নিউজ ডেস্ক:চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্রে কুমুররগাড়া বিলের একটি অংশ দখলকে কেন্দ্র করে চার ভাইকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষ। তাঁদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁদের ঢাকায় রেফার্ড করেন। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই। এ নিয়ে এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় ইউসুফ, সুজনসহ ১৯ জনের নাম ও অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের নামে একটি মামলা করেছে আহত ব্যক্তিরা। প্রতিপক্ষদের দাবি, তাঁদের দুজনকেও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। আহত ব্যক্তিরা হলেন সদর উপজেলার শঙ্করচন্দ্র গ্রামের মৃত জামাত আলীর চার ছেলে রফিক (৪৫), সালাউদ্দীন (৪০), শফিকুল ইসলাম (৫৫) ও ইমরান (৩৫)। আহত ব্যক্তিরা জানান, ‘কুমুড়গাড়া, ছালাভরা ও কুমিরের খাল নামক বিল দখল নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ গোলযোগ চলে আসছিল একই এলাকার আনোয়ার ওরফে ইংরেজদের সঙ্গে। গতকাল সকালে আমরা বিলে তিন ভাই পাহারা দিচ্ছিলাম। এ সময় আনোয়ার হোসেন ওরফে ইংরেজ (৫৫), তাঁর ছেলে সোহানুর রহমান সোহান (২৫), সৌরভ হোসেনের সেরোর ছেলে আমিরুল ইসলাম (২৮), মৃত গঞ্জের আলীর আব্দুল আলীম (৩৮), সোহরাব হোসেনের ছেলে বখতিয়ার (৩৬), মৃত তাহাজউদ্দীনের তিন ছেলে সানোয়ার (৪৮), সাজু (৪২), ইউসুফ আলী (৫৫) ও তাঁর ছেলে সাইফুল (৩২) ও জনৈকের ছেলে সুজনসহ ২০-২৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জোরপূর্বক বিল দখলের চেষ্টা করে। আমরা তাঁদেরকে প্রতিহত করতেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমাদেরকে কোপাতে থাকে তাঁরা। এ সময় আরেক ভাই ইমরান তাঁদেরকে ঠেকাতে গেছে, তাঁকেও কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ।’ এ সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে সালাউদ্দিন ও রফিকের অবস্থা আশঙ্কাাজনক হওয়ায় তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় রেফার্ড করেন চিকিৎসক। এ দিকে হামলাকারী আনোয়ার হোসেন ইংরেজ বলেন, ‘কুমুড়গাড়া, ছালাভরা ও কুমিরের খাল নামক প্রায় ৯৭ বিঘা বিলটির আমিসহ ৬২ জনের দখলে রয়েছে। গতকাল সকালে জানতে পারি, ওরা চার ভাই বিলটি দখল করে মাছ ছাড়ছে। এ সময় আমারা কয়েকজন মিলে তাদেরকে প্রতিহত করলে গেলে তারা আমাদের মারধর করে। এতে একটু মারামারি হয়েছে। এতে আমার ছেলে সোহানসহ দুজনকে কুপিয়ে জখম করে তারা। এ সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। এই বিল নিয়ে মামলা চলছে।’ এ বিষয়ে শংকরচন্দ্র ইউনিয়নের সদস্য শওকত মাহমুদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ওই বিলটা দখল করে আসছিলেন আনোয়ার হোসেন ওরফে ইংরেজরা। গত এক বছর যাবৎ মহামান্য হাইকোর্টের একটি কপি নিয়ে বিলের একটি অংশ দখল করে আসছিল তারা। এ নিয়ে গতকাল সকালে চার ভাইকে কুপিয়ে জখম করে তারা।’ এ প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ খান বলেন, বিলের একটি অংশকে কেন্দ্র করে তিনজনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ইউসুফ, সুজনসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনের নামে একটি মামলা করেছেন আহত ব্যক্তিরা। এ ঘটনায় মামলার আসামি ইউসুফকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যহত রয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।