বৃহস্পতিবার | ৩০ অক্টোবর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি জয়ের ১২০৮ কোটি টাকার রহস্যময় লেনদেনে তদন্তে সিআইডি Logo সিরাজগঞ্জে চাঞ্চল্যকর মাদক ব্যবসায়ী খুনে পিবিআইয়ের হাতে দুই আসামি গ্রেফতার Logo সুন্দরবনে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর অস্ত্র সরবরাহকারী আটক করেছে কোস্ট গার্ড Logo ইবি শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যু  Logo সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন সহজভাবে প্রকাশের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের মাছপট্টি এলাকায় গ্যাস সিলিণ্ডার বিস্ফোরণে ২ জন আহত Logo ইবির আরবী বিভাগের স্নাতক সমাপনী র‍্যালি অনুষ্ঠিত! Logo খুবিতে ওবিই পদ্ধতিতে প্রশ্ন প্রণয়ন ও পরিমার্জন বিষয়ক প্রশিক্ষণ! Logo সম্পাদক আশরাফ ইকবালের জন্মদিনে শিক্ষার্থীদের গাছের চারা উপহার দিলেন তরুছায়া Logo মাদকবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন শ্যামনগরের ছফিরুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়

আন্দোলনে নিহত সজলের খোঁজ নেননি কেউ শহীদের মর্যাদা চান পরিবার

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৬:৪৬ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০২৪
  • ৭৪৭ বার পড়া হয়েছে

 বায়েজিদ গাইবান্ধা :

খলিলুর রহমান ও শাহিনা বেগম দম্পতি চাকরি করেন সাভারের আশুলিয়ায়  প্রাইভেট কোম্পানিতে। ছেলে সাজ্জাদ হোসেন সজল,মেয়ে খাদিজা ফেরদৌসী,ছেলের বউ আফরিন মৌ এবং নাতনি সাবা এই নিয়ে তাদের সাজানো গোছানো সুখের একটি সংসার। পরিশ্রম করে ছেলে মেয়েকে  ভালো পড়া লেখার  জন্য গ্রাম ছেড়ে শহরে পারি জমান এই দম্পতি ।

ছেলেকে ভর্তি করিয়েছিলেন সিটি ইউনিভার্সিটিতে। পড়ালেখা শেষ করে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হয়ে  সংসারের হাল ধরবেন এমনটাই স্বপ্ন  ছিল তাদের। কিন্তু সেই স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই রয়ে  গেল আর পূরণ হলো না।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট সারাদেশে ছাত্র জনতা যখন  বিজয়ের পতাকা হাতে নিয়ে রাজপথে আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠে তখন সজলের পরিবারের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।

মায়ের সঙ্গে সজলের শেষ কথা হয়েছিল ৪ আগষ্ট রাতে। সজলকে বাসায় ফিরে আসতে বললে সে বলতো আমাকে ঘরে ডেকো না,আমার ভাইয়েরা যুদ্ধের ময়দানে গুলি খেয়ে মারা যাচ্ছে তাদেরকে রেখে আমি কি করে ঘরে ফিরবো মা। দেশ স্বাধীন করে বিজয়ের পতাকা হাতে নিয়েই ঘরে ফিরব। আর যদি না ফিরতে পারি তাহলে জানবে তোমার ছেলে শহীদ হয়েছে।

পরদিন ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ না হলে খুঁজতে বের হন বাবা-মা। সাভারের আশুলিয়া এলাকায় পুলিশের পুড়ে যাওয়া গাড়ির ভিতরে কয়েকটি  পোড়া লাশের ভিতর থেকে শরীরের গঠন ও আইডি কার্ড দেখে ছেলেকে সনাক্ত করেন তারা। সজলের মা ধারণা করেন গুলিবিদ্ধ শরীরে আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছে তার ছেলেকে।

সেনাবাহিনীদের  সহযোগিতায় সজলের গুলিবিদ্ধ ও পোড়া লাশ নিয়ে আসা হয় তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সাঘাটা  উপজেলার শ্যামপুরে। সেখানেই বাড়ির উঠানে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয় সজলের মরদেহের।

বাবার আদর, সোহাগ,স্নেহ আর ভালোবাসা পাবেনা এক বছর এক মাসের শিশু কন্যা সাবা । এসব ভেবে ভেবে নির্বাক হয়ে গেছে সজলের স্ত্রী আফরিন মৌ। তার স্বামী বেঁচে নেই এটি সে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না।

এতসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কেউ কোন খোঁজ খবর না নেওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন সজলের বাবা-মা। তারা দাবি করেন তাদের ছেলেকে যেন রাষ্ট্রীয় ভাবে শহীদের মর্যাদাসহ পরিবারের সকলকে সব ধরনের সুযোগ  সুবিধা দেওয়া হয়।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিজয়ের পতাকা হাতে নিয়ে ঘরে  ফিরতে না পারলেও সজলের সমাধিতে এখন  উড়ছে  লাল সবুজের পতাকা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি জয়ের ১২০৮ কোটি টাকার রহস্যময় লেনদেনে তদন্তে সিআইডি

আন্দোলনে নিহত সজলের খোঁজ নেননি কেউ শহীদের মর্যাদা চান পরিবার

আপডেট সময় : ০৫:৪৬:৪৬ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০২৪

 বায়েজিদ গাইবান্ধা :

খলিলুর রহমান ও শাহিনা বেগম দম্পতি চাকরি করেন সাভারের আশুলিয়ায়  প্রাইভেট কোম্পানিতে। ছেলে সাজ্জাদ হোসেন সজল,মেয়ে খাদিজা ফেরদৌসী,ছেলের বউ আফরিন মৌ এবং নাতনি সাবা এই নিয়ে তাদের সাজানো গোছানো সুখের একটি সংসার। পরিশ্রম করে ছেলে মেয়েকে  ভালো পড়া লেখার  জন্য গ্রাম ছেড়ে শহরে পারি জমান এই দম্পতি ।

ছেলেকে ভর্তি করিয়েছিলেন সিটি ইউনিভার্সিটিতে। পড়ালেখা শেষ করে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বের হয়ে  সংসারের হাল ধরবেন এমনটাই স্বপ্ন  ছিল তাদের। কিন্তু সেই স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই রয়ে  গেল আর পূরণ হলো না।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট সারাদেশে ছাত্র জনতা যখন  বিজয়ের পতাকা হাতে নিয়ে রাজপথে আনন্দে উল্লাসে মেতে উঠে তখন সজলের পরিবারের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠে।

মায়ের সঙ্গে সজলের শেষ কথা হয়েছিল ৪ আগষ্ট রাতে। সজলকে বাসায় ফিরে আসতে বললে সে বলতো আমাকে ঘরে ডেকো না,আমার ভাইয়েরা যুদ্ধের ময়দানে গুলি খেয়ে মারা যাচ্ছে তাদেরকে রেখে আমি কি করে ঘরে ফিরবো মা। দেশ স্বাধীন করে বিজয়ের পতাকা হাতে নিয়েই ঘরে ফিরব। আর যদি না ফিরতে পারি তাহলে জানবে তোমার ছেলে শহীদ হয়েছে।

পরদিন ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ না হলে খুঁজতে বের হন বাবা-মা। সাভারের আশুলিয়া এলাকায় পুলিশের পুড়ে যাওয়া গাড়ির ভিতরে কয়েকটি  পোড়া লাশের ভিতর থেকে শরীরের গঠন ও আইডি কার্ড দেখে ছেলেকে সনাক্ত করেন তারা। সজলের মা ধারণা করেন গুলিবিদ্ধ শরীরে আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছে তার ছেলেকে।

সেনাবাহিনীদের  সহযোগিতায় সজলের গুলিবিদ্ধ ও পোড়া লাশ নিয়ে আসা হয় তার গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সাঘাটা  উপজেলার শ্যামপুরে। সেখানেই বাড়ির উঠানে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয় সজলের মরদেহের।

বাবার আদর, সোহাগ,স্নেহ আর ভালোবাসা পাবেনা এক বছর এক মাসের শিশু কন্যা সাবা । এসব ভেবে ভেবে নির্বাক হয়ে গেছে সজলের স্ত্রী আফরিন মৌ। তার স্বামী বেঁচে নেই এটি সে কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না।

এতসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কেউ কোন খোঁজ খবর না নেওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন সজলের বাবা-মা। তারা দাবি করেন তাদের ছেলেকে যেন রাষ্ট্রীয় ভাবে শহীদের মর্যাদাসহ পরিবারের সকলকে সব ধরনের সুযোগ  সুবিধা দেওয়া হয়।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বিজয়ের পতাকা হাতে নিয়ে ঘরে  ফিরতে না পারলেও সজলের সমাধিতে এখন  উড়ছে  লাল সবুজের পতাকা।