নিউজ ডেস্ক:
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপির বলার মতো কিছুই নেই। উন্নয়নের কোনো দৃষ্টান্ত তাদের নেই।
তারা জানে- জনগণ তাদের ভোট দিবে না। সে কারণে তারা বিভিন্ন ইস্যু খুঁজছে। জনগণের সাথে যে ইস্যুর সম্পর্ক নেই- তারা সেটা নিয়ে মাথা ঘামায়, যদি এর থেকে কোন ফায়দা নেওয়া যায়। এখন তাদের সবচেয়ে বড় ইস্যু হচ্ছে আদালতের ইস্যু। আদালতের ইস্যু নিয়ে তারা রঙিন স্বপ্ন দেখছে। তাদের এ রঙিন স্বপ্ন চুপসে যাবে। আজ রাজধানীর বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আগস্টে বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় শহীদদের স্মরণে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ, ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসান প্রমুখ।
মন্ত্রী বলেন, বিএনপি আন্দোলনের কথা বলে। কোথায় তাদের আন্দোলন? তাদের আন্দোলন এখন টেমস নদীর পারে ভ্যানিটি ব্যাগে। বিএনপি প্রমাণ করেছে তারা বেপরোয়া দল। কানাডার আদালত কতৃক তারা সন্ত্রাসী দল হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। তারা জানে, তাদের অপকর্মের জন্য এদেশের জনগণ তাদের ভোট দিবে না। তাই তারা ক্ষমতায় আসার জন্য ষড়যন্ত্রের চোরাগলি খুঁজছে। তিনি বলেন, ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে ব্যারিস্টার মওদুদ যেভাবে কথা বলেন- তাতে বুঝা যায় তিনিই প্রধান বিচারপতি। ব্যরিস্টার মওদুদ একবার বিএনপিতে যান আবার জাতীয় পার্টিতে যান। এমনকি তিনি খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে রেখে এরশাদের মন্ত্রী হন, এমন নজীরও আমাদের কাছে আছে। আর মীর্জা ফখরুল সেই মওদুদের বুদ্ধিতে এখন সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্রের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।
মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং ব্যারিস্টার মওদুদকে উদ্দেশ্যে করে তিনি বলেন, এদেশ বাংলাদেশই থাকবে। কখনই আপনাদের স্বপ্নের পাকিস্তানে পরিণত হবে না। আপনাদের স্বপ্নের খোয়াব নিয়ে যতই লাফালাফি করুন না কেন বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবেই থাকবে। তিনি আরো বলেন, আগস্ট মাস বিএনপির জন্য গাত্রদায়ের মাস। এই মাসে তারা নানা অপকর্ম করে। তারা ভুয়া জন্মদিনের কেক কাটে। তারা আমাদের অনুভূতিতে আঘাত করে, আমাদের আবেগ নিয়ে উপহাস করে। তাদের সাথে আমরা সংলাপ করব? জিয়াউর রহমান ৭৫ এর ১৫ আগস্টের হন্তারকদের যারা পুরস্কৃত করেছে, বিদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়েছে। যারা অপরাধ করে আর যারা এর প্রশ্রয় দেয় উভয়েই কি সমান অপরাধী নয়? এই প্রশ্রয়কারীরাই শেখ হাসিনাকে গ্রেনেড হামলার জন্য টার্গেট করেছিল। তখনকার বিএনপি জামায়াত সরকার এই হামলাকারীদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছিল। হামলার তদন্ত করতে দেয়নি। এর সকল প্রমাণ তারা মুছে দিয়েছিল। তাতে কী প্রমাণিত হয়?
ছাত্রলীগকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের বিশেষণের বাড়াবাড়ি এখনও রয়ে গেছে। বিশেষণের বাড়াবাড়ি পরিহার করতে হবে। তোমাদের আলোচনা হবে টু দ্যা পয়েন্টে। শুধু মুখে নয় কাজে তোমাদের প্রমাণ করতে হবে। তোমাদেরকে মানসিক, সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশের মানুষকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের বিরূদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জঙ্গিবাদের সাথে পরিচিত ছিল না। খালেদা নিজামীরা এদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছে। তাদের ষড়যন্ত্র ৭৫ এ শুরু হয়েছিল এবং এখনও অব্যাহত রয়েছে। ছাত্রলীগকে এখন বুঝতে হবে, তাদের ষড়যন্ত্র শুধু শেখ হাসিনার বিরূদ্ধে নয়। তাদের এই ষড়যন্ত্র বাংলাদেশের বিরূদ্ধে, ৩০ লক্ষ শহীদ বিরূদ্ধে, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির বিরূদ্ধে। পূর্বের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ছাত্রলীগ নেত্রীর ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করেছিল। এখনও ছাত্রলীগকে তাদের বিরূদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। তাদের সকল ষড়যন্ত্রের জাল ভেঙে দিয়ে দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা নেত্রীকে হত্যার মাধ্যমে দেশকে নেতৃত্বশূণ্য করার জন্য গ্রেনেড হামলা করেছিল। বিএনপি জামায়াতের দোসরেরা পরিকল্পনা করে এ হামলা করেছিল। সেদিন ছাত্রলীগ নেত্রীর পাশে থেকে বিক্ষোভ করেছে। দুঃখের বিষয় এখনো এই হামলার বিচার আমরা পায় নি। যে বিচারকেরা ১৩ বছরেও গ্রেনেড হামলার বিচার করতে পারেন নি, তাদের সবক নিয়ে আমরা চলবো না। আমাদের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে ইস্পাত কঠিন হতে হবে।