বৃহস্পতিবার | ২০ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo সিকিউরিটিজ রুলস: বিধিনিষেধ শিথিলের সুপারিশ Logo বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করলো ডেনমার্ক Logo শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে সামরিক বাহিনী ও পুলিশের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা Logo সশস্ত্র বাহিনীর সমর্থনে দ্রুত সংকট উত্তরণ ও জাতিকে স্থিতিশীল করা সম্ভব হয়েছে : প্রধান উপদেষ্টা Logo হাবিপ্রবিতে ভেটেরিনারি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের নতুন কমিটি Logo টেকনাফে দীর্ঘদিন ধরে এনজিও গাড়ীর ড্রাইভার পরিচয়ে ইয়াবা ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার মালিক: অবশেষে বিপুল পরিমাণ ইয়াবাসহ কোস্ট গার্ডের হাতে ধরা Logo শেরপুরে আইএফআইসি ব্যাংকের উদ্যোগে “ তারুণ্যের উৎসব ২০২৫” অনুষ্ঠিত Logo আগামী ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস Logo পঞ্চগড়ের তেতুঁলিয়ায় ধর্ষণের হাত থেকে রক্ষা পেলোনা ভারসাম্যহীন এক নারী, আটক চার। Logo দিনাজপুর-১ আসনের বিএনপি-র প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ায় বিদেশ থেকে ফোনে তালাক

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ১১:২৪:৩৯ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫
  • ৭৫৬ বার পড়া হয়েছে

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধে’ স্ত্রীকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সৌদি প্রবাসী স্বামী আজিম হোসাইন জনির পরিবারের বিরুদ্ধে। স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে তিন শিশু নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন হেলানা আক্তার। উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের পিতাম্বর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। শিশুদের পিতৃপরিচয় ও স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে আদালতের বারান্দায় ঘুরছেন হেলেনা।

রোববার বিকালে সরেজমিনে জানা যায়, হেলানা বুড়িচং উপজেলার আনন্দপুরের আব্দুস সালামের মেয়ে। ২০০৯ সালে একই উপজেলার পিতাম্বর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আজিম হোসাইন জনির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তিন ভরি স্বর্ণ ও আসবাবপত্র দেয় হেলানার পরিবার। বিয়ের পর তাদের ঘরে এক ছেলে আলিফের জন্ম হয়।

পরবর্তীকালে বিদেশ যাওয়ার জন্য জনি স্ত্রীর কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। হেলানার পরিবার ঋণ করে টাকা দিলে জনি সৌদি আরবে চলে যান। হেলানার গর্ভে সন্তান আসার খবরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন গর্ভপাত করতে চাপ সৃষ্টি করে। এতে রাজি না হওয়ায় তাকে শারীরিক নির্যাতন করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ছয় মাস আগে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে হেলানা যমজ সন্তান আলভী ও আসপীর জন্ম দেন। এরপরও স্বামী বিদেশ থেকে ফোনে মৌখিকভাবে তালাক দেন।

হেলানা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ভেবেছিলাম সন্তানদের কথা চিন্তা করে স্বামীর মন বদলাবে, কিন্তু তা হয়নি। উলটো তালাক দিয়ে এক প্রকার পথেই ফেলে দিয়েছে আমাকে।

হেলানার ভাই জামাল হোসেন ও বোন মমতাজ বেগম বলেন, বোনের সুখের আশায় স্বামীকে বিদেশ পাঠাতে যৌতুকের টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু গর্ভের সন্তান নষ্ট না করায় নির্যাতনের শিকার হন তিনি। এখন বাবার বাড়িতে অভাব অনটন থাকায় তিন সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। শিশুদের পিতৃপরিচয় ও স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে আদালতের বারান্দায় ঘুরছেন হেলানা

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য রফিকসহ প্রতিবেশীরা জানানসালিশের চেষ্টাতেও স্বামীস্ত্রীর পুনর্মিলন সম্ভব হয়নি জনি ও তার পরিবারের একগুঁয়েমির কারণে। বাকশীমূল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল করিম বলেন, সামাজিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন।

জনির মা হাসিনা বেগম বলেন, হেলানার আচরণ ভালো না, তাই ছেলে সংসার করবে না। ভরণপোষণ প্রসঙ্গে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক বলেন, মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠিয়েছে। আইনি সহযোগিতা অব্যাহত আছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সিকিউরিটিজ রুলস: বিধিনিষেধ শিথিলের সুপারিশ

যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ায় বিদেশ থেকে ফোনে তালাক

আপডেট সময় : ১১:২৪:৩৯ অপরাহ্ণ, রবিবার, ১০ আগস্ট ২০২৫

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় যমজ সন্তান জন্ম দেওয়ার ‘অপরাধে’ স্ত্রীকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সৌদি প্রবাসী স্বামী আজিম হোসাইন জনির পরিবারের বিরুদ্ধে। স্বামীর বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়ে তিন শিশু নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন হেলানা আক্তার। উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের পিতাম্বর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। শিশুদের পিতৃপরিচয় ও স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে আদালতের বারান্দায় ঘুরছেন হেলেনা।

রোববার বিকালে সরেজমিনে জানা যায়, হেলানা বুড়িচং উপজেলার আনন্দপুরের আব্দুস সালামের মেয়ে। ২০০৯ সালে একই উপজেলার পিতাম্বর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে আজিম হোসাইন জনির সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তিন ভরি স্বর্ণ ও আসবাবপত্র দেয় হেলানার পরিবার। বিয়ের পর তাদের ঘরে এক ছেলে আলিফের জন্ম হয়।

পরবর্তীকালে বিদেশ যাওয়ার জন্য জনি স্ত্রীর কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। হেলানার পরিবার ঋণ করে টাকা দিলে জনি সৌদি আরবে চলে যান। হেলানার গর্ভে সন্তান আসার খবরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন গর্ভপাত করতে চাপ সৃষ্টি করে। এতে রাজি না হওয়ায় তাকে শারীরিক নির্যাতন করে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ছয় মাস আগে কুমিল্লার একটি হাসপাতালে হেলানা যমজ সন্তান আলভী ও আসপীর জন্ম দেন। এরপরও স্বামী বিদেশ থেকে ফোনে মৌখিকভাবে তালাক দেন।

হেলানা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ভেবেছিলাম সন্তানদের কথা চিন্তা করে স্বামীর মন বদলাবে, কিন্তু তা হয়নি। উলটো তালাক দিয়ে এক প্রকার পথেই ফেলে দিয়েছে আমাকে।

হেলানার ভাই জামাল হোসেন ও বোন মমতাজ বেগম বলেন, বোনের সুখের আশায় স্বামীকে বিদেশ পাঠাতে যৌতুকের টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু গর্ভের সন্তান নষ্ট না করায় নির্যাতনের শিকার হন তিনি। এখন বাবার বাড়িতে অভাব অনটন থাকায় তিন সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। শিশুদের পিতৃপরিচয় ও স্বামীর অধিকার ফিরে পেতে আদালতের বারান্দায় ঘুরছেন হেলানা

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য রফিকসহ প্রতিবেশীরা জানানসালিশের চেষ্টাতেও স্বামীস্ত্রীর পুনর্মিলন সম্ভব হয়নি জনি ও তার পরিবারের একগুঁয়েমির কারণে। বাকশীমূল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল করিম বলেন, সামাজিকভাবে মীমাংসার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় বিষয়টি এখন আদালতে বিচারাধীন।

জনির মা হাসিনা বেগম বলেন, হেলানার আচরণ ভালো না, তাই ছেলে সংসার করবে না। ভরণপোষণ প্রসঙ্গে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক বলেন, মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে পাঠিয়েছে। আইনি সহযোগিতা অব্যাহত আছে।