শিরোনাম :
Logo কচুয়ায় গোহট উত্তর ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে লিফলেট বিতরণ ও কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত Logo অবৈধ ড্রেজারে বালু উত্তোলন করায় মাটি ভেঙ্গে হুমকির মুখে দুটি পরিবার Logo ফরিদগঞ্জে প্রেম করে বিয়ে: ৩ বছর পর গলায় ফাঁস! Logo চাঁদপুরে ভরণপোষণ চাওয়ায় ছেলের হাতে নির্যাতনের শিকার মা-বাবা Logo রাবি নরসিংদী জেলা সমিতির ফল উৎসব Logo আনারসের বাণিজ্যিক চারা উৎপাদনে সাফল্য, কম খরচে চারা দিচ্ছে টিস্যু কালচার Logo স্মার্টফোনে ব্যাক কভার আসলে কতটা প্রয়োজন? Logo রাশিয়া যাচ্ছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, কীসের ইঙ্গিত? Logo ‘জুলাই প্রবাসী যোদ্ধা’ স্বীকৃতিসহ ৪ দফা দাবিতে বিক্ষোভ Logo সরকারি চাকরিজীবীদের বিশেষ প্রণোদনা বাড়াল সরকার

অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠায় আবাসন ব্যবসায়ীরা

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০২:০৮:০২ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
  • ৭১০ বার পড়া হয়েছে

নির্মাণসামগ্রীর ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি, ব্যাংক লোনে উচ্চসুদ, দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক যুদ্ধাবস্থার কারণে আবাসন খাতে বিরাজ করছে অস্থিরতা। অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠায় ব্যবসায়ীরা সময় পার করছেন বলে মনে করেন দেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক এবং জেসিএক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী। গণমাধ্যমকে এ নিয়ে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি।

প্রশ্ন: কেমন সময় পার করছে আবাসন খাত?

উত্তর : আবাসন খাতের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। এই পরিস্থিতি তৈরির পেছনে অনেক কারণই আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান বাস্তবায়ন এবং নীতিমালা চূড়ান্ত না করা, আবাসন খাতে ব্যাংকগুলোর সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ বন্ধ হওয়া, নির্মাণসামগ্রীর দাম ক্রমাগত বেড়ে যাওয়া, দেশ গণতান্ত্রিক ধারায় না পৌঁছানোর পাশাপাশি বৈশ্বিক অস্থিরতা।

প্রশ্ন: উল্লিখিত বিষয়গুলো কিভাবে বাধা তৈরি করছে?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী: রাজউক ড্যাপ পাস করলেও এটি নিয়ে কোনো সমাধানযোগ্য অবস্থায় যায়নি।

আমরা দীর্ঘ সময় ধরে রিহ্যাব এবং বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং এই খাতের সঙ্গে জড়িত সবাই অনেক চেষ্টা করছি। শঙ্কা, উৎকণ্ঠা জানানো হলেও ড্যাপের সংশোধন বা নতুন নীতিমালা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন কোনো কিছুই হচ্ছে না। ব্যাংক লোনের ক্ষেত্রে আগে সিঙ্গেল ডিজিটে লোন দিলেও এখন সেটি নেই। এখন ১৫ শতাংশেরও বেশি সুদ দিয়ে লোন নিতে হচ্ছে।
আগে গ্রাহকের মধ্যে একটা উৎসাহ ছিল, ফ্ল্যাট ও প্লট ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেও ছিল। বতর্মানে এই সুদের হার বাড়ানোটা প্রতিযোগিতার পর্যায়ে চলে গেছে। আর নির্মাণসামগ্রীর দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি দিচ্ছে বড় ধরনের আঘাত। দাম বাড়ায় আমরা বাধ্য হয়ে দাম বাড়াচ্ছি।
এতে করে গ্রাহকরা নিরুৎসাহ হচ্ছে। অথচ আমরা অনেক ক্ষেত্রে ফ্ল্যাটের নির্মাণ ব্যয় রেখেও বিক্রি করে দিচ্ছি। এর মধ্যে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল না থাকায় মানুষ বিনিয়োগ করতে সাহস পাচ্ছে না। সব কিছু মিলিয়ে আবাসন খাতের দুরবস্থা যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও উদাসীনতা দেখছি।

প্রশ্ন: নির্মাণসামগ্রীর দামের ধারাবাহিক বৃদ্ধির লাগাম ধরতে সরকার কী উদ্যোগ নিতে পারে বলে মনে করেন?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : এটার জন্য সরকার যদি দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তাদের পণ্য উৎপাদন এবং বাজারজাতের সুযোগ করে দেয়, এ ছাড়া যেসব পণ্য দেশের বাইরে থেকে আনতে হয়, দেশে তৈরির সুযোগ নেই, সেসব পণ্যের ভ্যাট কমাতে হবে। এখন ২০ শতাংশেরও বেশি ভ্যাট দেওয়া লাগে। পাশাপাশি রড ও সিমেন্টের কাঁচামালেও ভ্যাট বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এখন যুদ্ধের কারণে তো কিছুটা প্রভাব আছেই। অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ আয় বাড়ানোর জন্য নির্মাণসামগ্রীর ওপর বাড়তি করের চাপ রয়েছে। সব মিলিয়ে নির্মাণসামগ্রীর ওপর প্রভাব পড়ছে, দাম বেড়ে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে যৌক্তিক সমাধান জরুরি। নয়তো আবাসনশিল্পকে টিকিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। মানুষও ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। অন্তত জিডিপিতে এই খাতের অবদানের কথা চিন্তা করে হলেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দেশীয় উৎপাদন এবং বিদেশ থেকে কম দামে নির্মাণসামগ্রী আনা গেলে কিছুটা স্বস্তি আসতে পারে।

প্রশ্ন: অপ্রদর্শিত টাকা বা কালো টাকা ব্যবহারে আবাসন খাতে কোনো প্রভাব পড়ে কি?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : অপ্রদর্শিত টাকা সরকার সব সময় বিভিন্ন খাতে ব্যবহারে নিরুৎসাহ করে। আবাসন খাতে ব্যবহারের জন্য সুযোগ দেওয়া হয়। আমরা অতীতেও দেখেছি, মানুষ যখন এই টাকা ব্যবহারের সুযোগ পায় তখন ফ্ল্যাট বা প্লটে বিনিয়োগ করে। অপ্রদর্শিত অর্থ মানুষের কাছে যেকোনো মাধ্যমে চলে আসে। এই টাকা বিনিয়োগের ব্যবস্থা দেশে থাকলে দেশের বাইরে টাকা পাচার হওয়া কমে যাবে। এই সুযোগটা রাখা উচিত। এই বছর প্রস্তাবিত বাজেটে সেই সুযোগের প্রস্তাব থাকলেও ট্যাক্স বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি না বাড়ালে মানুষ বিনিয়োগ করত। আমি মনে করি, দেশের টাকা পাচারের সম্ভাবনা যখন কমে যাবে, তখন অপ্রদর্শিত অর্থ কোনো সেক্টরেই ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না। বর্তমান বাজারের কথা চিন্তা করে আগামী এক-দুই বছর এই সুযোগ রাখলে ভালো হবে। কারণ ব্যবসার অবস্থা ভালো না।

প্রশ্ন: ভবনের প্ল্যান পাস করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনুমোদনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কতটা আন্তরিক?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : আমার প্রতিষ্ঠান ২০ বছর ধরে কাজ করছে। বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও কাজ করছি। জাপানি একটি কম্পানির সঙ্গে ২০১২ সাল থেকে কাজ করছি। আমি দেখেছি, তাদের একটি বড় উদ্বেগের জায়গা হচ্ছে কাজের দীর্ঘসূত্রতা। যেমন—একটা ভবনের প্ল্যান পাস করাতে দুই বছর লেগে যাচ্ছে। ডিটিসি, পরিবেশ, ফায়ার এবং রাজউকের দুই-তিনটা কমিটি থেকে কাগজ নিতে হয়। এতে করে অনেক সময় লেগে যায়। তাহলে তাদের যে বিনিয়োগ, তার ফল পেতে দেরি হয়ে যায়। দুই বছর পর ভবনের অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করার পরও একটা সময় চলে যায়। এভাবে আসলে কোনো বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করতে চায় না। তারা প্রতিটা দিনের হিসাব রাখে। আমরা যারা বিনিয়োগকারী, আমাদের অনেকের ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে জায়গা কেনা, আমাদেরও ফল পেতে দেরি হয়। এ ক্ষেত্রে মনে হয়, রাজউকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একত্র করে একটি ওয়ানস্টপ সার্ভিসের ব্যবস্থা করা যায়। এতে করে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে প্রাথমিক কাজগুলো হয়ে যেতে পারে। তাহলে সময়ও বাঁচবে এবং বিনিয়োগের রিটার্ন দ্রুত পাওয়া যাবে। এই বিষয়টা দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা করে এলেও কোনো পরিবর্তন আসছে না।

প্রশ্ন: এসব কারণে কি বিদেশি বিনিয়োগ হারাচ্ছে বাংলাদেশের আবাসন খাত?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : আমাদের দেশে আসলে বিদেশি বিনিয়োগে আবাসন খাতে কাজ করা প্রতিষ্ঠান হাতে গোনা। এর মধ্যে আমরা কাজ করি। এ ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। আবাসন খাতে বিদেশি বিনিয়োগ লোন হিসেবে আসে না, ইকুয়িটি হিসেবে আসে। বিভিন্ন পলিসির কারণে পাঁচ বছর আগে টাকা ফেরতও দেওয়া যায় না। এই ক্ষেত্রে দেখা গেছে, অনেক প্রতিষ্ঠানের অনুমতি এবং বাতিলের কাগজ নিতে হয়। এতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এতে করে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পিছিয়ে যান। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশে টাকা ঢোকানো সহজ, কিন্তু বের করা অনেক কঠিন। তাঁদের টাকা রিটার্ন পেতে অনেক সময় লেগে যায়। এ বিষয়ে সরকার কাজ করছে। তবে আমার মনে হয়, আবাসন খাতে যাঁরা বিদেশি বিনিয়োগ এনেছেন তাঁদের সঙ্গে আলাপ করলে বিনিয়োগে প্রতিবন্ধকতা এবং বৃদ্ধির পথ সুগম হবে।

প্রশ্ন: আপনি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি বৈদেশিক যুদ্ধাবস্থার কথা বলছিলেন। কোনো সমাধান দেখছেন কি?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : বৈশ্বিক পরিস্থিতি একটা বড় বিষয়। এর কারণে সত্যিকার অর্থেই আমরা প্রভাবিত হই। নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি একই সময় বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগ কমিয়ে দেওয়ায় আবাসন খাত দুই দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যাঁরা প্লট বা ফ্ল্যাট কিনবেন তাঁরা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য যেমন অপেক্ষা করছেন, একইভাবে বৈশ্বিক যুদ্ধাবস্থায়ও পিছিয়ে যাচ্ছেন। দেশে একটি গণতান্ত্রিক ধারা আসার আগ পর্যন্ত আবাসন খাতকে দাঁড় করানো কঠিন। এমন অবস্থায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখার বিষয়ে আবাসন খাতের সঙ্গে জড়িত সব ব্যবসায়ী আতঙ্কিত।

প্রশ্ন: মূল্যবৃদ্ধি, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক এই পরিস্থিতিতে ক্রেতাদের সাড়া কেমন?    

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : এর মধ্যে গ্রাহক সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গত কয়েক মাসে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ক্রেতা কমে গেছে। যাঁরা আগে নিয়মিত গ্রাহক ছিলেন, তাঁরা অনিয়মিত হয়ে গেছেন, কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না। অনেকে বুকিং বাতিল করে দিচ্ছেন। ক্রেতারা বুকিংয়ের বিষয়ে আলোচনা করতেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। সত্যিকার অর্থে আমরা খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। পরিবেশ ঠিক না হলে বলা যায় না এই খাত কোথায় গিয়ে ঠেকবে। জেসিএক্সের কর্ণধার হিসেবে এবং ২০ বছরের বেশি সময় ধরে এই আবাসন খাতের সঙ্গে কাজ করার ক্ষুদ্র জ্ঞান থেকে এতটুকু বলতে পারি, ক্রেতারা মনে করছেন দাম কমতে পারে, তাঁরা দ্রুত যেকোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্লট বা ফ্ল্যাট কিনে ফেলুন। কারণ বৈশ্বিক এবং দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় দাম কমার সম্ভাবনা কম।

প্রশ্ন: চলমান সংকটে যদি পরিকল্পিত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, কী ধরনের ক্ষতি এবং সমস্যায় পড়তে পারে দেশের অর্থনীতি?    

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : এই খাতের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক। আমরা যদি এই জায়গা থেকে উত্তরণ করতে না পারি তাহলে কাজে স্থবিরতা চলে আসবে। আমরা তাদের কাজ দিতে পারব না। বেশি দামের জন্য যদি গ্রাহক না থাকে, ব্যাংক লোন যদি সিঙ্গেল ডিজিটে ফিরিয়ে না আনা হয়, ড্যাপের যদি বাস্তবায়ন না হয়, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না আসে, বৈশ্বিক মন্দা চলতে থাকে, সব মিলিয়ে যদি একটা পরিশুদ্ধ অবস্থা না আসে, তাহলে আসলে ভবিষ্যৎ কল্পনা করাও কঠিন। আমরা যেভাবে গত কয়েক মাস দেখছি, সার্ভাইব করছি, এটা চলতে থাকলে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। অনেক শ্রমিক বেকার হওয়ার মাধ্যমে বেকারত্বের হার বেড়ে যাবে। সেটা আসলে আমাদের দেশের জন্য, জিডিপির জন্য, অর্থনীতির জন্য ভালো হবে না।

প্রশ্ন: আপনাদের দিক থেকে গ্রাহক আকৃষ্ট করার জন্য এবং এই আবাসন খাতকে টিকিয়ে রাখতে কোনো উদ্যোগ আছে কি না?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : আমরা টিকে থাকার জন্য নির্মাণ মূল্যে অনেক ফ্ল্যাট ছেড়ে দিচ্ছি। এ ছাড়া ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে ব্যাংকের যে ইন্টারেস্ট রেট যদি ১ শতাংশও কমানো যায়, সেই চেষ্টা করি। এতে করে গ্রাহক সাশ্রয় পায়। প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনেক আবাসন ব্যবসায়ী এখন ব্যক্তি উদ্যোগে লোন নিয়েও ব্যবসা ধরে রেখেছেন। এটি দীর্ঘদিন করা সম্ভব না। উপদেষ্টা পরিষদের কাছে আমাদের আকুল আবেদন থাকবে এ বিষয়ে নজর দেওয়ার জন্য।

ড্যাপ বাস্তবায়নসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে মনোযোগ দিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে সব সমস্যার সমাধান করা জরুরি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশনা দিয়ে আবাসন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরামর্শ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। কিভাবে ঢাকা সিটির উন্নয়ন করা যায়, কিভাবে সৌন্দর্যবর্ধন করে গ্রাহকদের কাছে নিরাপদ এবং সুন্দর আবাসন বুঝিয়ে দেওয়া যায়—এসব বিষয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করলেই সঠিক নীতিমালা গড়ে তোলা সম্ভব। অন্য খাতের কোনো সমস্যা হলে সরকারের সব অর্গান একসঙ্গে কাজ করলেও আবাসন খাত জিডিপিতে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখলেও সেই মূল্যায়ন পায় না। এটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। মোটকথা সরকারকে এই আবাসন খাতে নজর দিতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই খাতে সরকারের দৃষ্টি থাকলেও আমাদের দেশে এ বিষয়ে একটা উদাসীনতা পরিলক্ষিত হয়।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কচুয়ায় গোহট উত্তর ইউনিয়ন ছাত্রদলের উদ্যোগে লিফলেট বিতরণ ও কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত

অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠায় আবাসন ব্যবসায়ীরা

আপডেট সময় : ০২:০৮:০২ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

নির্মাণসামগ্রীর ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি, ব্যাংক লোনে উচ্চসুদ, দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক যুদ্ধাবস্থার কারণে আবাসন খাতে বিরাজ করছে অস্থিরতা। অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠায় ব্যবসায়ীরা সময় পার করছেন বলে মনে করেন দেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক এবং জেসিএক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী। গণমাধ্যমকে এ নিয়ে এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি।

প্রশ্ন: কেমন সময় পার করছে আবাসন খাত?

উত্তর : আবাসন খাতের বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। এই পরিস্থিতি তৈরির পেছনে অনেক কারণই আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে—রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান বাস্তবায়ন এবং নীতিমালা চূড়ান্ত না করা, আবাসন খাতে ব্যাংকগুলোর সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ বন্ধ হওয়া, নির্মাণসামগ্রীর দাম ক্রমাগত বেড়ে যাওয়া, দেশ গণতান্ত্রিক ধারায় না পৌঁছানোর পাশাপাশি বৈশ্বিক অস্থিরতা।

প্রশ্ন: উল্লিখিত বিষয়গুলো কিভাবে বাধা তৈরি করছে?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী: রাজউক ড্যাপ পাস করলেও এটি নিয়ে কোনো সমাধানযোগ্য অবস্থায় যায়নি।

আমরা দীর্ঘ সময় ধরে রিহ্যাব এবং বাংলাদেশ ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন এবং এই খাতের সঙ্গে জড়িত সবাই অনেক চেষ্টা করছি। শঙ্কা, উৎকণ্ঠা জানানো হলেও ড্যাপের সংশোধন বা নতুন নীতিমালা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন কোনো কিছুই হচ্ছে না। ব্যাংক লোনের ক্ষেত্রে আগে সিঙ্গেল ডিজিটে লোন দিলেও এখন সেটি নেই। এখন ১৫ শতাংশেরও বেশি সুদ দিয়ে লোন নিতে হচ্ছে।
আগে গ্রাহকের মধ্যে একটা উৎসাহ ছিল, ফ্ল্যাট ও প্লট ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেও ছিল। বতর্মানে এই সুদের হার বাড়ানোটা প্রতিযোগিতার পর্যায়ে চলে গেছে। আর নির্মাণসামগ্রীর দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি দিচ্ছে বড় ধরনের আঘাত। দাম বাড়ায় আমরা বাধ্য হয়ে দাম বাড়াচ্ছি।
এতে করে গ্রাহকরা নিরুৎসাহ হচ্ছে। অথচ আমরা অনেক ক্ষেত্রে ফ্ল্যাটের নির্মাণ ব্যয় রেখেও বিক্রি করে দিচ্ছি। এর মধ্যে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল না থাকায় মানুষ বিনিয়োগ করতে সাহস পাচ্ছে না। সব কিছু মিলিয়ে আবাসন খাতের দুরবস্থা যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও উদাসীনতা দেখছি।

প্রশ্ন: নির্মাণসামগ্রীর দামের ধারাবাহিক বৃদ্ধির লাগাম ধরতে সরকার কী উদ্যোগ নিতে পারে বলে মনে করেন?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : এটার জন্য সরকার যদি দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তাদের পণ্য উৎপাদন এবং বাজারজাতের সুযোগ করে দেয়, এ ছাড়া যেসব পণ্য দেশের বাইরে থেকে আনতে হয়, দেশে তৈরির সুযোগ নেই, সেসব পণ্যের ভ্যাট কমাতে হবে। এখন ২০ শতাংশেরও বেশি ভ্যাট দেওয়া লাগে। পাশাপাশি রড ও সিমেন্টের কাঁচামালেও ভ্যাট বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এখন যুদ্ধের কারণে তো কিছুটা প্রভাব আছেই। অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ আয় বাড়ানোর জন্য নির্মাণসামগ্রীর ওপর বাড়তি করের চাপ রয়েছে। সব মিলিয়ে নির্মাণসামগ্রীর ওপর প্রভাব পড়ছে, দাম বেড়ে যাচ্ছে। এসব বিষয়ে যৌক্তিক সমাধান জরুরি। নয়তো আবাসনশিল্পকে টিকিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে। মানুষও ক্রয়ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে। অন্তত জিডিপিতে এই খাতের অবদানের কথা চিন্তা করে হলেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দেশীয় উৎপাদন এবং বিদেশ থেকে কম দামে নির্মাণসামগ্রী আনা গেলে কিছুটা স্বস্তি আসতে পারে।

প্রশ্ন: অপ্রদর্শিত টাকা বা কালো টাকা ব্যবহারে আবাসন খাতে কোনো প্রভাব পড়ে কি?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : অপ্রদর্শিত টাকা সরকার সব সময় বিভিন্ন খাতে ব্যবহারে নিরুৎসাহ করে। আবাসন খাতে ব্যবহারের জন্য সুযোগ দেওয়া হয়। আমরা অতীতেও দেখেছি, মানুষ যখন এই টাকা ব্যবহারের সুযোগ পায় তখন ফ্ল্যাট বা প্লটে বিনিয়োগ করে। অপ্রদর্শিত অর্থ মানুষের কাছে যেকোনো মাধ্যমে চলে আসে। এই টাকা বিনিয়োগের ব্যবস্থা দেশে থাকলে দেশের বাইরে টাকা পাচার হওয়া কমে যাবে। এই সুযোগটা রাখা উচিত। এই বছর প্রস্তাবিত বাজেটে সেই সুযোগের প্রস্তাব থাকলেও ট্যাক্স বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি না বাড়ালে মানুষ বিনিয়োগ করত। আমি মনে করি, দেশের টাকা পাচারের সম্ভাবনা যখন কমে যাবে, তখন অপ্রদর্শিত অর্থ কোনো সেক্টরেই ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া উচিত হবে না। বর্তমান বাজারের কথা চিন্তা করে আগামী এক-দুই বছর এই সুযোগ রাখলে ভালো হবে। কারণ ব্যবসার অবস্থা ভালো না।

প্রশ্ন: ভবনের প্ল্যান পাস করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনুমোদনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো কতটা আন্তরিক?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : আমার প্রতিষ্ঠান ২০ বছর ধরে কাজ করছে। বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও কাজ করছি। জাপানি একটি কম্পানির সঙ্গে ২০১২ সাল থেকে কাজ করছি। আমি দেখেছি, তাদের একটি বড় উদ্বেগের জায়গা হচ্ছে কাজের দীর্ঘসূত্রতা। যেমন—একটা ভবনের প্ল্যান পাস করাতে দুই বছর লেগে যাচ্ছে। ডিটিসি, পরিবেশ, ফায়ার এবং রাজউকের দুই-তিনটা কমিটি থেকে কাগজ নিতে হয়। এতে করে অনেক সময় লেগে যায়। তাহলে তাদের যে বিনিয়োগ, তার ফল পেতে দেরি হয়ে যায়। দুই বছর পর ভবনের অনুমোদন পেলে কাজ শুরু করার পরও একটা সময় চলে যায়। এভাবে আসলে কোনো বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করতে চায় না। তারা প্রতিটা দিনের হিসাব রাখে। আমরা যারা বিনিয়োগকারী, আমাদের অনেকের ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে জায়গা কেনা, আমাদেরও ফল পেতে দেরি হয়। এ ক্ষেত্রে মনে হয়, রাজউকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একত্র করে একটি ওয়ানস্টপ সার্ভিসের ব্যবস্থা করা যায়। এতে করে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে প্রাথমিক কাজগুলো হয়ে যেতে পারে। তাহলে সময়ও বাঁচবে এবং বিনিয়োগের রিটার্ন দ্রুত পাওয়া যাবে। এই বিষয়টা দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা করে এলেও কোনো পরিবর্তন আসছে না।

প্রশ্ন: এসব কারণে কি বিদেশি বিনিয়োগ হারাচ্ছে বাংলাদেশের আবাসন খাত?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : আমাদের দেশে আসলে বিদেশি বিনিয়োগে আবাসন খাতে কাজ করা প্রতিষ্ঠান হাতে গোনা। এর মধ্যে আমরা কাজ করি। এ ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতা আছে। আবাসন খাতে বিদেশি বিনিয়োগ লোন হিসেবে আসে না, ইকুয়িটি হিসেবে আসে। বিভিন্ন পলিসির কারণে পাঁচ বছর আগে টাকা ফেরতও দেওয়া যায় না। এই ক্ষেত্রে দেখা গেছে, অনেক প্রতিষ্ঠানের অনুমতি এবং বাতিলের কাগজ নিতে হয়। এতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। এতে করে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পিছিয়ে যান। তাঁরা বলেন, বাংলাদেশে টাকা ঢোকানো সহজ, কিন্তু বের করা অনেক কঠিন। তাঁদের টাকা রিটার্ন পেতে অনেক সময় লেগে যায়। এ বিষয়ে সরকার কাজ করছে। তবে আমার মনে হয়, আবাসন খাতে যাঁরা বিদেশি বিনিয়োগ এনেছেন তাঁদের সঙ্গে আলাপ করলে বিনিয়োগে প্রতিবন্ধকতা এবং বৃদ্ধির পথ সুগম হবে।

প্রশ্ন: আপনি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পাশাপাশি বৈদেশিক যুদ্ধাবস্থার কথা বলছিলেন। কোনো সমাধান দেখছেন কি?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : বৈশ্বিক পরিস্থিতি একটা বড় বিষয়। এর কারণে সত্যিকার অর্থেই আমরা প্রভাবিত হই। নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি একই সময় বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগ কমিয়ে দেওয়ায় আবাসন খাত দুই দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। যাঁরা প্লট বা ফ্ল্যাট কিনবেন তাঁরা দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য যেমন অপেক্ষা করছেন, একইভাবে বৈশ্বিক যুদ্ধাবস্থায়ও পিছিয়ে যাচ্ছেন। দেশে একটি গণতান্ত্রিক ধারা আসার আগ পর্যন্ত আবাসন খাতকে দাঁড় করানো কঠিন। এমন অবস্থায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখার বিষয়ে আবাসন খাতের সঙ্গে জড়িত সব ব্যবসায়ী আতঙ্কিত।

প্রশ্ন: মূল্যবৃদ্ধি, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক এই পরিস্থিতিতে ক্রেতাদের সাড়া কেমন?    

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : এর মধ্যে গ্রাহক সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গত কয়েক মাসে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ ক্রেতা কমে গেছে। যাঁরা আগে নিয়মিত গ্রাহক ছিলেন, তাঁরা অনিয়মিত হয়ে গেছেন, কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না। অনেকে বুকিং বাতিল করে দিচ্ছেন। ক্রেতারা বুকিংয়ের বিষয়ে আলোচনা করতেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন না। সত্যিকার অর্থে আমরা খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। পরিবেশ ঠিক না হলে বলা যায় না এই খাত কোথায় গিয়ে ঠেকবে। জেসিএক্সের কর্ণধার হিসেবে এবং ২০ বছরের বেশি সময় ধরে এই আবাসন খাতের সঙ্গে কাজ করার ক্ষুদ্র জ্ঞান থেকে এতটুকু বলতে পারি, ক্রেতারা মনে করছেন দাম কমতে পারে, তাঁরা দ্রুত যেকোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান থেকে প্লট বা ফ্ল্যাট কিনে ফেলুন। কারণ বৈশ্বিক এবং দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় দাম কমার সম্ভাবনা কম।

প্রশ্ন: চলমান সংকটে যদি পরিকল্পিত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, কী ধরনের ক্ষতি এবং সমস্যায় পড়তে পারে দেশের অর্থনীতি?    

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : এই খাতের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক। আমরা যদি এই জায়গা থেকে উত্তরণ করতে না পারি তাহলে কাজে স্থবিরতা চলে আসবে। আমরা তাদের কাজ দিতে পারব না। বেশি দামের জন্য যদি গ্রাহক না থাকে, ব্যাংক লোন যদি সিঙ্গেল ডিজিটে ফিরিয়ে না আনা হয়, ড্যাপের যদি বাস্তবায়ন না হয়, দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না আসে, বৈশ্বিক মন্দা চলতে থাকে, সব মিলিয়ে যদি একটা পরিশুদ্ধ অবস্থা না আসে, তাহলে আসলে ভবিষ্যৎ কল্পনা করাও কঠিন। আমরা যেভাবে গত কয়েক মাস দেখছি, সার্ভাইব করছি, এটা চলতে থাকলে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। অনেক শ্রমিক বেকার হওয়ার মাধ্যমে বেকারত্বের হার বেড়ে যাবে। সেটা আসলে আমাদের দেশের জন্য, জিডিপির জন্য, অর্থনীতির জন্য ভালো হবে না।

প্রশ্ন: আপনাদের দিক থেকে গ্রাহক আকৃষ্ট করার জন্য এবং এই আবাসন খাতকে টিকিয়ে রাখতে কোনো উদ্যোগ আছে কি না?

মো. ইকবাল হোসেন চৌধুরী : আমরা টিকে থাকার জন্য নির্মাণ মূল্যে অনেক ফ্ল্যাট ছেড়ে দিচ্ছি। এ ছাড়া ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে ব্যাংকের যে ইন্টারেস্ট রেট যদি ১ শতাংশও কমানো যায়, সেই চেষ্টা করি। এতে করে গ্রাহক সাশ্রয় পায়। প্রতিষ্ঠান হিসেবে অনেক আবাসন ব্যবসায়ী এখন ব্যক্তি উদ্যোগে লোন নিয়েও ব্যবসা ধরে রেখেছেন। এটি দীর্ঘদিন করা সম্ভব না। উপদেষ্টা পরিষদের কাছে আমাদের আকুল আবেদন থাকবে এ বিষয়ে নজর দেওয়ার জন্য।

ড্যাপ বাস্তবায়নসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে মনোযোগ দিয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে সব সমস্যার সমাধান করা জরুরি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশনা দিয়ে আবাসন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরামর্শ নিয়ে ব্যবসায়ীদের মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। কিভাবে ঢাকা সিটির উন্নয়ন করা যায়, কিভাবে সৌন্দর্যবর্ধন করে গ্রাহকদের কাছে নিরাপদ এবং সুন্দর আবাসন বুঝিয়ে দেওয়া যায়—এসব বিষয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা করলেই সঠিক নীতিমালা গড়ে তোলা সম্ভব। অন্য খাতের কোনো সমস্যা হলে সরকারের সব অর্গান একসঙ্গে কাজ করলেও আবাসন খাত জিডিপিতে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখলেও সেই মূল্যায়ন পায় না। এটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। মোটকথা সরকারকে এই আবাসন খাতে নজর দিতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই খাতে সরকারের দৃষ্টি থাকলেও আমাদের দেশে এ বিষয়ে একটা উদাসীনতা পরিলক্ষিত হয়।