কমছে না জ্বালানি তেলের দাম: নসরুল হামিদ

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ১১:০৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৮ মে ২০১৭
  • ৭৪৩ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য গত এক বছর ধরে ঊর্ধ্বমুখী থাকায় আপাতত জ্বালানি তেলের দাম কমছে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

তিনি বলেছেন, গত ১ এপ্রিল ও ২৫ এপ্রিল জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে। গত এক বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো হলে বিপিসি পুণরায় লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে এবং ঋণ করে জ্বালানি তেল আমদানি করতে হবে।

দশম সংসদের ১৫তম অধিবেশনের চতুর্থ দিনের বৈঠকে গতকাল রবিবার প্রশ্নোত্তর পর্বে মো. রুস্তম আলী ফরাজীর (পিরোজপুর-৩) প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস করা হলে তার সুফল সাধারণ জনগণ সরাসরি উপভোগ করতে পারে না। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাসের পর আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সঙ্গতি রেখে পরবর্তীতে মূল্য সমন্বয় করা হলে তখন সাধারণ জনগণের উপর অধিক প্রভাব পড়বে। অতঃএব সামগ্রিক বিবেচনায় আপাতত জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস করা সমচীন হবে না। বাস্ততার নিরিখে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধির সাথে সাথে অভ্যন্তরে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধি সম্ভব হয় না। ইতোপূর্বে ভর্তুকি মূল্যে জ্বালানি তেল বিক্রয় করায় ২৭ হাজার ৪১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকার সরকারি ঋণের দায় এখনো বিপিসির উপর রয়ে গেছে।

জ্বালানি চাহিদার ৫৬ লাখ টনের ৫২ লাখ টনই আমদানি

আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের (পটুয়াখালী-৩) লিখিত প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, দেশে ৫৬ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি চাহিদার মধ্যে ৫১.৭৩ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করে চাহিদা পূরণ করা হয়। চাহিদার মাত্র ৪.২৭ লাখ মেট্রিক টন অভ্যন্তরীণ উৎস হতে পাওয়া যায়। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বিভিন্ন দেশের ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জিটুজি ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রেডের পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে। তবে অকটেন, পেট্রোল এবং কেরোসিনের চাহিদার সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পূরণ করা হচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ৮৭৭ মেট্রিক টন ডিজেল, জেট-১, কেরোসিন, অকটেন, ফার্নেস অয়েল ও ক্রুড অয়েল আমদানি করা হয়েছে।

গ্যাসের ঘাটতি ৬৫০ মিলিয়ন ঘনফুট
একই প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ সংসদকে জানান, বর্তমানে দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩ হাজার ৪শ’ মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে দেশে উত্তোলিত হচ্ছে প্রায় দুই হাজার ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। অর্থাৎ দেশে দৈনিক প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে।

তেল গ্যাস ও কয়লা অনুসন্ধানে ৫৭টি কুপ ও ৩৩টি উন্নয়ন কূপ খনন করা হবে
লুৎফা তাহেরের(মহিলা আসন-৪০) এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি তরান্বিত করার লক্ষ্যে তেল, গ্যাস ও কয়লার অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে ২০২১ সাল নাগাদ ৫৭টি কুপ ও ৩৩টি উন্নয়ন কূপ খনন করা হবে। এছাড়া  ২৩ টি পুরাতন কূপের ওয়ার্কওভার করা হবে। এ সকল কার্যক্রমের ফলে দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার থেকে এক হাজার ১শ’ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়। এছাড়া গভীর ও অগভীর সমুদ্রে সার্ভে ও তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম চলছে বলে সংসদকে জানান তিনি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কমছে না জ্বালানি তেলের দাম: নসরুল হামিদ

আপডেট সময় : ১১:০৪:৩৭ পূর্বাহ্ণ, সোমবার, ৮ মে ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য গত এক বছর ধরে ঊর্ধ্বমুখী থাকায় আপাতত জ্বালানি তেলের দাম কমছে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

তিনি বলেছেন, গত ১ এপ্রিল ও ২৫ এপ্রিল জ্বালানি তেলের দাম কমানো হয়েছে। গত এক বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় জ্বালানি তেলের মূল্য কমানো হলে বিপিসি পুণরায় লোকসানি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে এবং ঋণ করে জ্বালানি তেল আমদানি করতে হবে।

দশম সংসদের ১৫তম অধিবেশনের চতুর্থ দিনের বৈঠকে গতকাল রবিবার প্রশ্নোত্তর পর্বে মো. রুস্তম আলী ফরাজীর (পিরোজপুর-৩) প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।

জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস করা হলে তার সুফল সাধারণ জনগণ সরাসরি উপভোগ করতে পারে না। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাসের পর আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সঙ্গতি রেখে পরবর্তীতে মূল্য সমন্বয় করা হলে তখন সাধারণ জনগণের উপর অধিক প্রভাব পড়বে। অতঃএব সামগ্রিক বিবেচনায় আপাতত জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস করা সমচীন হবে না। বাস্ততার নিরিখে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধির সাথে সাথে অভ্যন্তরে জ্বালানি তেলের মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধি সম্ভব হয় না। ইতোপূর্বে ভর্তুকি মূল্যে জ্বালানি তেল বিক্রয় করায় ২৭ হাজার ৪১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকার সরকারি ঋণের দায় এখনো বিপিসির উপর রয়ে গেছে।

জ্বালানি চাহিদার ৫৬ লাখ টনের ৫২ লাখ টনই আমদানি

আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের (পটুয়াখালী-৩) লিখিত প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, দেশে ৫৬ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি চাহিদার মধ্যে ৫১.৭৩ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল আমদানি করে চাহিদা পূরণ করা হয়। চাহিদার মাত্র ৪.২৭ লাখ মেট্রিক টন অভ্যন্তরীণ উৎস হতে পাওয়া যায়। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বিভিন্ন দেশের ১০টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জিটুজি ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রেডের পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে। তবে অকটেন, পেট্রোল এবং কেরোসিনের চাহিদার সিংহভাগই অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পূরণ করা হচ্ছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৭ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ৮৭৭ মেট্রিক টন ডিজেল, জেট-১, কেরোসিন, অকটেন, ফার্নেস অয়েল ও ক্রুড অয়েল আমদানি করা হয়েছে।

গ্যাসের ঘাটতি ৬৫০ মিলিয়ন ঘনফুট
একই প্রশ্নকর্তার প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ সংসদকে জানান, বর্তমানে দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩ হাজার ৪শ’ মিলিয়ন ঘনফুট। এর বিপরীতে দেশে উত্তোলিত হচ্ছে প্রায় দুই হাজার ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট। অর্থাৎ দেশে দৈনিক প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি রয়েছে।

তেল গ্যাস ও কয়লা অনুসন্ধানে ৫৭টি কুপ ও ৩৩টি উন্নয়ন কূপ খনন করা হবে
লুৎফা তাহেরের(মহিলা আসন-৪০) এক প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি তরান্বিত করার লক্ষ্যে তেল, গ্যাস ও কয়লার অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে ২০২১ সাল নাগাদ ৫৭টি কুপ ও ৩৩টি উন্নয়ন কূপ খনন করা হবে। এছাড়া  ২৩ টি পুরাতন কূপের ওয়ার্কওভার করা হবে। এ সকল কার্যক্রমের ফলে দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার থেকে এক হাজার ১শ’ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়। এছাড়া গভীর ও অগভীর সমুদ্রে সার্ভে ও তেল-গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম চলছে বলে সংসদকে জানান তিনি।