বৃহস্পতিবার | ২৭ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি রবিউল হাসানকে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার পদে বদলী Logo প্রতিষ্ঠার পর থেকে নির্মাণ হয়নি চাঁদপুর সদর হাসপাতালে স্থায়ী মর্গ, জীর্ণ-ভবনে ময়নাতদন্ত Logo চাঁদপুর ফরিদগঞ্জে তারুণ্যের আলো সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প Logo ফের ভূমিকম্প Logo কচুয়ায় জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে ৩০টি প্রদর্শনী Logo কুবির বাংলা বিভাগের বাংলা নাটক বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন Logo মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত Logo মাগুরার শ্রীপুরে প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী- ২০২৫ এর উদ্বোধন Logo পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় জাতীয় প্রাণীসম্পদ সপ্তাহ ২০২৫ প্রদর্শনী Logo আমরা নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছি: চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী বাবু খান

এক সমাবর্তনেই কেটে গেছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ বছর

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ১১:০৫:৪৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৭৫৯ বার পড়া হয়েছে
রইসুল আরাফাত , নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় :
ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশক পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র একটি সমাবর্তন। ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সমাবর্তনে সমাবর্তন পেয়েছিল ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট ৫টি ব্যাচ। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৩ সালে একটি সমাবর্তনের পূর্নাঙ্গ প্রস্তুতি নিলেও পরবর্তীতে নির্বাচন ইস্যুতে দেশের অবস্থা অস্থিতিশীল হওয়ায় তা আর বাস্তবায়ন হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, কারণ এটি তাঁদের একাডেমিক যাত্রাপথের সমাপ্তি নির্দেশ করে একইসাথে পেশাদার ক্যারিয়ারে সম্ভাবনার সূচনা করে। প্রতিবছরই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা পাস করবেন, এরপর তাঁরা সমাবর্তন পাবেন, এটিই নিয়ম। প্রতিবছর সমাবর্তন আয়োজন না হলেও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক বছর পরপর এই সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়। কিন্তু ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছে একবারই।
২০১৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এর সভাপতিত্বে প্রথম সমাবর্তনে প্রায় ১,৩৯৯ জন শিক্ষার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু তার পর আর কোন সমাবর্তনের আয়োজন হয়নি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথম এই সমাবর্তনের পর বিভিন্ন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশন পর্যন্ত নতুন করে প্রায় ৮ টি ব্যাচের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ হয়েছে। ফলে এই দীর্ঘ বিরতিতে চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। অনেকেই মনে করছেন, ডিগ্রির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না পাওয়ার কারণে কর্মক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে একধরনের অসম্পূর্ণতা। এছাড়াও সমাবর্তন না হওয়ায় তৈরি হচ্ছে না কোন ধরনের অ্যালামনাই যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মাঝে দূরত্ব তৈরি করছে।
থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আনিকা তাবাসসুম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশক অতিক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটাতে অতি দ্রুত দ্বিতীয় সমাবর্তনের আয়োজন অত্যন্ত জরুরি। আমরা দৃঢ়ভাবে দাবি জানাচ্ছি, শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য মর্যাদা ও সাফল্যের স্বীকৃতি দিতে দ্বিতীয় সমাবর্তন আয়োজনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৭/১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মাহাবুবুল আলম মাহিন বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দশকে মাত্র একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছে। অথচ বর্তমানে ১৯তম ব্যাচ পর্যন্ত আমরা অগ্রসর হয়েছি। শিক্ষার্থীর জীবনের সবচেয়ে গৌরবময় মুহূর্ত হলো সমাবর্তন। তাই আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি, কর্তৃপক্ষ আমাদের এই আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে শীঘ্রই সমাবর্তনের আয়োজন করবেন। যাতে আমরা আমাদের পরিশ্রমের অর্জন আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন করতে পারি এতে শুধু আমাদের স্বপ্নই পূর্ণ হবে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাও বৃদ্ধি পাবে।
কবে নাগাদ পরবর্তী সমাবর্তন হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা এই বিষয় নিয়ে ভাবছি। ডিন মহোদয়গণ, ছাত্রপরামর্শক সহ এই বিষয়ে সম্পর্কিত ব্যাক্তিদের সাথে বসে কিভাবে পরবর্তী সমাবর্তনের উদ্যোগ নেয়া যায় এবং কবে নাগাদ সেটা বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি রবিউল হাসানকে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার পদে বদলী

এক সমাবর্তনেই কেটে গেছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ বছর

আপডেট সময় : ১১:০৫:৪৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রইসুল আরাফাত , নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় :
ময়মনসিংহের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশক পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র একটি সমাবর্তন। ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সমাবর্তনে সমাবর্তন পেয়েছিল ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত মোট ৫টি ব্যাচ। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০২৩ সালে একটি সমাবর্তনের পূর্নাঙ্গ প্রস্তুতি নিলেও পরবর্তীতে নির্বাচন ইস্যুতে দেশের অবস্থা অস্থিতিশীল হওয়ায় তা আর বাস্তবায়ন হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, কারণ এটি তাঁদের একাডেমিক যাত্রাপথের সমাপ্তি নির্দেশ করে একইসাথে পেশাদার ক্যারিয়ারে সম্ভাবনার সূচনা করে। প্রতিবছরই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীরা পাস করবেন, এরপর তাঁরা সমাবর্তন পাবেন, এটিই নিয়ম। প্রতিবছর সমাবর্তন আয়োজন না হলেও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক বছর পরপর এই সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়। কিন্তু ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছে একবারই।
২০১৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এর সভাপতিত্বে প্রথম সমাবর্তনে প্রায় ১,৩৯৯ জন শিক্ষার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু তার পর আর কোন সমাবর্তনের আয়োজন হয়নি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রথম এই সমাবর্তনের পর বিভিন্ন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশন পর্যন্ত নতুন করে প্রায় ৮ টি ব্যাচের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ হয়েছে। ফলে এই দীর্ঘ বিরতিতে চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। অনেকেই মনে করছেন, ডিগ্রির আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না পাওয়ার কারণে কর্মক্ষেত্রে তৈরি হচ্ছে একধরনের অসম্পূর্ণতা। এছাড়াও সমাবর্তন না হওয়ায় তৈরি হচ্ছে না কোন ধরনের অ্যালামনাই যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মাঝে দূরত্ব তৈরি করছে।
থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আনিকা তাবাসসুম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশক অতিক্রান্ত হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটাতে অতি দ্রুত দ্বিতীয় সমাবর্তনের আয়োজন অত্যন্ত জরুরি। আমরা দৃঢ়ভাবে দাবি জানাচ্ছি, শিক্ষার্থীদের প্রাপ্য মর্যাদা ও সাফল্যের স্বীকৃতি দিতে দ্বিতীয় সমাবর্তন আয়োজনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৭/১৮ সেশনের শিক্ষার্থী মাহাবুবুল আলম মাহিন বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দশকে মাত্র একটি সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়েছে। অথচ বর্তমানে ১৯তম ব্যাচ পর্যন্ত আমরা অগ্রসর হয়েছি। শিক্ষার্থীর জীবনের সবচেয়ে গৌরবময় মুহূর্ত হলো সমাবর্তন। তাই আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি, কর্তৃপক্ষ আমাদের এই আকাঙ্ক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে শীঘ্রই সমাবর্তনের আয়োজন করবেন। যাতে আমরা আমাদের পরিশ্রমের অর্জন আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন করতে পারি এতে শুধু আমাদের স্বপ্নই পূর্ণ হবে না, বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদাও বৃদ্ধি পাবে।
কবে নাগাদ পরবর্তী সমাবর্তন হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা এই বিষয় নিয়ে ভাবছি। ডিন মহোদয়গণ, ছাত্রপরামর্শক সহ এই বিষয়ে সম্পর্কিত ব্যাক্তিদের সাথে বসে কিভাবে পরবর্তী সমাবর্তনের উদ্যোগ নেয়া যায় এবং কবে নাগাদ সেটা বাস্তবায়ন করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।