‘প্রাণের শক্তি বাড়ায় বই, বই পড়ে মানুষ হই’-এই স্লোগানে যাত্রা শুরু করেছে প্যাপিরাস পাঠাগার। ১০ অক্টোবর বিকেল ৪টায় চাঁদপুর শহরের জেএম সেনগুপ্ত রোডের চাঁদ টাওয়ারের নিচতলায় ফিতা কেটে উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে সকলের জন্যে পাঠাগারটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। যুবসমাজকে বইমুখী করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডভোকেট রফিকুজ্জামান রণি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে পাঠাগার সংরক্ষণের জন্যে উপদেষ্টা পরিষদসহ ৮ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এতে কবি রফিকুজ্জামান রণিকে সভাপতি, কবি আইরিন সুলতানা লিমাকে সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক ফুটবলার মিজানুর রহমান স্বপনকে প্রধান পরিচালক করা হয়।
কমিটির অন্যান্যরা হলেন উপ-সভাপতি ফেরারী প্রিন্স, সদস্য নাজমুল ইসলাম সজিব। উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান কবির, মোহাম্মদ শাহ আলম ও দিলীপ কুমার ঘোষ।
সভাপতি অ্যাডভোকেট রফিকুজ্জামান রণি বলেন, প্যাপিরাস হচ্ছে বইয়ের আদি নিদর্শন বা বইয়ের প্রাথমিক রূপ। প্রাচীনকালের লেখার উপযোগী মাধ্যমকে প্যাপিরাস বলা হয়, যা কাগজের অনুরূপ একটি উপাদান এবং এটি হাজার হাজার বছর আগে লেখার পৃষ্ঠা হিসাবে ব্যবহৃত হতো।
সাইপেরাস প্রজাতির এক ধরনের জলজ উদ্ভিতের পিথ থেকে তৈরি হতো প্যাপিরাস। প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতায় নীলনদের তীরে নলখাগড়া জাতীয় এক ধরনের গাছ পাওয়া যেতো।
সেই গাছের খোল পাথর চাপা দিয়ে এবং রোদে শুকিয়ে লেখার উপযোগী হিসেবে তৈরি করা হতো। বইয়ের প্রাচীন নিদর্শনের প্রতি সম্মান রেখে এই পাঠাগারের নামকরণ করা হয়েছে প্যাপিরাস।
সাধারণ সম্পাদক আইরিন সুলতানা লিমা জানান, খ্রিষ্টপূর্ব ১৫০০ সালের দিকে নীলনদের তীরে উৎপন্ন নলখাগড়া প্রজাতির প্যাপিরাস গাছের বাকলকে মিসরীয়রা লেখার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করতে শুরু করে। ধীরে ধীরে তারা প্যাপিরাসে ছবিও অঙ্কন করে। পরবর্তীতে প্যাপিরাস শব্দ থেকেই মূলত পেপার শব্দটির উৎপত্তি ঘটে।
ঐতিহাসিক সেই নিদর্শনকে স্মরণ রেখে আমাদের পাঠাগারের নাম রাখা হয়েছে প্যাপিরাস। এখানে এসে বই, পত্রিকা এবং ম্যাগাজিন পড়ে যদি সমাজের একজন মানুষও আলোকিত হয় তবেই আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে।
দুই পর্বের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি জামসেদ ওয়াজেদ, কবি আবিদ আজম, চাঁদপুর লেখক পরিষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন, চাঁদপুর সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক পিএম বিল্লাল, চর্যাপদ সাহিত্য একাডেমির সভাপতি আয়েশা আক্তার রুপা, পরিচালক ফেরারী প্রিন্স, পর্যবেক্ষক ও ন্যায়পাল দিলীপ ঘোষ, নির্বাহী পরিচালক আইরিন সুলতানা লিমা, প্রচার ও প্রকাশনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক আকবর হোসেন লিটন, শিক্ষালোর প্রতিষ্ঠাতা লিটন পাটওয়ারী, দোয়েল সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক শৈবাল মজুমদার ও প্রতিভা সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি ফারাবি রহমান জুয়েল, বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন, অনুষ্ঠানের উদ্বোধক লাভলী জামান ও জাহাঙ্গীর কবির কাঞ্চন প্রমুখ।