বুধবার | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ | শীতকাল
শিরোনাম :
Logo শিক্ষানুরাগী ও মানবিক সমাজসেবক রফিকুল ইসলাম রনি পেলেন মিজাফ বিজয় সম্মাননা Logo জাবিতে সাংবাদিকের ওপর মব ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ Logo মহান বিজয় দিবসকে ভারতের বিজয় দাবি করায় ইবি শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ Logo সাতক্ষীরা ও কলারোয়া সীমান্তে বিজিবির অভিযানে সাড়ে চার লাখ টাকার মাদক ও চোরাচালানি পণ্য উদ্ধার Logo চাঁদপুর শহরে ব্র্যাকের উদ্যোগে ডেঙ্গু প্রতিরোধ অভিযান Logo পোস্টাল ভোট দিতে ৪ লাখ ৫৮ হাজার প্রবাসী ও সরকারি চাকরিজীবীর নিবন্ধন Logo কয়রায় যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস পালিত Logo চাঁদপুরে বিজয় দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা Logo জাল সিএস কপি ও ভুয়া নথিতে এমপিও আবেদন অগ্রায়ন—গাইবান্ধা জেলা শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ Logo মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে খুবির ন্যাশনালিস্ট টিচার্স এসোসিয়েশন (এনটিএ) এর বিবৃতি

মহান বিজয় দিবসকে ভারতের বিজয় দাবি করায় ইবি শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৬:০১:০২ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৭০৬ বার পড়া হয়েছে

মহান বিজয় দিবসকে ভারতের বিজয় বলে দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যের প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের বক্তব্যসংবলিত পোস্টার জ্বালিয়ে দেন। একই সঙ্গে মহান বিজয় দিবসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতার প্রতিবাদ জানিয়ে পাকিস্তানের পতাকা পুড়িয়ে ঘৃণা প্রকাশ করেন তারা।

দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষের (মাস্টার্স) শিক্ষার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ আলীর ডাকে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজসহ রুকনুজ্জামান, তাওহীদ, আল আমিন, রিফাত, সেজান, পোলক, শাকিল প্রমুখ। এ সময় তারা “ভারতের আধিপত্যবাদ মানি না মানবো না”, “ভারতীয় আগ্রাসন মানি না মানবো না”, “দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা”, “দিল্লি না পিন্ডি, সবার আগে বাংলাদেশ”—এমন বিভিন্ন স্লোগান দেন।

এর আগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা প্রকাশের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলের প্রধান ফটকে পদদলিত করার জন্য পাকিস্তানের পতাকা বিছিয়ে দেন সৈয়দ মোহাম্মদ আলী ও মো. এনামুল হক পোলক। পরে প্রশাসন ভবনের সামনেও একই ধরনের কর্মসূচির উদ্যোগ নেন তারা। তবে প্রশাসন ভবন থেকে ফিরে এসে দেখা যায়, সাদ্দাম হোসেন হলের সামনে রাখা পাকিস্তানের পতাকাটি কে বা কারা ছিঁড়ে ফেলেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

কর্মসূচিতে সৈয়দ মোহাম্মদ আলী বলেন, “আজ মহান বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও নিন্দনীয়। আমরা এই বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। বাঙালি জাতি দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সে সময় ভারত সহযোগিতা করেছিল—এ জন্য আমরা তাদের স্মরণ করি। কিন্তু আমাদের বিজয়কে যদি তারা নিজেদের বিজয় বলে দাবি করে, সেটি তাদের ভুল ধারণা।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিজয়কে পুঁজি করে যদি কেউ বাংলাদেশের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে, তবে আমরা—যারা বাঙালি ও জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী—তা প্রতিহত করবো। আমরা একদিন পিন্ডিকে প্রতিহত করেছি, সময় এলে দিল্লিকেও প্রতিহত করবো। আমাদের রয়েছে ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মতো গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। কেউ যদি এই ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করে, তবে তাকে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।”

পাকিস্তানের পতাকা সরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতার প্রতিবাদে আজ সাদ্দাম হলের সামনে পাকিস্তানের পতাকা পদদলিত করার জন্য বিছানো হয়েছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর দেখা যায়, পতাকাটি সেখানে নেই। পাকিস্তানের প্রতি কাদের এত দরদ যে তারা পতাকাটি সরিয়ে নিয়েছে—তা আমরা জানতে চাই। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে সামনে আনা হোক।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “৫ আগস্টের পর একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে আমাদের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করছে। রাজাকার ও আলবদরদের বাঙালির ‘সূর্য সন্তান’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে—এর চেয়ে লজ্জার কিছু হতে পারে না। আমরা এসব কর্মকাণ্ড ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। একই সঙ্গে ভারতের আধিপত্যবাদকেও আমরা প্রত্যাখ্যান করি এবং এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।”

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষানুরাগী ও মানবিক সমাজসেবক রফিকুল ইসলাম রনি পেলেন মিজাফ বিজয় সম্মাননা

মহান বিজয় দিবসকে ভারতের বিজয় দাবি করায় ইবি শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৬:০১:০২ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫

মহান বিজয় দিবসকে ভারতের বিজয় বলে দাবি করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যের প্রতিবাদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহের বক্তব্যসংবলিত পোস্টার জ্বালিয়ে দেন। একই সঙ্গে মহান বিজয় দিবসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতার প্রতিবাদ জানিয়ে পাকিস্তানের পতাকা পুড়িয়ে ঘৃণা প্রকাশ করেন তারা।

দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষের (মাস্টার্স) শিক্ষার্থী সৈয়দ মোহাম্মদ আলীর ডাকে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার পারভেজসহ রুকনুজ্জামান, তাওহীদ, আল আমিন, রিফাত, সেজান, পোলক, শাকিল প্রমুখ। এ সময় তারা “ভারতের আধিপত্যবাদ মানি না মানবো না”, “ভারতীয় আগ্রাসন মানি না মানবো না”, “দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা”, “দিল্লি না পিন্ডি, সবার আগে বাংলাদেশ”—এমন বিভিন্ন স্লোগান দেন।

এর আগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা প্রকাশের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদ্দাম হোসেন হলের প্রধান ফটকে পদদলিত করার জন্য পাকিস্তানের পতাকা বিছিয়ে দেন সৈয়দ মোহাম্মদ আলী ও মো. এনামুল হক পোলক। পরে প্রশাসন ভবনের সামনেও একই ধরনের কর্মসূচির উদ্যোগ নেন তারা। তবে প্রশাসন ভবন থেকে ফিরে এসে দেখা যায়, সাদ্দাম হোসেন হলের সামনে রাখা পাকিস্তানের পতাকাটি কে বা কারা ছিঁড়ে ফেলেছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।

কর্মসূচিতে সৈয়দ মোহাম্মদ আলী বলেন, “আজ মহান বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও নিন্দনীয়। আমরা এই বক্তব্য ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। বাঙালি জাতি দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। সে সময় ভারত সহযোগিতা করেছিল—এ জন্য আমরা তাদের স্মরণ করি। কিন্তু আমাদের বিজয়কে যদি তারা নিজেদের বিজয় বলে দাবি করে, সেটি তাদের ভুল ধারণা।”

তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিজয়কে পুঁজি করে যদি কেউ বাংলাদেশের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে, তবে আমরা—যারা বাঙালি ও জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী—তা প্রতিহত করবো। আমরা একদিন পিন্ডিকে প্রতিহত করেছি, সময় এলে দিল্লিকেও প্রতিহত করবো। আমাদের রয়েছে ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মতো গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। কেউ যদি এই ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করে, তবে তাকে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।”

পাকিস্তানের পতাকা সরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতার প্রতিবাদে আজ সাদ্দাম হলের সামনে পাকিস্তানের পতাকা পদদলিত করার জন্য বিছানো হয়েছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর দেখা যায়, পতাকাটি সেখানে নেই। পাকিস্তানের প্রতি কাদের এত দরদ যে তারা পতাকাটি সরিয়ে নিয়েছে—তা আমরা জানতে চাই। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে সামনে আনা হোক।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “৫ আগস্টের পর একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে আমাদের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করছে। রাজাকার ও আলবদরদের বাঙালির ‘সূর্য সন্তান’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে—এর চেয়ে লজ্জার কিছু হতে পারে না। আমরা এসব কর্মকাণ্ড ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। একই সঙ্গে ভারতের আধিপত্যবাদকেও আমরা প্রত্যাখ্যান করি এবং এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।”