সোমবার | ২৪ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কাদিপুরে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাণ গেল ২ বন্ধুর Logo জীবননগরে পথসভায় চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী আন্ডারগ্রাউন্ড পলিটিক্স, গোপন পলিটিক্স করি না Logo শৈলকুপায় কিশোরী গণধর্ষণের শিকার গ্রেফতার-৩ Logo চকরিয়ার চিংড়িজোন মৎস্য চাষের উর্বর ভূমি,এখানে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে Logo পেকুয়ায় রিজার্ভ বনভূমিতে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিল বনবিভাগ Logo টেকনাফে ৫০ হাজার পিস ইয়াবাসহ এক পাচারকারী আটক Logo মিয়ানমার হতে মাদকের বিনিময়ে বাংলাদেশী সিমেন্টসহ ৯ পাচারকারী আটক Logo চাঁদপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযানে ৩টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা Logo বিজয়ী নারী উন্নয়ন সংস্থার কম্বল পেয়ে অসহায় দুঃখীদের মুখে হাসি Logo চাঁদপুর সদরের ইউনিয়ন পর্যায়ে স্থানীয় অংশীজনদের নিয়ে প্রশিক্ষণ সরকারি বিধান না মেনে দয়া করে কেউ অবৈধভাবে বিদেশ যাবেন না-ইউএনও এস এম এন জামিউল হিকমা

“পালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু পরিবার” শিরোনামে গুজব ছড়াল ‘হিন্দুস নিউজ’ নামে পোর্টাল

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৭:৩৭:৩৮ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
  • ৭০৬ বার পড়া হয়েছে

মোঃ রোকনুজ্জামান, সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
সম্প্রতি ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের হরিণ্যা গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের সংবাদকে বিকৃত করে “হিন্দুস নিউজ” (Hindus news) নামে একটি নিউজ পোর্টাল থেকে একটি বিভ্রান্তিমূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটির স্ক্রীনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তির জন্ম দেয়। প্রতিবেদনটির শিরোনাম করা হয়- “সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে সংঘর্ষ-পালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু পরিবার, টহলে পুলিশ”। “হিন্দুস নিউজ” এর প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়, হামলার পর ভয় আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন অন্তত পাঁচ শতাধিক হিন্দু পরিবার।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে ওই পোর্টালে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি দেখা দেয়।

এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও একাধিক পক্ষের সঙ্গে কাথা হলে তারা গণমাধ্যমকে জানায় ওই পোর্টালের প্রতিবেদনটি অতিরঞ্জিত ও বিভ্রান্তিকর। বিরোধটি কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক নয়; কারণ উভয় পক্ষেই সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন রয়েছে। “হিন্দুস নিউজ” প্রতিবেদনে যেভাবে একক ধর্মীয় গোষ্ঠীর ওপর হামলা দেখানো হয়েছে, তা ঘটনা অনুযায়ী সঠিক নয়।

রবিবার (২৩ নভেম্বর ) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে ফরিদপুর জেলা পুলিশের দেওয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়-“সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের দেওয়ানি মামলা চলমান। উভয় পক্ষেই সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন রয়েছে। সম্প্রতি দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির জেরে সীমিত আকারের একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এটিকে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ বা ‘হিন্দু পরিবার পালিয়ে যাচ্ছে’ এ ধরনের দাবি বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।”

“হিন্দু পরিবার পালিয়ে যাওয়া”র বিষয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীর একাংশ জানায়, জমির মালিকানা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সেই বিরোধ থেকেই (১৬ নভেম্বর) ভোরে কিছু উত্তেজনা তৈরি হয়। তবে তারা বলছেন-এটি ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ নয়।

স্থানীয় পূজারী বিমল ভট্টাচার্য বলেন, আমরা বহু বছর ধরে এখানে হিন্দু ও মুসলমান একসঙ্গে আছি। ঝগড়া হয়েছে জমি নিয়ে, ধর্ম নিয়ে নয়। আর হিন্দু পালিয়ে যাওয়ার বিষয় পুরোটাই গুজব।

সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকদেব রায় জানান, হরিন্যা মৌজার জমি সংক্রান্ত বিরোধটি সম্পূর্ণই দুই পক্ষের জমির মালিকানা সংক্রান্ত। এটি কোনো সাম্প্রদায়িক ঘটনা নয়। উভয় পক্ষেই মুসলিম ও সনাতন ধর্মাবলম্বী দুই সম্প্রদায়ের মানুষ জড়িত আছেন। জমি দখলকে কেন্দ্র করে ১৬ নভেম্বর ভোরে সীমিত আকারে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে বড় ধরনের কোনো সংঘর্ষ বা গণপলায়নের ঘটনা ঘটেনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা জানান, জমির মালিকানা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক মাস ধরে তর্কবিতর্ক চলছিল। উভয় পক্ষেই সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন রয়েছে। গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আমরা এলাকাবাসীকে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কাদিপুরে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাণ গেল ২ বন্ধুর

“পালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু পরিবার” শিরোনামে গুজব ছড়াল ‘হিন্দুস নিউজ’ নামে পোর্টাল

আপডেট সময় : ০৭:৩৭:৩৮ অপরাহ্ণ, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫

মোঃ রোকনুজ্জামান, সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ
সম্প্রতি ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়নের হরিণ্যা গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের সংবাদকে বিকৃত করে “হিন্দুস নিউজ” (Hindus news) নামে একটি নিউজ পোর্টাল থেকে একটি বিভ্রান্তিমূলক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটির স্ক্রীনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তির জন্ম দেয়। প্রতিবেদনটির শিরোনাম করা হয়- “সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে সংঘর্ষ-পালিয়ে যাচ্ছে হিন্দু পরিবার, টহলে পুলিশ”। “হিন্দুস নিউজ” এর প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়, হামলার পর ভয় আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন অন্তত পাঁচ শতাধিক হিন্দু পরিবার।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুরে ওই পোর্টালে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি দেখা দেয়।

এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও একাধিক পক্ষের সঙ্গে কাথা হলে তারা গণমাধ্যমকে জানায় ওই পোর্টালের প্রতিবেদনটি অতিরঞ্জিত ও বিভ্রান্তিকর। বিরোধটি কোনোভাবেই সাম্প্রদায়িক নয়; কারণ উভয় পক্ষেই সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন রয়েছে। “হিন্দুস নিউজ” প্রতিবেদনে যেভাবে একক ধর্মীয় গোষ্ঠীর ওপর হামলা দেখানো হয়েছে, তা ঘটনা অনুযায়ী সঠিক নয়।

রবিবার (২৩ নভেম্বর ) সন্ধ্যা ৭ টার দিকে ফরিদপুর জেলা পুলিশের দেওয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়-“সদরপুরে মন্দিরের জমি নিয়ে দুটি পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিনের দেওয়ানি মামলা চলমান। উভয় পক্ষেই সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন রয়েছে। সম্প্রতি দুই পক্ষের কথা কাটাকাটির জেরে সীমিত আকারের একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এটিকে ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ বা ‘হিন্দু পরিবার পালিয়ে যাচ্ছে’ এ ধরনের দাবি বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।”

“হিন্দু পরিবার পালিয়ে যাওয়া”র বিষয়ে স্থানীয় গ্রামবাসীর একাংশ জানায়, জমির মালিকানা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। সেই বিরোধ থেকেই (১৬ নভেম্বর) ভোরে কিছু উত্তেজনা তৈরি হয়। তবে তারা বলছেন-এটি ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ নয়।

স্থানীয় পূজারী বিমল ভট্টাচার্য বলেন, আমরা বহু বছর ধরে এখানে হিন্দু ও মুসলমান একসঙ্গে আছি। ঝগড়া হয়েছে জমি নিয়ে, ধর্ম নিয়ে নয়। আর হিন্দু পালিয়ে যাওয়ার বিষয় পুরোটাই গুজব।

সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকদেব রায় জানান, হরিন্যা মৌজার জমি সংক্রান্ত বিরোধটি সম্পূর্ণই দুই পক্ষের জমির মালিকানা সংক্রান্ত। এটি কোনো সাম্প্রদায়িক ঘটনা নয়। উভয় পক্ষেই মুসলিম ও সনাতন ধর্মাবলম্বী দুই সম্প্রদায়ের মানুষ জড়িত আছেন। জমি দখলকে কেন্দ্র করে ১৬ নভেম্বর ভোরে সীমিত আকারে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে বড় ধরনের কোনো সংঘর্ষ বা গণপলায়নের ঘটনা ঘটেনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া সুলতানা জানান, জমির মালিকানা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে কয়েক মাস ধরে তর্কবিতর্ক চলছিল। উভয় পক্ষেই সনাতন ধর্মাবলম্বী এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন রয়েছে। গুজব ছড়িয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। আমরা এলাকাবাসীকে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি।