শিরোনাম :
Logo কয়রায় যৌথবাহিনীর চেকপোস্ট Logo লক্ষ্মীপুরে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীকে ইসলামী আন্দোলন নেতৃবৃন্দের নগদ অর্থ প্রদান Logo বিএনপির ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চাঁদপুরে স্মরণকালের বর্ণাঢ্য র‌্যালি Logo জামায়াতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা Logo শ্রীরাধার প্রেম ও প্রার্থনায় মুখর ইবির টিএসএসসি প্রাঙ্গণ Logo চবি শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ইবিতে বিক্ষোভ Logo রাকসু নিয়ে উত্তেজনা ; বক্তব্য দেওয়ার সময় শিবির সভাপতির বুকে বোতল নিক্ষেপ Logo মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের পানির ফিল্টার দিলেন স্বেচ্ছাসেবী নারী উদ্যোক্তা সংগঠন বিজয়ী Logo চাঁদপুরে মাদক নির্মূলে সাহসিকতার সাথে কাজ করছে সহকারী পরিচালক মুহাঃ মিজানুর রহমান Logo পশ্চিম ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটিকে সংবর্ধনা – ঐক্যবদ্ধভাবে মিলনকে এমপি করার অঙ্গীকার

নাট্যকার ও অভিনেতা মনোজ মিত্র আর নেই

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০২:৪০:৫৪ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
  • ৭৩১ বার পড়া হয়েছে

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নাট্যকার, নাট্যব্যক্তিত্ব, অভিনেতা মনোজ মিত্র মারা গেছেন। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে কলকাতার একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন মনোজ মিত্র। বেশ কয়েক বছর ধরেই বার্ধ্যক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। গতকাল সকালে এই বরেণ্য অভিনেতা মৃত্যুর খবরটি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তাঁর ভাই সাহিত্যিক অমর মিত্র।

গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে অসুস্থ হয়ে পড়েন মনোজ মিত্র। কলকাতার সল্টলেকের ক্যালকাটা হার্ট ইনস্টিউটে ভর্তি করা হয়। ভর্তির সময় হাসপাতাল জানিয়েছিল, তাঁর হৃদ্‌যন্ত্র ঠিকমতো কাজ করছে না। হার্ট পাম্পের সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নেই। ক্রিয়েটিনিনও বিপজ্জনক মাত্রায় বেড়ে গিয়েছে। সোডিয়াম-পটাশিয়ামেরও সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রবীণ অভিনেতার চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল, যদিও চিকিৎসকদের সব চেষ্টা বৃথা গেল!

তপন সিংহের চলচ্চিত্র ‘বাঞ্ছারামের বাগান’ মনোজ মিত্রকে বাংলা সিনেমায় একজন অমর অভিনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তাঁরই লেখা নাটক ‘সাজানো বাগান’ থেকে তৈরি ওই চলচ্চিত্র। অশীতিপর বৃদ্ধ বাঞ্ছারাম তাঁর নিজ হাতে গড়া ফুল-ফলের বাগান নিয়ে পড়ে ছিলেন। নিজের প্রাণের চেয়েও প্রিয় সেই বাগান। মঞ্চে তিনি ওই বাঞ্ছারামের চরিত্রে যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন, পর্দায়ও জীবন্ত করেছিলেন বাঞ্ছারামকে। তাঁর অভিনয়জীবনের এক মাইলফলক এই ‘বাঞ্ছারাম’। সব ছাপিয়ে তিনি হয়েছিলেন বাঞ্ছারাম। আজ বাগান ফেলে চলে গেলেন তিনি।

মনোজ মিত্রর জন্ম ১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বর, বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার ধূলিহার গ্রামে। শৈশব কেটেছে তাঁর ওই গ্রামেই। ১৯৫০ সালে ১২ বছর বয়সে তিনি চলে যান কলকাতায়। বাবা অশোক কুমার মিত্র স্বাধীনতা–উত্তর বাংলাদেশে ঢাকায় ভারতের দূতাবাসে চাকরি করেছেন। ১৯৫৭ সালে কলকাতার নাট্যমঞ্চে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। আর ১৯৭৯ সালে প্রথম পা রেখেছিলেন সিনেমায়। অভিনয়ের জন্য পেয়েছিলেন সংগীত নাটক একাডেমি পদকসহ নানা পুরস্কার। ছিলেন কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যক্ষ।

মনোজ মিত্রর লেখা প্রথম নাটক ‘মৃত্যুর চোখে জল’। লিখেছিলেন ১৯৫৯ সালে। আর ১৯৭২ সালে ‘চাকভাঙা মধু’ নাটকের মধ্য দিয়ে তিনি পর্দার সামনে আসেন। ওই নাটকের নির্দেশনায় ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবতী। মনোজ মিত্রর মঞ্চনাটক, যাত্রা, আকাশবাণীর নাটকে অবাধ বিচরণ ছিল।

মনোজ মিত্রর লেখা শতাধিক নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘চাকভাঙা মধু’, ‘দর্পণে শরৎশশী’, ‘নরক গুলজার’, ‘সাজানো বাগান’, ‘নৈশভোজ’, ‘চোখে আঙ্গুল দাদা’, ‘কাল বিহঙ্গ’, ‘অশ্বত্থামা’, ‘মেষ ও রাখাল’, ‘অলকানন্দর পুত্রকন্যা’ উল্লেখযোগ্য।

মনোজ মিত্র অভিনয় করেছেন ৫৭টি ছবিতে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘৬১ নম্বর গড়পার লেন’, ‘উমা’, ‘প্রেম বাইচান্স’, ‘অমর সাথি’, ‘ভালোবাসি শুধু তোমাকে’, ‘আগুন’, ‘চক্র’, ‘দত্তক’, ‘হিংসা’, ‘আবির্ভাব’ ও ‘তুফান’।

ট্যাগস :

কয়রায় যৌথবাহিনীর চেকপোস্ট

নাট্যকার ও অভিনেতা মনোজ মিত্র আর নেই

আপডেট সময় : ০২:৪০:৫৪ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নাট্যকার, নাট্যব্যক্তিত্ব, অভিনেতা মনোজ মিত্র মারা গেছেন। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে কলকাতার একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।

ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন মনোজ মিত্র। বেশ কয়েক বছর ধরেই বার্ধ্যক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। গতকাল সকালে এই বরেণ্য অভিনেতা মৃত্যুর খবরটি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন তাঁর ভাই সাহিত্যিক অমর মিত্র।

গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে অসুস্থ হয়ে পড়েন মনোজ মিত্র। কলকাতার সল্টলেকের ক্যালকাটা হার্ট ইনস্টিউটে ভর্তি করা হয়। ভর্তির সময় হাসপাতাল জানিয়েছিল, তাঁর হৃদ্‌যন্ত্র ঠিকমতো কাজ করছে না। হার্ট পাম্পের সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়া রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নেই। ক্রিয়েটিনিনও বিপজ্জনক মাত্রায় বেড়ে গিয়েছে। সোডিয়াম-পটাশিয়ামেরও সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রবীণ অভিনেতার চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল, যদিও চিকিৎসকদের সব চেষ্টা বৃথা গেল!

তপন সিংহের চলচ্চিত্র ‘বাঞ্ছারামের বাগান’ মনোজ মিত্রকে বাংলা সিনেমায় একজন অমর অভিনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। তাঁরই লেখা নাটক ‘সাজানো বাগান’ থেকে তৈরি ওই চলচ্চিত্র। অশীতিপর বৃদ্ধ বাঞ্ছারাম তাঁর নিজ হাতে গড়া ফুল-ফলের বাগান নিয়ে পড়ে ছিলেন। নিজের প্রাণের চেয়েও প্রিয় সেই বাগান। মঞ্চে তিনি ওই বাঞ্ছারামের চরিত্রে যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন, পর্দায়ও জীবন্ত করেছিলেন বাঞ্ছারামকে। তাঁর অভিনয়জীবনের এক মাইলফলক এই ‘বাঞ্ছারাম’। সব ছাপিয়ে তিনি হয়েছিলেন বাঞ্ছারাম। আজ বাগান ফেলে চলে গেলেন তিনি।

মনোজ মিত্রর জন্ম ১৯৩৮ সালের ২২ ডিসেম্বর, বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার ধূলিহার গ্রামে। শৈশব কেটেছে তাঁর ওই গ্রামেই। ১৯৫০ সালে ১২ বছর বয়সে তিনি চলে যান কলকাতায়। বাবা অশোক কুমার মিত্র স্বাধীনতা–উত্তর বাংলাদেশে ঢাকায় ভারতের দূতাবাসে চাকরি করেছেন। ১৯৫৭ সালে কলকাতার নাট্যমঞ্চে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। আর ১৯৭৯ সালে প্রথম পা রেখেছিলেন সিনেমায়। অভিনয়ের জন্য পেয়েছিলেন সংগীত নাটক একাডেমি পদকসহ নানা পুরস্কার। ছিলেন কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যক্ষ।

মনোজ মিত্রর লেখা প্রথম নাটক ‘মৃত্যুর চোখে জল’। লিখেছিলেন ১৯৫৯ সালে। আর ১৯৭২ সালে ‘চাকভাঙা মধু’ নাটকের মধ্য দিয়ে তিনি পর্দার সামনে আসেন। ওই নাটকের নির্দেশনায় ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবতী। মনোজ মিত্রর মঞ্চনাটক, যাত্রা, আকাশবাণীর নাটকে অবাধ বিচরণ ছিল।

মনোজ মিত্রর লেখা শতাধিক নাটকের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘চাকভাঙা মধু’, ‘দর্পণে শরৎশশী’, ‘নরক গুলজার’, ‘সাজানো বাগান’, ‘নৈশভোজ’, ‘চোখে আঙ্গুল দাদা’, ‘কাল বিহঙ্গ’, ‘অশ্বত্থামা’, ‘মেষ ও রাখাল’, ‘অলকানন্দর পুত্রকন্যা’ উল্লেখযোগ্য।

মনোজ মিত্র অভিনয় করেছেন ৫৭টি ছবিতে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘৬১ নম্বর গড়পার লেন’, ‘উমা’, ‘প্রেম বাইচান্স’, ‘অমর সাথি’, ‘ভালোবাসি শুধু তোমাকে’, ‘আগুন’, ‘চক্র’, ‘দত্তক’, ‘হিংসা’, ‘আবির্ভাব’ ও ‘তুফান’।