সুদানে চলমান গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে জাতীয় ছাত্রশক্তি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
আজ রবিবার (২ নভেম্বর), বিকাল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এ কর্মসূচির আয়োজন করে সংগঠনটি। কর্মসূচিটি সঞ্চালনা করেন শাখা ছাত্রশক্তির সংগঠক কাজী মেহরাব তূর্য।
এসময় শাখা ছাত্রশক্তির যুগ্ম সদস্য সচিব ফারহানা বিনতে জিগার ফারিনা বলেন,
আজকে আমরা সেই সুদানবাসীদের হয়ে কথা বলতে এসেছি যারা দীর্ঘ ৩০ বছর ধরেও কোন স্থায়ী স্বাধীনতা পায়নি। আজ আমরা তাদের কথা বলতে এসেছি যাদের ব্যাপারে আজকে আমাদের মানবতা এবং সবকিছু শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। আজকে সুদানের নাগরিকদের উপর শুধু অমানবিক হত্যাযোগ্য না বরং তাদের নারীদের প্রতিও চলছে ভয়াবহ সহিংসতা।
তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের রিপোর্ট কোন ধরনের কথা আমরা কাউকে বলতে দেখছি না। আমরা জাতিসংঘকে বলে দিতে চাই যে আমরা আপনাদের মত সিলেক্টিভ রাজনীতি করি না। আমরা বিশ্ববাসীকে বলে দিতে চাই যে আমরা শুধুমাত্র ফিলিস্তিনি বা রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা বলি না।
কারণ ফিলিস্তিনি আমাদের ধর্ম এবং রোহিঙ্গা আমাদের পাশে রয়েছে। আমরা বরং সকলের বিষয়ে কথা বলি। আমরা বরং সকলের বিষয়ে সোচ্চার থাকি।
তিনি আরও বলেন, আমরা ডিপ স্টেটে যেই রাজনীতি চলছে সেই রাজনীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য আজকে এই মানববন্ধনে শামিল হয়েছি। সেই জায়গা থেকে আমরা মনে করি, এই হতাহতের কাহিনী অনতিবিলম্বে থামতে হবে না হয় এই দারফুরের স্বর্ণ আসলে ফুরাত নদীর স্বর্ণের মত মার্কিনিদের সহ সকল আগ্রাসনবাদী রাষ্ট্রের জন্য ধ্বংস বয়ে আনবে।
যুগ্ম আহ্বায়ক জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, আমরা দেখছি যে সুদানে অমানবিকভাবে প্যারামিলিটারি আরএসএফ গণহত্যা চালাচ্ছে। এবং এই গণহত্যার প্রতিবাদে জাতিগত নিধনের প্রতিবাদে আজকে আমরা জাতীয় ছাত্রশক্তি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থান নিয়েছি। আমরা দেখছি যে স্পষ্টত আরব আমিরাত এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরএসএফ কে সহযোগিতা করছে যার বিনিময়ে তারা স্বর্ণ নিচ্ছে এবং তার বিনিময়ে তারা সেখানে অস্ত্র পাচার করছে।
সেই অস্ত্র দিয়ে সুদানের নিরীহ মানুষদেরকে মেরে ফেলা হচ্ছে। সুদানের নারীদেরকে ধর্ষণ করা হচ্ছে। এক বছরের শিশুও সেই ধর্ষণ থেকে রেহাই পাচ্ছে না।
আমরা দেখছি যে পুরুষদেরকে কি গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। যেটা গত দুই বছরে এক লাখেরও বেশি সুদানের নিরীহ মানুষকে মেরে ফেলা হয়েছে। যার দৃষ্টান্ত আমরা সেই ফিলিস্তিনের গাঁজায় আমরা দেখিনি। আমরা মনে করছি এই সুদানকে আরেকটি ফিলিস্তিনের গাজায় পরিণত করা হচ্ছে। আমরা বিশ্ব মানবতা যেভাবে ফিলিস্তিনের গাজা নিয়ে কথা বলি, বিশ্বের বাংলাদেশের মানুষেরা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা যেভাবে ফিলিস্তিনের মানুষদের নিয়ে কথা বলি সেই আফ্রিকার দেশ হওয়ার বলাতে আমরা কিন্তু সুদানের মানুষদের নিয়ে কথা বলছি না। আজকে বিশ্বমিডিয়া নীরব।
বিশ্বমিডিয়া সেটার প্রতিবাদ জানাচ্ছে না। জাতিসংঘ সেখানে নীরব জাতিসংঘ মনে হয় যে চশমা লাগিয়ে আছে ওআইসি কি জন্য গঠিত হয়েছে যে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ রাখার মুসলিম বিশ্বকে কিভাবে প্রোটেক্ট রাখতে হয় সেটাও তার ভূমিকা পালন করছে না।
আমরা মনে করছি এই আফ্রিকার দেশ সুদানের যে জনগণ রয়েছে, সে জনগণদের বাঁচার জন্য আমাদের এই বিশ্ববাসীকে এগিয়ে আসতে হবে। যদি বিশ্ববাসী এগিয়ে না আসি, তাহলে দশকের পর দশক ধরে গণহত্যা চলতে থাকবে।
লাখ লাখ কোটি কোটি মানুষকে মেরে ফেলা হবে এবং সেই গণহত্যার প্রভাবও কিন্তু অন্যান্য দেশেও পড়বে। তাই সকলকে আহ্বান রইলো এই গণহত্যার প্রতিবাদে সবাই সচেষ্ট হন এবং বিশ্ববাসী এবং আরব বিশ্বের দেশগুলোকে আহ্বান করছি এই গণহত্যা বন্ধে সচেষ্ট হওয়ার জন্য।
সংগঠনটির আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, যখন মানুষ মানুষকে হত্যা করছে, ধর্ম, জাতি, বর্ণভেদে হত্যা করছে, ক্ষমতার লোভে হত্যা কর,ছেসেই মুহূর্তে আমরা প্রতিবাদ জানাতে দাঁড়িয়েছি। আমরা দাঁড়িয়েছি মানবতার পক্ষে। আমরা দাঁড়িয়েছি অন্যায়ের বিপক্ষে। আমরা দাঁড়িয়েছি সুদানে যে গণহত্যা চলছে, সেই গণহত্যার প্রতিবাদ জানাতে। আমরা দেখেছি যে সুদানে নিরীহ শিশু, নারী এবং বৃদ্ধদের যেভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হচ্ছে, সেই জিনিসগুলো আমরা দেখছি সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে।
কিন্তু আমরা দেখেছি যে বিশ্বশক্তিগুলো একদম নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই নীরবতা শুধুমাত্র লজ্জাজনক নয়। এটা এই যে সুদানের যে গণহত্যা, সেই গণহত্যা যে একটা অপরাধ, এই অপরাধেরও শামিল।
আমরা সেই জায়গা থেকে বলতে চাই যে অবিলম্বে এই যে গণহত্যার সাথে যারা জড়িত, তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা দেখেছি যে বিশ্ব মিডিয়াগুলো চুপ করে রয়েছে। বিশ্বের যে মানবাধিকার সংস্থাগুলো রয়েছে, তারা চুপ করে রয়েছে। আমরা তাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই মানবতা কি শুধু মুখে মুখেই? আমরা কি বা মানবাধিকারের সংজ্ঞা কি বিভিন্ন দেশভেদে, বিভিন্ন জাতিভেদে পাল্টে যায়? এই প্রশ্ন আমরা রাখতে চাই।










































