শুক্রবার | ১২ ডিসেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo মতলব দক্ষিণ উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা Logo হাদীর উপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নোবিপ্রবিতে বিক্ষোভ Logo মিয়ানমারে পাচারকালে বিপুল পরিমাণ সিমেন্ট ও বার্মিজ লুঙ্গিসহ ২২ জন পাচারকারী আটক Logo কচুয়ায় র‍্যাবের অভিযানে ৫ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক ব্যবসায়ী আটক Logo চাঁদপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের পিতার মৃত্যুতে দোয়া Logo জাতীয় ছাত্রশক্তি জাবি শাখার নতুন কমিটি ঘোষণা Logo জাবিতে ইলিয়াস ও পিনাকীর কুশপুত্তলিকা দাহন Logo পদত্যাগ করলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ Logo সাতক্ষীরা-কলারোয়া সীমান্তে বিজিবির বিশেষ অভিযানে ভারতীয় মদ ও ঔষধসহ আড়াই লক্ষাধিক টাকার চোরাচালানী মালামাল জব্দ Logo কয়রায় আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালন উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা

কর্মীদের বেতন-ভাতা প্রদানে দান-সদকার সওয়াব

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৪:৩২:১১ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪
  • ৭৯৬ বার পড়া হয়েছে

কোনো মানুষ তার উপার্জনের সব অর্থ ভোগ করতে পারে না। নিজের উপার্জিত সম্পদে স্ত্রী, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, অধীন ও অসহায় মানুষের হক আছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কাউকে যখন আল্লাহ কল্যাণ (সম্পদ) দান করেন তখন সে নিজের এবং তার পরিবারের লোকজনকে দিয়ে (ব্যয়) শুরু করবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৮২২)

কারো সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সে যদি তার পরিবার-পরিজন ও অধীন লোকদের জন্য খরচ করতে কৃপণতা করে তাহলে সে পাপী হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কেউ পাপী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে তার ওপর নির্ভরশীলদের রিজিক নষ্ট করে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬৯২)

অন্য হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির পাপের জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে যাদের খোরপোশ তার দায়িত্ব সে তাদের খোরপোশ আটকিয়ে রাখবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৯৯৬)

উপার্জিত অর্থ থেকে প্রথমে নিজের প্রয়োজন পূরণ করবে। এরপর স্ত্রী-সন্তান ও অধীনদের জন্য ব্যয় করবে। উদ্বৃত্ত অর্থ থেকে অন্য হকদারদের হক আদায় করবে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সদকা দাও। জনৈক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমার কাছে একটি দিনার (স্বর্ণ মুদ্রা) আছে। তিনি বলেন, তুমি ওটা নিজেকেই দান করো (নিজের জন্য ব্যয় করো)।

লোকটা বলল, আমার কাছে আরো একটি আছে। তিনি জবাবে বলেন, এটা তোমার ছেলেদের (সন্তানদের) জন্য খরচ করো। লোকটা বলল, আমার কাছে আরো একটি আছে। নবী (সা.) বলেন, ওটা তোমার স্ত্রীর জন্য খরচ করো। সে আবার বলল, আমার কাছে আরো একটি আছে। তিনি বলেন, তোমার গৃহকর্মীর জন্য সদকা (ব্যয়) করো।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬৯১)

আলোচ্য হাদিসে লক্ষণীয় যে নবী করিম (সা.) পরিবার ও অধীনদের জন্য ব্যয় করাকে ‘সদকা’ শব্দ দিয়ে ব্যক্ত করেছেন। এতে বোঝা যায়, স্ত্রী, পরিবার ও নিজের গৃহকর্মী কিংবা প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বেতন-ভাতা ইত্যাদি দেওয়ার মাধ্যমেও সদকার সওয়াব পাওয়া যায়। আরেকটি হাদিস থেকে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয় : মিকদাম (রা.) বলেন, তিনি নবী করিম (সা.)-কে বলতে শুনেছেন—‘তুমি তোমার নিজেকে যা খাওয়াও তা সদকাবিশেষ, তুমি তোমার স্ত্রী-পুত্র ও কর্মচারীকে যা খাওয়াও, তা-ও সদকাস্বরূপ।’ (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ১৯৫)

প্রসঙ্গত, ইসলামের দৃষ্টিতে অন্যের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করা মহৎ ইবাদত। সমাজের কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা জিহাদ ও রোজা রাখার মতো সওয়াবের কাজ। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘বিধবা ও মিসকিনের জন্য খাদ্য জোগাড় করতে চেষ্টারত ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের মতো অথবা রাতে নামাজে দণ্ডায়মান এবং দিনে সিয়ামকারীর মতো।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৩৫৩)

মহান আল্লাহ আমাদের সব ধরনের ব্যয় কবুল করুন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মতলব দক্ষিণ উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা

কর্মীদের বেতন-ভাতা প্রদানে দান-সদকার সওয়াব

আপডেট সময় : ০৪:৩২:১১ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪

কোনো মানুষ তার উপার্জনের সব অর্থ ভোগ করতে পারে না। নিজের উপার্জিত সম্পদে স্ত্রী, পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, অধীন ও অসহায় মানুষের হক আছে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কাউকে যখন আল্লাহ কল্যাণ (সম্পদ) দান করেন তখন সে নিজের এবং তার পরিবারের লোকজনকে দিয়ে (ব্যয়) শুরু করবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৮২২)

কারো সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সে যদি তার পরিবার-পরিজন ও অধীন লোকদের জন্য খরচ করতে কৃপণতা করে তাহলে সে পাপী হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কেউ পাপী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে সে তার ওপর নির্ভরশীলদের রিজিক নষ্ট করে।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬৯২)

অন্য হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, ‘কোনো ব্যক্তির পাপের জন্য এতটুকু যথেষ্ট যে যাদের খোরপোশ তার দায়িত্ব সে তাদের খোরপোশ আটকিয়ে রাখবে।’ (মুসলিম, হাদিস : ৯৯৬)

উপার্জিত অর্থ থেকে প্রথমে নিজের প্রয়োজন পূরণ করবে। এরপর স্ত্রী-সন্তান ও অধীনদের জন্য ব্যয় করবে। উদ্বৃত্ত অর্থ থেকে অন্য হকদারদের হক আদায় করবে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সদকা দাও। জনৈক ব্যক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! আমার কাছে একটি দিনার (স্বর্ণ মুদ্রা) আছে। তিনি বলেন, তুমি ওটা নিজেকেই দান করো (নিজের জন্য ব্যয় করো)।

লোকটা বলল, আমার কাছে আরো একটি আছে। তিনি জবাবে বলেন, এটা তোমার ছেলেদের (সন্তানদের) জন্য খরচ করো। লোকটা বলল, আমার কাছে আরো একটি আছে। নবী (সা.) বলেন, ওটা তোমার স্ত্রীর জন্য খরচ করো। সে আবার বলল, আমার কাছে আরো একটি আছে। তিনি বলেন, তোমার গৃহকর্মীর জন্য সদকা (ব্যয়) করো।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬৯১)

আলোচ্য হাদিসে লক্ষণীয় যে নবী করিম (সা.) পরিবার ও অধীনদের জন্য ব্যয় করাকে ‘সদকা’ শব্দ দিয়ে ব্যক্ত করেছেন। এতে বোঝা যায়, স্ত্রী, পরিবার ও নিজের গৃহকর্মী কিংবা প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বেতন-ভাতা ইত্যাদি দেওয়ার মাধ্যমেও সদকার সওয়াব পাওয়া যায়। আরেকটি হাদিস থেকে বিষয়টি আরো স্পষ্ট হয় : মিকদাম (রা.) বলেন, তিনি নবী করিম (সা.)-কে বলতে শুনেছেন—‘তুমি তোমার নিজেকে যা খাওয়াও তা সদকাবিশেষ, তুমি তোমার স্ত্রী-পুত্র ও কর্মচারীকে যা খাওয়াও, তা-ও সদকাস্বরূপ।’ (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ১৯৫)

প্রসঙ্গত, ইসলামের দৃষ্টিতে অন্যের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করা মহৎ ইবাদত। সমাজের কর্মহীন মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা জিহাদ ও রোজা রাখার মতো সওয়াবের কাজ। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘বিধবা ও মিসকিনের জন্য খাদ্য জোগাড় করতে চেষ্টারত ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের মতো অথবা রাতে নামাজে দণ্ডায়মান এবং দিনে সিয়ামকারীর মতো।’ (বুখারি, হাদিস : ৫৩৫৩)

মহান আল্লাহ আমাদের সব ধরনের ব্যয় কবুল করুন।