এন.আই.মিলন, দিনাজপুর প্রতিনিধি- দিনাজপুরে উপ-মহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মিনারে ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে অনুষ্ঠিত হলো দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত। বৃহৎ এই ঈদুল ফিতরের জামাতে ছয় লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছে বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।
দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে বুধবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে এই সর্ববৃহৎ ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করেন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতাল জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা সামশুল হক কাশেমী।
ঈদুল ফিতরের সর্ববৃহৎ এই জামাতে নামাজ আদায় করেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম, পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েমসহ বিভিন্ন জেলার মুসল্লিরা। দিনাজপুর ছাড়াও বগুড়া, জয়পুরহাট, নীলফামারী, গাইবান্দা, ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় জেলাসহ আশপাশের জেলার মুসুল্লিরা নামাজ আদায় করতে আসেন। উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ এই জামাতে নামাজ আদায় করতে পেরে খুশি আশপাশের ও দূরদূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিরা।
ঈদুল ফিতরের সর্ববৃহৎ এই জামাতে নামাজ আদায় করতে মুসুল্লিদের যাতে করে কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়তে হয় সে জন্য অস্থায়ী ওজুখানা, পানি, টয়লেট ব্যবস্থা করা হয়। কোনো ধরনের নাশকতা না হয় সে জন্য চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসারসহ সব ধরনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন ছিল। একই সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারিসহ সিসি ক্যামেরাও স্থাপন করা হয়।
দেশের মধ্যে আয়তনে বড় সাড়ে ১৪ একর বিশাল এই মাঠে যেন গত বছরের তুলনায় ১০ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে তার ব্যবস্থা করা হয়। এই জামাতের উদ্যোক্তা জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি ঈদের দুই দিন আগে মিডিয়ায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, এই মাঠে এক সঙ্গে ১০ লাখ মানুষের নামাজের আয়োজন থাকবে। পবিত্র ঈদ উল ফিতরে ছয় লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষ এক সঙ্গে নামাজ আদায় করেন।
জানা যায়, ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মিনার তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় কোটি টাকা। ঈদগাহ মাঠের মিনারের প্রথম গম্বুজ অর্থাৎ মেহেরাব (যেখানে ইমাম দাঁড়ান) তার উচ্চতা ৪৭ ফিট। এর সঙ্গে রয়েছে আরো ৪৯টি গম্বুজ। এ ছাড়া ৫১৬ ফিট লম্বায় ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়। পুরো মিনার সিরামিক্স দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। ঈদগাহ মাঠের দুইধারে করা হয়েছে ওজুর ব্যবস্থা। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইটিং। রাত হলে ঈদগাহ মিনার আলোকিত হয়ে ওঠে।
ঐতিহাসিক গোর-এ-শহীদ ময়দানের পশ্চিম দিকে প্রায় অর্ধেক জায়গাজুড়ে প্রতিষ্ঠিত এই ঈদগাহ মিনারটির পাদদেশে এবার নিয়ে ৪টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলো।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম জানান, যাতে করে কোনো ধরনের নাশকতার ঘটনা না ঘটে সে জন্য নামাজ আদায়ের এক সপ্তাহ আগে থেকে মাঠে নজরদারি রাখা হয় এবং ঈদের আগের দিন থেকেই র্যাব, বিজিবি, পুলিশ এবং আনসার বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল। স্থাপন করা হয়েছিল অস্থায়ী সিসি ক্যামেরা।
উল্লেখ্য, মাঠটির চারদিক দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় কোনো প্রকার যানজট কিংবা কোনো সমস্যায় পড়তে হয় না আগত মুসল্লিদের।