শিরোনাম :
Logo আজকের নামাজের সময়সূচি Logo যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আবার আলোচনা করতে চায় সরকার Logo চাঁদপুর পৌরসভার ১২৬ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা Logo জবিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলা সমঝোতার চেষ্টা শাখা ছাত্রদলের, দফায় দফায় বৈঠক Logo তারেক রহমানকে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে রাবি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নিন্দা Logo যুব সমাজের মধ্যে ইসলামী মূল্যবোধ না থাকায় আজ যুব সমাজ অধপতনে নিমর্জিত ……..কে. এম ইয়াসিন রাশেদসানী Logo কচুয়ার কাদলা ইউনিয়ন যুবদলের আলোচনা সভা ও কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo ‘পঞ্চায়েত’ আমার জীবন বদলে দিয়েছে Logo ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব উপকূলে ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্প Logo সারাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা হালকা থেকে মাঝারি

জ্বালানি খাতে খুলছে সম্ভাবনার দুয়ার

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ১০:০৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪
  • ৭৩৭ বার পড়া হয়েছে

দেশের জ্বালানি খাত নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। ব্যর্থতাও রয়েছে ভূরিভূরি। এরই মধ্যে মিলছে সুসংবাদ। শিগগিরিই চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ঢাকায় আসবে ডিজেল।

ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল পরিবহন শুরু হবে। এর মাধ্যমে জ্বালানি পরিবহনে নতুন একটি মাইলফলক স্পর্শ করবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, বন্দর নগরীর পতেঙ্গা থেকে রাজধানীর উপকণ্ঠে ফতুল্লা পর্যন্ত প্রথম ভূগর্ভস্থ এই পাইপলাইন চালু হলে প্রতি বছর জ্বালানি পরিবহনে প্রায় ২৩০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। ঢাকাসহ সারা দেশে ডিজেলের সরবারাহ বাড়বে দ্রুতগতিতে। কমবে পরিবহন খরচ। সংশ্লিষ্ট সূত্র এমনটাই নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, জানুয়ারি থেকেই পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল আনার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত প্রায় ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এখন পাইপলাইনে তেল সরবরাহ কার্যক্রমের উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে ৩০ লাখ টন তেল আসবে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে। এতে বিপুল অঙ্কের পরিবহন ব্যয়ের পাশাপাশি সময়ও সাশ্রয় হবে। তেল চুরিসহ সিস্টেম লসের কবল থেকেও বহুলাংশে মুক্তি মিলবে। পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবহন ব্যয় ও তেল অপচয় ঠেকানোসহ বছরে অন্তত ২৫০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে বিপিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। জ্বালানি তেল পরিবহনে পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বিপিসি। জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল আসে নদী ও সড়কপথে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মাঝেমধ্যেই তেল পরিবহন বাধাগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া নদী ও সড়কপথে তেল পরিবহনের কারণে খরচ যেমন বেশি, তেমনি তেল চুরির অভিযোগও রয়েছে। একই সঙ্গে শুষ্ক মৌসুমে নৌপথে নাব্যতা কমে যাওয়ায় তেল পরিবহন করাও কঠিন হয়ে পড়ে। এসব সংকট নিরসনেই ২০১৮ সালের অক্টোবরে ‘চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন’ নামের প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। বিপিসির পদ্মা অয়েল কম্পানির তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন হয়। শুরুতে পাইপলাইন প্রকল্পটির ব্যয় দুই হাজার ৮৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা ধরা হয়। পরে সংশোধিত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। তবে প্রকল্পটির কাজ আরো দুই বছর আগে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নানা জটিলতায় দেরি হয়েছে।

বিপিসির চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আমিন উল আহসান বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্পটি আগামী জানুয়ারিতে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এটির মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু হলে পরিবহন খরচ ও অপচয় অকেটাই রোধ করা সম্ভব হবে।’ ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্পের পরিচালক আমিনুল হক বলেন, ‘এরই মধ্যে পাইপলাইন স্থাপনের কার্যক্রম শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। কমিশনিংয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পুরোপুরিভাবে তেল সরবরাহ শুরু হলে যে পরিমাণ পরিবহন ব্যয় ও অপচয় রোধ হবে, তার মাধ্যমে ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যেই প্রকল্পের ব্যয় উঠে আসবে।’

জানা গেছে, দেশের জ্বালানি তেলের ৯০ শতাংশ পরিবাহিত হয় নৌপথে। তেল বিপণন কম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রায় ২০০টি অয়েল ট্যাংকার এসব জ্বালানি তেল পরিবহন করে। নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহনে সিস্টেম লসের পাশাপাশি বিভিন্ন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) আসিফ মালিক বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে নদীপথে ঢাকায় তেল যেতে অনেক সময় দুদিন লেগে যেত। বিভিন্ন সময় ট্যাংকারে আগুন লাগার মতো দুর্ঘটনা ঘটে। পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবহন ব্যয় সাশ্রয়ের পাশাপাশি অনেকটাই ঝুঁকিমুক্তভাবে তেল সরবরাহ করা যাবে।’ বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে রেল ও সড়ক ও নৌপথে দেশের অন্যান্য স্থানে ডিজেল পরিবহন করা হয়। পরিবহনের সময় প্রায়ই তেল চুরির ঘটনা ঘটে। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে নৌপথে নাব্যতা সংকটের কারণে জ্বালানি পরিবহনে সমস্যা দেখা দেয়। এতে প্রায়ই জ্বালানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে।

বিপিসির এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪তম ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। এতে খরচ হচ্ছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

প্রকল্প পরিচালক কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেনের মতে, এরই মধ্যে পাইপলাইনে হাইড্রো টেস্ট করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পাইপলাইনের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সফলভাবে পানি পাঠানো হয়েছে। পাইপলাইনে ৯টি পাম্পিং স্টেশন রয়েছে এবং এখন স্টেশনগুলোর সরঞ্জাম পরীক্ষা করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ‘আশা করছি ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আমরা পাইপলাইনটি চালু করতে পারব।’

এই পাইপলাইন দিয়ে বছরে ২ দশমিক ৭ থেকে ৩ মিলিয়ন টন ডিজেল পরিবহন করা যাবে। ধাপে ধাপে এর সক্ষমতা পাঁচ মিলিয়ন টনে উন্নীত করা যেতে পারে।

বিপিসির তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সারা দেশে নৌপথে ৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন জ্বালানি পরিবহন করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে ২ দশমিক ৭ মিলিয়ন টন তেল পরিবহন করা হয়েছে। বর্তমানে এ রুটে প্রতি মাসে ১১০টি জাহাজ জ্বালানি পরিবহন করে।

দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই পাইপলাইনের দুটি অংশ রয়েছে : একটি ২৪১ দশমিক ২৮ কিলোমিটার ১৬-ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন। এটি পতেঙ্গা থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর এবং মুন্সীগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত তেল পৌঁছাবে। অন্য অংশটি ৮ দশমিক ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই অংশে ১০-ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন দিয়ে গোদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত তেল পরিবহন করা হবে। পতেঙ্গা থেকে গোদনাইল পর্যন্ত ২২টি নদী ও খালের তলা দিয়ে এই পাইপলাইন গেছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আজকের নামাজের সময়সূচি

জ্বালানি খাতে খুলছে সম্ভাবনার দুয়ার

আপডেট সময় : ১০:০৫:৪৬ পূর্বাহ্ণ, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪

দেশের জ্বালানি খাত নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। ব্যর্থতাও রয়েছে ভূরিভূরি। এরই মধ্যে মিলছে সুসংবাদ। শিগগিরিই চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ঢাকায় আসবে ডিজেল।

ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা ও চট্টগ্রামের মধ্যে ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল পরিবহন শুরু হবে। এর মাধ্যমে জ্বালানি পরিবহনে নতুন একটি মাইলফলক স্পর্শ করবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, বন্দর নগরীর পতেঙ্গা থেকে রাজধানীর উপকণ্ঠে ফতুল্লা পর্যন্ত প্রথম ভূগর্ভস্থ এই পাইপলাইন চালু হলে প্রতি বছর জ্বালানি পরিবহনে প্রায় ২৩০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। ঢাকাসহ সারা দেশে ডিজেলের সরবারাহ বাড়বে দ্রুতগতিতে। কমবে পরিবহন খরচ। সংশ্লিষ্ট সূত্র এমনটাই নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, জানুয়ারি থেকেই পাইপলাইনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল আনার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত প্রায় ২৫০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপনের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। এখন পাইপলাইনে তেল সরবরাহ কার্যক্রমের উদ্বোধনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বছরে ৩০ লাখ টন তেল আসবে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে। এতে বিপুল অঙ্কের পরিবহন ব্যয়ের পাশাপাশি সময়ও সাশ্রয় হবে। তেল চুরিসহ সিস্টেম লসের কবল থেকেও বহুলাংশে মুক্তি মিলবে। পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবহন ব্যয় ও তেল অপচয় ঠেকানোসহ বছরে অন্তত ২৫০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে বিপিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। জ্বালানি তেল পরিবহনে পাইপলাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে বিপিসি। জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় জ্বালানি তেল আসে নদী ও সড়কপথে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে মাঝেমধ্যেই তেল পরিবহন বাধাগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া নদী ও সড়কপথে তেল পরিবহনের কারণে খরচ যেমন বেশি, তেমনি তেল চুরির অভিযোগও রয়েছে। একই সঙ্গে শুষ্ক মৌসুমে নৌপথে নাব্যতা কমে যাওয়ায় তেল পরিবহন করাও কঠিন হয়ে পড়ে। এসব সংকট নিরসনেই ২০১৮ সালের অক্টোবরে ‘চট্টগ্রাম হতে ঢাকা পর্যন্ত পাইপলাইনে জ্বালানি তেল পরিবহন’ নামের প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়। বিপিসির পদ্মা অয়েল কম্পানির তত্ত্বাবধানে প্রকল্পটির কাজ সম্পন্ন হয়। শুরুতে পাইপলাইন প্রকল্পটির ব্যয় দুই হাজার ৮৬১ কোটি ৩১ লাখ টাকা ধরা হয়। পরে সংশোধিত ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। তবে প্রকল্পটির কাজ আরো দুই বছর আগে শেষ হওয়ার কথা ছিল। নানা জটিলতায় দেরি হয়েছে।

বিপিসির চেয়ারম্যান (সচিব) মো. আমিন উল আহসান বলেন, ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্পটি আগামী জানুয়ারিতে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এটির মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু হলে পরিবহন খরচ ও অপচয় অকেটাই রোধ করা সম্ভব হবে।’ ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন প্রকল্পের পরিচালক আমিনুল হক বলেন, ‘এরই মধ্যে পাইপলাইন স্থাপনের কার্যক্রম শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। কমিশনিংয়ের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পুরোপুরিভাবে তেল সরবরাহ শুরু হলে যে পরিমাণ পরিবহন ব্যয় ও অপচয় রোধ হবে, তার মাধ্যমে ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যেই প্রকল্পের ব্যয় উঠে আসবে।’

জানা গেছে, দেশের জ্বালানি তেলের ৯০ শতাংশ পরিবাহিত হয় নৌপথে। তেল বিপণন কম্পানিগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রায় ২০০টি অয়েল ট্যাংকার এসব জ্বালানি তেল পরিবহন করে। নৌপথে জ্বালানি তেল পরিবহনে সিস্টেম লসের পাশাপাশি বিভিন্ন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনাও ঘটে। পদ্মা অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের উপমহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) আসিফ মালিক বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে নদীপথে ঢাকায় তেল যেতে অনেক সময় দুদিন লেগে যেত। বিভিন্ন সময় ট্যাংকারে আগুন লাগার মতো দুর্ঘটনা ঘটে। পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবহন ব্যয় সাশ্রয়ের পাশাপাশি অনেকটাই ঝুঁকিমুক্তভাবে তেল সরবরাহ করা যাবে।’ বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে রেল ও সড়ক ও নৌপথে দেশের অন্যান্য স্থানে ডিজেল পরিবহন করা হয়। পরিবহনের সময় প্রায়ই তেল চুরির ঘটনা ঘটে। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে নৌপথে নাব্যতা সংকটের কারণে জ্বালানি পরিবহনে সমস্যা দেখা দেয়। এতে প্রায়ই জ্বালানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে।

বিপিসির এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪তম ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। এতে খরচ হচ্ছে ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

প্রকল্প পরিচালক কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেনের মতে, এরই মধ্যে পাইপলাইনে হাইড্রো টেস্ট করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পাইপলাইনের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সফলভাবে পানি পাঠানো হয়েছে। পাইপলাইনে ৯টি পাম্পিং স্টেশন রয়েছে এবং এখন স্টেশনগুলোর সরঞ্জাম পরীক্ষা করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ‘আশা করছি ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আমরা পাইপলাইনটি চালু করতে পারব।’

এই পাইপলাইন দিয়ে বছরে ২ দশমিক ৭ থেকে ৩ মিলিয়ন টন ডিজেল পরিবহন করা যাবে। ধাপে ধাপে এর সক্ষমতা পাঁচ মিলিয়ন টনে উন্নীত করা যেতে পারে।

বিপিসির তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সারা দেশে নৌপথে ৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন জ্বালানি পরিবহন করা হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপোতে ২ দশমিক ৭ মিলিয়ন টন তেল পরিবহন করা হয়েছে। বর্তমানে এ রুটে প্রতি মাসে ১১০টি জাহাজ জ্বালানি পরিবহন করে।

দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই পাইপলাইনের দুটি অংশ রয়েছে : একটি ২৪১ দশমিক ২৮ কিলোমিটার ১৬-ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন। এটি পতেঙ্গা থেকে ফেনী, কুমিল্লা, চাঁদপুর এবং মুন্সীগঞ্জ হয়ে নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ডিপো পর্যন্ত তেল পৌঁছাবে। অন্য অংশটি ৮ দশমিক ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই অংশে ১০-ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন দিয়ে গোদনাইল থেকে ফতুল্লা পর্যন্ত তেল পরিবহন করা হবে। পতেঙ্গা থেকে গোদনাইল পর্যন্ত ২২টি নদী ও খালের তলা দিয়ে এই পাইপলাইন গেছে।