সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী মামলার রায় ‘রিভিউ’ (পুনর্বিবেচনা) নিষ্পত্তির মাধ্যমে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনরুদ্ধার ও শক্তিশালী করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের কাছে থাক বিধান বাদ দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে বিচার বিভাগ যাতে অযৌক্তিক রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত থাকে তা নিশ্চিত করা হয়েছে, বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
শনিবার ‘জুডিসিয়াল ইনডিপেনডেন্স অ্যান্ড এফিসায়েন্সি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপি যৌথভাবে এই সেমিনার আয়োজন করে।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা অবশ্যই দক্ষতার পরিপূরক উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আদালতের কার্যক্রমকে আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ করতে প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে। ডিজিটালাইজেশন এখন আর বিলাসিতা নয়, প্রয়োজন। আধুনিক সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তিকে একীভূত করার মাধ্যমে বিচারে বিলম্ব কমাতে, স্বচ্ছতা বাড়াতে এবং নির্বিঘ্ন করতে বিচার বিভাগ সচেষ্ট রয়েছে। আর এই উদ্যোগগুলো অর্জনের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সমর্থন অপরিহার্য।’
তিনি বলেন, আমাদের সমস্ত প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দুতে একটি একক উদ্দেশ্য হলো জনগণের সেবা করে এমন একটি বিচার বিভাগ তৈরি করা। যেখানে প্রত্যেক বিচারপ্রার্থী তাদের অবস্থা বা পরিস্থিতি নির্বিশেষে নিশ্চিত বোধ করবে যে, নিরপেক্ষভাবে মামলার শুনানি ও নিষ্পত্তি করা হবে। এমন একটি বিচারব্যবস্থা দরকার যা ব্যবধান দূর করে প্রযুক্তি, আইনি সহায়তা এবং পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে বিচারকে আরও সহজলভ্য করে তোলে। এই দৃষ্টিভঙ্গি আমার একার নয়, এটি একটি ভাগাভাগি আকাঙ্ক্ষা যার জন্য সব সুবিধাভোগীর (স্টেকহোল্ডারের) সম্মিলিত অঙ্গীকার প্রয়োজন।
আপিল বিভাগের বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফান লিলার। পরে দিনব্যাপী বিভিন্ন অধিবেশনে বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেন হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব, বিচারপতি মো. মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার অতিরিক্তি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোয়াজ্জেম হোসাইন। সেমিনারে উচ্চ বিচারপতি, জেলা জুডিসিয়ারির বিচারক, সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রি, আইন মন্ত্রণালয়, বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশন ও আইন কমিশনে নিযুক্ত বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনার সঞ্চালনা করেন ইউএনডিপি‘র প্রোগ্রাম লিড ফর এক্সেস টু জাস্টিসের শাহরীন তিলোত্তমা।