শিরোনাম :
Logo ফ্যামিলি কার্ডে স্বপ্ন দেখছেন নারীরা: খিলমেহেরে ছাত্রদল নেতা হাবিবুল বাশারের সচেতনতা সভা Logo সিরাজগঞ্জে প্রতিবন্ধী যুবক হত্যায় ৬ আসামী গ্রেফতার Logo কয়রায় শ্যামল কয়েলের ২টি বসতঘর আগুনে পুড়ে ছাই সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এলেন খুলনা জেলা বিএনপির সদস্য এম এ হাসান Logo পলাশবাড়ীতে ৪৪ বোতল ফেন্সিডিলসহ স্বামী স্ত্রী আটক  Logo চাঁদপুর ডিএনসির সহকারী পরিচালক মুহা. মিজানুর রহমানের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শ Logo কচুয়ার ২৪১টি গ্রামে সমাজ সেবায় শিক্ষানুরাগী রফিকুল ইসলাম রনির দৃষ্টান্ত স্থাপন Logo কমরেড আব্দুর রহমানের ৩০ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত Logo সাতক্ষীরা সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযান-২০ বোতল ভারতীয় মদসহ ৭ লাখ টাকার মালামাল জব্দ Logo চুয়াডাঙ্গায় পুকুরে ডুবে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মৃত্যু Logo আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা নেই : ড. আসিফ নজরুল

এক সমাবর্তনেই কেটে গেছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ বছর

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ১১:০৫:৪৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৭১২ বার পড়া হয়েছে
রইসুল আরাফাত , নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় :
ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশক পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র একটি সমাবর্তন। ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সমাবর্তনে সমাবর্তন পেয়েছিল ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট ৫টি ব্যাচ। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৩ সালে একটি সমাবর্তনের পূর্নাঙ্গ প্রস্তুতি নিলেও পরবর্তীতে নির্বাচন ইস্যুতে দেশের অবস্থা অস্থিতিশীল হওয়ায় তা আর বাস্তবায়ন হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, কারণ এটি তাঁদের একাডেমিক যাত্রাপথের সমাপ্তি নির্দেশ করে একইসাথে পেশাদার ক্যারিয়ারে সম্ভাবনার সূচনা করে। প্রতিবছরই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা পাস করবেন, এরপর তাঁরা সমাবর্তন পাবেন, এটিই নিয়ম। প্রতিবছর সমাবর্তন আয়োজন না হলেও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক বছর পরপর এই সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়। কিন্তু ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছে একবারই।
২০১৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এর সভাপতিত্বে প্রথম সমাবর্তনে প্রায় ১,৩৯৯ জন শিক্ষার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু তার পর আর কোন সমাবর্তনের আয়োজন হয়নি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথম এই সমাবর্তনের পর বিভিন্ন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশন পর্যন্ত নতুন করে প্রায় ৮ টি ব্যাচের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ হয়েছে। ফলে এই দীর্ঘ বিরতিতে চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। অনেকেই মনে করছেন, ডিগ্রির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না পাওয়ার কারণে কর্মক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে একধরনের অসম্পূর্ণতা। এছাড়াও সমাবর্তন না হওয়ায় তৈরি হচ্ছে না কোন ধরনের অ্যালামনাই যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মাঝে দূরত্ব তৈরি করছে।
থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আনিকা তাবাসসুম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশক অতিক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটাতে অতি দ্রুত দ্বিতীয় সমাবর্তনের আয়োজন অত্যন্ত জরুরি। আমরা দৃঢ়ভাবে দাবি জানাচ্ছি, শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য মর্যাদা ও সাফল্যের স্বীকৃতি দিতে দ্বিতীয় সমাবর্তন আয়োজনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৭/১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মাহাবুবুল আলম মাহিন বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দশকে মাত্র একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছে। অথচ বর্তমানে ১৯তম ব্যাচ পর্যন্ত আমরা অগ্রসর হয়েছি। শিক্ষার্থীর জীবনের সবচেয়ে গৌরবময় মুহূর্ত হলো সমাবর্তন। তাই আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি, কর্তৃপক্ষ আমাদের এই আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে শীঘ্রই সমাবর্তনের আয়োজন করবেন। যাতে আমরা আমাদের পরিশ্রমের অর্জন আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন করতে পারি এতে শুধু আমাদের স্বপ্নই পূর্ণ হবে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাও বৃদ্ধি পাবে।
কবে নাগাদ পরবর্তী সমাবর্তন হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা এই বিষয় নিয়ে ভাবছি। ডিন মহোদয়গণ, ছাত্রপরামর্শক সহ এই বিষয়ে সম্পর্কিত ব্যাক্তিদের সাথে বসে কিভাবে পরবর্তী সমাবর্তনের উদ্যোগ নেয়া যায় এবং কবে নাগাদ সেটা বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ফ্যামিলি কার্ডে স্বপ্ন দেখছেন নারীরা: খিলমেহেরে ছাত্রদল নেতা হাবিবুল বাশারের সচেতনতা সভা

এক সমাবর্তনেই কেটে গেছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ বছর

আপডেট সময় : ১১:০৫:৪৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রইসুল আরাফাত , নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় :
ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশক পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র একটি সমাবর্তন। ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সমাবর্তনে সমাবর্তন পেয়েছিল ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট ৫টি ব্যাচ। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৩ সালে একটি সমাবর্তনের পূর্নাঙ্গ প্রস্তুতি নিলেও পরবর্তীতে নির্বাচন ইস্যুতে দেশের অবস্থা অস্থিতিশীল হওয়ায় তা আর বাস্তবায়ন হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, কারণ এটি তাঁদের একাডেমিক যাত্রাপথের সমাপ্তি নির্দেশ করে একইসাথে পেশাদার ক্যারিয়ারে সম্ভাবনার সূচনা করে। প্রতিবছরই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা পাস করবেন, এরপর তাঁরা সমাবর্তন পাবেন, এটিই নিয়ম। প্রতিবছর সমাবর্তন আয়োজন না হলেও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক বছর পরপর এই সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়। কিন্তু ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছে একবারই।
২০১৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এর সভাপতিত্বে প্রথম সমাবর্তনে প্রায় ১,৩৯৯ জন শিক্ষার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু তার পর আর কোন সমাবর্তনের আয়োজন হয়নি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথম এই সমাবর্তনের পর বিভিন্ন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশন পর্যন্ত নতুন করে প্রায় ৮ টি ব্যাচের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ হয়েছে। ফলে এই দীর্ঘ বিরতিতে চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। অনেকেই মনে করছেন, ডিগ্রির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না পাওয়ার কারণে কর্মক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে একধরনের অসম্পূর্ণতা। এছাড়াও সমাবর্তন না হওয়ায় তৈরি হচ্ছে না কোন ধরনের অ্যালামনাই যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মাঝে দূরত্ব তৈরি করছে।
থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আনিকা তাবাসসুম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশক অতিক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটাতে অতি দ্রুত দ্বিতীয় সমাবর্তনের আয়োজন অত্যন্ত জরুরি। আমরা দৃঢ়ভাবে দাবি জানাচ্ছি, শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য মর্যাদা ও সাফল্যের স্বীকৃতি দিতে দ্বিতীয় সমাবর্তন আয়োজনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৭/১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মাহাবুবুল আলম মাহিন বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দশকে মাত্র একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছে। অথচ বর্তমানে ১৯তম ব্যাচ পর্যন্ত আমরা অগ্রসর হয়েছি। শিক্ষার্থীর জীবনের সবচেয়ে গৌরবময় মুহূর্ত হলো সমাবর্তন। তাই আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি, কর্তৃপক্ষ আমাদের এই আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে শীঘ্রই সমাবর্তনের আয়োজন করবেন। যাতে আমরা আমাদের পরিশ্রমের অর্জন আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন করতে পারি এতে শুধু আমাদের স্বপ্নই পূর্ণ হবে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাও বৃদ্ধি পাবে।
কবে নাগাদ পরবর্তী সমাবর্তন হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা এই বিষয় নিয়ে ভাবছি। ডিন মহোদয়গণ, ছাত্রপরামর্শক সহ এই বিষয়ে সম্পর্কিত ব্যাক্তিদের সাথে বসে কিভাবে পরবর্তী সমাবর্তনের উদ্যোগ নেয়া যায় এবং কবে নাগাদ সেটা বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।