একটি পলাতক দল দেশকে অস্থিতিশীল করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে : ড. ইউনূস

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০১:৩৭:৪২ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
  • ৭২৮ বার পড়া হয়েছে

একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। অথচ তারা দেশটাকে অস্থিতিশীল করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। সোমবার (৩ মার্চ) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে সংবাদ মাধ্যমটি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমার কোনো চিন্তাভাবনা ছিল না হঠাৎ করে একটা সরকারের প্রধান হবো। এবং সেই দেশ এমন যেখানে সব তছনছ হয়ে গেছে। কোনো জিনিস আর ঠিকমতো কাজ করছে না। যা কিছু আছে ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে কাজ করতে হবে। আমার প্রথম চেষ্টা ছিল সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা।

তিনি বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেক পরিবর্তন হয়েছে। অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটাতো পরিষ্কার- সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। দেশের মানুষেরও আমাদের ওপর আস্থা আছে। আমাদের মধ্যে ভুলভ্রান্তি হতে পারে। কিছু ভালো করেছে, কিছু ভালো করতে পারেনি। এটা হতে পারে। এটা আমিতো অস্বীকার করছি না।

ছাত্রদের রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, নতুন দলকে সরকার কোনো সহায়তা করে না। যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই ভালো জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সম্পর্কের কোনো অবনতি হয় নাই। আমি যেভাবে ব্যাখ্যা করে এসেছি আমাদের সম্পর্ক সবসময় ভালো থাকবে। এখনও ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই। আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আমাদের পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা এত বেশি এবং ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে আমাদের এত ক্লোজ সম্পর্ক, সেটা থেকে আমরা বিচ্যুত হতে পারবো না।

তিনি বলেন, মাঝখানে কিছু কিছু দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, আমি বলেছি মেঘ দেখা দিয়েছে। এই মেঘগুলো মোটামুটি এসেছে অপপ্রচার থেকে। অপপ্রচারের সূত্র কারা সেটা অন্যরা বিচার করবে। কিন্তু এই অপপ্রচারের ফলে আমাদের সঙ্গে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। সেই ভুল বোঝাবুঝি থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি।

ড. ইউনূস বলেন, ভারত সরকারের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ হচ্ছে। তারা এখানে আসছে, আমাদের লোকজন সেখানে যাচ্ছে। প্রাইম মিনিস্টার মোদির সঙ্গে আমার প্রথম সপ্তাহেই কথাবার্তা হয়ে গেছে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সবাই মিলে যা ঠিক করবে আমরা তাই করবো। তবে, আমরা সব ভাই ভাই। আমাদেরকে এই দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিৎ, তার বিচার হতে হবে। এটুকুই শুধু।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

একটি পলাতক দল দেশকে অস্থিতিশীল করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছে : ড. ইউনূস

আপডেট সময় : ০১:৩৭:৪২ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

একটা পলাতক দল দেশ ছেড়ে চলে গেছে বা তাদের নেতৃত্ব চলে গেছে। অথচ তারা দেশটাকে অস্থিতিশীল করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। সোমবার (৩ মার্চ) সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে সংবাদ মাধ্যমটি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমার কোনো চিন্তাভাবনা ছিল না হঠাৎ করে একটা সরকারের প্রধান হবো। এবং সেই দেশ এমন যেখানে সব তছনছ হয়ে গেছে। কোনো জিনিস আর ঠিকমতো কাজ করছে না। যা কিছু আছে ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে কাজ করতে হবে। আমার প্রথম চেষ্টা ছিল সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে আসল চেহারাটা বের করে আনা। মানুষের দৈনন্দিন জীবন সহজ করে আনা।

তিনি বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেক পরিবর্তন হয়েছে। অর্থনীতি সহজ করেছি। দেশ-বিদেশের আস্থা অর্জন করেছি। এটাতো পরিষ্কার- সারা দুনিয়ায় আমরা আস্থা স্থাপন করতে পেরেছি। দেশের মানুষেরও আমাদের ওপর আস্থা আছে। আমাদের মধ্যে ভুলভ্রান্তি হতে পারে। কিছু ভালো করেছে, কিছু ভালো করতে পারেনি। এটা হতে পারে। এটা আমিতো অস্বীকার করছি না।

ছাত্রদের রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, নতুন দলকে সরকার কোনো সহায়তা করে না। যে রাজনীতি করতে চায়, সে নিজেই ইস্তফা দিয়ে চলে গেছে। তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি ছিল সরকারের ভেতরে। যিনি রাজনীতি করতে মন স্থির করেছেন, তিনি ইস্তফা দিয়ে সরকার থেকে চলে গেছেন। উনি প্রাইভেট সিটিজেনশিপে রাজনীতি করবেন, কার বাধা দেওয়ার কী আছে?

ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই ভালো জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সম্পর্কের কোনো অবনতি হয় নাই। আমি যেভাবে ব্যাখ্যা করে এসেছি আমাদের সম্পর্ক সবসময় ভালো থাকবে। এখনও ভালো আছে, ভবিষ্যতেও ভালো থাকবে।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই। আমাদের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আমাদের পরস্পরের ওপর নির্ভরশীলতা এত বেশি এবং ঐতিহাসিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে আমাদের এত ক্লোজ সম্পর্ক, সেটা থেকে আমরা বিচ্যুত হতে পারবো না।

তিনি বলেন, মাঝখানে কিছু কিছু দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, আমি বলেছি মেঘ দেখা দিয়েছে। এই মেঘগুলো মোটামুটি এসেছে অপপ্রচার থেকে। অপপ্রচারের সূত্র কারা সেটা অন্যরা বিচার করবে। কিন্তু এই অপপ্রচারের ফলে আমাদের সঙ্গে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়ে গেছে। সেই ভুল বোঝাবুঝি থেকে আমরা উত্তরণের চেষ্টা করছি।

ড. ইউনূস বলেন, ভারত সরকারের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ হচ্ছে। তারা এখানে আসছে, আমাদের লোকজন সেখানে যাচ্ছে। প্রাইম মিনিস্টার মোদির সঙ্গে আমার প্রথম সপ্তাহেই কথাবার্তা হয়ে গেছে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সবাই মিলে যা ঠিক করবে আমরা তাই করবো। তবে, আমরা সব ভাই ভাই। আমাদেরকে এই দেশেই বাঁচতে হবে। এ দেশকেই বড় করতে হবে। যে অন্যায় করেছে, যার বিচার হওয়া উচিৎ, তার বিচার হতে হবে। এটুকুই শুধু।