নিউজ ডেস্ক:জীবননগর উপজেলার উথলী বাজারপাড়ায় জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নারীসহ উভয়পক্ষের চারজন আহত হয়েছেন। গত রোববার রাত আনুমানিক আটটার দিকে উথলী বাজার পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দুই পক্ষই জীবননগর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, উথলী বাজারপাড়ার কালু মণ্ডলের ছেলে মিণ্টু মিয়া একই গ্রামের তরিকুলের দখলে থাকা রেলওয়ের একখণ্ড ভিটের জমি ক্রয় করেন। জমি ক্রয়ের পর তরিকুলের কাছ থেকে মিণ্টু মিয়া একটি স্ট্যাম্পে লিখিত নেন ওই জমি থেকে তিনি কী কী নিতে পারবেন। কিন্তু তরিকুল সব শর্ত অমান্য করে জোর করে ওই জমি থেকে নিয়মবহির্ভূতভাবে সব মালামাল নিয়ে যেতে চাইলে মিণ্টু তাতে বাধা দেওয়াতে তাঁকে শাবল দিয়ে আঘাতের চেষ্টা করেন তরিকুল। পরবর্তীতে সেখানে উপস্থিত হন আতিকুর রহমান এবং ঝনু মিয়া। এতে দুপক্ষের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। উভয় পক্ষের নারীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। জীবননগর থানায় দায়ের করা হয় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। কিন্তু আতিকুর রহমানের ভাই তরিকুলের দায়েরকৃত অভিযোগটি মামলা হিসাবে এজাহারভুক্ত হলেও মিণ্টু মিয়ার স্ত্রীর অভিযোগটি মামলার এজাহারভুক্ত করা হয় না। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হওয়ায় গত শুক্রবার রাতে জীবননগর থানার পুলিশ ঝনু মিয়াকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। শনিবার সকালে তাঁকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। গত রোববার ঝনু মিয়া জামিনে বের হয়ে এসে বাজারে অবস্থিত আতিকুরের দোকানে যেয়ে জমি নেবেন না এই মর্মে টাকা ফেরত চান। আতিকুর টাকা ফেরত না দিতে চাইলে ঝনু মিয়ার সঙ্গে একপর্যায়ে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ঝনু মিয়া বাড়িতে চলে আসেন। টাকা ফেরত না দিয়ে পরবর্তীতে আতিকুর রহমান লাঠিসোটাসহ লোকজন নিয়ে ঝনু মিয়ার বাড়িতে যেয়ে ঝনু মিয়ার বাড়ি এবং বাড়ির সঙ্গে থাকা তাঁর দোকানটি ব্যাপক ভাঙচুর করে। তাদের হামলায় রক্তাক্ত জখম হন ঝনু মিয়া, ঝনু মিয়ার স্ত্রী কোহেলী খাতুন এবং মিণ্টু মিয়ার শাশুড়ি ছফুরা খাতুন। হামলার কথা শুনে জীবননগর থানার পুলিশের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। মারাত্মক আহত অবস্থায় ঝনু মিয়ার স্ত্রী কোহেলী খাতুন এবং মিণ্টু মিয়ার শাশুড়ি ছফুরা খাতুনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে এবং দুজনই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ঝনু মিয়া বাড়িতে চলে আসেন।
এ বিষয়ে আতিকুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারায় আমাদের ওপর হামলা করে বেশ কয়েকজনকে আহত করে। আমি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে এসে এ বিষয়ে জীবননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।’
এ ব্যাপারে জীবননগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম জানান, উভয়পক্ষই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।