মঙ্গলবার | ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | শীতকাল
শিরোনাম :
Logo দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বসবাস করা বসতবাড়ি ভোগদখল জমিজমা নিমিষেই বেদখল Logo আন্তর্জাতিক ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ‘এডুরম’ উদ্বোধন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে Logo পলাশবাড়ীতে বিএনপির আনন্দ মিছিল Logo মাদকবিরোধী ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ খেলাধুলার মাধ্যমে তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখতে হবে” — অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ এরশাদ উদ্দিন Logo খুলনায় এনসিপি নেতাকে গুলি: সাতক্ষীরা সীমান্ত সিল, বিজিবির ৫৭ চেকপোস্ট ও ৮৭টি অতিরিক্ত টহল Logo কুয়াশার চাদরে মোড়া ডিসেম্বরের ক্যাম্পাস Logo যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার ওপর আরও চাপ প্রয়োগের আহ্বান জেলেনস্কির Logo নির্বাচনে আস্থার পরিবেশ তৈরিতে অপারেশন শুরু করবে যৌথবাহিনী: ইসি সানাউল্লাহ Logo রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে Logo কুমিল্লায় আইদি পরিবহন প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা, চাঁদপুরে মানববন্ধন

হাইকোর্টের নির্দেশ ৩ মাসেও পায়নি ঢামেকের প্রিন্সিপাল!

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৮:৫৪:৩২ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ৯ মার্চ ২০১৮
  • ৭৫৫ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর কল্যাণপুরের চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ শাম্মী হত্যা মামলায় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে কমিটি গঠন পূর্বক লাশের বর্তমান ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে তার ওপর মতামত দিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষকে দেয়া মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ তিন মাসেও পৌঁছেনি।

গত বছরের ৬ ডিসেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতিসহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছিলেন। এ আদেশে ফরেনসিক বিভাগের তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ কর্তৃক গঠিত ওই কমিটির মতামত পিবিআইয়ের মাধ্যমে আদালতের কাছে হস্তান্তর করতে বলা হয়। একই আদেশে গৃহবধূ শাম্মী হত্যা মামলার তদন্তভার মিরপুর মডেল থানা পুলিশের পরিবর্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র ওপর ন্যাস্ত করা হয়। পিবিআই ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের নির্দেশনানুযায়ী এ তদন্ত কাজ শুরু করেছে।

কিন্তু দীর্ঘ প্রায় তিন মাস গড়িয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে হাইকোর্টের এই নির্দেশ এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষের কাছে পৌঁছেনি। গত মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. খাঁন মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি যুগান্তরের কিশোরগঞ্জ ব্যুরোকে জানান, ‘আমি এ সংক্রান্ত হাইকোর্টের নির্দেশ এখনও পাইনি। তবে গত সোমবার কোর্ট থেকে বাদি পক্ষের আইনজীবী খন্দকার মহিবুল হাসান আপেল আমাকে ফোন করে এ বিষয়টি বলে খোঁজ নেন। এ ধরণের নির্দেশনা সম্বলিত হাইকোর্টের চিঠি পেলে আমি যথাযথ ব্যবস্থা নেব বলে তাকে বলেছি।’

গৃহবধূ শাম্মীর হন্তারক ধণাঢ্য প্রভাবশালী স্বামী ও তার আত্মীয়রা ঘাটে ঘাটে প্রভাব বিস্তার করে এবং অঢেল অর্থ ঢেলে মামলার স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্থ করছে বলে মামলার বাদি নিহত গৃহবধূ শাম্মীর ছোট ভাই মো. ফরহাদ হোসেন খাঁন বাবু ও তার মা ফরিদা আক্তার বেগম অভিযোগ করেন।

উল্লেখ্য, গত বছর ৫ নভেম্বর কিশোরগঞ্জ ব্যুরো কর্তৃক যুগান্তরে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ নজরে নিয়ে দু’দিন শুনানী শেষে ৭ নভেম্বর হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক নওশের আলীকে তলব করেন। দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন এ প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের নজরে আনেন। একই আদালত ৩ ডিসেম্বর শাম্মী হত্যার ময়না তদন্তকারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদকেও তলব করে তার দ্বারা তৈরিকৃত ময়না তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ব্যাখ্যা প্রদানেরও নির্দেশ দেন।

গৃহবধূ শাম্মী হত্যা মামলা, ‘মাকে বাবা অনেক কষ্ট দিয়ে মেরেছে, তদন্ত কর্মকর্তার গড়িমসির অভিযোগ’ শীর্ষক কিশোরগঞ্জ ব্যুরো কর্তৃক দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত এ মর্মস্পর্শী প্রতিবেদনে শাম্মী হত্যার বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের প্রকৃত কাহিনী এবং আসামি পক্ষের প্রভাবে পুলিশ ও ময়না তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতির চিত্র ফুটে ওঠে। নিহতের সুরতহাল রিপোর্টে ‘মৃতার মাথার নিচের অংশে ঘাড়ে আঘাতের নীল বর্ণ দাগ দেখা যায়। চোখ-মুখে সামান্য রক্ত গড়ে পড়তে দেখা যায়। কপালে চোখ স্বাভাবিক, দুই কানের ও মুখের ডান পাশে আঘাতের দাগ দেখা যায়। বুক, পেট, পিঠ ও দুই হাতের কণির নিচে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। যৌনাঙ্গ ও মলদ্বার স্বাভাবিক। দুই পায়ে গোঁড়ালির অংশে ছোলা জখম দেখা যায়। দুই পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে রক্ত জখম দেখা যায়। হাত দু’টি দুই পাশে লম্বালম্বি অবস্থায় আছে। পা দু’টি লম্বা অবস্থায় আছে’ বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন। একইভাবে আদালতে সাক্ষী হিসেবে দেয়া শিশুপুত্র আরিয়ানের জবানবন্দির মর্মানুযায়ী ঘটনাটি ছিলপরিকল্পিত হত্যাকান্ড। কিন্তুময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঢামেকের ডা. সোহেল মাহমুদ এটি আত্মহত্যা হতে পারে বলে মন্তব্য করায় মহামান্য হাইকোর্ট ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনার নির্দেশ দেন।

গত বছরের ৭ জুন রাতে রাজধানীর কল্যাণপুরে ভাড়া বাসায় একটি বায়িং হাউসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন টিটু তার স্ত্রী শামিমা লাইলা আরজুমান্না খান শাম্মীকে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করে। পরে চিকিৎসার নামে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর ছোট ভাই ফরহাদ হোসেন খান বাবু বাদী হয়ে ৮ জুন মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ ঘাতক স্বামী আলমগীর ও তার তৃতীয় স্ত্রী ইসরাত জাহান মুক্তাকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী শাম্মী আক্তারের ৫ বছর বয়সী শিশু পুত্র আরিয়ান গত বছরের ৮ আগস্ট ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ঢাকার সিএমএম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেয়ায় শিশু পুত্র আরিয়ানও গুম-খুনের শিকার হতে পারে এমন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্বজনদের মাঝে। এ পরিস্থিতিতে শিশু আরিয়ান ও তার ছোট ভাই অ্যারনের জীবন বাঁচাতে তাদের ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জের সীমান্তবর্তী ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর গ্রামের নানার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বৃহস্পতিবার মোবাইলফোনে যোগাযোগ করে জানা গেছে, শাম্মী হত্যা মামালা নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টের ৬ ডিসেম্বরের নির্দেশ পেয়ে পিবিআই যথারীতি তদন্ত কাজ শুরু করেছে।

পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. নাছির উদ্দিন জানান, মামলার বাদি মো. ফরহাদ হোসেন খাঁন বাবুকে নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি কল্যাণপুরের ঘটনাস্থল পরির্দশ করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত তার কাছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত রিপোর্টের পর্যালোচনা প্রতিবেদন পৌঁছেনি বলে জানান। অপর দিকে মহামান্য হাইকোর্টের এ্যনেক্স ১৭ নম্বর কোর্টের বেঞ্চ অফিসার সরোয়ার আলম বলেন, পিবিআই এ নির্দেশনার আদেশ (ক্রিমিনাল রিভিশন নং-২৯২৬/২০১৭) সম্বলিত কপি পেয়ে থাকলে তো ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষেরও পাওয়ার কথা।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বসবাস করা বসতবাড়ি ভোগদখল জমিজমা নিমিষেই বেদখল

হাইকোর্টের নির্দেশ ৩ মাসেও পায়নি ঢামেকের প্রিন্সিপাল!

আপডেট সময় : ০৮:৫৪:৩২ অপরাহ্ণ, শুক্রবার, ৯ মার্চ ২০১৮

নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর কল্যাণপুরের চাঞ্চল্যকর গৃহবধূ শাম্মী হত্যা মামলায় ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে কমিটি গঠন পূর্বক লাশের বর্তমান ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে তার ওপর মতামত দিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষকে দেয়া মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ তিন মাসেও পৌঁছেনি।

গত বছরের ৬ ডিসেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতিসহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছিলেন। এ আদেশে ফরেনসিক বিভাগের তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞ কর্তৃক গঠিত ওই কমিটির মতামত পিবিআইয়ের মাধ্যমে আদালতের কাছে হস্তান্তর করতে বলা হয়। একই আদেশে গৃহবধূ শাম্মী হত্যা মামলার তদন্তভার মিরপুর মডেল থানা পুলিশের পরিবর্তে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র ওপর ন্যাস্ত করা হয়। পিবিআই ইতিমধ্যেই হাইকোর্টের নির্দেশনানুযায়ী এ তদন্ত কাজ শুরু করেছে।

কিন্তু দীর্ঘ প্রায় তিন মাস গড়িয়ে গেলেও রহস্যজনক কারণে হাইকোর্টের এই নির্দেশ এখনও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষের কাছে পৌঁছেনি। গত মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. খাঁন মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি যুগান্তরের কিশোরগঞ্জ ব্যুরোকে জানান, ‘আমি এ সংক্রান্ত হাইকোর্টের নির্দেশ এখনও পাইনি। তবে গত সোমবার কোর্ট থেকে বাদি পক্ষের আইনজীবী খন্দকার মহিবুল হাসান আপেল আমাকে ফোন করে এ বিষয়টি বলে খোঁজ নেন। এ ধরণের নির্দেশনা সম্বলিত হাইকোর্টের চিঠি পেলে আমি যথাযথ ব্যবস্থা নেব বলে তাকে বলেছি।’

গৃহবধূ শাম্মীর হন্তারক ধণাঢ্য প্রভাবশালী স্বামী ও তার আত্মীয়রা ঘাটে ঘাটে প্রভাব বিস্তার করে এবং অঢেল অর্থ ঢেলে মামলার স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিভিন্নভাবে বাধাগ্রস্থ করছে বলে মামলার বাদি নিহত গৃহবধূ শাম্মীর ছোট ভাই মো. ফরহাদ হোসেন খাঁন বাবু ও তার মা ফরিদা আক্তার বেগম অভিযোগ করেন।

উল্লেখ্য, গত বছর ৫ নভেম্বর কিশোরগঞ্জ ব্যুরো কর্তৃক যুগান্তরে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ নজরে নিয়ে দু’দিন শুনানী শেষে ৭ নভেম্বর হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক নওশের আলীকে তলব করেন। দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন এ প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের নজরে আনেন। একই আদালত ৩ ডিসেম্বর শাম্মী হত্যার ময়না তদন্তকারী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদকেও তলব করে তার দ্বারা তৈরিকৃত ময়না তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ব্যাখ্যা প্রদানেরও নির্দেশ দেন।

গৃহবধূ শাম্মী হত্যা মামলা, ‘মাকে বাবা অনেক কষ্ট দিয়ে মেরেছে, তদন্ত কর্মকর্তার গড়িমসির অভিযোগ’ শীর্ষক কিশোরগঞ্জ ব্যুরো কর্তৃক দৈনিক যুগান্তরে প্রকাশিত এ মর্মস্পর্শী প্রতিবেদনে শাম্মী হত্যার বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের প্রকৃত কাহিনী এবং আসামি পক্ষের প্রভাবে পুলিশ ও ময়না তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতির চিত্র ফুটে ওঠে। নিহতের সুরতহাল রিপোর্টে ‘মৃতার মাথার নিচের অংশে ঘাড়ে আঘাতের নীল বর্ণ দাগ দেখা যায়। চোখ-মুখে সামান্য রক্ত গড়ে পড়তে দেখা যায়। কপালে চোখ স্বাভাবিক, দুই কানের ও মুখের ডান পাশে আঘাতের দাগ দেখা যায়। বুক, পেট, পিঠ ও দুই হাতের কণির নিচে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। যৌনাঙ্গ ও মলদ্বার স্বাভাবিক। দুই পায়ে গোঁড়ালির অংশে ছোলা জখম দেখা যায়। দুই পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলে রক্ত জখম দেখা যায়। হাত দু’টি দুই পাশে লম্বালম্বি অবস্থায় আছে। পা দু’টি লম্বা অবস্থায় আছে’ বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেন। একইভাবে আদালতে সাক্ষী হিসেবে দেয়া শিশুপুত্র আরিয়ানের জবানবন্দির মর্মানুযায়ী ঘটনাটি ছিলপরিকল্পিত হত্যাকান্ড। কিন্তুময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ঢামেকের ডা. সোহেল মাহমুদ এটি আত্মহত্যা হতে পারে বলে মন্তব্য করায় মহামান্য হাইকোর্ট ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনার নির্দেশ দেন।

গত বছরের ৭ জুন রাতে রাজধানীর কল্যাণপুরে ভাড়া বাসায় একটি বায়িং হাউসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন টিটু তার স্ত্রী শামিমা লাইলা আরজুমান্না খান শাম্মীকে অমানবিক নির্যাতন করে হত্যা করে। পরে চিকিৎসার নামে হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর ছোট ভাই ফরহাদ হোসেন খান বাবু বাদী হয়ে ৮ জুন মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ ঘাতক স্বামী আলমগীর ও তার তৃতীয় স্ত্রী ইসরাত জাহান মুক্তাকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী শাম্মী আক্তারের ৫ বছর বয়সী শিশু পুত্র আরিয়ান গত বছরের ৮ আগস্ট ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় ঢাকার সিএমএম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দেয়ায় শিশু পুত্র আরিয়ানও গুম-খুনের শিকার হতে পারে এমন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে স্বজনদের মাঝে। এ পরিস্থিতিতে শিশু আরিয়ান ও তার ছোট ভাই অ্যারনের জীবন বাঁচাতে তাদের ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জের সীমান্তবর্তী ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর গ্রামের নানার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বৃহস্পতিবার মোবাইলফোনে যোগাযোগ করে জানা গেছে, শাম্মী হত্যা মামালা নিয়ে মহামান্য হাইকোর্টের ৬ ডিসেম্বরের নির্দেশ পেয়ে পিবিআই যথারীতি তদন্ত কাজ শুরু করেছে।

পিবিআইয়ের পরিদর্শক মো. নাছির উদ্দিন জানান, মামলার বাদি মো. ফরহাদ হোসেন খাঁন বাবুকে নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি কল্যাণপুরের ঘটনাস্থল পরির্দশ করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত তার কাছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত রিপোর্টের পর্যালোচনা প্রতিবেদন পৌঁছেনি বলে জানান। অপর দিকে মহামান্য হাইকোর্টের এ্যনেক্স ১৭ নম্বর কোর্টের বেঞ্চ অফিসার সরোয়ার আলম বলেন, পিবিআই এ নির্দেশনার আদেশ (ক্রিমিনাল রিভিশন নং-২৯২৬/২০১৭) সম্বলিত কপি পেয়ে থাকলে তো ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষেরও পাওয়ার কথা।