নিউজ ডেস্ক:
বয়স ১০১। ঝুলে গেছে চামড়া, শরীর ভঙ্গুর। তবুও ইতালির আনাতোলিয়া ভার্তাদেলার জীবনে এখন উদযাপনের সময়। কিছু দিন আগেই তার কোল আলো করে এসেছে ফুটফুটে পুত্র সন্তান। যদিও তার স্বামী মারা গেছে ১৮ বছর আগে। তাহলে কীভাবে?
তা সম্ভব হয়েছে ওভারি ট্রান্সপ্লান্টের মাধ্যমে। আর তা নিয়েই বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন শতায়ু এই বৃদ্ধা।
বিতর্ক ওঠে ইউরোপীয় আইন অনুযায়ী ওভারি ট্রান্সপ্লান্ট বেআইনি। তবে কীভাবে এই অস্ত্রপচার করালেন বৃদ্ধা? দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাদ দিয়ে এমন খবর দিয়েছে আনন্দবাজার।
আনাতোলিয়া জানিয়েছেন, তুরস্কের এক বেসরকারি হাসপাতালে তিনি এই অস্ত্রপচার করেছেন। যেখানে ডিম্বাশয় প্রতিস্থাপন নিয়ে ইউরোপীয় আইন কার্যকর নয়। তবে সেই ক্লিনিকের নাম প্রকাশ করতে চাননি তিনি।
তবে বলেন, ‘‘যারা আমার অস্ত্রপচার করেছেন সেই চিকিত্সকদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। এত দিন ধরে আমার ঈশ্বরের কাছে নিজেকে অপ্রয়োজনীয় মনে হতো। ৪৮ বছর বয়সে ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আমি আর সন্তানের জন্ম দিতে পারিনি। মাঝে মাঝে ভাবতাম মাত্র ১৬টি সন্তানের জন্ম দেয়ার জন্য ঈশ্বর আমাকে শাস্তি দিচ্ছেন। কিন্তু ঈশ্বরের কৃপায় আবারও আমি মা হতে পারলাম। ১৭তম সন্তান এল আমার কোলে,’’ কথাগুলো বলতে বলতে আবেগে কেঁদে ফেলেছিলেন আনাতোলিয়া।
সত্যিই কি এই অদম্য ইচ্ছাপূরণ করতে বেআইনি পথে হাঁটলেন বৃদ্ধা? তার চিকিত্সক আলেক্সান্দ্রো পোপোলিচি জানান, ‘‘আমি বিচার করার কে? উনি ফুটফুটে এক শিশুর জন্ম দিয়েছেন। অবশ্যই এটা ঈশ্বরের উপহার। তুরস্কে এই অস্ত্রপচার সম্পূর্ণ আইনি এবং বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরাই তা করেছেন। এই বয়সেও তার স্বাস্থ্য বেশ ভালো। আশা করছি আরও বেশ কিছু বছর উনি বাঁচবেন।’’
কীভাবে মা হলেন আনাতোলিয়া?
‘‘১৯৯৮ সালে আমার স্বামী মারা গিয়েছেন। ইন্টারনেটে শুক্রাণুদাতা খুঁজতে গিয়ে ফ্রান্সেস্কোর (সদ্যজাতর নাম) বাবাকে পাই। ২৬ বছরের এক ক্যাথলিক যুবক। এটাই আমার কাছে যথেষ্ট ছিল। আমি শুধু চেয়েছিলাম আমার সন্তানকে যেন ক্যাথলিক চার্চ গ্রহণ করে। আমি ফ্রান্সেস্কোর বাবাকে বিয়ে করিনি। আমার সন্তানের জীবনেও তার কোনো ভূমিকা থাকবে না। এই কথা আমি পোপকে লিখে জানিয়েছিলাম। পোপের নামানুসারে সন্তানের নামও রেখেছি। আমার বিশ্বাস, পোপ আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। এখনো আমি আমার মৃত স্বামীকে ভালবাসি। যতদিন বাঁচবো তার বিধবা হয়েই বাঁচতে চাই।’’