বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাহসিকতার সাথে সংবাদ সংগ্রহ ও নির্ভীক সাংবাদিকতার জন্য সাহসী সাংবাদিক সম্মাননা পেয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির পাঁচ সদস্য। চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাহসী ও ইতিবাচক ভূমিকা পালনের জন্য সারাদেশের ১৯৬ জন সাংবাদিককে এই স্বীকৃতি ও সম্মাননা প্রদান করেছে তথ্য প্রচার মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট।
আজ রোববার (৩ আগষ্ট) বিকেলে ঢাকায় তথ্য ভবন মিলনায়তনে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত অনুষ্ঠানে তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো: মাহফুজ আলম এই সম্মাননা সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেন।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতি সভাপতি যুগান্তর পত্রিকার আনোয়ার হোসেন, সহ সভাপতি দৈনিক সংবাদ,দৈনিক প্রতিদিনের বার্তা প্রতিনিধি আবু সাঈদ,কোষাধ্যক্ষ ওয়াল্ড গ্লোবাল টিভির আলামিন সাদিক সায়েম। কার্যকারী সদস্য সমকাল,সংবাদ বুলেটিন প্রতিনিধি সাজ্জাদুর রহমান ও নয়া দিগন্তের তওহীদুল হক সিয়াম এ পুরস্কার গ্রহণ করেন।
অনুভুতি ব্যাক্ত করে আবু সাঈদ বলেন,”এ সম্মাননা পেয়ে আমি আনন্দিত।বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতি কৃতগ্গ।আমি মনে করি এ রকম সম্মাননা ভবিষ্যতে আমাদের জন্য প্রেরণা যোগাবে।এ অর্জন শুধু আমার একার না বেরোবি ও বেরোবিসাসের।”
মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, “সাংবাদিকতা কখনো শুধুমাত্র খবর লেখা নয়। এটি হচ্ছে সত্যের পক্ষে দাঁড়ানো, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরা, এবং অনেক সময় নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলেও জনগণের পক্ষে কথা বলা। সাহসী সাংবাদিকতা মানে হচ্ছে নিপীড়কের মুখোশ খুলে সত্যকে সামনে আনা, যেটা সহজ নয়, আর সেই কঠিন কাজগুলো করার পথেই আমাদের হাঁটতে হয়। এই সম্মাননা কেবল আমার একার নয়। এই সম্মান সেই সাংবাদিকের, যিনি প্রতিদিন ভয়কে জয় করে, চাপকে উপেক্ষা করে, সত্য প্রকাশে নির্ভীক ভূমিকা রাখছেন।আমার সহকর্মীরা, আমার পরিবার এবং আমার পাঠকেরা, যারা সবসময় আমার পাশে থেকেছেন, তাদের সহায়তা ছাড়া আজকের এই মুহূর্ত অসম্ভব ছিল”।
আলামিন সাদিক সায়েম বলেন, ”আজকে যে সম্মান আমাকে প্রদান করা হয়েছে, তা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত। ১৬ জুলাই এর পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ, ছাত্রলীগ পুলিশ নির্মমভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর, ক্যাম্পাস সাংবাদিক হিসেবে,তখন আমার একমাত্র দায়িত্ব হয়ে ওঠে, এই নির্মমতাকে জাতির সামনে তুলে ধরা, সেদিন এই নির্মমতার বিচার কিংবা প্রতিরোধের জন্য আমাদের পাশে কেউ ছিলনা, তখন নিজের ফোনটায় হয়ে ওঠে বিবেকের প্রতিচ্ছবি। হয়ে ওঠে আমার প্রতিবাদের অস্ত্র।
সব কিছুর শেষ আছে এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার একদিন হবে, সেই লক্ষ্যেই আবার ফোনটা নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম লাইভ দেয়ার জন্য।
তাওহিদুল হক সিয়াম বলেন, “সাহসী সাংবাদিকতার জন্য সম্মাননা পাওয়া আমার জন্য এক গর্বের ও অনুপ্রেরণার মুহূর্ত। এটি শুধু আমার ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে নিবেদিত প্রতিটি সংবাদকর্মীর প্রতি সমাজের স্বীকৃতি। এই পুরস্কার আমাকে আরও দায়বদ্ধ করেছে নির্ভীকভাবে মানুষের পক্ষে কথা বলার এবং সাংবাদিকতার নীতিকে অটলভাবে ধারণ করার। আমি এই সম্মাননা উৎসর্গ করছি তাদের, যারা ভয় ও বাধা উপেক্ষা করে সত্য প্রকাশে দৃঢ় থাকেন”।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন তথ্য অধিদপ্তরেরপ্রধান তথ্য অফিসার নিজামূল কবীর, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরে মহাপরিচালক ফায়জুল হক, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক (ডিজি) ফারুক ওয়াসিফ প্রমুখ।