জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সংবাদ প্রকাশের জেরে এক কর্মরত সাংবাদিকের ওপর হামলা ও ‘মব’ সৃষ্টি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আ ফ ম কামালউদ্দীন হলে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আজ বুধবার বিকেল চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলমের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগী তানজীর হোসাইন সাকিব বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। অন্যদিকে অভিযুক্ত হিসেবে রসায়ন বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আহমেদ শামীম, দর্শন বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের কামরুল হাসান রামিম, ইতিহাস বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের ইমন শাহ, বাংলা বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের নোমানসহ ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তারা সবাই আ ফ ম কামালউদ্দীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।
লিখিত অভিযোগ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আ ফ ম কামালউদ্দীন হলে অনাবাসিক ও সাবেক শিক্ষার্থীদের ভোজের (ফিস্ট) টোকেন না দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে হলের প্রাধ্যক্ষসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ডাইনিংকক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ডাইনিংয়ে থাকা শিক্ষক ও হল সংসদের ভিপি-জিএসকে লক্ষ্য করে পানির বোতল নিক্ষেপ করা হয়। পরে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান ও গালিগালাজ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাত দেড়টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান হলে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এসব ঘটনার সংবাদ প্রকাশ করেন তানজীর হোসাইন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, সংবাদ প্রকাশের পরপরই রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে হল এলাকা ত্যাগ করার সময় ‘ওই নিউজ করছে’, ‘ধর’, ‘মার’ স্লোগান দিয়ে ৭ থেকে ১০ জন শিক্ষার্থী তানজীরকে ধাওয়া করেন। একপর্যায়ে হলের প্রধান ফটকে তাঁকে ধরে ফেলা হয় এবং ক্যামেরার আওতার বাইরে নিয়ে মারধরের চেষ্টা করা হয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, আহমেদ শামীমের নেতৃত্বে কামরুল হাসান রামিমসহ অভিযুক্তরা তাঁকে হলের ভেতরে নিয়ে গিয়ে মারধর ও ‘মব’ তৈরি করে হত্যাচেষ্টা চালান। এ সময় তানজীর অসুস্থ হয়ে পড়লে অভিযুক্তরা তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
পরে সহকর্মী সাংবাদিকদের সহায়তায় তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে গেলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মেহেদী মামুনসহ অন্যদেরও মারধরের চেষ্টা, হুমকি ও গালিগালাজ করা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী দাবি করেন, হল ও আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরায় পুরো ঘটনার ফুটেজ সংরক্ষিত আছে। ঘটনার পর থেকে তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, “আমি এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে দ্রুত তদন্ত কমিটি করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”






















































