হাবিবুল ইসলাম হাবিব, টেকনাফ: টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ ৫ বছর ধরে ভাঙা বেড়িবাঁধ ও সড়ক সংস্কারবিহীন রয়েছে। ফলে এ দ্বীপের ৩৫ হাজার মানুষকে পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে। স্থানীয় সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, আমাদের কি দেখার বাংলাদেশ সরকারের কেউ নেই? এলাকাবাসীর যোগাযোগ করতে হচ্ছে নৌকায় করে। আর এ নৌকা পার হতে গিয়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে প্রাণহানিও। ২০১২ সালের ২২ জুলাই সাগরের জোয়ারে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীরদ্বীপ পশ্চিমপাড়া বেড়িবাঁধে ভাঙন হয়। এতে বিস্তীর্ণ এলাকা জোয়ারে প্লাবিত হয়। এরপর থেকে ৫ টি বছর ধরে ভাঙা বাঁধ দিয়ে প্রবেশ করছে পানি। এতে হাড়িয়াখালী থেকে শাহপরীরদ্বীপ পর্যন্ত বিশাল এলাকা পানিতে নিমজ্জিত থাকে। ওই সময় জোয়ারের পানিতে টেকনাফ-শাহপরীরদ্বীপ পাকা সড়কটির ৫ কিলোমিটারের বিভিন্ন অংশে ভাঙন ধরে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বর্তমানে দ্বীপবাসীকে দুর্ভোগ নিয়ে জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। তাদের দুইবার নৌকায় ও হেঁটে যাতায়াত করতে হচ্ছে। তবে আগের চেয়ে কয়েকগুণ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।
সুত্রে জানা যায়, ১৯৯১ সালে ২৯ এপ্রিল ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে দ্বীপের দেড় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে যায়। এরপর থেকে ভাঙন ঠেকাতে প্রায় শত কোটি টাকা খরচ করা হলেও তা কোনো কাজে আসেনি।
শাহপরীরদ্বীপ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি মাষ্টার জাহিদ হোসন জানান, শাহপরীরদ্বীপের বেড়িবাঁধ ও সড়ক ভাঙার কারণে ৫টি বছর ধরে মানুষ কষ্টের মধ্যে জীবন-যাপন করছে। প্রতি অমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারে দ্বীপটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ৯১-এর ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে বেড়িবাঁধে শত কোটি টাকা খরচ করলেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। গত ৪ বছর আগে ৩ সেপ্টেম্বর উখিয়ার জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবরাং ইউনিয়ন শাহপরীরদ্বীপ ভাঙা বাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দিলেও এখনো কোনো কাজ হয়নি। এর পরে মাহে রমজানে সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শাহরীরদ্বীপের মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণের সময় বর্ষার আগে ভাঙা বাঁধের নিমার্ণ কাজ শুরু হবে বলেও এখন পর্যন্ত দ্বীপবাসী আশায়তে থেকে গেছে।
সাবরাং ইউপি চেয়ারম্যান নুর হোসেন জানান, ৫ টি বছর ধরে দ্বীপের জনগণের দুর্ভোগের শেষ নেই। শাহপরীরদ্বীপের বিভিন্ন শ্রেনীর লোকজন বাড়িতে আসা-যাওয়া করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এখন বর্ষা হতে না হতে শত-শত বাড়িঘর সাগরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এদিকে পাউবো কর্তৃপক্ষ পরিকল্পিত টেকসই বাঁধ নির্মাণ না করে শুধু ভাঙন এলাকায় রিং বাঁধ দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করছে। তা আমাবস্যা ও পূর্ণিমার জোয়ারে ভেঙে যাচ্ছে। ভাঙা বেড়িবাঁধটি স্থায়ীভাবে নির্মাণের জন্য সরকার ১০৬ কোটি টাকার বরাদ্ধ করার কথা বার বার জনসভায় বলে আসলেও সেই বরাদ্ধকৃত টাকা দিয়ে বাঁধ হচ্ছে না কেন শাহপরীরদ্বী বাসীর প্রশ্ন।