|| জিয়াবুল হক||
সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ একটি অপার সম্ভাবনাময় স্থান। এটি বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণে প্রান্তে অবস্থিত একটি মিয়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা উপজেলা এবং এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও অর্থনৈতিক উভয় দিকেই প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
টেকনাফ তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত, বিশেষ করে মেরিন ড্রাইভ সড়ক, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, শাহপরীর দ্বীপের ঘোলার চর ও থানার ঐতিহ্যবাহী মার্থিনের কূপ পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এছাড়াও হ্নীলার সোলার পার্ক এবং সুপারি, লবন চাষের মতো খাতেও টেকনাফের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি সীমান্ত বানিজ্য গুলো বন্ধের গভীর ষড়যন্ত্র গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ করিডোর ও বিগত এক বছর ধরে টেকনাফ স্থলবন্দর বন্ধের পথে। এই দুই বানিজ্যিক ব্যবসায় জড়িত লোকজন অসহায় হয়ে পড়েছে। সরকারি ভাবে কোন ধরনের উদ্যোগ নেয় বললে চলে। ফলে কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি টেকনাফ স্থলবন্দর বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বন্ধের ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। এতে টেকনাফের বৈধ ব্যবসায়ী খাতের অন্ধকার নেমে যাচ্ছে।
টেকনাফের অপার সম্ভাবনার কয়েকটি দিক নিচে তুলে ধরা হল —
পর্যটন:
টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক, যা কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত, এটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। এছাড়া, সেন্টমার্টিন দ্বীপ, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ, পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। তার পাশাপাশি টেকনাফ মডেল থানার আঙ্গিনায় মাথিন ধীরাজের প্রেমের সাক্ষী মাথিনের কূপ ও শাহপরীর দ্বীপের ঘোলার চর এবং জালিয়ার দ্বীপের স্থান টেকনাফের পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এই স্থান গুলো যদি সঠিক সময়ে সরকারি ভাবে পর্যটন খাতে উদ্যোগ নেয়া হলে টেকনাফের চিত্র পাল্টে যাবে বলে অনেক সচেতন মহলের অভিমত।
অর্থনীতি:
সুপারি ও লবন চাষ: টেকনাফে সুপারির বাম্পার ফলন হয় এবং এটি একটি লাভজনক অর্থনৈতিক খাত। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে সুপারির ফলন ভালো হয়। আর লবন চাষের জন্যও বিখ্যাত টেকনাফ।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি:
টেকনাফে সোলার পার্ক স্থাপনের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রেও সম্ভাবনা রয়েছে।
মৎস্য সম্পদ: টেকনাফ উপকূলীয় এলাকা হওয়ায় এখানে মাছ ধরা একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কার্যকলাপ। এখানে রয়েছে দীর্ঘ ১২০ কিলোমিটারের বঙ্গোপসাগর ও মিয়ানমার সীমান্ত ঘেঁষা নাফনদী।
ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য:
টেকনাফে উঁচু ও লম্বা সৌন্দর্য পাহাড় এবং সমুদ্রের মনোরম দৃশ্যের জন্য পরিচিত। এটি একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হওয়ার অন্যতম কারণ। কক্সবাজারের কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তি পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ৫ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতকে পুঁজি করে বাকি দীর্ঘ ১২০ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ইচ্ছুক দেশি-বিদেশি পর্যটকদের ভূল বুঝিয়ে ষড়যন্ত্রের লিপ্ত। এতে সরকার চাইলে অপার সম্ভাবনাময় টেকনাফকে বিশ্বের দাঁড় পান্তে পর্যটন অঞ্চল গড়ে তুলা সম্ভব।
টেকনাফের এই অপার সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগিয়ে বর্তমান সরকারের এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত। এতে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি এই জনপদের বেকার সংখ্যা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
জিয়াবুল হক,লেখক ও সাংবাদিক