শিরোনাম :
Logo আন্তর্জাতিক সেমিনারে যাচ্ছেন ইবি ভিসি Logo সিরাজগঞ্জে জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ ও অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo কচুয়ার পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রী কলেজে নবীন বরণ ও ওরিয়েন্টেশন ক্লাস অনুষ্ঠিত Logo শহীদ রুমি স্মৃতি পাঠাগারের সাময়িকী  ” মুক্তবাক” এর মোড়ক উন্মোচন Logo খুলনার কয়রায় প্রায় ১০৩ কেজি হরিণের মাংস, মাথা এবং হরিণ শিকারের ফাঁদসহ ১ জন হরিণ শিকারিকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড Logo জসিম সভাপতি, ফখরুল সম্পাদক দীর্ঘ ছয় বছর পর চাঁদপুর জেলা সমিতি ইউকের নির্বাচন সম্পন্ন Logo নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান Logo ইবি অভয়ারণ্যের শরৎ সম্ভাষণ: “গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছোঁয়া ও বায়োস্কোপের রঙিন আবেশ” Logo চাঁদপুর সদরের ১৪ ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি ও ভোগান্তি কমেছে Logo চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বদলী জনিত বিদায় সংবর্ধনা

শৈলকুপা নার্সারিতে সিতাব উদ্দিন স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত জাতীয় পুরস্কার

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৫:৩৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৩ মে ২০১৭
  • ৭৫৭ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জের বাসিন্দা সিতাব উদ্দিন। ১৯৯১ সালে মাত্র ৬ শতাংশ জমি নিয়ে নার্সারি ব্যবসা শুরু করলেও বর্তমানে প্রায় ৫০ একর জমিতে প্রসারিত হয়েছে তার এ ব্যবসা। নার্সারি ব্যবসায় সিতাব উদ্দিনের সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই এখন এ পেশায় ঝুঁকছেন। স্বপ্ন দেখছেন এ ব্যবসার মাধ্যমে ভাগ্য বদলের। নার্সারি করে সিতাব উদ্দিন একদিকে যেমন হয়েছেন স্বাবলম্বী, অন্যদিকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন ওই এলাকার শতাধিক মানুষের। তার এ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত জাতীয় পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি স্বর্ণপদক।

সিতাব উদ্দিন জানান, ঝিনাইদহ কেসি কলেজ থেকে ডিগ্রী পাস করে তিনি এলাকায় একটি কোচিং সেন্টার খোলেন। সেখানে শিক্ষকতার মাধ্যমে শুর হয় তার পেশাজীবন। এর পর মোবারকগঞ্জ চিনি কলে চাকরি পাওয়ায় পেশাবদল ঘটে। চিনি কলে কাজ করার সময় দেখেন প্রচুর আখের চারা পলিথিনের বেডে রাখা হতো। কাজ শেষে পলিথিন গুলো ফেলে দেয়া হতো। পলিথিন ব্যাগ গুলো কীভাবে কাজে লাগানো যায়, এ চিন্তা থেকেই তিনি নার্সারির পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি পলিথিনের ব্যাগে গাছের চারা রোপণ করতে শুরু করেন।

একপর্যায়ে বাড়ির পাশে মাত্র ৬ শতাংশ জমিতে পেয়ারাসহ কয়েক জাতের ফলদ গাছ রোপণ করেন তিনি। এভাবেই তার নার্সারি ব্যবসার সূচনা। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সিতাব উদ্দিনের নার্সারি ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকে। দেড় বছর পর এক বিঘা জমিতে তিনি ফলদ বাগান করেন। ভালো লাভ হওয়ায় পর্যায়ক্রমে তিনি নার্সারির জমি এবং উদ্ভিদের জাত বাড়াতে থাকেন। নার্সারিতে তিনি ভালো মানের চারা রাখতেন। এ কারণে ক্রেতার সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে। আর এভাবেই এলাকায় অঙ্কুর নার্সারির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৯১ সালে সিতাব উদ্দিন নার্সারির ব্যবসা শুরু করে ছিলেন। মাত্র ৬ বছরের মধ্যেই তিনি সাফল্যের স্বীকৃতি পান। ১৯৯৭ সালে সফল নার্সারি ব্যবসায়ী ও বৃক্ষ রোপণে অবদানের জন্য প্রধান মন্ত্রী প্রদত্ত জাতীয় স্বর্ণপদক অর্জন করেন। এর পর মাদার তেরেসাসহ কয়েকটি সংগঠন তাকে সফল নার্সারি ব্যবসায়ী হিসেবে স্বর্ণপদক দেয়।

তিনি বলেন, ‘পদক আমার পেশাজীবনে ভীষণ অনু প্রেরনা হিসেবে কাজ করেছে। ধীরে ধীরে চন্ডীপুর, বেণীপুর, কাঁচেরকোল, বিত্তিপাড়াসহ পার্শ্ববর্তী জেলা কুষ্টিয়া ও যশোরে ব্যবসা সম্প্রসারণ করি। বর্তমানে মোট ৫০ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা নার্সারিতে শতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। তবে শ্রমিকদের এ সংখ্যা মৌসুম অনুযায়ী কমবেশি হয়।’সিতাব উদ্দিন জানান, নার্সারিতে বছরে প্রায় ৩ লাখ টাকা শ্রমিক, কর্মচারী এবং অন্যান্য খরচ বাবদ ব্যয় হয়। এলাকার অনেক নার্সারির মালিক একসময় তার নার্সারিতে কাজ শিখেছেন। তার সাফল্যে অনুপ্রানিত হয়ে এলাকায় অনেকেই নার্সারি তৈরিতে আগ্রহী হয়েছেন। এর ফলে শৈলকুপায় গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি উন্নত মানের নার্সারি।

সিতাব উদ্দিনের নার্সারিতে ফলদ, বনজ, ভেষজ গাছ ছাড়াও শৌখিন মূল্যবান গাছও পাওয়া যায়। এসবের মধ্যে সাইকাস, এরিকা পাম, ক্রিস্টমাস ট্রি উল্লেখযোগ্য। এসব গাছের চারা কখনো ৫০ হাজার টাকায়ও বিক্রি করেন তিনি। ফলদ গাছের মধ্যে বাউকুল, আপেলকুল, লিচু, ডালিম, মিষ্টি জলপাই, কামরাঙা, লটকন, স্টবেরি, আমরুপালি, মাল্টা উল্লেখযোগ্য। রয়েছে সুগন্ধি আগর গাছসহ বিভিন্ন ধরনের মসলাজাতীয় গাছ। বনজ বৃক্ষের মধ্যে মেহগনি, সেগুন, আকাশমণিসহ কয়েক প্রজাতির গাছ রয়েছে। সিতাব উদ্দিন জানান, প্রতি বছর সরকারি-বেসরকারি সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানে তিনি বিনামূল্যে গাছের চারা বিতরণ করেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আন্তর্জাতিক সেমিনারে যাচ্ছেন ইবি ভিসি

শৈলকুপা নার্সারিতে সিতাব উদ্দিন স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত জাতীয় পুরস্কার

আপডেট সময় : ০৯:৪৫:৩৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৩ মে ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার,ঝিনাইদহঃ ঝিনাইদহ শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জের বাসিন্দা সিতাব উদ্দিন। ১৯৯১ সালে মাত্র ৬ শতাংশ জমি নিয়ে নার্সারি ব্যবসা শুরু করলেও বর্তমানে প্রায় ৫০ একর জমিতে প্রসারিত হয়েছে তার এ ব্যবসা। নার্সারি ব্যবসায় সিতাব উদ্দিনের সফলতা দেখে এলাকার অনেকেই এখন এ পেশায় ঝুঁকছেন। স্বপ্ন দেখছেন এ ব্যবসার মাধ্যমে ভাগ্য বদলের। নার্সারি করে সিতাব উদ্দিন একদিকে যেমন হয়েছেন স্বাবলম্বী, অন্যদিকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন ওই এলাকার শতাধিক মানুষের। তার এ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত জাতীয় পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি স্বর্ণপদক।

সিতাব উদ্দিন জানান, ঝিনাইদহ কেসি কলেজ থেকে ডিগ্রী পাস করে তিনি এলাকায় একটি কোচিং সেন্টার খোলেন। সেখানে শিক্ষকতার মাধ্যমে শুর হয় তার পেশাজীবন। এর পর মোবারকগঞ্জ চিনি কলে চাকরি পাওয়ায় পেশাবদল ঘটে। চিনি কলে কাজ করার সময় দেখেন প্রচুর আখের চারা পলিথিনের বেডে রাখা হতো। কাজ শেষে পলিথিন গুলো ফেলে দেয়া হতো। পলিথিন ব্যাগ গুলো কীভাবে কাজে লাগানো যায়, এ চিন্তা থেকেই তিনি নার্সারির পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী তিনি পলিথিনের ব্যাগে গাছের চারা রোপণ করতে শুরু করেন।

একপর্যায়ে বাড়ির পাশে মাত্র ৬ শতাংশ জমিতে পেয়ারাসহ কয়েক জাতের ফলদ গাছ রোপণ করেন তিনি। এভাবেই তার নার্সারি ব্যবসার সূচনা। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সিতাব উদ্দিনের নার্সারি ব্যবসার প্রসার ঘটতে থাকে। দেড় বছর পর এক বিঘা জমিতে তিনি ফলদ বাগান করেন। ভালো লাভ হওয়ায় পর্যায়ক্রমে তিনি নার্সারির জমি এবং উদ্ভিদের জাত বাড়াতে থাকেন। নার্সারিতে তিনি ভালো মানের চারা রাখতেন। এ কারণে ক্রেতার সংখ্যা ক্রমেই বাড়তে থাকে। আর এভাবেই এলাকায় অঙ্কুর নার্সারির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৯১ সালে সিতাব উদ্দিন নার্সারির ব্যবসা শুরু করে ছিলেন। মাত্র ৬ বছরের মধ্যেই তিনি সাফল্যের স্বীকৃতি পান। ১৯৯৭ সালে সফল নার্সারি ব্যবসায়ী ও বৃক্ষ রোপণে অবদানের জন্য প্রধান মন্ত্রী প্রদত্ত জাতীয় স্বর্ণপদক অর্জন করেন। এর পর মাদার তেরেসাসহ কয়েকটি সংগঠন তাকে সফল নার্সারি ব্যবসায়ী হিসেবে স্বর্ণপদক দেয়।

তিনি বলেন, ‘পদক আমার পেশাজীবনে ভীষণ অনু প্রেরনা হিসেবে কাজ করেছে। ধীরে ধীরে চন্ডীপুর, বেণীপুর, কাঁচেরকোল, বিত্তিপাড়াসহ পার্শ্ববর্তী জেলা কুষ্টিয়া ও যশোরে ব্যবসা সম্প্রসারণ করি। বর্তমানে মোট ৫০ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা নার্সারিতে শতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। তবে শ্রমিকদের এ সংখ্যা মৌসুম অনুযায়ী কমবেশি হয়।’সিতাব উদ্দিন জানান, নার্সারিতে বছরে প্রায় ৩ লাখ টাকা শ্রমিক, কর্মচারী এবং অন্যান্য খরচ বাবদ ব্যয় হয়। এলাকার অনেক নার্সারির মালিক একসময় তার নার্সারিতে কাজ শিখেছেন। তার সাফল্যে অনুপ্রানিত হয়ে এলাকায় অনেকেই নার্সারি তৈরিতে আগ্রহী হয়েছেন। এর ফলে শৈলকুপায় গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি উন্নত মানের নার্সারি।

সিতাব উদ্দিনের নার্সারিতে ফলদ, বনজ, ভেষজ গাছ ছাড়াও শৌখিন মূল্যবান গাছও পাওয়া যায়। এসবের মধ্যে সাইকাস, এরিকা পাম, ক্রিস্টমাস ট্রি উল্লেখযোগ্য। এসব গাছের চারা কখনো ৫০ হাজার টাকায়ও বিক্রি করেন তিনি। ফলদ গাছের মধ্যে বাউকুল, আপেলকুল, লিচু, ডালিম, মিষ্টি জলপাই, কামরাঙা, লটকন, স্টবেরি, আমরুপালি, মাল্টা উল্লেখযোগ্য। রয়েছে সুগন্ধি আগর গাছসহ বিভিন্ন ধরনের মসলাজাতীয় গাছ। বনজ বৃক্ষের মধ্যে মেহগনি, সেগুন, আকাশমণিসহ কয়েক প্রজাতির গাছ রয়েছে। সিতাব উদ্দিন জানান, প্রতি বছর সরকারি-বেসরকারি সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানে তিনি বিনামূল্যে গাছের চারা বিতরণ করেন।