শিরোনাম :
Logo খুবিতে আন্তঃডিসিপ্লিন ফুটবল প্রতিযোগিতায় টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন বাংলা Logo কয়রায় চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে পরিবারের সর্বস্ব লুট  Logo কচুয়ার পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় মামুনুর রশীদ মোল্লাকে ফুলেল শুভেচ্ছা Logo ইকসু দাবিতে ইবি শিক্ষার্থীদের ‘মার্চ ফর ইকসু’ Logo মৎস্যজীবীদের মুখে হাসি ফোটাতে কচুয়ায় উন্মুক্ত জলাশয়ে পোনা মাছ অবমুক্তকরণ Logo কচুয়ার নন্দনপুরে ৩৩০ উপকারভোগীর মাঝে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণ Logo পলাশবাড়ী উপজেলা পরিষদের পানিতে বন্যার দুর্ভোগে অর্ধশত পরিবার। Logo সাতক্ষীরা পৌরসভা ৩ নাম্বার ওয়ার্ডে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন উদ্বোধন -মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংসের আহ্বান Logo কচুয়ার সন্তান ইয়াসিন হোসেন ফেনী জেলার শ্রেষ্ঠ সার্ভেয়ার নির্বাচিত Logo হাতপাখা বিজয়ী হলে জনগনের বাজেটের  টাকা জনগণের উন্নয়নে খরচ হবে – মানসুর আহমদ সাকী

কয়রায় চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে পরিবারের সর্বস্ব লুট 

কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধ :ফরহাদ হোসাইন
খুলনার কয়রা উপজেলার মদিনাবাদ গ্রামে সংঘটিত এক ভয়াবহ চুরির ঘটনায় পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করেছে, চোরেরা চেতনা নাশক ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের অচেতন করে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কারসহ সর্বস্ব লুট করে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
পরিবারপ্রধান মোঃ নাজমুল হুদা (৪২), পিতা মৃত জবেদ আলী গাজী, থানায় দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ২৩ আগস্ট ২০২৫ তারিখ রাতে পরিবারের সবাই একসঙ্গে রাতের খাবার খাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়েন। পরবর্তীতে জানা যায়, কে বা কারা তাদের খাবারের সাথে চেতনা নাশক ঔষধ মিশিয়ে দিয়েছিল। ফলে তিনি ও পরিবারের সদস্যরা গভীর অচেতন অবস্থায় পড়ে যান।
এই সুযোগে অজ্ঞাতনামা চোরচক্র রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে কৌশলে ঘরে প্রবেশ করে আলমারী ও শোকেসের তালা ভেঙে মূল্যবান সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন-
নগদ ১০ লাখ টাকা, ৩টি স্বর্ণের চেইন (ওজন ২ ভরি, মূল্য ২,৫০,০০০ টাকা), ২টি স্বর্ণের রুলি (ওজন দেড় ভরি, মূল্য ২,০০,০০০ টাকা), ৩ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল (ওজন দেড় ভরি, মূল্য ২,০০,০০০ টাকা), একটি স্বর্ণের ব্রেসলেট (ওজন ৮ আনা, মূল্য ৭৫,০০০ টাকা), ৬টি স্বর্ণের নাকফুল (ওজন ৮ আনা, মূল্য ৭৫,০০০ টাকা), ৫টি স্বর্ণের আংটি (ওজন আড়াই ভরি, মূল্য ৩,০০,০০০ টাকা), ১৫ ভরি রুপার বিভিন্ন অলঙ্কার (মূল্য ৬০,০০০ টাকা)।
সব মিলিয়ে নগদ অর্থ ও গহনাসহ মোট ২১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার সম্পদ লুট হয়।
পরদিন ২৪ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে পরিবারের সদস্যরা ধীরে ধীরে জ্ঞান ফিরে পান। তখন তারা ঘরের ভেতরে ভাঙা আলমারী, খোলা শোকেস এবং মেঝেতে ছড়ানো জিনিসপত্র দেখতে পান। কিন্তু নগদ টাকা ও মূল্যবান স্বর্ণ-রুপার গহনাগুলো কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
হঠাৎ এই ঘটনার পর পুরো পরিবার শোকাহত ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে। নাজমুল হুদা বলেন, “আমরা অসহায় অবস্থায় আছি। দীর্ঘদিনের সঞ্চিত অর্থ আর স্বর্ণালঙ্কার মুহূর্তেই শেষ হয়ে গেল।”
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত ও লুট হওয়া সম্পদ উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে এলাকায় চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তাই পুলিশের টহল ও নজরদারি বাড়ানো জরুরি।
অন্যদিকে থানা পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিক প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
এই ভয়াবহ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রশাসনের কাছে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

খুবিতে আন্তঃডিসিপ্লিন ফুটবল প্রতিযোগিতায় টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন বাংলা

কয়রায় চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে পরিবারের সর্বস্ব লুট 

আপডেট সময় : ১০:৪১:০১ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫
কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধ :ফরহাদ হোসাইন
খুলনার কয়রা উপজেলার মদিনাবাদ গ্রামে সংঘটিত এক ভয়াবহ চুরির ঘটনায় পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার অভিযোগ করেছে, চোরেরা চেতনা নাশক ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের অচেতন করে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কারসহ সর্বস্ব লুট করে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
পরিবারপ্রধান মোঃ নাজমুল হুদা (৪২), পিতা মৃত জবেদ আলী গাজী, থানায় দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ২৩ আগস্ট ২০২৫ তারিখ রাতে পরিবারের সবাই একসঙ্গে রাতের খাবার খাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়েন। পরবর্তীতে জানা যায়, কে বা কারা তাদের খাবারের সাথে চেতনা নাশক ঔষধ মিশিয়ে দিয়েছিল। ফলে তিনি ও পরিবারের সদস্যরা গভীর অচেতন অবস্থায় পড়ে যান।
এই সুযোগে অজ্ঞাতনামা চোরচক্র রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে কৌশলে ঘরে প্রবেশ করে আলমারী ও শোকেসের তালা ভেঙে মূল্যবান সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন-
নগদ ১০ লাখ টাকা, ৩টি স্বর্ণের চেইন (ওজন ২ ভরি, মূল্য ২,৫০,০০০ টাকা), ২টি স্বর্ণের রুলি (ওজন দেড় ভরি, মূল্য ২,০০,০০০ টাকা), ৩ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল (ওজন দেড় ভরি, মূল্য ২,০০,০০০ টাকা), একটি স্বর্ণের ব্রেসলেট (ওজন ৮ আনা, মূল্য ৭৫,০০০ টাকা), ৬টি স্বর্ণের নাকফুল (ওজন ৮ আনা, মূল্য ৭৫,০০০ টাকা), ৫টি স্বর্ণের আংটি (ওজন আড়াই ভরি, মূল্য ৩,০০,০০০ টাকা), ১৫ ভরি রুপার বিভিন্ন অলঙ্কার (মূল্য ৬০,০০০ টাকা)।
সব মিলিয়ে নগদ অর্থ ও গহনাসহ মোট ২১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার সম্পদ লুট হয়।
পরদিন ২৪ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে পরিবারের সদস্যরা ধীরে ধীরে জ্ঞান ফিরে পান। তখন তারা ঘরের ভেতরে ভাঙা আলমারী, খোলা শোকেস এবং মেঝেতে ছড়ানো জিনিসপত্র দেখতে পান। কিন্তু নগদ টাকা ও মূল্যবান স্বর্ণ-রুপার গহনাগুলো কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
হঠাৎ এই ঘটনার পর পুরো পরিবার শোকাহত ও দিশেহারা হয়ে পড়েছে। নাজমুল হুদা বলেন, “আমরা অসহায় অবস্থায় আছি। দীর্ঘদিনের সঞ্চিত অর্থ আর স্বর্ণালঙ্কার মুহূর্তেই শেষ হয়ে গেল।”
এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবার দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত ও লুট হওয়া সম্পদ উদ্ধারের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে এলাকায় চুরি-ডাকাতি বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। তাই পুলিশের টহল ও নজরদারি বাড়ানো জরুরি।
অন্যদিকে থানা পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিক প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
এই ভয়াবহ ঘটনায় এলাকাজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং প্রশাসনের কাছে অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্থানীয়রা।