নিউজ ডেস্ক:
জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার ২০১৮-২০২২ সালের কৌশলগত কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার সহকারি পরিচালক ও সিনিয়র সহকারি জজ কাজী ইয়াসিন হাবিব বাসস-এর সঙ্গে আলাপকালে বলেন, “বাংলাদেশে একটি শক্তিশালী আইনগত সহায়তা ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা ও সরকারি আইনগত কার্যক্রম আন্তর্জাতিকমানে উন্নীতকরণেন মাধ্যমে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সংস্থার ২০১২-২০১৭ সালের ১ম কৌশলগত কর্মপরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন হয়েছে।” তিনি বলেন, এখন পরবর্তী কৌশলগত পরিকল্পনা ২০১৮-২০২২ প্রণয়নের কার্যক্রম চলমান আছে।
কাজী ইয়াসিন হাবিব জানান, জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা দ্রুততম সময়ে সরকারী আইনি সেবা কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতে ডিজিটাল ডাটাবেস স্থাপন কার্যক্রম শুরু করেছে।
তিনি বলেন, সরকারী আইনি সেবা কার্যক্রম তথা লিগ্যাল এইড সেবা তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার নিমিত্তে সংস্থা দেশের সব জেলায় প্রচরণামূলক সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন কর্মশালা এবং সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান আয়োজন করছে। প্রচার ও প্রকাশনা সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। ৬৪ টি জেলায় এখন লিগ্যাল এইড সেবার ব্যাপ্তি রয়েছে। পার্বত্য জেলার পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জন্য সরকারী এ আইনি সেবা নিশ্চিতকরণেও বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার সেবা আরো তরান্বিত করতে সংস্থা অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ খুলেছে। লিগ্যাল এইড সংক্রান্ত সেবামূলক একটি এ্যাপস তৈরী করেছে। জাতীয় হেল্পলাইন কলসেন্টার ১৬৪৩০ নম্বরে কল ও এসএমএস করে যে কোন ব্যক্তি আইনি সেবা নিতে পারছেন।
ইয়াছিন হাবিব বলেন, সংস্থার সেবাপ্রাপ্তি ও এর কার্যক্রম প্রচার এবং সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য টিভিসি নির্মান করেছে। প্রচারণামূলক এসব টিভিসি বর্তমানে বিটিভিসহ সকল টিভি চ্যানেল ও বেতারে প্রচার করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের মধ্যে সরকারি আইনি সেবা বিষয়ে ধারণা দেয়ার জন্য সংস্থা বিভিন্ন তথ্যচিত্র ও ডকুড্রামা নির্মান করেছে। এ সেবা কার্যক্রমকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সংস্থার ওয়েবসাইটের সাথে একটি ইউটিউব চ্যানেল সংযুক্ত আছে। এ চ্যানেলে সংস্থার বিভিন্ন কার্যক্রম ও সরকারি আইনি সেবা সম্পর্কিত মূল্যবান বিভিন্ন তথ্য ও বক্তব্য রয়েছে।
দেশের দরিদ্র ও অস্বচ্ছল জনগোষ্ঠী, শ্রমিক, সহিংসতার শিকার নারী-শিশু এবং পাচারের শিকার মানুষের জন্য আইনী সেবা নিশ্চিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০০ সালে আইন প্রণয়নের মধ্যদিয়ে এর যাত্রা শুরু করে। পরে এই আইনের অধীনে বিভিন্ন বিধি প্রণীত হয়। বিধিতে কারা আইনি সহায়তা পাবেন তা নির্ধারণ করা হয়। দেশের সবক’টি জেলা আদালত, চৌকি আদালত এবং সুপ্রিমকোর্টে লিগ্যাল এইড সার্ভিস চালু রয়েছে।
ইয়াসিন হাবিব জানান, গত ২৮ এপ্রিল দেশে ষষ্ঠবারের মতো ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস’ পালিত হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল- ‘উন্নয়ন আর আইনের শাসনে এগিয়ে চলছে দেশ/ লিগ্যাল এইডের সুফল পাচ্ছে সারা বাংলাদেশ।’ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপি পালিত হয়।
তিনি জানান, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে এখন শুধু আইনি সহায়তা প্রদানের কেন্দ্র হিসেবেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি, মামলা জট কমানোর লক্ষ্যে এ অফিসগুলোকে ‘এডিআর কর্ণার’ বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্রস্থল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় লিগ্যাল এইড অফিসার নিয়োগ হচ্ছে। এ আইনি সেবায় বিভিন্ন কার্যক্রমে জনগণের সম্পৃক্ততা এবং সুবিধাগ্রহণের হার দিনে দিনে বেড়ে চলেছে।
সূত্র : বাসস