শিরোনাম :
Logo নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান Logo ইবি অভয়ারণ্যের শরৎ সম্ভাষণ: “গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছোঁয়া ও বায়োস্কোপের রঙিন আবেশ” Logo চাঁদপুর সদরের ১৪ ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি ও ভোগান্তি কমেছে Logo চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বদলী জনিত বিদায় সংবর্ধনা Logo চাঁদপুরে কবরস্থ করতে দেওয়া শিশু মৃত নয়, জীবিত! Logo “শিক্ষা ব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তনে চাই সম্মিলিত প্রচেষ্টা” – ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমান Logo সিরাজগঞ্জে বসতবাড়ির জমি দখলের হুমকির অভিযোগে জিডি Logo  ইবির পাঁচ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার Logo ইবিতে দুর্গাপূজা উপলক্ষে পরীক্ষা স্থগিতের নোটিশ Logo সুন্দরবনে বন বিভাগের পৃথক অভিযানে ৫ জেলে আটক  ৩টা নৌকা, জাল, বিষের বোতল সহ মাছ জব্দ 

সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমছে !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১২:৩৭:৫৮ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৪ জুন ২০১৭
  • ৭৫৪ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

সঞ্চয়পত্রে সুদের হার আগামী মাস থেকে কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। সে অনুযায়ী সঞ্চয়পত্রে সুদের হার দেড় থেকে দুই শতাংশ কমানো হতে পারে।

সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে অর্থ মন্ত্রাণলয় সূত্রে জানা গেছে। এর আগে ২০১৫ সালের মে মাসে একবার সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখনো সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার দেড় থেকে দুই শতাংশ কমানো হয়।

সূত্র জানায়, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়কালে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৫৩ হাজার ৬৮৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় ৪০ দশমিক ৫৭ ভাগ বেশি। অন্যদিকে জুলাই-মার্চ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার নিট ঋণ গ্রহণ করেছে ৩৭ হাজার ৬৪৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে একই সময়ে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ ছিল ২৩ হাজার ১৮৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এই বাস্তবতায় চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি করে ৪৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সদ্যঘোষিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে অর্থবিভাগ থেকে বলা হয়েছে, ‘সঞ্চয়পত্র বিক্রির এই গতিধারা অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে এ খাত থেকে ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। এর ফলে সুদবাবদ সরকারকে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হবে। যা স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে সরকারের বাজেটের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে।

অন্যদিকে সরকারের সম্পদ উদ্বৃত্তের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার রিভিউ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।’

এ বিষয়ে এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন,  আমাদের এখানে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার আসলেই বেশি। সাধারণত ব্যাংক আমানতের সুদের হারের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১-২ শতাংশ বেশি হয়ে থাকে। বর্তমানে এই ব্যবধান ৪ শতাংশের বেশি। এটা চলতে থাকলে এ খাতে বিনিয়োগ আরো বেড়ে যাবে। সরকারের ভবিষ্যৎ ঋণের বোঝা বেড়ে যাবে। সে কারণেই আমরা এটাকে রিভিউ করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি।

বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে আমানতের সুদের হার ৪ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে। অন্যদিকে বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার ১১ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর বিষয়ে ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে এই হার দেড় থেকে দুই শতাংশ কমানো হতে পারে। কিন্তু বিষয়টি স্পর্শকাতর বলে বিবেচিত হয়ে আসছে। কারণ নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সঞ্চয়পত্রে অবসরভোগী ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ বেশি বিনিয়োগ করে থাকে। তাই এর পেছনে রাজনীতির বিষয়টি আমাদের ভাবতে হচ্ছে।

সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে ১০ মে বাজারে চালু সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমিয়ে দেওয়া হয়। পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ থেকে প্রায় দুই ভাগ কমিয়ে ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ করা হয়। তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয় ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। অন্যান্য সঞ্চয়পত্রের সুদের হারও দেড় শতাংশ কমানো হয়েছে।

আগে পাঁচ বছর মেয়াদি এক লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনলে মাসে এক হাজার ৭০ টাকা মুনাফা পাওয়া যেত। ২০১৫ সালে সুদহার কমানোর পর এখন পাওয়া যাচ্ছে ৯১২ টাকা। সুদের হার আরো কমানো হলে মুনাফাও অনেক কমে যাবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান

সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমছে !

আপডেট সময় : ১২:৩৭:৫৮ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৪ জুন ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

সঞ্চয়পত্রে সুদের হার আগামী মাস থেকে কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। সে অনুযায়ী সঞ্চয়পত্রে সুদের হার দেড় থেকে দুই শতাংশ কমানো হতে পারে।

সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে বলে অর্থ মন্ত্রাণলয় সূত্রে জানা গেছে। এর আগে ২০১৫ সালের মে মাসে একবার সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তখনো সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের সুদের হার দেড় থেকে দুই শতাংশ কমানো হয়।

সূত্র জানায়, চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়কালে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৫৩ হাজার ৬৮৭ কোটি ৯৭ লাখ টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় ৪০ দশমিক ৫৭ ভাগ বেশি। অন্যদিকে জুলাই-মার্চ, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার নিট ঋণ গ্রহণ করেছে ৩৭ হাজার ৬৪৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। গত অর্থবছরে একই সময়ে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের নিট ঋণ ছিল ২৩ হাজার ১৮৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এই বাস্তবতায় চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি করে ৪৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সদ্যঘোষিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার ১৫০ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে অর্থবিভাগ থেকে বলা হয়েছে, ‘সঞ্চয়পত্র বিক্রির এই গতিধারা অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে এ খাত থেকে ঋণের পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। এর ফলে সুদবাবদ সরকারকে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হবে। যা স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে সরকারের বাজেটের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে।

অন্যদিকে সরকারের সম্পদ উদ্বৃত্তের পরিমাণ ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার রিভিউ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।’

এ বিষয়ে এক অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন,  আমাদের এখানে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার আসলেই বেশি। সাধারণত ব্যাংক আমানতের সুদের হারের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১-২ শতাংশ বেশি হয়ে থাকে। বর্তমানে এই ব্যবধান ৪ শতাংশের বেশি। এটা চলতে থাকলে এ খাতে বিনিয়োগ আরো বেড়ে যাবে। সরকারের ভবিষ্যৎ ঋণের বোঝা বেড়ে যাবে। সে কারণেই আমরা এটাকে রিভিউ করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছি।

বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে আমানতের সুদের হার ৪ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে। অন্যদিকে বিভিন্ন সঞ্চয় প্রকল্পের সুদের হার ১১ থেকে ১২ শতাংশের মধ্যে।

এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর বিষয়ে ইতোমধ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। প্রাথমিকভাবে এই হার দেড় থেকে দুই শতাংশ কমানো হতে পারে। কিন্তু বিষয়টি স্পর্শকাতর বলে বিবেচিত হয়ে আসছে। কারণ নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সঞ্চয়পত্রে অবসরভোগী ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ বেশি বিনিয়োগ করে থাকে। তাই এর পেছনে রাজনীতির বিষয়টি আমাদের ভাবতে হচ্ছে।

সূত্র জানায়, ২০১৫ সালে ১০ মে বাজারে চালু সব ধরনের সঞ্চয়পত্রে সুদের হার কমিয়ে দেওয়া হয়। পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১৩ দশমিক ১৯ শতাংশ থেকে প্রায় দুই ভাগ কমিয়ে ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ করা হয়। তিন বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ থেকে কমিয়ে করা হয় ৯ দশমিক ৮০ শতাংশ। অন্যান্য সঞ্চয়পত্রের সুদের হারও দেড় শতাংশ কমানো হয়েছে।

আগে পাঁচ বছর মেয়াদি এক লাখ টাকার পরিবার সঞ্চয়পত্র কিনলে মাসে এক হাজার ৭০ টাকা মুনাফা পাওয়া যেত। ২০১৫ সালে সুদহার কমানোর পর এখন পাওয়া যাচ্ছে ৯১২ টাকা। সুদের হার আরো কমানো হলে মুনাফাও অনেক কমে যাবে।