রাকিবুল ইসলাম রুবেল, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জে কামারখন্দে ব্যক্তি উদ্যোগে নয় গ্রামের মানুষের
জন্য সাড়ে ১১শ’ মিটার বাঁশের সাঁকো গড়ে দিলেন সামছুল আলম শফি। উপজেলার দশসিকা গ্রামে জনসাধারনের
সুবিধার্থে প্রায় সাত লক্ষ টাকা ব্যয়ে ব্যক্তি উদ্যোগে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন সামছুল আলম
শফি। সেই বাঁশের সাঁকো দিয়ে জনসাধারণ, স্কুল, কলেজ,মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী, জরুরী রোগী সহ কয়েকটি গ্রামের
প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ পারাপার হচ্ছে। বাঁশের সাঁকোটি নির্মাণ করতে দুই ২ মাস সময় লাগে প্রতিদিন গড়ে ১৫ জন
করে শ্রমিক কাজ করেছে। কামারখন্দ উপজেলার চর দশসিকা, চর শাহবাজপুর, উল্লাপাড়া উপজেলার তেঁতুলিয়া, চিলারপাড়া,ধুমছি, বড়হর, শুটকিপাড়া, সদাই, দমদমা সহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেছে এই সাঁকো তৈরি হওয়াতে । শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চড় দশসিকা গ্রামে ফুলজোড় নদীর উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার হচ্ছে কয়েকটি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। সাঁকো তৈরির আগে পারাপারের এক মাত্র নির্ভরশীল ছিল নৌকা। যে নৌকা অনেক সময় পাওয়া যায় না আবার নৌকা থাকলেও পারাপার হতেও অনেক সময় লাগে সেই নৌকা আবার সন্ধা নামনেই থাকে না বিশেষ করে স্কুল পড়–য়া ছাত্রছাত্রী ও জরুরী রোগীদের যেন দুর্ভোগের কমতি ছিল না। এই বাঁশের সাঁকো হওয়াতে দুর্ভোগ কমেছে এসব অঞ্চলের প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষের। সাঁকোটি পার হয়ে শুক্রবার জুম্মার নামাজ পড়তে যাবার সময় ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ জানান, আমি বুড়ো মানুষ মসজিদ নদীর ওপার হওয়ায় বাড়ীতেই নামাজ পড়তাম। কিন্তু এখন এই সাঁকোটি হওয়াতে ওপার গিয়েই মসজিদে নামাজ পড়ি। চর দশসিকা গ্রামের স্কুল পড়–য়া আঁখি/নাঈম জানান, আমরা আগে স্কুলে যাওয়ার সময় নদীর পারে দাঁড়িয়ে থাকতাম। কোন কোন দিন নৌকার জন্য দেরি হওয়ায় স্কুলে অনেক সময় ক্লাস মিস করেছি। কিন্তু এখন সাঁকো হওয়াতে আর এরকম হয় না। আমরা সঠিক সময়ে স্কুলে যেতে পারি। চর দশসিকা গ্রামের আফজাল হোসেন জানান, কয়েক গ্রামের মানুষের যাতায়াতের কষ্টের সমাধান করার জন্য শফি বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেছে। এতে আমরা সহ কয়েকটি গ্রামের মানুষ মহা খুশি। সাঁকো তৈরির উদ্যোক্তা ও নির্মাতা চর দশসিকা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মাষ্টারের ছেলে সামছুল আলম শফি জানান, চড় দশসিকা গ্রাম সহ কয়েকটি গ্রামের স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার ছাত্রসহ লক্ষ লক্ষ মানুষ নৌকায় এই নদী পারাপার হয়। সন্ধ্যা হলেই নৌকা পাওয়া যায় না এমনকি যদি কোন অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন হয় সেটাও সম্ভব হয় না। দেখা যায় সঠিক সময়ে চিকিৎসার অভাবে রোগীর মৃত্যু হয়। তাই সাধারন মানুষের কথা চিন্তা করে নিজ উদ্যোগে প্রায় সাত লক্ষ টাকা ব্যায়ে সাঁকোটি নির্মান করেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দিন জানান, এভাবে যদি সাধারণ মানুষ দেশের উন্নয়নমূলক কাজে এগিয়ে আসে তাহলে দেশের উন্নয়ন তরান্বিত হবে। আমি এই সাঁকো তৈরীর উদ্যোক্তা ও নির্মাতা সামছুল আলম শফিকে ব্যক্তিগত ভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।