নিউজ ডেস্ক:
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে তোলার দৃঢ় আশা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকার, আল-বদর, যুদ্ধাপরাধী, খুনি, ইতিহাস বিকৃতকারীরা যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। ”
একাত্তরের ৭ মার্চ যে উদ্যানে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন, সেই ভাষণ ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় সেই জায়গাতে দাঁড়িয়ে আজ শনিবার সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
৪৬ বছর আগে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) স্বাধীনতাকামী সাত কোটি মানুষকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম- এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’।
তার সেই ভাষণের ১৮ দিন পর পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি নিধনে নামলে বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। নয় মাসের সেই সশস্ত্র সংগ্রামের পর আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। জাতির পিতার সেই ঐতিহাসিক ভাষণ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ায় সারা দেশে আজ শনিবার সরকারি উদ্যোগে উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে দুপুর ১২টায় জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে সরকারি উদ্যোগে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির এই উদযাপন শুরু হয়। এরপর ৩২ নম্বরে পুষ্পস্তবক অর্পণ পর্ব শেষ করে সেখান থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা নিয়ে সোহরাওয়ার্দীতে যান নেতানেত্রী ও সরকারি কর্মকর্তারা।
তাদের হাতে থাকা ব্যানার-ফেস্টুনে ‘সাত কোটি মানুষকে দাবায় রাখতে পারবা না’; ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’-বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের বিভিন্ন অংশ লেখা ছিল।
সোহরাওয়ার্দীতে সভা শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই শাহবাগ মোড়, রমনা পার্ক, হাই কোর্ট মোড়, দোয়েল চত্বর, টিএসসি এলাকা জনস্রোতে পরিণত হয়। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের শোভাযাত্রা শেষ হওয়ার পর বিকাল ৩টায় শুরু হয় সমাবেশ, যাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন।
প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিত হওয়ার জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে সমাবেশের কাজ শুরু হয়।
সমাবেশে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের স্বাগত বক্তব্যের পর ৭ মার্চের ভাষণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন মুখ্য সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। এরপর ৭ মার্চের ভাষণ বাজানো হয়। পরে বেলা পৌনে ৪টার দিকে শুরু হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ।
২২ মিনিটের বক্তব্যের শুরুতেই ৭ মার্চের ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি উপলক্ষে সরকারের উদ্যোগে পালিত এই দিনটিকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা সেদিন এসেছিলাম, বক্তৃতা শুনেছিলাম, আন্দোলন তরঙ্গের মতো ছড়িয়ে পড়েছিল; তাও দেখেছিলাম। ”
বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে কারাবরণের কথা বলতে গিয়ে তার বড় মেয়ে বলেন, “পিতা হিসেবে কতটুকু পেয়েছি ? স্কুল থেকে জেল গেটে দিয়ে দেখা করেছি। কলেজ থেকে জেল গেটে গিয়ে দেখা করেছি। ইউনিভার্সিটি থেকেও জেল গেটে গিয়ে দেখা করেছি। ”
সাত মার্চের ভাষণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “এই ভাষণ একসময় বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ছিল। এই ভাষণ বাজাতে গিয়ে আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে।