দীর্ঘদিন ব্লাড ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে মারা যাওয়া খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) আইন ডিসিপ্লিনের (২০১৭-১৮ সেশনের) শিক্ষার্থী রাকিব হাসানের চিকিৎসার জন্য সংগৃহীত অবশিষ্ট অর্থ দিয়ে একটি ট্রাস্ট গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ‘রাকিব স্মৃতি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ট্রাস্ট’ নামে ট্রাস্টের মাধ্যমে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের কল্যাণে কাজ করা হবে।
রাকিবের সহপাঠীদের দেওয়া তথ্যমতে, চিকিৎসার জন্য নেওয়া ধারের ৯ লাখ ২০ হাজার টাকা ইতোমধ্যে পরিশোধ করা হয়েছে। এছাড়া রাকিবের শেষ পর্যায়ের কেমোথেরাপি, হাসপাতালের বকেয়া বিল, আইসিইউ ব্যয়, প্লাজমা সংগ্রহ এবং মৃতদেহ পরিবহনে মোট ব্যয় হয়েছে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৯৫৯ টাকা।
চিকিৎসা ব্যয় পরিশোধের পর অবশিষ্ট অর্থের সুষ্ঠু ও সুদূরপ্রসারী ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ অংশ হিসেবে বেশ কিছুদিন ধরে রাকিবের পরিবার এবং তার চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহে জড়িত সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চলছিল। এই আলোচনার অংশ হিসেবেই খুলনায় এসে ক্যাম্পাসে অবস্থানরত সেই দুঃসময়ের অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে ট্রাস্ট গঠনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে রাকিবের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়ার আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিতদের সামনে ট্রাস্ট গঠনের উদ্দেশ্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও তুলে ধরা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ডিসিপ্লিনের ১৮ ব্যাচের অর্থ ব্যবস্থাপনা টিমের পক্ষ থেকে জানানো হয়, অবশিষ্ট ১৯ লাখ ২০ হাজার ৫৩২ টাকা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘রাকিব স্মৃতি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ট্রাস্ট’ ঘোষণা করা হয়েছে। ট্রাস্টের বর্তমান এবং ভবিষ্যতে উপার্জিত ও সংগৃহীত সকল অর্থ শুধুমাত্র খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অ্যালামনাই, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সেবাদান কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্তদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত কল্যাণে ব্যয় করা হবে।
সহপাঠীরা জানান, রাকিবের মৃত্যু আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হলেও তার স্মৃতিকে ধারণ করে গঠিত এই ট্রাস্ট মানবিকতা, সহমর্মিতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। রাকিব যেমন জীবদ্দশায় সংগ্রাম ও সাহসের প্রতীক ছিলেন, তেমনি তার নামে প্রতিষ্ঠিত উদ্যোগটি ভবিষ্যতে অসহায় ও সংকটে থাকা মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা জোগাবে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ নভেম্বর রাত সাড়ে ১১টায় ঢাকার আহছানিয়া মিশন ক্যান্সার ও জেনারেল হাসপাতালে মারা যান তিনি। এর আগে সহপাঠীদের নেতৃত্বে একটি সমন্বিত ফান্ড গঠন করে বিকাশ, নগদ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহকরা হয়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অ্যালামনাইসহ দেশ-বিদেশের শুভানুধ্যায়ীরা স্বেচ্ছায় অনুদান প্রদান করেন।




















































