শুক্রবার | ৩১ অক্টোবর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি জয়ের ১২০৮ কোটি টাকার রহস্যময় লেনদেনে তদন্তে সিআইডি Logo সিরাজগঞ্জে চাঞ্চল্যকর মাদক ব্যবসায়ী খুনে পিবিআইয়ের হাতে দুই আসামি গ্রেফতার Logo সুন্দরবনে অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ দুর্ধর্ষ ডাকাত করিম শরীফ বাহিনীর অস্ত্র সরবরাহকারী আটক করেছে কোস্ট গার্ড Logo ইবি শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যু  Logo সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন সহজভাবে প্রকাশের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার Logo চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের মাছপট্টি এলাকায় গ্যাস সিলিণ্ডার বিস্ফোরণে ২ জন আহত Logo ইবির আরবী বিভাগের স্নাতক সমাপনী র‍্যালি অনুষ্ঠিত! Logo খুবিতে ওবিই পদ্ধতিতে প্রশ্ন প্রণয়ন ও পরিমার্জন বিষয়ক প্রশিক্ষণ! Logo সম্পাদক আশরাফ ইকবালের জন্মদিনে শিক্ষার্থীদের গাছের চারা উপহার দিলেন তরুছায়া Logo মাদকবিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন শ্যামনগরের ছফিরুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়

চুয়াডাঙ্গায় তীব্র খরা ও অনাবৃষ্টিতে পাটের ফলনে বিপর্যয়

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৩:২৬ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট ২০২৪
  • ৭৬৯ বার পড়া হয়েছে

চলতি বছর চুয়াডাঙ্গায় অনাবৃষ্টি ও খরায় পাটের ফলন নেমে এসেছে অর্ধেকে। আবার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে পাটের দামেও পরিবর্তন হয়েছে। এতে চাষীদের প্রতি বিঘা জমি থেকে উৎপাদিত পাট বিক্রি করে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

আবার ফলন কম হওয়ায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার থেকে ২৫ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি পাট উৎপাদন কম হয়েছে। এতে প্রায় ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকার পাট উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন জেলা কৃষি অধিদপ্তর।
খেঁাজ নিয়ে জানা যায়, এ বছর পাটের মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টি, অতি খরা ও তাপদাহে পাটের ফলন ব্যহত হয়েছে চরমভাবে। বৃষ্টি না হওয়ায় পাটের গাছ বাড়েনি, ফলন কমেছে স্বাভাবিক ফলনের চেয়েও অনেক কম। বিঘা প্রতি যেখানে ৭ থেকে ৮ মণ ফলন পাওয়া যেত, সেখানে চলতি মৌসুমে ৫ থেকে ৬ মণ ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে চাষাবাদ, সার কীটনাশক, দিনমজুর, সেচ ও পাট ধৌতকরণে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সেখানে প্রতি বিঘাতে পাটের পলন কমে ৫ থেকে ৬ মণ হয়েছে। এতে চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন এ জেলার পাট চাষীরা। পাট ঘরে তুলতেও অতিরিক্ত টাকার যোগান দিতে হচ্ছে ধার—দেনা করে। এভাবে প্রতি বছর পাটে লোকসান হওয়ায় আগামীতে পাটের আবাদ কমার আশঙ্কা করছেন এ জেলার পাট চাষীরা।

জেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর চুয়াডাঙ্গায় ১৬ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও সেখানে আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে। আবার পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৪ হাজার ২৬০ মেট্রিক টন। সেখানে প্রায় ২৫ হাজার মেট্রিক টন কমে ১৯ হাজার ৯১৮ মেট্রিক টন উৎপাদন হবে বলে মনে করছেন জেলার কৃষি কর্মকতার্রা। এ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ পাট কাটা শেষ করেছেন কৃষকরা। তাতে ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকার পাট উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা করছে জেলা কৃষি অধিদপ্তর।

জেলার দামুড়হুদা উপজেলার মোক্তারপুর গ্রামের পাট চাষী সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিনি এবছর ৪ বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছেন। বৃষ্টি না হওয়ায় পাটের ফলন একেবারেই ভালো হয়নি। এতে বিঘা প্রতি প্রায় অর্ধেক উৎপাদন হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে ৭—৮ মণ পাট উৎপাদন হলেও এ বছর উৎপাদন হয়েছে ৫—৬ মণ। তিনি আরও বলেন, খুব ভালো পাট যাদের হয়েছে, তাদের বিঘা প্রতি ৭ মণের কাছাকাছি হচ্ছে। ফলে বিঘা প্রতি প্রায় ৭—৮ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে চাষীদের। আশপাশের গ্রামের আরও অনেক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের অবস্থাও একই রকম। দামুড়হুদা দেওলি মোড়ের ইব্রাহিম, আবু বাক্কা, তাহাজুল শেখ, বিশারত, আছমত আলীর মতো শত শত কৃষক এবছর পাট চাষ করে চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ—পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, এ বছর শুরুতে খরা ও বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পাটের ফলন ব্যহত হয়েছে। এতে প্রায় ২৫ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি পাট উৎপাদন কম হয়েছে। কৃষক পাট বিক্রির শুরুতে ভালো দাম পেলেও বর্তমানে দাম একটু কমের দিকে। ফলে কৃষকের লোকসান হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পাটের দাম বৃদ্ধি পেলে কৃষক তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

সিরাজগঞ্জের সাবেক এমপি জয়ের ১২০৮ কোটি টাকার রহস্যময় লেনদেনে তদন্তে সিআইডি

চুয়াডাঙ্গায় তীব্র খরা ও অনাবৃষ্টিতে পাটের ফলনে বিপর্যয়

আপডেট সময় : ০৩:৫৩:২৬ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট ২০২৪

চলতি বছর চুয়াডাঙ্গায় অনাবৃষ্টি ও খরায় পাটের ফলন নেমে এসেছে অর্ধেকে। আবার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের চলমান পরিস্থিতির কারণে পাটের দামেও পরিবর্তন হয়েছে। এতে চাষীদের প্রতি বিঘা জমি থেকে উৎপাদিত পাট বিক্রি করে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

আবার ফলন কম হওয়ায় চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার থেকে ২৫ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি পাট উৎপাদন কম হয়েছে। এতে প্রায় ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকার পাট উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন জেলা কৃষি অধিদপ্তর।
খেঁাজ নিয়ে জানা যায়, এ বছর পাটের মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টি, অতি খরা ও তাপদাহে পাটের ফলন ব্যহত হয়েছে চরমভাবে। বৃষ্টি না হওয়ায় পাটের গাছ বাড়েনি, ফলন কমেছে স্বাভাবিক ফলনের চেয়েও অনেক কম। বিঘা প্রতি যেখানে ৭ থেকে ৮ মণ ফলন পাওয়া যেত, সেখানে চলতি মৌসুমে ৫ থেকে ৬ মণ ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে চাষাবাদ, সার কীটনাশক, দিনমজুর, সেচ ও পাট ধৌতকরণে ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সেখানে প্রতি বিঘাতে পাটের পলন কমে ৫ থেকে ৬ মণ হয়েছে। এতে চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন এ জেলার পাট চাষীরা। পাট ঘরে তুলতেও অতিরিক্ত টাকার যোগান দিতে হচ্ছে ধার—দেনা করে। এভাবে প্রতি বছর পাটে লোকসান হওয়ায় আগামীতে পাটের আবাদ কমার আশঙ্কা করছেন এ জেলার পাট চাষীরা।

জেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর চুয়াডাঙ্গায় ১৬ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমিতে পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও সেখানে আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে। আবার পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৪ হাজার ২৬০ মেট্রিক টন। সেখানে প্রায় ২৫ হাজার মেট্রিক টন কমে ১৯ হাজার ৯১৮ মেট্রিক টন উৎপাদন হবে বলে মনে করছেন জেলার কৃষি কর্মকতার্রা। এ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ পাট কাটা শেষ করেছেন কৃষকরা। তাতে ১২ থেকে ১৫ কোটি টাকার পাট উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা করছে জেলা কৃষি অধিদপ্তর।

জেলার দামুড়হুদা উপজেলার মোক্তারপুর গ্রামের পাট চাষী সিরাজুল ইসলাম বলেন, তিনি এবছর ৪ বিঘা জমিতে পাটের চাষ করেছেন। বৃষ্টি না হওয়ায় পাটের ফলন একেবারেই ভালো হয়নি। এতে বিঘা প্রতি প্রায় অর্ধেক উৎপাদন হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে ৭—৮ মণ পাট উৎপাদন হলেও এ বছর উৎপাদন হয়েছে ৫—৬ মণ। তিনি আরও বলেন, খুব ভালো পাট যাদের হয়েছে, তাদের বিঘা প্রতি ৭ মণের কাছাকাছি হচ্ছে। ফলে বিঘা প্রতি প্রায় ৭—৮ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে চাষীদের। আশপাশের গ্রামের আরও অনেক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের অবস্থাও একই রকম। দামুড়হুদা দেওলি মোড়ের ইব্রাহিম, আবু বাক্কা, তাহাজুল শেখ, বিশারত, আছমত আলীর মতো শত শত কৃষক এবছর পাট চাষ করে চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ—পরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার বলেন, এ বছর শুরুতে খরা ও বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পাটের ফলন ব্যহত হয়েছে। এতে প্রায় ২৫ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি পাট উৎপাদন কম হয়েছে। কৃষক পাট বিক্রির শুরুতে ভালো দাম পেলেও বর্তমানে দাম একটু কমের দিকে। ফলে কৃষকের লোকসান হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পাটের দাম বৃদ্ধি পেলে কৃষক তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে বলে তিনি মনে করেন।