শনিবার | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ | শীতকাল
শিরোনাম :
Logo ভারতীয় নাগরিকের গুলিবর্ষণে সিলেট সীমান্তে ২ বাংলাদেশি নিহত Logo সাতক্ষীরায় জুলাই যোদ্ধা শরীফ ওসমান হাদি হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, গায়েবানা জানাজা ও দোয়া মাহফিল Logo সাংবাদিকদের পাশে থাকবে সরকার: ন্যায়বিচারের আশ্বাস Logo প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, সুপরিকল্পিত: জাবিসাস Logo হাদি হত্যা ও হামলা-ভাঙচুর; জাবিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি Logo চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, জেলা কার্যালয় চাঁদপুরের যৌথ আয়োজনে চাঁদপুরে মাদক বিরোধী ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্বোধন Logo চাঁদপুরে সর্বোচ্চ একক রেমিট্যান্সে শীর্ষে জনতা ব্যাংক পিএলসি নতুন বাজার কর্পোরেট শাখা Logo বিজয় দিবসে প্যাপিরাস পাঠাগারের আলোচনা সভা ও কবিতাপাঠ Logo বিজয় দিবসে রাঙামাটি পুলিশের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পুলিশ পরিবারকে সংবর্ধনা Logo সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সাবেক পিপি আব্দুল লতিফের ৪দিন ও তার ছেলের ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

টেকনাফে ইয়াবা মাদকের থাবা : সেবনে নষ্ট হচ্ছে যুব ও ছাত্র সমাজ

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৬:৩৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২ আগস্ট ২০১৭
  • ৭৫৮ বার পড়া হয়েছে

হাবিবুল ইসলাম হাবিব , টেকনাফ:  টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে মিয়ানমারের উৎপাদিত মরণ নেশা ইয়াবার থাবা। স্কুল, কলেজের ছাত্র থেকে শুরু করে ক্ষেত্র বিশেষে বায়োবৃদ্ধরাও সেবন করছে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন আড্ডায় পান করছে মিয়ানমারের বিয়ার। ফলে নানান ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সমাজ কিংবা পরিবারের লোকজন। অকালে নষ্ট হচ্ছে উঠতি বয়সের কিশোর ও যুবকরা। অনেকে পরিবারের অজান্তে আবার কেউ কেউ পরিবারের কাউকে তোয়াক্কা না করে ইয়াবা সেবনে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। ফলে এক শ্রেনীর যুবকদের কারণে সমাজে বিশৃংখলা, জমি দখল, ইভটিজিং, চুরিসহ নানান সমস্যা দেখা দিয়েছে। বেশীরভাগ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ওরা ব্যবসায়ও জড়িয়ে পড়েছে। অনেক পরিবারের মেয়েদের ব্যবহার করে ওইসব ইয়াবা খুচরা বিক্রি করছে। ইয়াবা সেবন ও বিয়ার মদ্যপ পানে আড্ডায় বসে অনেক এলাকায়। ওপেন সিক্রেটের মতো।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খবর নিয়ে জানা যায়, ৫-৬ বছর আগে ইয়াবা ও বিয়ার শুধু ব্যবসার জন্য মজুদ করা হতো। এখন ব্যবসার পাশাপাশি খুচরা বিক্রি করে সেবন ও পানের জন্য উদ্ভুদ্ধ করা হচ্ছে। সেবনের সংখ্যা যত বেশী ততই বিক্রেতার লাভও বেশী। অনেক পরিবার মেয়েদের ব্যবহার করে সেবনের জন্য উদ্ভুদ্ধ করছেন। এতে টার্গেট করা হচ্ছে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবার। বিভিন্ন কলা কৌশল ও ফাঁদে ফেলে কিশোর এবং যুবকদের সেবনে জড়িত করছে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে আইন শৃংখলা বাহিনীর তেমন তৎপর না থাকার সুযোগে ওইসব খুচরা ইয়াবা বিক্রেতারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আবার অনেকে বখাটেদের লালন পালন করছে। যাতে কেউ বাধা দিলে ওইসব বখাটেদের দিয়ে শায়েস্তা করার জন্য।
টেকনাফ পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, সাবরাং ইউনিয়ন, হ্নীলা ইউনিয়ন, হোয়াইক্যং ইউনিয়ন, উপকুলীয় বাহারছড়াসহ অনেক এলাকায় ঘুরে এসব তথ্য উঠে আসে। অনেক এলাকায় ইয়াবা সেবন অনেকটা ওপেন সিক্রেটের মতো হয়ে উঠেছে। এদিকে বিভিন্ন গায়ে হলুদ, বিয়ে কিংবা সামাজিক নানান অনুষ্ঠানে মিয়ানমারের বিয়ার পান কিংবা ইয়াবা সেবন যেন এখন ফ্যাশন হয়ে দাড়িয়েছে। টেকনাফ উপজেলার অনেক অনুষ্ঠানে দেখা গেছে, কিশোর, যুবক ও বায়োবৃদ্ধরা পর্যন্ত ওপেন বিয়ার পান করছে এবং সাউন্ড সিস্টেমের ভলিয়ম বাড়িয়ে দিয়ে সমান তালে নাচছে। সামাজিক রীতিনীতির কোন কিছু তোয়াক্কা করছেনা। মা-বাবা, স্ত্রী, বোন কিংবা ছোট ভাইয়ের সামনেই চলছে ওইসব বিয়ার বা মদ্যপান। নিষিদ্ধ এসব বিয়ার পান করে অনেকে পাগলামী করতে দেখা গেছে। কিন্তু অনেকে একদিনের জন্য জাস্ট ফান বলে উড়িয়ে দিচ্ছে। এতে সমাজ তথা দেশের উঠতি কিশোর ও যুব সমাজ দিন দিন অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এসব থেকে রুখে দেওয়ার মতো সাহস নিয়ে কেউ এগিয়ে আসছেনা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলার লোকেরা নাকি মেহমানদের অত্যন্ত খাতির করে থাকেন। যা দেশব্যাপী সুনাম রয়েছে। বিভিন্ন মাছ, মাংস কিংবা সাধ্য অনুযায়ী মেহমানদারী করতে সাধ্যমত চেষ্টা করেন যা এখনো বিদ্যমান। লোকে মুখে জানা গেছে, এখন নাকি অনেক চা কিংবা কফির পরিবর্তে ট্রে করে মেহমানদে সামনে বিয়ার পরিবেশন করা হচ্ছে। অত্যন্ত খাতির করে আপ্যায়ন করা হয় বিয়ার কিংবা এ্যালকোহল জাতীয় মাদক। তাও হঠাৎ আক্সগুল ফুলে কলাগাছ যারা হয়েছেন ওইসব পরিবারে। তাদের দখাদেখিতে অনেক পরিবার জড়িয়েছে বলেও বিভিন্ন মহল থেকে জানা যায়।
টেকনাফের বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের কিশোর-যুবকদের এসব অধঃপতন থেকে বাঁচাতে, সমাজপতি, পরিবারের প্রধান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনকে এগিয়ে আসার পাশাপাশি আইনশৃংখলা বাহিনীর সহযোগীতা কামনা করেছেন সচেতনমহল।
এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত ওসি) ও তদন্ত শেখ আশরাফুজ্জান বলেন, যেখানে মাদকের আড্ডা কিংবা বিক্রি হবে, পুলিশকে খবর দিলে  সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে। টেকনাফকে মাদকের ভয়াবহতা থেকে যুবসমাজকে রক্ষার জন্য তিনি স্থানীয়সহ সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন এবং পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য আহবান জানান।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ভারতীয় নাগরিকের গুলিবর্ষণে সিলেট সীমান্তে ২ বাংলাদেশি নিহত

টেকনাফে ইয়াবা মাদকের থাবা : সেবনে নষ্ট হচ্ছে যুব ও ছাত্র সমাজ

আপডেট সময় : ০৯:৫৬:৩৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২ আগস্ট ২০১৭

হাবিবুল ইসলাম হাবিব , টেকনাফ:  টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে মিয়ানমারের উৎপাদিত মরণ নেশা ইয়াবার থাবা। স্কুল, কলেজের ছাত্র থেকে শুরু করে ক্ষেত্র বিশেষে বায়োবৃদ্ধরাও সেবন করছে। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন আড্ডায় পান করছে মিয়ানমারের বিয়ার। ফলে নানান ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সমাজ কিংবা পরিবারের লোকজন। অকালে নষ্ট হচ্ছে উঠতি বয়সের কিশোর ও যুবকরা। অনেকে পরিবারের অজান্তে আবার কেউ কেউ পরিবারের কাউকে তোয়াক্কা না করে ইয়াবা সেবনে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। ফলে এক শ্রেনীর যুবকদের কারণে সমাজে বিশৃংখলা, জমি দখল, ইভটিজিং, চুরিসহ নানান সমস্যা দেখা দিয়েছে। বেশীরভাগ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ওরা ব্যবসায়ও জড়িয়ে পড়েছে। অনেক পরিবারের মেয়েদের ব্যবহার করে ওইসব ইয়াবা খুচরা বিক্রি করছে। ইয়াবা সেবন ও বিয়ার মদ্যপ পানে আড্ডায় বসে অনেক এলাকায়। ওপেন সিক্রেটের মতো।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খবর নিয়ে জানা যায়, ৫-৬ বছর আগে ইয়াবা ও বিয়ার শুধু ব্যবসার জন্য মজুদ করা হতো। এখন ব্যবসার পাশাপাশি খুচরা বিক্রি করে সেবন ও পানের জন্য উদ্ভুদ্ধ করা হচ্ছে। সেবনের সংখ্যা যত বেশী ততই বিক্রেতার লাভও বেশী। অনেক পরিবার মেয়েদের ব্যবহার করে সেবনের জন্য উদ্ভুদ্ধ করছেন। এতে টার্গেট করা হচ্ছে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবার। বিভিন্ন কলা কৌশল ও ফাঁদে ফেলে কিশোর এবং যুবকদের সেবনে জড়িত করছে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে আইন শৃংখলা বাহিনীর তেমন তৎপর না থাকার সুযোগে ওইসব খুচরা ইয়াবা বিক্রেতারা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আবার অনেকে বখাটেদের লালন পালন করছে। যাতে কেউ বাধা দিলে ওইসব বখাটেদের দিয়ে শায়েস্তা করার জন্য।
টেকনাফ পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, সাবরাং ইউনিয়ন, হ্নীলা ইউনিয়ন, হোয়াইক্যং ইউনিয়ন, উপকুলীয় বাহারছড়াসহ অনেক এলাকায় ঘুরে এসব তথ্য উঠে আসে। অনেক এলাকায় ইয়াবা সেবন অনেকটা ওপেন সিক্রেটের মতো হয়ে উঠেছে। এদিকে বিভিন্ন গায়ে হলুদ, বিয়ে কিংবা সামাজিক নানান অনুষ্ঠানে মিয়ানমারের বিয়ার পান কিংবা ইয়াবা সেবন যেন এখন ফ্যাশন হয়ে দাড়িয়েছে। টেকনাফ উপজেলার অনেক অনুষ্ঠানে দেখা গেছে, কিশোর, যুবক ও বায়োবৃদ্ধরা পর্যন্ত ওপেন বিয়ার পান করছে এবং সাউন্ড সিস্টেমের ভলিয়ম বাড়িয়ে দিয়ে সমান তালে নাচছে। সামাজিক রীতিনীতির কোন কিছু তোয়াক্কা করছেনা। মা-বাবা, স্ত্রী, বোন কিংবা ছোট ভাইয়ের সামনেই চলছে ওইসব বিয়ার বা মদ্যপান। নিষিদ্ধ এসব বিয়ার পান করে অনেকে পাগলামী করতে দেখা গেছে। কিন্তু অনেকে একদিনের জন্য জাস্ট ফান বলে উড়িয়ে দিচ্ছে। এতে সমাজ তথা দেশের উঠতি কিশোর ও যুব সমাজ দিন দিন অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এসব থেকে রুখে দেওয়ার মতো সাহস নিয়ে কেউ এগিয়ে আসছেনা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, টেকনাফ উপজেলার লোকেরা নাকি মেহমানদের অত্যন্ত খাতির করে থাকেন। যা দেশব্যাপী সুনাম রয়েছে। বিভিন্ন মাছ, মাংস কিংবা সাধ্য অনুযায়ী মেহমানদারী করতে সাধ্যমত চেষ্টা করেন যা এখনো বিদ্যমান। লোকে মুখে জানা গেছে, এখন নাকি অনেক চা কিংবা কফির পরিবর্তে ট্রে করে মেহমানদে সামনে বিয়ার পরিবেশন করা হচ্ছে। অত্যন্ত খাতির করে আপ্যায়ন করা হয় বিয়ার কিংবা এ্যালকোহল জাতীয় মাদক। তাও হঠাৎ আক্সগুল ফুলে কলাগাছ যারা হয়েছেন ওইসব পরিবারে। তাদের দখাদেখিতে অনেক পরিবার জড়িয়েছে বলেও বিভিন্ন মহল থেকে জানা যায়।
টেকনাফের বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের কিশোর-যুবকদের এসব অধঃপতন থেকে বাঁচাতে, সমাজপতি, পরিবারের প্রধান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় বিভিন্ন সংগঠনকে এগিয়ে আসার পাশাপাশি আইনশৃংখলা বাহিনীর সহযোগীতা কামনা করেছেন সচেতনমহল।
এব্যাপারে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত ওসি) ও তদন্ত শেখ আশরাফুজ্জান বলেন, যেখানে মাদকের আড্ডা কিংবা বিক্রি হবে, পুলিশকে খবর দিলে  সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হবে। টেকনাফকে মাদকের ভয়াবহতা থেকে যুবসমাজকে রক্ষার জন্য তিনি স্থানীয়সহ সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন এবং পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার জন্য আহবান জানান।