শিরোনাম :
Logo বীরগঞ্জে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ডিপিইও নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধন। Logo টাকার জন্য হরিদাস বাবু’কে হয়রানী তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার অনুসন্ধানে প্রমাণ। Logo খুবির সঙ্গে গবেষণা সহযোগিতায় আগ্রহ জাপানি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের Logo শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে ট্রাকের ধাক্কায় এনজিও কর্মীর মৃত্যু Logo সাতক্ষীরায় রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ তরুণী, থানায় সাধারণ ডায়েরি Logo আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২৫ উপলক্ষে কয়রায় র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo দর্শনা থানা পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযান, ৪ কেজি গাঁজাসহ আটক ১ Logo জীবননগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস-২০২৫ উদযাপন Logo আইএফএডিকে বাংলাদেশের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য সামাজিক ব্যবসা তহবিল গঠনের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার Logo চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকায় বিষাক্ত মদপানে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে।

ইফতারের অশেষ প্রতিদান !

  • আপডেট সময় : ১২:৫৮:১২ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১২ জুন ২০১৭
  • ৭৭৫ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

সূর্যাস্তের পর পানাহারের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ করাকে ইফতার বলে। ইফতার করা সুন্নত। রোজাদার নিজেও ইফতার করবে এবং সম্ভব হলে অন্যকেও এতে শরিক করাবে। এতে বিশেষ বরকত ও সওয়াব রয়েছে। আর ইফতারের সময় এ দোয়া পড়া উত্তম ‘আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমিন। ’

সারা দিন রোজা রেখে শরীর আসরের পর থেকে নেতিয়ে যায়। এ অস্বস্তিকর সময়ে ইফতারের বিধান আল্লাহর পক্ষ থেকে রোজাদারের জন্য নিয়ামতস্বরূপ। সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে, সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে। খেজুর না পেলে পানি দিয়ে ইফতার করবে। পানি হলো অধিক পবিত্র। ’ (আবু দাউদ)।

রসুলে করিম (সা.) বলেছেন, রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে। এক. ইফতারের সময় (যখন রোজাদাররা ইফতারি-সামগ্রী নিয়ে দোয়া-দরুদ পড়তে পড়তে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অপেক্ষা করে) এবং আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। (বুখারি ও মুসলিম)। সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইফতার করতে হবে। রসুল (সা.) বলেছেন, লোকেরা ততক্ষণ কল্যাণের মধ্যে থাকবে যতক্ষণ তারা ইফতার জলদি করবে। (বুখারি ও মুসলিম)।

হাদিসে কুদসিতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় সেই বান্দা, যে ইফতার সঠিক সময়ে করে। ’ (তিরমিজি)।   এ হাদিসগুলো প্রমাণ করে, ইফতারের নির্দিষ্ট সময় থেকে দেরি করা মোটেই উচিত নয়। যদি কেউ ইচ্ছা করে ইফতারে দেরি করে তাহলে সে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশ অনুযায়ী কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হবে এবং আল্লাহর কাছে অপ্রিয় হবে। সুতরাং এ ব্যাপারে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।

ইফতার করা যেমন স্বতন্ত্র ইবাদত, তেমনি অন্য রোজাদারকে ইফতার করানোর ফজিলতও অনেক। রসুলে মকবুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার জন্য গুনা মাফ এবং দোজখের অগ্নি থেকে নাজাতের অসিলা হবে এবং ওই রোজাদারের সমান সওয়াব সেও লাভ করবে। অথচ ওই রোজাদারের (যিনি ইফতার করেছেন) সওয়াবের বিন্দু পরিমাণও কম হবে না।

সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসুল (সা.)! আমাদের মধ্যে অনেকের এই সামর্থ্য নেই যে অন্যকে ইফতার করাবে, অর্থাৎ পেট ভরে খাওয়াবে। নবী করিম (সা.) বললেন, পেট ভরে খাওয়ানো জরুরি নয়, বরং যে কোনো রোজাদারকে একটি খেজুর বা এক ঢোক পানি অথবা সামান্য দুধ দিয়ে ইফতার করাবে, তাকেও উপরোক্ত সওয়াব প্রদান করা হবে। (মিশকাতুল মাসাবিহ)।

রোজাদারকে ইফতার করালে তার প্রতিদান আল্লাহ নিজের পক্ষ থেকে প্রদান করেন, রোজাদারের পক্ষ থেকে নয়। এটা আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহের আলামত। আল্লাহ আমাদের সঠিক সময়ে ইফতার ও অন্যকে ইফতার করিয়ে রমজানের পূর্ণ সওয়াব হাসিল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

মূল লেখক : খতিব, আমলীগোলা জামে মসজিদ, লালবাগ, ঢাকা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বীরগঞ্জে ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ডিপিইও নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধন।

ইফতারের অশেষ প্রতিদান !

আপডেট সময় : ১২:৫৮:১২ অপরাহ্ণ, সোমবার, ১২ জুন ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

সূর্যাস্তের পর পানাহারের মাধ্যমে রোজা ভঙ্গ করাকে ইফতার বলে। ইফতার করা সুন্নত। রোজাদার নিজেও ইফতার করবে এবং সম্ভব হলে অন্যকেও এতে শরিক করাবে। এতে বিশেষ বরকত ও সওয়াব রয়েছে। আর ইফতারের সময় এ দোয়া পড়া উত্তম ‘আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু বিরহমাতিকা ইয়া আরহামার রহিমিন। ’

সারা দিন রোজা রেখে শরীর আসরের পর থেকে নেতিয়ে যায়। এ অস্বস্তিকর সময়ে ইফতারের বিধান আল্লাহর পক্ষ থেকে রোজাদারের জন্য নিয়ামতস্বরূপ। সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে, সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে। খেজুর না পেলে পানি দিয়ে ইফতার করবে। পানি হলো অধিক পবিত্র। ’ (আবু দাউদ)।

রসুলে করিম (সা.) বলেছেন, রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ রয়েছে। এক. ইফতারের সময় (যখন রোজাদাররা ইফতারি-সামগ্রী নিয়ে দোয়া-দরুদ পড়তে পড়তে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অপেক্ষা করে) এবং আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। (বুখারি ও মুসলিম)। সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইফতার করতে হবে। রসুল (সা.) বলেছেন, লোকেরা ততক্ষণ কল্যাণের মধ্যে থাকবে যতক্ষণ তারা ইফতার জলদি করবে। (বুখারি ও মুসলিম)।

হাদিসে কুদসিতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয় সেই বান্দা, যে ইফতার সঠিক সময়ে করে। ’ (তিরমিজি)।   এ হাদিসগুলো প্রমাণ করে, ইফতারের নির্দিষ্ট সময় থেকে দেরি করা মোটেই উচিত নয়। যদি কেউ ইচ্ছা করে ইফতারে দেরি করে তাহলে সে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর নির্দেশ অনুযায়ী কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হবে এবং আল্লাহর কাছে অপ্রিয় হবে। সুতরাং এ ব্যাপারে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত।

ইফতার করা যেমন স্বতন্ত্র ইবাদত, তেমনি অন্য রোজাদারকে ইফতার করানোর ফজিলতও অনেক। রসুলে মকবুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার জন্য গুনা মাফ এবং দোজখের অগ্নি থেকে নাজাতের অসিলা হবে এবং ওই রোজাদারের সমান সওয়াব সেও লাভ করবে। অথচ ওই রোজাদারের (যিনি ইফতার করেছেন) সওয়াবের বিন্দু পরিমাণও কম হবে না।

সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসুল (সা.)! আমাদের মধ্যে অনেকের এই সামর্থ্য নেই যে অন্যকে ইফতার করাবে, অর্থাৎ পেট ভরে খাওয়াবে। নবী করিম (সা.) বললেন, পেট ভরে খাওয়ানো জরুরি নয়, বরং যে কোনো রোজাদারকে একটি খেজুর বা এক ঢোক পানি অথবা সামান্য দুধ দিয়ে ইফতার করাবে, তাকেও উপরোক্ত সওয়াব প্রদান করা হবে। (মিশকাতুল মাসাবিহ)।

রোজাদারকে ইফতার করালে তার প্রতিদান আল্লাহ নিজের পক্ষ থেকে প্রদান করেন, রোজাদারের পক্ষ থেকে নয়। এটা আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহের আলামত। আল্লাহ আমাদের সঠিক সময়ে ইফতার ও অন্যকে ইফতার করিয়ে রমজানের পূর্ণ সওয়াব হাসিল করার তৌফিক দান করুন। আমিন।

মূল লেখক : খতিব, আমলীগোলা জামে মসজিদ, লালবাগ, ঢাকা।