে ওয়াদা করে তিনি বলেন,মতলবই আমার স্বপ্ন, মতলবই আমার ভালোবাসা, তাই অবশ্যই আমার প্রিয় মতলবে বসবাসকারী সকলের কাছে অবশ্যই আমার  বলার কিছু আছে।

মতলবের প্রতিটি মানুষকে আমি বলতে চাই যে, আমি চাই মতলবকে একটি আধুনিক, ন্যায়ভিত্তিক, সুখী, সমৃদ্ধ এবং শান্তিময় অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে। আমি চাই মতলব হোক সততা, শান্তি এবং উন্নয়নের প্রতীক। এখানকার প্রতিটি কাজ, প্রতিটি উন্নয়ন, প্রতিটি সেবা হোক জাপানের মতো দক্ষতা, মান সম্পন্ন (Quality) এবং কমিটমেন্টের প্রতিফলন।
আমি মতলবের প্রতিটি মানুষকে এই বলে ওয়াদা করতে চাই যে—আমি নিজে কখনো অন্যায় করব না, এবং কাউকেও অন্যায় করার সুযোগ দেব না।
আমি আপনাদের কাছে এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, আমার কারণে মতলবের কোনো একজন মানুষও ন্যূনতম কষ্ট পেতে পারেন, এমন কোনো কাজ আমি করব না। কখনো কারো অধিকার হরণ করার চেষ্টা করব না, এবং কাউকেও তা করতেও দেব না। আপনাদের নুন্যতম ক্ষতি হয়, নুন্যতম কষ্ট হয়, এমন কোন কাজ আমি করবনা।

মতলবের প্রতিটি মানুষকে তার আন্তরিক সালাম ও শুভেচ্ছা এবং সকলের সুস্থ্যকামনা করে ড.মো: তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমি ওয়াদা করছি, মতলব হবে সত্য ও ন্যায়ের প্রতীক। আমি চাই মতলবকে তথাকথিত রাজনীতির ঘূর্ণি থেকে বের করে এনে একটি সুস্থ, আধুনিক ও মানবিক সমাজে পরিনত করতে—ঠিক যেমনটি আমি জাপানে দেখেছি ও শিখেছি।

আমার এই স্বপ্ন ও ওয়াদা বাস্তবায়নের পবিত্র কাজে দল-মত নির্বিশেষে মতলবের প্রতিটি মানুষের দোয়া, ভালোবাসা ও অকৃত্রিম সমর্থনই আমার শক্তি হিসেবে কাজ করবে। আমি আপনাদের দোয়া, ভালবাসা ও সমর্থন চাই।