জুলাই আন্দোলনে হত্যাকারী ও দোষীদের বিচার নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের গড়িমসি আর মেনে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। আজ সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে ঝালকাঠি প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ হুংকার দেন।তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে অনেকে আহত হয়েছন, অনেকে জীবন হারিয়েছেন। অনেকে হাত হারিয়েছেন, পা হারিয়েছেন। চোখ হারিয়ে হাসপাতালের বেডে কেউবা বিছানায় কাতরাচ্ছেন। এই আন্দোলনে যারা জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছেন, সেই ছাত্র-জনতার প্রতি আমরা গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আল্লাহ-তাআলা তাদের সবাইকে সুস্থ ভালো রাখুক। এই ঘটনায় যারা জড়িত, সেই জালিমদের আমরা বিচার নিশ্চিত দেখতে চাই। এই খুনিদের যথাযথ বিচার বাংলাদেশের পেনাল কোর্ট অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি। অবিলম্বে সেলিম তালুকদারের হত্যাকারী জ্বালিমদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিচার নিয়ে কোনো সময় ক্ষেপন মেনে নেওয়া হবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বল্প সময়ের মধ্যে নির্দেশকারী পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবায়নকারী সকলকে আমরা শাস্তির আওতায় দেখতে চাই।’
পথসভায় তিনি ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান পর্যন্ত সকল হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন এবং জালিমদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আগামী নির্বাচনে জামায়াতকে নির্বাচিত করলে জামায়াত নেতাদের দুনিয়ায় সম্পদ বৃদ্ধি পাবে না বরং আখেরাতের সম্পদ বাড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ঝালকাঠি জেলা আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে পথসভায় আরও বক্তব্য দেন—জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন হেলাল, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুর ইসলাম মাসুদ, বরিশাল জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল জব্বার ও ঝালকাঠি-২ আসনের জামায়াতের এমপি প্রার্থী শেখ নেয়ামুল করিমসহ অন্যান্য নেতারা।
এ সময় জামায়াতের কেন্দ্রীয়, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পথসভা শেষে ছাত্র আন্দোলনে শহিদ সেলিম তালুকদারের সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুকন্যাকে দেখার জন্য জামাতের আমি তার বাসা শহরের কৃষ্ণকাঠি এলাকায় যান। পরে তিনি শহীদ সেলিমের কন্যার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান। এসময় তিনি বলেন, এই সন্তান জাতির সম্পদ। তিনি রমজান মাসে জন্মগ্রহণ করায় এবং তার বাবার নামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিশুটির নাম সাইমা সেলিম প্রস্তাব করেন, যা পরিবারের সদস্যরা গ্রহণ করেন। শিশুটির লালন-পালন, শিক্ষা ও ভবিষ্যতে তার বিয়েসহ যাবতীয় ব্যয় দলটি বহন করবে।
তিনি বলেন, আমরা শহীদদের ত্যাগ বৃথা যেতে দেব না। শহীদ সেলিমের পরিবারের পাশে আছি এবং থাকব।বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হন ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার সন্তান সেলিম তালুকদার। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন। গত ৯ মার্চ শহীদ সেলিমের স্ত্রী সুমি আকতার ঝালকাঠি শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এই নবজাতককে দেখতেই জামায়াতের আমির সোমবার হেলিকপ্টার যোগে ঝালকাঠি যান।