বৃহস্পতিবার | ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | শীতকাল
শিরোনাম :
Logo মনোনয়ন উত্তোলন করেছেন গনফোরামের প্রার্থী অ্যাড. সেলিম আকবর Logo সুন্দরবনের পরিবেশ ও জীবিকা উন্নয়নে কয়রায় প্রকল্প সভা অনুষ্ঠিত Logo মিথাইল ও বিষাক্ত স্পিরিট অপব্যবহার রোধে চাঁদপুরে সচেতনতামূলক সভা Logo সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে মুন্সিগঞ্জের বার্তার সৌজন্য সাক্ষাৎ Logo দেবহাটায় সাসের সমৃদ্ধি কর্মসূচির উন্নয়ন মেলা অনুষ্ঠিত Logo নানা আয়োজনে দৈনিক চাঁদপুর খবর পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত Logo চাঁদপুর-৩ আসনে মনোনয়নপত্র তুললেন কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন Logo দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বসবাস করা বসতবাড়ি ভোগদখল জমিজমা নিমিষেই বেদখল Logo আন্তর্জাতিক ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক ‘এডুরম’ উদ্বোধন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে Logo পলাশবাড়ীতে বিএনপির আনন্দ মিছিল

নাটোরে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৯:৩২:৩৫ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২২ অক্টোবর ২০১৭
  • ৭৪১ বার পড়া হয়েছে

মোঃ সালমান হোসাইন, নাটোর জেলা সংবাদদাতাঃ  দু’দিনের অবিরাম বর্ষণে নাটোর জেলার সাতটি উপজেলায় রোপা আমনসহ শাক সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার অনেক গাছপালা উপড়ে পড়েছে। অনেক স্থানে রোপা আমন পানির নিচে তলিয়ে গেছে এবং উঠতি পাকা ধান গাছ জমিতে ন্যুইয়ে পড়েছে। এছাড়া অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার সাতটি উপজেলা এবার বন্যা কবলিত হওয়ার পরও ৫৬ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান এবং ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে। দু’দিনের বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির ধান ন্যুইয়ে পড়েছে। এছাড়া করলা, বেগুন, বরবটি, মুলা, বাধা কপি, লাল শাক, পালং শাকসহ প্রায় ৫শ’ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম জানান, দুই/একদিনের মধ্যে বৃষ্টি থেমে গেলে কৃষকের কোনো ক্ষতি হবে না। আর বর্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হলে কিছুটা ক্ষতি হবে। তবে ধান কাটার খরচ কিছুটা বাড়বে।
এদিকে, দু’দিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে বেশি বিপাকে রয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে আগাম শীতকালীন সবজিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ।
এছাড়া অনেকটাই বিপর্যস্ত অবস্থায় সময় কাটাচ্ছেন স্কুল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, দিনমজুর, কৃষকসহ নানা পেশার মানুষ। বাড়ির নারী ও শিশুরাও এ বৈরী আবহাওয়ায় ভালো নেই। বিশেষ করে শিশুরা ঠাণ্ডাজনিত রোগে ক্রমশই আক্রান্ত হচ্ছে।
সরেজমিনে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ ফসলি জমি ও স্কুলগুলোর মাঠেও পানি জমে আছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীর উপস্থিতিও কম। শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। হাট-বাজার বা রাস্তা-ঘাটে মানুষের চলাচলও ছিল অতি সামান্য।
শহর ও বিভিন্ন বাজারগুলোতে দোকানপাট স্বাভাবিক দিনের চেয়ে একটু দেরিতে খুলেছে, গণপরিবহনের সংখ্যাও অনেকটা কম দেখা গেছে।
অপরদিকে নদী এবং চলনবিল ও হালতিবিলে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা কিছুটা বেড়েছে। ঝড়ো বাতাসে বেশ কিছু এলাকার গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে। সড়কের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় শনিবার সকালে নাটোর-বগুড়া সড়কের সেরকোল ও নলডাঙ্গা এলাকায় প্রায় ঘণ্টা ধরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) রাত ৮টা থেকে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপ সহকারী কৃষি অফিসার এমকে হেলাল হেলাল উদ্দিন জানান, ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৪৭ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দিনের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ছিল ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার নিতাই চন্দ্র সরকার জানান, বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়া অব্যাহত থাকলে এবং গাছপালা কেটে সরানো না গেলে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মনোনয়ন উত্তোলন করেছেন গনফোরামের প্রার্থী অ্যাড. সেলিম আকবর

নাটোরে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি

আপডেট সময় : ০৯:৩২:৩৫ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২২ অক্টোবর ২০১৭

মোঃ সালমান হোসাইন, নাটোর জেলা সংবাদদাতাঃ  দু’দিনের অবিরাম বর্ষণে নাটোর জেলার সাতটি উপজেলায় রোপা আমনসহ শাক সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার অনেক গাছপালা উপড়ে পড়েছে। অনেক স্থানে রোপা আমন পানির নিচে তলিয়ে গেছে এবং উঠতি পাকা ধান গাছ জমিতে ন্যুইয়ে পড়েছে। এছাড়া অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার সাতটি উপজেলা এবার বন্যা কবলিত হওয়ার পরও ৫৬ হাজার ৭৫৮ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান এবং ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ করা হয়েছে। দু’দিনের বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ায় প্রায় ১৫ হাজার হেক্টর জমির ধান ন্যুইয়ে পড়েছে। এছাড়া করলা, বেগুন, বরবটি, মুলা, বাধা কপি, লাল শাক, পালং শাকসহ প্রায় ৫শ’ হেক্টর জমির সবজি ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম জানান, দুই/একদিনের মধ্যে বৃষ্টি থেমে গেলে কৃষকের কোনো ক্ষতি হবে না। আর বর্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হলে কিছুটা ক্ষতি হবে। তবে ধান কাটার খরচ কিছুটা বাড়বে।
এদিকে, দু’দিনের ভারী বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে বেশি বিপাকে রয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে আগাম শীতকালীন সবজিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ।
এছাড়া অনেকটাই বিপর্যস্ত অবস্থায় সময় কাটাচ্ছেন স্কুল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, দিনমজুর, কৃষকসহ নানা পেশার মানুষ। বাড়ির নারী ও শিশুরাও এ বৈরী আবহাওয়ায় ভালো নেই। বিশেষ করে শিশুরা ঠাণ্ডাজনিত রোগে ক্রমশই আক্রান্ত হচ্ছে।
সরেজমিনে সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ ফসলি জমি ও স্কুলগুলোর মাঠেও পানি জমে আছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীর উপস্থিতিও কম। শহরের বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। হাট-বাজার বা রাস্তা-ঘাটে মানুষের চলাচলও ছিল অতি সামান্য।
শহর ও বিভিন্ন বাজারগুলোতে দোকানপাট স্বাভাবিক দিনের চেয়ে একটু দেরিতে খুলেছে, গণপরিবহনের সংখ্যাও অনেকটা কম দেখা গেছে।
অপরদিকে নদী এবং চলনবিল ও হালতিবিলে স্বাভাবিকের চেয়ে পানির উচ্চতা কিছুটা বেড়েছে। ঝড়ো বাতাসে বেশ কিছু এলাকার গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে। সড়কের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় শনিবার সকালে নাটোর-বগুড়া সড়কের সেরকোল ও নলডাঙ্গা এলাকায় প্রায় ঘণ্টা ধরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) রাত ৮টা থেকে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপ সহকারী কৃষি অফিসার এমকে হেলাল হেলাল উদ্দিন জানান, ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৪৭ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দিনের তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ছিল ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ছিল ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার নিতাই চন্দ্র সরকার জানান, বৃষ্টিপাত ও ঝড়ো হাওয়া অব্যাহত থাকলে এবং গাছপালা কেটে সরানো না গেলে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।