বৃহস্পতিবার | ২৭ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি রবিউল হাসানকে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার পদে বদলী Logo প্রতিষ্ঠার পর থেকে নির্মাণ হয়নি চাঁদপুর সদর হাসপাতালে স্থায়ী মর্গ, জীর্ণ-ভবনে ময়নাতদন্ত Logo চাঁদপুর ফরিদগঞ্জে তারুণ্যের আলো সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের উদ্যোগ ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প Logo ফের ভূমিকম্প Logo কচুয়ায় জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে ৩০টি প্রদর্শনী Logo কুবির বাংলা বিভাগের বাংলা নাটক বিষয়ক প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন Logo মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত Logo মাগুরার শ্রীপুরে প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী- ২০২৫ এর উদ্বোধন Logo পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় জাতীয় প্রাণীসম্পদ সপ্তাহ ২০২৫ প্রদর্শনী Logo আমরা নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করছি: চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী বাবু খান

মুখে মাছি গেলে কি মানুষের মৃত্যু হতে পারে? কী বলছেন চিকিৎসকরা

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ১২:৫৩:৪৮ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
  • ৭৭০ বার পড়া হয়েছে
সম্প্রতি কারিশমা কাপুরের সাবেক স্বামী ও দিল্লির ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুরের আকস্মিক মৃত্যু ঘিরে আলোচনার ঝড় উঠেছে। জানা যায়, ইংল্যান্ডে পোলো খেলতে গিয়ে হঠাৎ মুখে একটি মাছি ঢুকে পড়ে, যা গলার ভেতর চলে যায়। এরপর শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। এই ঘটনা সামনে আসতেই প্রশ্ন উঠছে—মুখে মাছি গেলে কি সত্যিই প্রাণহানির ঝুঁকি থাকে?

ভারতের একজন খ্যাতনামা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তাপস রায় চৌধুরী জানিয়েছেন, এমন ঘটনা বিরল হলেও একেবারে অসম্ভব নয়। তার মতে, “সঞ্জয় কাপুরের মতো শরীরচর্চা বা খেলাধুলার সময় মানুষ নাক ও মুখ দিয়ে গভীরভাবে শ্বাস নেয়। এই সময় যদি কোনো মাছি বা পোকামাকড় মুখে ঢুকে পড়ে এবং তা গলায় চলে যায়, তাহলে তাৎক্ষণিক কাশি হতে পারে। তবে অনেক সময় মাছি বা পোকা সহজে বের হয় না এবং গলার অভ্যন্তরের মিউকাস ঝিল্লি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে অস্বাভাবিক রকমের জৈব প্রতিক্রিয়া হতে পারে, যা হৃদপিণ্ডে চাপ তৈরি করে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত করার আশঙ্কা থাকে।”

এছাড়াও, বিশেষজ্ঞরা জানান, মৌমাছি বা বিষধর পোকা গিলে ফেললে তা শরীরের জন্য মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। মৌমাছির বিষে কিছু মানুষের শরীরে তীব্র অ্যালার্জি দেখা দেয়, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা হয় ‘কুনিস সিনড্রোম’। এতে শরীর প্রদাহ সৃষ্টিকারী রাসায়নিক নিঃসরণ করে, যা রক্তনালির সংকোচন ঘটায় এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।

তবে এই মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন আরেক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কুণাল সরকার। তিনি বলেন, “মাছি গলায় ঢুকে গিয়ে সরাসরি হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে, এমনটি খুবই বিরল এবং এ নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা কঠিন। এমন ঘটনার সম্ভাবনা থাকলেও তা অতি অস্বাভাবিক ও ব্যতিক্রমী।”

তাহলে এমন পরিস্থিতিতে কী করা উচিত?
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, মুখে মাছি বা পোকা ঢুকে পড়লে যত দ্রুত সম্ভব তা বের করে ফেলতে হবে। কারণ, মুহূর্তের মধ্যে এই ঘটনা ঘটতে পারে এবং অনেক সময় কাশি বা বিষম খেলেও তা বের না-ও হতে পারে। এমন পরিস্থিতি এড়াতে খেলাধুলা বা দৌড়ের সময় মুখ খোলা না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

অন্যদিকে, যারা মৌমাছির হুল বা বিষের প্রতি সংবেদনশীল, তাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের পরিস্থিতি আরও বেশি বিপজ্জনক হতে পারে। সেক্ষেত্রে জরুরি চিকিৎসা না পেলে প্রাণহানি ঘটার আশঙ্কা থেকেই যায়।

সুতরাং, মুখে মাছি বা মৌমাছি ঢুকে পড়া নিছক হাস্যকর ঘটনা মনে হলেও, তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলেই সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি রবিউল হাসানকে চাঁদপুর জেলার পুলিশ সুপার পদে বদলী

মুখে মাছি গেলে কি মানুষের মৃত্যু হতে পারে? কী বলছেন চিকিৎসকরা

আপডেট সময় : ১২:৫৩:৪৮ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
সম্প্রতি কারিশমা কাপুরের সাবেক স্বামী ও দিল্লির ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুরের আকস্মিক মৃত্যু ঘিরে আলোচনার ঝড় উঠেছে। জানা যায়, ইংল্যান্ডে পোলো খেলতে গিয়ে হঠাৎ মুখে একটি মাছি ঢুকে পড়ে, যা গলার ভেতর চলে যায়। এরপর শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। এই ঘটনা সামনে আসতেই প্রশ্ন উঠছে—মুখে মাছি গেলে কি সত্যিই প্রাণহানির ঝুঁকি থাকে?

ভারতের একজন খ্যাতনামা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তাপস রায় চৌধুরী জানিয়েছেন, এমন ঘটনা বিরল হলেও একেবারে অসম্ভব নয়। তার মতে, “সঞ্জয় কাপুরের মতো শরীরচর্চা বা খেলাধুলার সময় মানুষ নাক ও মুখ দিয়ে গভীরভাবে শ্বাস নেয়। এই সময় যদি কোনো মাছি বা পোকামাকড় মুখে ঢুকে পড়ে এবং তা গলায় চলে যায়, তাহলে তাৎক্ষণিক কাশি হতে পারে। তবে অনেক সময় মাছি বা পোকা সহজে বের হয় না এবং গলার অভ্যন্তরের মিউকাস ঝিল্লি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে অস্বাভাবিক রকমের জৈব প্রতিক্রিয়া হতে পারে, যা হৃদপিণ্ডে চাপ তৈরি করে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত করার আশঙ্কা থাকে।”

এছাড়াও, বিশেষজ্ঞরা জানান, মৌমাছি বা বিষধর পোকা গিলে ফেললে তা শরীরের জন্য মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। মৌমাছির বিষে কিছু মানুষের শরীরে তীব্র অ্যালার্জি দেখা দেয়, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা হয় ‘কুনিস সিনড্রোম’। এতে শরীর প্রদাহ সৃষ্টিকারী রাসায়নিক নিঃসরণ করে, যা রক্তনালির সংকোচন ঘটায় এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।

তবে এই মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন আরেক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কুণাল সরকার। তিনি বলেন, “মাছি গলায় ঢুকে গিয়ে সরাসরি হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে, এমনটি খুবই বিরল এবং এ নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা কঠিন। এমন ঘটনার সম্ভাবনা থাকলেও তা অতি অস্বাভাবিক ও ব্যতিক্রমী।”

তাহলে এমন পরিস্থিতিতে কী করা উচিত?
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, মুখে মাছি বা পোকা ঢুকে পড়লে যত দ্রুত সম্ভব তা বের করে ফেলতে হবে। কারণ, মুহূর্তের মধ্যে এই ঘটনা ঘটতে পারে এবং অনেক সময় কাশি বা বিষম খেলেও তা বের না-ও হতে পারে। এমন পরিস্থিতি এড়াতে খেলাধুলা বা দৌড়ের সময় মুখ খোলা না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

অন্যদিকে, যারা মৌমাছির হুল বা বিষের প্রতি সংবেদনশীল, তাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের পরিস্থিতি আরও বেশি বিপজ্জনক হতে পারে। সেক্ষেত্রে জরুরি চিকিৎসা না পেলে প্রাণহানি ঘটার আশঙ্কা থেকেই যায়।

সুতরাং, মুখে মাছি বা মৌমাছি ঢুকে পড়া নিছক হাস্যকর ঘটনা মনে হলেও, তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলেই সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা।