শিরোনাম :
Logo শেখ হাসিনা তরুনদের শরীরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ভ্যাকসিন দিয়ে গেছেন: ফারুক ওয়াসিফ Logo বিশ্ব বাণিজ্যে রূপান্তর ঘটাবে এআই: ডাব্লিউটিও Logo আফগানিস্তানকে টপকে নবম স্থানে বাংলাদেশ Logo বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে Logo ইউএনজিএ-তে যোগ দিতে ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকা ত্যাগ করবেন প্রধান উপদেষ্টা: রোহিঙ্গা, সংস্কার ও গণতন্ত্র ইস্যু প্রাধান্য পাবে এজেন্ডায় Logo কয়রায় মিথ্যা মানববন্ধনের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন Logo পলাশবাড়ীতে ভেঙ্গেপড়া ব্রীজ দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল। Logo সিরাজগঞ্জে রেলওয়ে প্রকল্প থেকে রেলের শীট ও ভ্যান জব্দ, চুরি আতঙ্কে এলাকাবাসী Logo সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন Logo চাঁদপুরে নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম এন জামিউল হিকমা

মুখে মাছি গেলে কি মানুষের মৃত্যু হতে পারে? কী বলছেন চিকিৎসকরা

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ১২:৫৩:৪৮ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
  • ৭৪১ বার পড়া হয়েছে
সম্প্রতি কারিশমা কাপুরের সাবেক স্বামী ও দিল্লির ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুরের আকস্মিক মৃত্যু ঘিরে আলোচনার ঝড় উঠেছে। জানা যায়, ইংল্যান্ডে পোলো খেলতে গিয়ে হঠাৎ মুখে একটি মাছি ঢুকে পড়ে, যা গলার ভেতর চলে যায়। এরপর শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। এই ঘটনা সামনে আসতেই প্রশ্ন উঠছে—মুখে মাছি গেলে কি সত্যিই প্রাণহানির ঝুঁকি থাকে?

ভারতের একজন খ্যাতনামা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তাপস রায় চৌধুরী জানিয়েছেন, এমন ঘটনা বিরল হলেও একেবারে অসম্ভব নয়। তার মতে, “সঞ্জয় কাপুরের মতো শরীরচর্চা বা খেলাধুলার সময় মানুষ নাক ও মুখ দিয়ে গভীরভাবে শ্বাস নেয়। এই সময় যদি কোনো মাছি বা পোকামাকড় মুখে ঢুকে পড়ে এবং তা গলায় চলে যায়, তাহলে তাৎক্ষণিক কাশি হতে পারে। তবে অনেক সময় মাছি বা পোকা সহজে বের হয় না এবং গলার অভ্যন্তরের মিউকাস ঝিল্লি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে অস্বাভাবিক রকমের জৈব প্রতিক্রিয়া হতে পারে, যা হৃদপিণ্ডে চাপ তৈরি করে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত করার আশঙ্কা থাকে।”

এছাড়াও, বিশেষজ্ঞরা জানান, মৌমাছি বা বিষধর পোকা গিলে ফেললে তা শরীরের জন্য মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। মৌমাছির বিষে কিছু মানুষের শরীরে তীব্র অ্যালার্জি দেখা দেয়, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা হয় ‘কুনিস সিনড্রোম’। এতে শরীর প্রদাহ সৃষ্টিকারী রাসায়নিক নিঃসরণ করে, যা রক্তনালির সংকোচন ঘটায় এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।

তবে এই মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন আরেক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কুণাল সরকার। তিনি বলেন, “মাছি গলায় ঢুকে গিয়ে সরাসরি হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে, এমনটি খুবই বিরল এবং এ নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা কঠিন। এমন ঘটনার সম্ভাবনা থাকলেও তা অতি অস্বাভাবিক ও ব্যতিক্রমী।”

তাহলে এমন পরিস্থিতিতে কী করা উচিত?
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, মুখে মাছি বা পোকা ঢুকে পড়লে যত দ্রুত সম্ভব তা বের করে ফেলতে হবে। কারণ, মুহূর্তের মধ্যে এই ঘটনা ঘটতে পারে এবং অনেক সময় কাশি বা বিষম খেলেও তা বের না-ও হতে পারে। এমন পরিস্থিতি এড়াতে খেলাধুলা বা দৌড়ের সময় মুখ খোলা না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

অন্যদিকে, যারা মৌমাছির হুল বা বিষের প্রতি সংবেদনশীল, তাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের পরিস্থিতি আরও বেশি বিপজ্জনক হতে পারে। সেক্ষেত্রে জরুরি চিকিৎসা না পেলে প্রাণহানি ঘটার আশঙ্কা থেকেই যায়।

সুতরাং, মুখে মাছি বা মৌমাছি ঢুকে পড়া নিছক হাস্যকর ঘটনা মনে হলেও, তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলেই সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শেখ হাসিনা তরুনদের শরীরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ভ্যাকসিন দিয়ে গেছেন: ফারুক ওয়াসিফ

মুখে মাছি গেলে কি মানুষের মৃত্যু হতে পারে? কী বলছেন চিকিৎসকরা

আপডেট সময় : ১২:৫৩:৪৮ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
সম্প্রতি কারিশমা কাপুরের সাবেক স্বামী ও দিল্লির ব্যবসায়ী সঞ্জয় কাপুরের আকস্মিক মৃত্যু ঘিরে আলোচনার ঝড় উঠেছে। জানা যায়, ইংল্যান্ডে পোলো খেলতে গিয়ে হঠাৎ মুখে একটি মাছি ঢুকে পড়ে, যা গলার ভেতর চলে যায়। এরপর শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। এই ঘটনা সামনে আসতেই প্রশ্ন উঠছে—মুখে মাছি গেলে কি সত্যিই প্রাণহানির ঝুঁকি থাকে?

ভারতের একজন খ্যাতনামা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তাপস রায় চৌধুরী জানিয়েছেন, এমন ঘটনা বিরল হলেও একেবারে অসম্ভব নয়। তার মতে, “সঞ্জয় কাপুরের মতো শরীরচর্চা বা খেলাধুলার সময় মানুষ নাক ও মুখ দিয়ে গভীরভাবে শ্বাস নেয়। এই সময় যদি কোনো মাছি বা পোকামাকড় মুখে ঢুকে পড়ে এবং তা গলায় চলে যায়, তাহলে তাৎক্ষণিক কাশি হতে পারে। তবে অনেক সময় মাছি বা পোকা সহজে বের হয় না এবং গলার অভ্যন্তরের মিউকাস ঝিল্লি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে অস্বাভাবিক রকমের জৈব প্রতিক্রিয়া হতে পারে, যা হৃদপিণ্ডে চাপ তৈরি করে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত করার আশঙ্কা থাকে।”

এছাড়াও, বিশেষজ্ঞরা জানান, মৌমাছি বা বিষধর পোকা গিলে ফেললে তা শরীরের জন্য মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। মৌমাছির বিষে কিছু মানুষের শরীরে তীব্র অ্যালার্জি দেখা দেয়, যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে বলা হয় ‘কুনিস সিনড্রোম’। এতে শরীর প্রদাহ সৃষ্টিকারী রাসায়নিক নিঃসরণ করে, যা রক্তনালির সংকোচন ঘটায় এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।

তবে এই মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন আরেক হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. কুণাল সরকার। তিনি বলেন, “মাছি গলায় ঢুকে গিয়ে সরাসরি হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে, এমনটি খুবই বিরল এবং এ নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা কঠিন। এমন ঘটনার সম্ভাবনা থাকলেও তা অতি অস্বাভাবিক ও ব্যতিক্রমী।”

তাহলে এমন পরিস্থিতিতে কী করা উচিত?
চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী, মুখে মাছি বা পোকা ঢুকে পড়লে যত দ্রুত সম্ভব তা বের করে ফেলতে হবে। কারণ, মুহূর্তের মধ্যে এই ঘটনা ঘটতে পারে এবং অনেক সময় কাশি বা বিষম খেলেও তা বের না-ও হতে পারে। এমন পরিস্থিতি এড়াতে খেলাধুলা বা দৌড়ের সময় মুখ খোলা না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

অন্যদিকে, যারা মৌমাছির হুল বা বিষের প্রতি সংবেদনশীল, তাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের পরিস্থিতি আরও বেশি বিপজ্জনক হতে পারে। সেক্ষেত্রে জরুরি চিকিৎসা না পেলে প্রাণহানি ঘটার আশঙ্কা থেকেই যায়।

সুতরাং, মুখে মাছি বা মৌমাছি ঢুকে পড়া নিছক হাস্যকর ঘটনা মনে হলেও, তা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে বলেই সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা।